< দ্বিতীয় রাজাবলি 12 >
1 যেহূর রাজত্বকালের সপ্তম বছরে যোয়াশ রাজা হলেন, এবং তিনি জেরুশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া; তিনি বের-শেবা নগরে থাকতেন।
১যেহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে যিহোয়াশ রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া, তিনি বের-শেবা নগরের মেয়ে।
2 যতদিন যাজক যিহোয়াদা যোয়াশকে উপদেশ দিলেন, ততদিন তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ঠিক, তাই করে গেলেন।
২যিহোয়াদা যাজক যতদিন যিহোয়াশকে পরামর্শ দিতেন, ততদিন যিহোয়াশ সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন।
3 প্রতিমাপুজোর উঁচু উঁচু স্থানগুলি অবশ্য সরানো হয়নি; লোকজন সেই স্থানগুলিতে তখনও বলিদান উৎসর্গ করেই যাচ্ছিল ও ধূপও পুড়িয়ে যাচ্ছিল।
৩তবুও উপাসনার উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হল না, লোকেরা তখনও সেখানে বলিদান করত ও ধূপ জ্বালাত।
4 যোয়াশ যাজকদের বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরে যত অর্থ—জনগণনার মাধ্যমে, ব্যক্তিগত মানত পূরণের জন্য এবং স্বেচ্ছায় মন্দিরে আনা হয়—তা সংগ্রহ করে রাখুন।
৪পরে যিহোয়াশ যাজকদের বললেন, “সদাপ্রভুর গৃহে পবিত্র দান হিসাবে যে টাকা আনা হয়, তা হলো করের টাকা, প্রত্যেকের হিসাব অনুযায়ী প্রাণীর মূল্য স্বরূপ নির্ধারিত টাকা ও মানুষের মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য আনা রূপা,
5 কোষাধ্যক্ষদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে প্রত্যেক যাজক অর্থ নিয়ে মন্দির যেখানে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই স্থানগুলি মেরামত করান।”
৫এই সমস্ত টাকা যাজকেরা নিজের পরিচিত লোকের হাত থেকে গ্রহণ করুক এবং সেগুলি দিয়ে গৃহটি সারাই করুক, যেখানে মেরামতের প্রয়োজন।”
6 কিন্তু যোয়াশের রাজত্বকালের তেইশ বছর পর্যন্ত যাজকেরা সেই মন্দির মেরামত করেননি।
৬কিন্তু যিহোয়াশ রাজার তেইশ বছর পর্যন্ত যাজকেরা সেই গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করেন নি।
7 তাই রাজা যোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কেন মন্দিরের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলি মেরামত করছেন না? কোষাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আর অর্থ নেবেন না, কিন্তু মন্দির মেরামতের জন্য তাদের হাতে অর্থ তুলে দিন।”
৭তাতে রাজা যিহোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে বললেন, “তোমরা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করছ না কেন? তাই এখন তোমরা পরিচিত লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না, কিন্তু তা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামতের কাজে তা দিয়ে দেবে।”
8 যাজকেরা রাজি হলেন যে তারা লোকজনের কাছ থেকে আর অর্থ সংগ্রহ করবেন না এবং তারা নিজেরাও মন্দির মেরামত করবেন না।
৮তখন যাজকেরা রাজি হলেন যে, তারা লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না এবং গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের কাজও করবেন না।
9 যাজক যিহোয়াদা একটি সিন্দুক নিয়ে সেটির ঢাকনায় একটি ফুটো করে দিলেন। তিনি সেটি নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন যজ্ঞবেদির পাশে, ডানদিকে ঠিক সেখানে, যেখান দিয়ে লোকজন সদাপ্রভুর মন্দিরে ঢোকে। যত অর্থ সদাপ্রভুর মন্দিরে আনা হত, মন্দিরের প্রবেশদ্বার পাহারা দেওয়ার কাজে নিযুক্ত যাজকেরা সেইসব অর্থ সিন্দুকে এনে রাখতেন।
৯কিন্তু যিহোয়াদা যাজক একটি সিন্দুক নিলেন ও তার দালাতে একটি ছিদ্র করে যজ্ঞবেদীর কাছে সদাপ্রভুর গৃহের ঢোকার জায়গার ডান দিকে রাখলেন; আর ফটকের পাহারায় নিযুক্ত যাজকেরা সদাপ্রভুর গৃহে আনা সব টাকা তার মধ্যে রাখত।
10 যখনই তারা দেখতেন সিন্দুকে অনেক অর্থ জমে গিয়েছে, তখন রাজার সচিব ও মহাযাজক এসে সদাপ্রভুর মন্দিরে জমা পড়া অর্থ গুনে তা থলিতে ভরে রাখতেন।
১০পরে যখন তারা দেখতে পেল সেই সিন্দুকে অনেক টাকা জমা হয়েছে, তখন রাজার লেখক ও মহাযাজক এসে সদাপ্রভুর গৃহে আনা ঐ টাকাগুলি থলিতে করে গুনে রাখতেন।
11 মেরামতিতে কত খরচ হবে তা স্থির হয়ে যাওয়ার পর তারা সেই পরিমাণ অর্থ মন্দিরের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা লোকদের হাতে তুলে দিতেন। সেই অর্থ দিয়ে তারা সদাপ্রভুর মন্দিরে যারা কাজ করত, অর্থাৎ ছুতোর ও ঠিকাদার,
