< শমূয়েলের দ্বিতীয় বই 5 >

1 ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠী হিব্রোণে দাউদের কাছে এসে বলল, “আমরা আপনারই রক্তমাংস।
পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসে বলল, “দেখুন, আমরা আপনার হাড় ও মাংস৷
2 অতীতে, শৌল যখন আমাদের উপর রাজা ছিলেন, আপনিই তো ইস্রায়েলের সামরিক অভিযানে তাদের নেতৃত্ব দিতেন। সদাপ্রভু আপনাকে বললেন, ‘তুমি আমার প্রজা ইস্রায়েলের পালক হবে, ও তুমিই তাদের শাসক হবে।’”
আগে যখন শৌল আমাদের রাজা ছিলেন, তখন আপনিই ইস্রায়েলকে বাইরে ও ভিতরে নিয়ে যেতেন৷ আর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছিলেন, ‘তুমিই আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবে ও ইস্রায়েলের নায়ক হবে৷’”
3 ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই যখন হিব্রোণে রাজা দাউদের কাছে এলেন, রাজা তখন সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে হিব্রোণে তাদের সাথে একটি চুক্তি করলেন, ও তারা দাউদকে ইস্রায়েলের উপর রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন।
এই ভাবে ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই হিব্রোণে রাজার কাছে আসলেন; তাতে দায়ূদ রাজা হিব্রোণে সদাপ্রভুর সামনে তাঁদের সঙ্গে নিয়ম করলেন এবং তাঁরা ইস্রায়েলের উপরে দায়ূদকে রাজপদে অভিষিক্ত করলেন৷
4 দাউদ যখন রাজা হলেন তখন তাঁর বয়স তিরিশ বছর, ও তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন।
দায়ূদ ত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন৷
5 হিব্রোণে যিহূদার উপর তিনি সাত বছর ছয় মাস রাজত্ব করলেন, এবং জেরুশালেমে ইস্রায়েল ও যিহূদার উপর তিনি তেত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন।
তিনি হিব্রোণে যিহূদার উপরে সাত বছর ছমাস রাজত্ব করেন; পরে যিরূশালেমে সমস্ত ইস্রায়েল ও যিহূদার উপরে তেত্রিশ বছর রাজত্ব করেন৷
6 রাজামশাই ও তাঁর লোকজন সেই যিবূষীয়দের আক্রমণ করার জন্য জেরুশালেমের দিকে যুদ্ধযাত্রা করলেন, যারা সেখানে বসবাস করত। যিবূষীয়রা দাউদকে বলল, “আপনি এখানে ঢুকতে পারবেন না; এমনকি অন্ধ ও খঞ্জ লোকরাও আপনাকে তাড়িয়ে দেবে।”
পরে রাজা ও তাঁর লোকেরা দেশে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে যিরূশালেমে যাত্রা করলেন; তাতে তারা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই জায়গায় প্রবেশ করতে পারবে না, অন্ধ ও খোঁড়ারাই তোমাকে তাড়িয়ে দেবে৷” তারা ভেবেছিল, দাযূদ এই জায়গায় প্রবেশ করতে পারবেন না৷
7 তা সত্ত্বেও, দাউদ সিয়োনের দুর্গটি দখল করলেন—যেটি হল দাউদ-নগর।
কিন্তু দায়ূদ সিয়োনের দুর্গ দখল করলেন; সেটাই দায়ূদ-নগর৷
8 সেদিন দাউদ বললেন, “যে কেউ যিবূষীয়দের অধিকার করবে, তাকে সেইসব ‘খঞ্জ ও অন্ধের’ কাছে পৌঁছানোর জন্য জল-সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করতে হবে, যারা দাউদের শত্রুবিশেষ।” এজন্যই তারা বলে, “‘অন্ধ ও খঞ্জেরা’ প্রাসাদে প্রবেশ করবে না।”
