< প্রেরিত 3 >
1 একদিন প্রার্থনার নির্দিষ্ট সময়ে, বেলা তিনটের সময়, পিতর ও যোহন একসঙ্গে মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন।
2 এমন সময়ে জন্ম থেকে খোঁড়া এক ব্যক্তিকে মন্দিরের সুন্দর নামক দরজার দিকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যারা মন্দির-প্রাঙ্গণে যেত, তাদের কাছে ভিক্ষা চাওয়ার জন্য তাকে রোজ সেখানে বসিয়ে রাখা হত।
3 সে যখন পিতর ও যোহনকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখল, সে তাদের কাছে টাকাপয়সা ভিক্ষা করল।
4 পিতর সোজা তার দিকে তাকালেন, যোহনও তাই করলেন। তখন পিতর বললেন, “আমাদের দিকে তাকাও!”
5 এতে সেই ব্যক্তি তাদের দিকে তাকিয়ে দেখল। তাদের কাছ থেকে সে কিছু পাওয়ার আশা করেছিল।
6 তখন পিতর বললেন, “সোনা কি রুপো আমার কাছে নেই, কিন্তু আমার কাছে যা আছে, আমি তাই তোমাকে দান করি। তুমি নাসরতের যীশু খ্রীষ্টের নামে হেঁটে বেড়াও।”
7 তার ডান হাত ধরে তিনি তাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করলেন, সঙ্গে সঙ্গে মানুষটির দু-পা ও গোড়ালি সবল হয়ে উঠল।
8 সে তার পায়ে লাফ দিয়ে উঠল ও চলে বেড়াতে লাগল। তারপর সে চলতে চলতে, লাফ দিতে দিতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে তাঁদের সঙ্গে মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করল।
9 সব লোক তাকে যখন চলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে দেখল,
10 তারা তাকে চিনতে পারল যে, এ সেই ব্যক্তি, যে সুন্দর নামে পরিচিত মন্দিরের দরজায় বসে ভিক্ষা চাইত। তার প্রতি যা ঘটেছে, তা দেখে তারা চমৎকৃত ও বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়ল।
11 আর সেই ব্যক্তি পিতর ও যোহনের কাছে ঘনিষ্ঠভাবে দাঁড়িয়ে থাকাতে সব লোক বিস্মিত হল। তারা সবাই শলোমনের বারান্দায় তাদের কাছে দৌড়ে এল।
12 পিতর যখন তা দেখলেন, তিনি তাদের বললেন, “হে ইস্রায়েলবাসী, এই ঘটনায় তোমরা কেন বিস্মিত হচ্ছো? কেনই বা আমাদের দিকে এমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছ, যেন আমরা নিজস্ব ক্ষমতায় বা পুণ্যবলে এই ব্যক্তিকে চলার শক্তি দিয়েছি?
13 অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর সেবক সেই যীশুকে গৌরবান্বিত করেছেন। তোমরা তাঁকে হত্যা করার জন্য সমর্পণ করেছিলে এবং পীলাতের বিচারালয়ের সামনে তাঁকে অস্বীকার করেছিলে, যদিও তিনি তাঁকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।
14 তোমরা সেই পবিত্র ও ধার্মিক জনকে অস্বীকার করে চেয়েছিলে যেন এক হত্যাকারীকে তোমাদের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়।
15 যিনি জীবনের স্রষ্টা, তোমরা তাঁকে হত্যা করেছিলে, কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করেছেন। আমরা এই ঘটনার সাক্ষী।
16 তোমরা এই যে ব্যক্তিকে দেখছ ও জানো, যীশুর নামে বিশ্বাস করেই সে সবল হয়েছে। যীশুর নাম ও তাঁর মাধ্যমে যে বিশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তার দ্বারা সে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়েছে, যেমন তোমরা সবাই দেখছ।
17 “হে ইস্রায়েলবাসী, আমি জানি, তোমাদের নেতাদের মতো তোমরাও না জেনে এসব কাজ করেছিলে।
18 কিন্তু ঈশ্বর তা এভাবেই পূর্ণ করেছেন, যা তিনি তাঁর সব ভাববাদীর দ্বারা অনেক আগেই ঘোষণা করেছিলেন, বলেছিলেন যে তাঁর মশীহ কষ্টভোগ করবেন।
19 সুতরাং, এখন তোমরা মন পরিবর্তন করো ও ঈশ্বরের প্রতি ফিরে এসো, যেন তোমাদের সব পাপ মুছে ফেলা হয় ও প্রভুর কাছ থেকে পুনরুজ্জীবনের সময় উপস্থিত হয়।
20 তখন তিনি সেই মশীহকে, অর্থাৎ যীশুকে, আবার পাঠাবেন যাঁকে তিনি তোমাদের জন্য নিযুক্ত করেছেন।
21 তাঁকে সেই সময় পর্যন্ত স্বর্গে থাকতেই হবে, যতক্ষণ না সবকিছু পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঈশ্বরের সময় উপস্থিত হয়, যেমন তিনি তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুকাল আগেই প্রতিশ্রুতি দান করেছিলেন। (aiōn )
22 কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের ভাইয়ের মধ্য থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীর উত্থান ঘটাবেন। তিনি তোমাদের যা বলেন, তোমরা অবশ্যই সেইসব বিষয় মন দিয়ে শোনো।
23 কোনো ব্যক্তি যদি তাঁর কথা না শোনে, সে তার আপনজনদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছিন্ন হবে।’
24 “প্রকৃতপক্ষে শমূয়েল থেকে শুরু করে যতজন ভাববাদী বাণী প্রচার করেছেন, তাঁরা এই সময়ের বিষয়েই আগে ঘোষণা করেছিলেন।
25 আর তোমরা হলে সেই ভাববাদীদের উত্তরাধিকারী এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে স্থাপিত নিয়মের উত্তরাধিকারী। ঈশ্বর অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত জাতি আশীর্বাদ লাভ করবে।’
26 যখন ঈশ্বর তাঁর দাসকে মনোনীত করলেন, তিনি তাঁকে প্রথমে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, যেন তোমাদের প্রত্যেককে নিজেদের দুষ্টতার জীবনাচরণ থেকে ফিরিয়ে আশীর্বাদ করতে পারেন।”