< প্রেরিত 27 >

1 যখন স্থির হল যে আমরা জাহাজে করে ইতালি যাত্রা করব, পৌল ও আরও কয়েকজন বন্দিকে সম্রাট অগাস্টাসের সৈন্যদলের একজন শত-সেনাপতি জুলিয়াসের হাতে সমর্পণ করা হল।
যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আমরা জাহাজে করে ইতালিয়াতে যাত্রা করব, তখন পৌল ও অন্য কয়েক জন বন্দী আগস্তীয় সৈন্যদলের যুলিয় নামে একজন শতপতির হাতে সমর্পিত হলেন।
2 আমরা আদ্রামুত্তিয়ামের একটি জাহাজে উঠলাম, যেটা এশিয়া প্রদেশের উপকূলবর্তী বিভিন্ন বন্দরে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুত ছিল। আমরা সমুদ্রযাত্রা শুরু করলাম। থিষলনিকা থেকে আসা আরিষ্টার্খ নামে একজন ম্যাসিডোনিয়াবাসী আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
পরে আমরা আদ্রামুত্তীয় থেকে জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম, যে জাহাজটি এশিয়ার উপকূলের সমস্ত জায়গায় যাবে। মাকিদনিয়ার থিষলনীকীর অধিবাসী আরিষ্টার্খ আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
3 পরের দিন, আমরা সীদোনে পৌঁছালাম। জুলিয়াস পৌলের প্রতি দয়া দেখিয়ে বন্ধুদের কাছে তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দিলেন, যেন তারা তাঁর সব প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাতে পারে।
পরদিন আমরা সীদোনে পৌঁছলাম; যেখানে যুলিয় পৌলের প্রতি সম্মানের সাথে তাহাকে বন্ধুবান্ধবের কাছে নিয়ে গিয়ে যত্ন নেওয়ার অনুমতি দিলেন।
4 সেখান থেকে আমরা আবার সমুদ্রযাত্রা শুরু করলাম এবং বাতাস যেহেতু আমাদের প্রতিকূলে বইছিল, আমরা সাইপ্রাস দ্বীপের আড়ালে আড়ালে যেতে লাগলাম।
পরে সেখান হতে জাহাজ খুলে সামনের দিকে বাতাস হওয়ায় আমরা কুপ্র দ্বীপের আড়ালে আড়ালে চললাম।
5 যখন আমরা কিলিকিয়া ও পাম্ফুলিয়া উপকূলের সম্মুখবর্তী সমুদ্র অতিক্রম করলাম, আমরা লুসিয়া প্রদেশের ম্যুরা নামক স্থানে পৌঁছালাম।
পরে কিলিকিয়ার ও পাম্ফুলিয়া শহরের সামনের সমুদ্র পার হয়ে লুকিয়া প্রদেশের মুরা শহরে উপস্থিত হলাম।
6 সেখানে একটি আলেকজান্দ্রীয় জাহাজকে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করতে দেখে শত-সেনাপতি আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন।
সেখানে শতপতি ইতালিয়াতে যাচ্ছিল একখানা আলেকজান্দ্রীয় জাহাজ দেখতে পেয়ে আমাদের সেই জাহাজে তুলে দিলেন।
7 বহুদিন যাবৎ ধীর গতিতে চলার পর আমরা কষ্টের সঙ্গে ক্নীদের কাছে এসে পৌঁছালাম। বাতাস যখন আমাদের নির্ধারিত পথে যাত্রা করতে দিল না, আমরা সলমোনির বিপরীত দিকে ক্রীট দ্বীপের আড়ালে আড়ালে পাড়ি দিলাম।
পরে অনেকদিন ধীরে ধীরে জাহাজটি চলে অতিকষ্টে ক্লীদ শহরের নিকটে পৌঁছলো, বাতাসের সহযোগিতায় না এগোতে পেরে আমরা সলমোনির সম্মুখ দিয়ে ক্রীতী দ্বীপের আড়াল দিয়ে চললাম।
8 কষ্ট করে উপকূল বরাবর যেতে যেতে, আমরা লাসেয়া নগরের কাছে সুন্দর পোতাশ্রয় নামে একটি স্থানে এসে পৌঁছালাম।
আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে উপকূলের ধার ধরে যেতে যেতে সুন্দর পোতাশ্রয় নামে এক জায়গায় পৌঁছালাম যেটা লাসেয়া শহরের খুবই নিকটবর্তী জায়গা।
9 এভাবে অনেক সময় নষ্ট হয়েছিল। উপবাস-পর্ব শেষ হওয়ার পরে সমুদ্রযাত্রা বিপদসংকুল হয়ে উঠেছিল। তাই পৌল তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন,
এই ভাবে অনেকদিন চলে যাওয়ায় ইহুদীদের উপবাসপর্ব্ব পার হয়ে গিয়েছিল এবং জলযাত্রা খুবই সঙ্কটজনক হয়ে পড়ায় পৌল তাদের পরামর্শ দিলেন।
10 “মহাশয়েরা, আমি দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সমুদ্রযাত্রা দুর্দশাজনক হবে, জাহাজ ও মালপত্রের প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি হবে, আবার আমাদেরও প্রাণসংশয় হতে পারে।”
১০এবং বললেন, মহাশয়েরা, আমি দেখতে পাচ্ছি যে, এই জলযাত্রায় অনেক অনিষ্ট ও ক্ষতি হবে, তা শুধুমাত্র জিনিসপত্র ও জাহাজের নয়, আমাদেরও প্রাণহানি হবে।
11 কিন্তু শত-সেনাপতি, পৌলের কথায় কান না দিয়ে, নাবিকের ও জাহাজের মালিকের পরামর্শ মেনে চললেন।
১১কিন্তু শতপতি পৌলের কথা অপেক্ষা ক্যাপ্টেন ও জাহাজের মালিকের কথায় বেশি মনোযোগ দিলেন।
12 যেহেতু বন্দরটি শীতকাল কাটানোর জন্য উপযুক্ত ছিল না তাই অধিকাংশ লোকই সমুদ্রযাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। তারা আশা করছিল যে ফিনিক্সে পৌঁছে সেখানে শীতকাল কাটাবে। সেটা ছিল ক্রীটের একটি বন্দর, যার দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দুই দিকই ছিল খোলা।
১২আর ঐ পোতাশ্রয়ে শীতকাল কাটাবার জন্য সুবিধা না হওয়ায় অধিকাংশ লোক সেখান থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিল যেন কোনোও প্রকারে ফৈনীকা শহরে পৌঁছে সেখানে শীতকাল অতিবাহিত করতে পারে। এই জায়গা ক্রীতীর এক পোতাশ্রয়, এটা উত্তরপূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব অভিমুখী।
13 যখন দক্ষিণ দিক থেকে হালকা এক বাতাস বইতে লাগল, তারা ভাবল যে তারা যা চেয়েছিল তাই হয়েছে। ফলে তারা নোঙর তুলে ক্রীটের উপকূল বরাবর যাত্রা করল।
১৩পরে যখন দক্ষিণ বায়ু হালকা ভাবে বইতে লাগল তখন তারা ভাবলো যে, তারা যা চায় তা পেয়েছে সুতরাং তারা ক্রীতীর কূলের নিকট দিয়ে নোঙ্গর নামিয়ে জাহাজ চলতে লাগল।
14 কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই উরাকুলো নামে প্রচণ্ড এক ঘূর্ণিঝড় দ্বীপের দিক থেকে আছড়ে পড়ল।
১৪কিন্তু অল্প দিন পর দীপের উপকূল হতে উরাকুলো (আইলা) নামে এক শক্তিশালী ঝড় আঘাত করতে লাগল।
15 জাহাজটি ঝড়ের মুখে পড়ল এবং বাতাসের মধ্য দিয়ে যেতে পারল না। তাই আমরা তা ভেসে যেতে দিলাম।
১৫তখন জাহাজ ঝড়ের মধ্যে পড়ে বায়ুর প্রতিরোধ করতে না পারায় আমরা জাহাজটি প্রতিকূলে ভেসে যেতে দিলাম।
16 যখন আমরা কৌদা নামের ছোটো একটি দ্বীপের আড়াল দিয়ে যাচ্ছিলাম, আমরা অনেক কষ্টে জাহাজের জীবন-রক্ষাকারী নৌকাটি নিজেদের আয়ত্তে আনতে পারলাম।