১১পরে তাঁরা সেই পরিমাপের টাকা কর্মকারীদের হাতে, সদাপ্রভুর গৃহের তদারকের জন্য নিযুক্ত করা লোকদের হাতে দিতেন, আর তাঁরা সদাপ্রভুর গৃহের ছুতোর মিস্ত্রি ও ঘর তৈরী করবার মিস্ত্রি,
12 রাজমিস্ত্রি ও যারা পাথর কাটার কাজ করত, তাদের বেতন দিত। সদাপ্রভুর মন্দির মেরামতির জন্য তারা কাঠ ও মাপজোপ করে কাটা পাথরের চাঙড় কিনেছিল, এবং মন্দিরটি আগের দশায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সব খরচপত্র করল।
১২এবং রাজমিস্ত্রি ও পাথর কাটবার মিস্ত্রিদের দিতেন। এছাড়া সদাপ্রভুর গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের জন্য কাঠ ও কাটা পাথর কেনার জন্য এবং গৃহ সারাইয়ের জন্য যা যা লাগত, সেই সব কিছুর জন্য খরচ করতেন।
13 মন্দিরে যত অর্থ আনা হল, তা সদাপ্রভুর মন্দিরের জন্য রুপোর গামলা, পলতে ছাঁটবার যন্ত্র, জল ছিটানোর বাটি, শিঙা অথবা সোনা বা রুপোর অন্য কোনো কিছু তৈরির কাজে খরচ করা হয়নি;
১৩কিন্তু সদাপ্রভুর গৃহের জন্য রূপার পেয়ালা, বাতি পরিষ্কার করবার চিম্টা, বাটি, তূরী, কোনো সোনার বা রূপার পাত্র সদাপ্রভুর গৃহে আনা সেই রূপা দিয়ে করা হল না;
14 সেই অর্থ সেইসব কাজের লোককে দেওয়া হল, যারা মন্দির মেরামতির কাজে তা ব্যবহার করল।
১৪কারণ তাঁরা কর্মকারীদেরকেই সেই টাকা দিতেন এবং তাঁরা তা নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহ সারালেন।
15 কাজের লোকদের দেওয়ার জন্য তারা যাদের সেই অর্থ দিলেন, তাদের কাছে তাদের অর্থের কোনও হিসেব নিতে হয়নি, কারণ তারা সম্পূর্ণ সততা নিয়ে কাজ করল।
১৫কিন্তু তাঁরা কর্মকারীদেরকে দেবার জন্য যাঁদের হাতে টাকা দিতেন, তাঁদের সঙ্গে হিসাব করতেন না, কারণ তাঁরা সম্পূর্ণ বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন।
16 দোষার্থক-নৈবেদ্য ও পাপার্থক বলি থেকে সংগৃহীত অর্থ সদাপ্রভুর মন্দিরে আনা হয়নি; তা যাজকদেরই হল।
১৬দোষার্থক ও পাপার্থক বলির যে টাকা, তা সদাপ্রভুর গৃহে আনা হত না; সেগুলি যাজকদেরই হত।
17 মোটামুটি এসময় অরামের রাজা হসায়েল গিয়ে গাত আক্রমণ করে তা দখল করে নিয়েছিলেন। পরে তিনি জেরুশালেম আক্রমণ করার জন্যও মুখ ঘুরিয়েছিলেন।
১৭ঐ দিনের অরামের রাজা হসায়েল গিয়ে গাৎ আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিলেন; তারপর তিনি যিরূশালেম আক্রমণ করবার জন্য এগিয়ে গেলেন।
18 কিন্তু যিহূদার রাজা যোয়াশ তাঁর পূর্বসূরীদের—যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয়ের—দ্বারা উৎসর্গীকৃত সব পবিত্র জিনিসপত্র এবং তিনি নিজে যেসব উপহারসামগ্রী উৎসর্গীকৃত করলেন, সেগুলি এবং সদাপ্রভুর মন্দিরের কোষাগারে ও রাজপ্রাসাদে যত সোনাদানা ছিল, সব নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, এবং তিনি তখন জেরুশালেম থেকে সরে এলেন।
১৮তাতে যিহূদার রাজা যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের, অর্থাৎ যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয় রাজার ও তাঁর নিজের পবিত্র করা বস্তুগুলি এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভান্ডারের ও রাজবাড়ীর ভান্ডারে যত সোনা পাওয়া গেল, সেই সব নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাতে তিনি যিরূশালেমের সামনে থেকে ফিরে গেলেন।
19 যোয়াশের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, আর তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই?
১৯যোয়াশের বাকি সমস্ত কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাসের বইটিতে কি লেখা নেই?
20 তাঁর কর্মকর্তারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল এবং সিল্লা যাওয়ার পথে বেথ-মিল্লোতে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে হত্যা করল।
২০পরে যোয়াশের দাসেরা উঠে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল এবং সিল্লা যাবার পথে মিল্লো নামে বাড়িতে তাঁকে আঘাত করল।
21 যে কর্মকর্তারা তাঁকে হত্যা করল, তারা হল শিমিয়তের ছেলে যোষাখর ও শোমরের ছেলে যিহোষাবদ। তিনি মারা গেলেন ও দাউদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথেই তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
২১ফলে শিমিয়তের ছেলে যোষাখর ও শোমরের ছেলে যিহোষাবদ, তাঁর দুজন দাস, তাঁকে আঘাত করলে তিনি মারা গেলেন; পরে লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দিল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।