< ২য় করিন্থীয় 12 >
1 আমি অবশ্যই গর্ব করতে থাকব। যদিও লাভজনক কিছু না হলেও আমি প্রভুর কাছ থেকে উপলব্ধ বিভিন্ন দর্শন ও প্রত্যাদেশের কথা বলে যাব।
2 আমি খ্রীষ্টে আশ্রিত একজন মানুষকে জানি, চোদ্দো বছর আগে যিনি তৃতীয় স্বর্গে নীত হয়েছিলেন। তা সশরীরে, না অশরীরে, তা আমি জানি না—ঈশ্বরই জানেন।
3 আর আমি জানি যে এই ব্যক্তি—সশরীরে, না অশরীরে, তা আমি জানি না, ঈশ্বরই জানেন—
4 তাঁকে পরমদেশে তুলে নেওয়া হয়েছিল। তিনি অবর্ণনীয় সব বিষয় শুনতে পেয়েছিলেন, যে বিষয়গুলি বলার অধিকার মানুষকে দেওয়া হয়নি।
5 এরকম ব্যক্তির জন্যই আমি গর্ব করব; কিন্তু আমার দুর্বলতাগুলি ছাড়া আমি নিজের সম্পর্কে কোনো গর্ব করব না।
6 যদিও আমি গর্ব করাকে বেছে নিই, আমি একজন নির্বোধ হব না, কারণ আমি সত্যি কথাই বলব। তবুও আমি সংযত থাকি, যেন আমার মধ্যে কেউ যা দেখে বা আমার কাছে যা শোনে, তার চেয়ে বেশি সে আমাকে কিছু মনে না করে।
7 এই সমস্ত অসাধারণ, মহৎ প্রত্যাদেশের কারণে, আমি যেন গর্বে ফুলেফেঁপে না উঠি, আমার শরীরে এক কাঁটা, শয়তানের এক দূত, দেওয়া হয়েছে যেন সে আমাকে কষ্ট দেয়।
8 আমার কাছ থেকে এটা সরিয়ে নেওয়ার জন্য তিনবার আমি প্রভুর কাছে মিনতি করেছিলাম।
9 কিন্তু তিনি আমাকে বলেছেন, “আমার অনুগ্রহ তোমার পক্ষে যথেষ্ট, কারণ আমার শক্তি দুর্বলতায় সিদ্ধিলাভ করে।” অতএব, আমার দুর্বলতা সম্পর্কে আমি সানন্দে আরও বেশি গর্ব করব, যেন খ্রীষ্টের শক্তি আমার উপরে অবস্থিতি করে।
10 এই কারণে, খ্রীষ্টের জন্য আমি বিভিন্ন দুর্বলতায়, অপমানে, অনটনে, ক্লেশভোগ ও কষ্ট-সংকটে আনন্দ করি, কারণ যখন আমি দুর্বল, তখনই আমি শক্তিমান।
11 আমি নিজেকে নির্বোধ প্রতিপন্ন করেছি, কিন্তু তোমরাই তা করতে আমাকে বাধ্য করেছ। তোমাদের দ্বারা আমার প্রশংসা হওয়া উচিত ছিল, কারণ যদিও আমি কিছু নই, সেই “প্রেরিতশিষ্য-শিরোমণিদের” তুলনায় কিন্তু কোনো অংশে নিকৃষ্ট নই।
12 যেসব বিষয় কোনো প্রেরিতশিষ্যকে চিহ্নিত করে—চিহ্নকাজ, বিস্ময়কর ও অলৌকিক কর্মসকল—অত্যন্ত প্রযত্নের সঙ্গে আমি সেগুলি তোমাদের মধ্যে করেছি।
13 অন্যান্য সব মণ্ডলীর তুলনায় তোমরা কি নিকৃষ্ট হয়েছ? আমি কখনও তোমাদের কাছে বোঝা হইনি, কেবলমাত্র এই বিষয়টি ছাড়া? এই অন্যায়টির জন্য তোমরা আমাকে ক্ষমা করো।
14 এখন, এই তৃতীয়বার, আমি তোমাদের কাছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি। আমি তোমাদের পক্ষে বোঝা হব না, কারণ আমি যা চাই, তা তোমাদের ধনসম্পত্তি নয়, কিন্তু তোমাদেরই চাই। যাই হোক, বাবা-মার জন্য সঞ্চয় করা সন্তানদের উচিত নয়, কিন্তু বাবা-মা সন্তানদের জন্য তা করবে।
15 তাই, আমার যা কিছু আছে, সবই এবং নিজেকেও তোমাদের জন্য সানন্দে ব্যয় করব। আমি যদি তোমাদের বেশি ভালোবাসি, তোমরা কি আমাকে কম ভালোবাসবে?
16 যাই হোক, একথা ঠিক, আমি তোমাদের কাছে বোঝা হইনি। তবুও, চতুর ব্যক্তি আমি নাকি তোমাদের কৌশলে বশ করেছি!
17 যাদের আমি তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম, তাদের কারও মাধ্যমে আমি কি তোমাদের শোষণ করেছি?
18 তোমাদের কাছে যাওয়ার জন্য আমি তীতকে বিনীত অনুরোধ করেছিলাম এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের সেই ভাইকে পাঠিয়েছিলাম। তীত তোমাদের শোষণ করেননি, তাই নয় কি? আমরা উভয়ই কি একই মানসিকতা নিয়ে কাজ করিনি ও একই পথ অনুসরণ করিনি?
19 তোমরা কি এ পর্যন্ত মনে ভাবছ যে, আমরা তোমাদের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি? ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমরা খ্রীষ্টে আশ্রিত মানুষদের মতোই কথা বলছি। প্রিয় বন্ধুরা, আমরা যা কিছু করি, তোমাদের শক্তি জোগানোর জন্যই তা করি।
20 কারণ আমার ভয় হয়, আমি যখন আসব, আমি তোমাদের যেমন দেখতে চাই, তেমন হয়তো দেখতে পাব না এবং তোমরা আমাকে যেমনভাবে দেখতে চাও, তেমন হয়তো দেখতে পাবে না। আমার ভয় হয়, হয়তো কলহবিবাদ, ঈর্ষা, ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ, দলাদলি, অপবাদ, কুৎসা-রটনা, ঔদ্ধত্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা যাবে।
21 আমার আশঙ্কা, আমি যখন আবার আসব, আমার ঈশ্বর তোমাদের সামনে আমাকে নত করবেন। আগে যারা পাপ করেছে অথচ ঘৃণ্য কাজকর্ম, যৌন-পাপ ও লাম্পট্যে জড়িয়ে থাকার জন্য অনুতাপ করেনি, এমন অনেক মানুষের জন্য আমাকে দুঃখ পেতে হবে।