ঐ দিনের দায়ূদ বললেন, “যে কেউ যিবূষীয়দেরকে আঘাত করে, সে জলস্রোত দিয়ে গিয়ে দায়ূদের প্রাণের ঘৃণিত খোঁড়া ও অন্ধদের আঘাত করুক৷” যেহেতু, লোকে বলে, “অন্ধ ও খোঁড়ারা রয়েছে, সে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করবে না৷”
9 দাউদ পরে দুর্গটিকেই নিজের বাসস্থান বানিয়ে সেটির নাম দিলেন দাউদ-নগর। তিনি ভিতরের দিকে চাতাল থেকে সেটির চারপাশ ঘিরে দিলেন।
আর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করে তার নাম রাখলেন দায়ূদ-নগর এবং দায়ূদ মিল্লো থেকে ভিতর পর্যন্ত চারিদিকে প্রাচীর গাঁথলেন৷
10 তিনি দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
১০পরে দায়ূদ ক্রমশ মহান হয়ে উঠলেন, কারণ বাহিনীগণের ঈশ্বর সদাপ্রভূ, তাঁর সহবর্ত্তী ছিলেন৷
11 আবার সোরের রাজা হীরম দাউদের কাছে দেবদারু জাতীয় কাঠের গুঁড়ি, ছুতোর ও রাজমিস্ত্রি সমেত কয়েকজন দূত পাঠিয়ে দিলেন, এবং তারা দাউদের জন্য এক প্রাসাদ তৈরি করল।
১১আর সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে দূতদেরকে এবং এরস কাঠ, ছুতোর ও রাজমিস্ত্রীদেরকে পাঠালেন; তারা দায়ূদের জন্য এক বাড়ি তৈরী করল৷
12 তখন দাউদ বুঝতে পেরেছিলেন যে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর তাঁর রাজপদ স্থির করেছেন এবং তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের জন্য তাঁর রাজ্যের উন্নতি করেছেন।
১২তখন দায়ূদ বুঝলেন যে, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের রাজপদে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং নিজের প্রজা ইস্রায়েলের জন্য তাঁর রাজ্যের উন্নতি করেছেন৷
13 হিব্রোণ ছেড়ে আসার পর দাউদ জেরুশালেমে আরও কয়েকজনকে স্ত্রী ও উপপত্নীরূপে গ্রহণ করলেন, এবং তাঁর আরও কয়েকটি ছেলেমেয়ের জন্ম হল।
১৩আর দায়ূদ হিব্রোণ থেকে আসার পর যিরূশালেমে আরও উপপত্নী ও স্ত্রী গ্রহণ করলেন, তাতে দায়ূদের আরও ছেলে মেয়ে হল৷
14 সেখানে তাঁর যেসব সন্তানের জন্ম হল তারা হল: শম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
১৪যিরূশালেমে তাঁর যে সব ছেলে জন্মাল, তাদের নাম; সম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
15 যিভর, ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়,
১৫যিভর, ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়,
16 ইলীশামা, ইলিয়াদা ও ইলীফেলট।
১৬ইলীশামা, ইলিয়াদা ও ইলীফেলট৷
17 ফিলিস্তিনীরা যখন শুনতে পেয়েছিল দাউদ ইস্রায়েলের উপর রাজারূপে অভিষিক্ত হয়েছেন, তখন সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তারা তাঁকে খুঁজতে শুরু করল, কিন্তু দাউদ সেকথা শুনে দুর্গে নেমে গেলেন।
১৭পলেষ্টীয়রা যখন শুনল যে, দায়ূদ ইস্রায়েলের উপরে রাজপদে অভিষিক্ত হয়েছেন, তখন পলেষ্টীয় সব লোক দায়ূদের খোঁজে উঠে এল; দায়ূদ তা শুনে দুর্গে নেমে গেলেন৷
18 ফিলিস্তিনীরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়েছিল;