১৬পরে কৌদা নামে একটি ছোট দ্বীপের আড়ালে আড়ালে চলে অনেক কষ্টে নৌকাটি নিজেদের বশে আনতে পারলাম।
17 মাঝিমাল্লারা যখন সেটাকে পাটাতনের উপরে তুলল, তারা নিচ থেকে দড়ি দিয়ে সেটাকে জাহাজের সঙ্গে বাঁধল। সূর্তির বালির চড়ায় আটকে পড়ার ভয়ে তারা সমুদ্রে নোঙর নামিয়ে দিল এবং জাহাজটিকে ভেসে যেতে দিল।
১৭তখন নাবিকরা সেটা তুলে নিয়ে নানা উপায়ে জাহাজের পাশে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলো; আর সুতি নামক চড়াতে গিয়ে যেন না পড়ে তার ভয়ে নোঙ্গর নামিয়ে চলল।
18 আমরা ঝড়ের এমন প্রচণ্ড দাপটের মুখে পড়লাম যে পরের দিন তারা জাহাজের মালপত্র ফেলে দিতে লাগল।
১৮আমরা অতিশয় ঝড়ের মধ্যে পড়ায় পরদিন তারা মালপত্র জলে ফেলে দিতে লাগল।
19 তৃতীয় দিনে তারা নিজের হাতে জাহাজের সাজসরঞ্জাম জলে ফেলে দিল।
১৯তৃতীয় দিনের নাবিকরা তাদের নিজেদের জিনিসপত্র ফেলে দিল।
20 যখন অনেকদিন পর্যন্ত সূর্য বা আকাশের তারা দেখা গেল না এবং ঝড়ের তাণ্ডব অব্যাহত রইল, আমরা বেঁচে থাকার সব আশা ছেড়ে দিলাম।
২০যখন অনেকদিন যাবৎ সূর্য্য এবং তারা না দেখতে পাওয়ায় এবং ভারী ঝড় ও বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমাদের রক্ষা পাওয়ার সমস্ত আশা ধীরে ধীরে চলে গেল।
21 লোকেরা অনেকদিন অনাহারে থাকার পর, পৌল তাদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “মহাশয়েরা, আমার পরামর্শ গ্রহণ করে ক্রীট থেকে আপনাদের যাত্রা না করাই উচিত ছিল; তাহলে আপনাদের এই ক্ষয়ক্ষতি হত না।
২১যখন সকলে অনেকদিন অনাহারে থাকলো, পৌল তাদের মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, মহাশয়েরা, আমার কথা মেনে যদি ক্রীতী হতে জাহাজ না ছেড়ে আসতেন তবে এই ক্ষতি এবং অনিষ্ট হতো না।
22 কিন্তু এখন আমি আপনাদের অনুনয় করছি, আপনারা সাহস রাখুন, কারণ আপনাদের কারও প্রাণহানি হবে না, কেবলমাত্র জাহাজটি ধ্বংস হবে।
২২এখন আপনাদের উৎসাহিত করি যে আপনারা সাহস করুন, কারণ আপনাদের কারও প্রাণহানি হবে না কিন্তু শুধুমাত্র জাহাজের ক্ষতি হবে।
23 আমি যে ঈশ্বরের দাস ও আমি যাঁর উপাসনা করি, তাঁর এক দূত গত রাত্রে আমার পাশে দাঁড়িয়ে
২৩কারণ আমি যে ঈশ্বরের লোক এবং যাঁর আরাধনা করি, তাঁর এক দূত গত রাত্রিতে আমার কাছে দাঁড়িয়ে বললেন,
24 বললেন, ‘পৌল, তুমি ভয় পেয়ো না। তোমাকে কৈসরের সামনে বিচারের জন্য উপস্থিত হতেই হবে। আর ঈশ্বর দয়া করে যারা তোমার সঙ্গে সমুদ্রযাত্রা করছে, তাদের সকলের জীবন তোমায় দান করেছেন।’
২৪পৌল, ভয় করো না, কৈসরের সামনে তোমাকে দাঁড়াতে হবে। এবং দেখো, যারা তোমার সঙ্গে যাচ্ছে ঈশ্বর তাদের সবাইকেই তোমায় অনুগ্রহ করেছেন।
25 সেই কারণে মহাশয়েরা সাহস রাখুন, কারণ ঈশ্বরের উপরে আমার বিশ্বাস আছে যে, তিনি আমার কাছে যেমন ব্যক্ত করেছেন, তেমনই ঘটবে।
২৫অতএব মহাশয়েরা সাহস করুন, কারণ ঈশ্বরে আমার এমন বিশ্বাস আছে যে, আমার নিকটে যেমন বলা হয়েছে তেমন হবে।
26 তবুও, আমাদের কোনো দ্বীপে গিয়ে উঠতেই হবে।”
২৬কিন্তু কোনও দ্বীপে গিয়ে আমাদের পড়তে হবে।
27 চোদ্দো দিন পরে রাত্রিবেলায়, আমরা তখনও আদ্রিয়া সমুদ্রের উপর দিয়ে ভেসে চলেছি, এমন সময়ে, প্রায় মাঝরাতে, নাবিকরা অনুমান করল যে তারা কোনও ডাঙার কাছাকাছি এসে পড়েছে।
২৭এই ভাবে আমরা আদ্রিয়া সমুদ্রে ধীরে ধীরে চলতে চলতে যখন চতুর্দ্দশ রাত্রি উপস্থিত হলো, তখন নাবিকরা অনুমান করতে লাগলো যে এখন প্রায় মধ্য রাত্রি এবং কোনও দেশের নিকট পৌঁছেছে।
28 তারা মেপে দেখল যে, জলের গভীরতা একশো কুড়ি ফুট। অল্প কিছুক্ষণ পরে তারা আবার মেপে দেখল, জলের গভীরতা নব্বই ফুট।
২৮আর তারা জল মেপে বিশ বাঁউ জল পেলো; একটু পরে পুনরায় জল মেপে পনের বাঁউ পেলো।
29 পাথরের গায়ে আছড়ে পরার ভয়ে তারা জাহাজের পিছন দিক থেকে চারটি নোঙর ফেলে দিয়ে দিনের আলোর জন্য প্রার্থনা করতে লাগল।
২৯তখন আমরা যেন কোন পাথরময় স্থানে গিয়ে না পড়ি সেই ভয়ে তারা জাহাজের পিছন দিকে চারটি নোঙ্গর ফেলে প্রার্থনা করে দিনের র অপেক্ষায় থাকলো।
30 আর জাহাজ থেকে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে নাবিকেরা জাহাজের সামনের দিকে কয়েকটি নোঙর নামিয়ে দেওয়ার ছল করল ও সমুদ্রে জীবন-রক্ষাকারী নৌকাটিকে নামিয়ে দিল।
৩০নাবিকরা জাহাজ থেকে পালাবার চেষ্টা করছিল এবং গলহীর কিছু আগে নোঙর ফেলবার ছল করে নৌকাটি সমুদ্রে নামিয়ে দিয়েছিল,
31 পৌল তখন শত-সেনাপতি ও সৈন্যদের বললেন, “এই লোকেরা জাহাজে না থাকলে আপনারা কিছুতেই রক্ষা পাবেন না।”
৩১কিন্তু পৌল শতপতিকে ও সেনাদের বললেন ওরা জাহাজে না থাকলে আপনারা রক্ষা পাবেন না।
32 তখন সৈন্যরা নৌকার দড়ি কেটে দিয়ে সেটাকে জলে পড়ে যেতে দিল।
৩২তখন সেনারা নৌকার দড়ি কেটে সেটি জলে পড়তে দিল।
33 ভোরের ঠিক আগে, পৌল তাদের সবাইকে কিছু খেয়ে নেওয়ার জন্য অনুনয় করলেন। তিনি বললেন, “গত চোদ্দো দিন যাবৎ আপনারা ক্রমাগত উদ্বেগের মধ্যে আছেন এবং অনাহারে কাটিয়েছেন, আপনারা কিছুই আহার করেননি।
৩৩পরে দিন হয়ে আসছে এমন দিন পৌল সকল লোককে কিছু খাবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, আজ চৌদ্দ দিন হলো, আপনারা অপেক্ষা করে আছেন এবং না খেয়ে আছেন, কিছুই না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
34 এখন কিছু খাওয়ার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। বেঁচে থাকার জন্য আপনাদের খাবার প্রয়োজন আছে। আপনাদের একজনের মাথার একটি চুলও নষ্ট হবে না।”
৩৪অতএব অনুরোধ করি, বেঁচে থাকার জন্য কিছু খান, আর আপনাদের কারও মাথার একটিও কেশ নষ্ট হবে না।
35 একথা বলার পর, তিনি কিছু রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর তা ভেঙে তিনি খেতে লাগলেন।
৩৫এই বলে পৌল রুটি নিয়ে সকলের সামনে ঈশ্বরের ধন্যবাদ দিলেন, পরে সেটি ভেঙে ভোজন করতে শুরু করলেন।