১৮আর পলেষ্টীয়েরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল৷
19 দাউদ তখন সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, “আমি কি গিয়ে ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করব? তুমি কি আমার হাতে তাদের সঁপে দেবে?” সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন, “যাও, কারণ আমি অবশ্যই তোমার হাতে ফিলিস্তিনীদের সঁপে দেব।”
১৯তখন দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে উঠে যাব? তুমি আমার হাতে তাদেরকে সমর্পণ করবে?” সদাপ্রভু দায়ূদকে বললেন, “যাও, আমি অবশ্যই তোমার হাতে পলেষ্টীয়দেরকে সমর্পণ করব৷”
20 তখন দাউদ বায়াল-পরাসীমে গেলেন, ও সেখানে তিনি তাদের পরাজিত করলেন। তিনি বললেন, “বাঁধ ফেটে জল যেভাবে বেগে বেরিয়ে যায়, সদাপ্রভুও আমার সামনে আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে সেভাবে ফাটিয়েছেন।” তাই সেই স্থানটির নাম হল বায়াল-পরাসীম।
২০পরে দায়ূদ বাল-পরাসীমে আসলেন ও দায়ূদ তাদেরকে আঘাত করলেন, আর বললেন, “সদাপ্রভু আমার সামনে আমার শত্রুদেরকে সেতু ভাঙার মত করে ভেঙে ফেললেন,” এই জন্য সেই জায়গার নাম বাল-পরাসীম [ভয়ঙ্করী বন্যা কবলিত স্থান] রাখলেন৷
21 ফিলিস্তিনীরা সেখানেই তাদের দেবদেবীর মূর্তিগুলি ফেলে রেখে গেল এবং দাউদ ও তাঁর লোকজন সেগুলি উঠিয়ে নিয়ে এলেন।
২১সেই জায়গায় তারা নিজেদের প্রতিমাগুলো ফেলে গিয়েছিল, আর দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা সেগুলো তুলে নিয়ে গেলেন৷
22 আরও একবার ফিলিস্তিনীরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়েছিল;
২২পরে পলেষ্টীয়েরা আবার এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল৷
23 তাই দাউদ সদাপ্রভুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন ও তিনি উত্তর দিলেন, “সরাসরি তোমরা তাদের দিকে যেয়ো না, কিন্তু তাদের পিছন দিকে গিয়ে তাদের ঘিরে ধরো ও চিনার গাছগুলির সামনে গিয়ে তাদের আক্রমণ করো।
২৩তাতে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, আর তিনি বললেন, “তুমি যেও না, কিন্তু ওদের পিছনে ঘুরে এসে তুঁত গাছের সামনে ওদেরকে আক্রমণ কর৷
24 যে মুহূর্তে তোমরা চিনার গাছগুলির মাথায় কুচকাওয়াজের শব্দ শুনবে, তাড়াতাড়ি এগিয়ে যেয়ো, কারণ এর অর্থ হল এই যে ফিলিস্তিনী সৈন্যদলকে আক্রমণ করার জন্য সদাপ্রভুই তোমাদের আগে চলে গিয়েছেন।”
২৪সেই সব তুঁত গাছের ওপরে সৈন্য যাওয়ার আওয়াজ শুনলে তুমি জেগে উঠবে; কারণ তখনই সদাপ্রভু পলেষ্টীয়দের সৈন্যকে আঘাত করার জন্য তোমার সামনে এগিয়ে গেছেন৷”
25 অতএব সদাপ্রভু দাউদকে যে আদেশ দিলেন, তিনি সেই অনুসারেই কাজ করলেন এবং তিনি গিবিয়োন থেকে শুরু করে গেষর পর্যন্ত ফিলিস্তিনীদের আঘাত করে গেলেন।
২৫দায়ূদ সদাপ্রভুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন৷ গেবা থেকে গেষরের কাছ পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের আঘাত করলেন৷

< শমূয়েলের দ্বিতীয় বই 5 >