36 এতে তারা সকলেই উৎসাহিত হয়ে কিছু কিছু খাবার গ্রহণ করল।
৩৬তখন সকলে সাহস পেলেন এবং নিজেরাও গেলেন।
37 জাহাজে আমরা সর্বমোট দুশো ছিয়াত্তর জন ছিলাম।
৩৭সেই জাহাজে আমরা সবশুদ্ধ দুশো ছিয়াত্তর লোক ছিলাম।
38 তারা যখন নিজেদের ইচ্ছামতো পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করল, তারা খাদ্যশস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজের ভার হালকা করল।
৩৮সকলে খেয়ে তৃপ্ত হলে, পরে তারা সমস্ত গম সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজের ভার হালকা করলো।
39 দিনের আলো ফুটে উঠলে তারা জায়গাটা চিনতে পারল না। কিন্তু তারা একটি উপসাগর দেখতে পেল, যার তীর বালিতে ভর্তি ছিল। তারা স্থির করল, সম্ভব হলে তারা জাহাজটিকে চড়ায় আটকে দেবে।
৩৯দিন হলে তারা সেই ডাঙা জায়গা চিনতে পারল না। কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেল, যার বালিময় চর ছিল; তারা তখন আলোচনা করলো যদি পারে, তবে সেই চরের উপরে যেন জাহাজ তুলে দেয়।
40 নোঙরগুলি কেটে দিয়ে তারা সেগুলি সমুদ্রে ফেলে দিল। সেই সঙ্গে তারা হালের সঙ্গে বাঁধা দড়িগুলিও খুলে দিল। এরপর তারা বাতাসের অনুকূলে পাল তুলে দিয়ে তীরের দিকে এগিয়ে চলল।
৪০তারা নোঙ্গর সকল কেটে সমুদ্রে ত্যাগ করলো এবং সঙ্গে সঙ্গে হালের বাঁধন খুলে দিল; পরে বাতাসের সামনে সামনের দিকের পাল তুলে সেই বালিময় তীরের দিকে চলতে লাগলো।
41 কিন্তু জাহাজ একটি বালির চড়ায় ধাক্কা মারল এবং আটকে গেল। জাহাজের সামনের দিকটি জোরে ধাক্কা মারল ও তা অচল হয়ে গেল। কিন্তু পিছনের দিকটি ঢেউয়ের প্রবল আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে গেল।
৪১কিন্তু দুই দিকে উত্তাল জল আছে এমন জায়গায় গিয়ে পড়াতে চড়ার উপর জাহাজ আটকে গেল, তাতে জাহাজের সামনের দিকটা বেঁধে গিয়ে অচল হয়ে গেল, কিন্তু পিছন দিকটা প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে যেতে লাগলো।
42 বন্দিরা কেউ যেন সাঁতার কেটে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য সৈন্যরা তাদের হত্যা করার পরামর্শ করল।
৪২তখন সেনারা বন্দিদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা করলো, যাতে কেউ সাঁতার দিয়ে পালিয়ে না যায়।
43 কিন্তু শত-সেনাপতি পৌলের প্রাণ বাঁচানোর ইচ্ছায় তাদের সেই পরিকল্পনা কার্যকর হতে দিলেন না। তিনি আদেশ দিলেন, যারা সাঁতার জানে, প্রথমে তারাই যেন জলে ঝাঁপ দিয়ে তীরে ওঠে।
৪৩কিন্তু শতপতি পৌলকে রক্ষা করবার জন্য তাদের সেই পরিকল্পনা বন্ধ করলেন এবং আদেশ দিলেন, যারা সাঁতার জানে, তারা আগে লাফ দিয়ে ডাঙায় উঠুক;
44 অবশিষ্ট সকলে যেন তক্তা বা জাহাজের ভাঙা অংশ নিয়ে সেখানে পৌঁছায়। এভাবে প্রত্যেকেই নিরাপদে তীরে পৌঁছে গেল।
৪৪আর বাকি সকলে তক্তা বা জাহাজের যা পায়, তা ধরে ডাঙায় উঠুক। এই ভাবে সবাই ডাঙায় উঠে রক্ষা পেলো।

< প্রেরিত 27 >