< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 32 >
1 নিষ্ঠাসহকারে হিষ্কিয় এত কিছু করার পর, আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীব এসে যিহূদায় সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছিলেন। সুরক্ষিত নগরগুলি নিজের অধিকারে আনার ভাবনাচিন্তা নিয়ে তিনি সেগুলি ঘেরাও করলেন।
১এই সব কাজ বিশ্বস্তভাবে করবার পরে অশূর রাজা সনহেরীব এসে যিহূদা দেশে প্রবেশ করলেন এবং তিনি আক্রমণ করলেন। তিনি দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহর ও গ্রামগুলো ঘেরাও করলেন, ভাবলেন সেগুলো নিজের জন্য জয় করে নেবেন।
2 হিষ্কিয় যখন দেখেছিলেন যে সন্হেরীব এসে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইছেন,
২যখন হিষ্কিয় দেখলেন সন্হেরীব এসে গেছেন এবং যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য তিনি মন স্থির করেছেন।
3 তখন নগরের বাইরে থাকা জলের উৎসগুলি থেকে আসা জলের স্রোত বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি তাঁর কর্মকর্তা ও সামরিক কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করলেন, এবং তারা তাঁকে সাহায্য করলেন।
৩তখন তিনি তাঁর সেনাপতিদের ও যোদ্ধাদের সঙ্গে পরামর্শ করে শহরের বাইরের ফোয়ারাগুলোর জল বন্ধ করে দেবেন বলে ঠিক করলেন। এটি করার জন্য তাঁরা তাঁকে সাহায্য করলেন।
4 তারা এমন অনেক লোক একত্রিত করলেন, যারা দেশে বয়ে যাওয়া নদীনালার জলস্রোত বন্ধ করে দিয়েছিল। “আসিরিয়ার রাজারা এসে কেন প্রচুর জল পাবে?” তারা বলল।
৪সুতরাং অনেক লোক জড়ো হয়ে সমস্ত ফোয়ারা ও দেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের স্রোত বন্ধ করে দিল। তারা বলল, “অশূর রাজারা এসে কেন এত জল পাবে?”
5 পরে তিনি পরিশ্রম করে প্রাচীরের ভাঙা অংশগুলি মেরামত করলেন ও সেটির উপর মিনার গড়ে দিলেন। সেই প্রাচীরটির বাইরের দিকেও তিনি আরও একটি প্রাচীর তৈরি করলেন এবং দাউদ-নগরের উঁচু চাতালগুলিও আরও মজবুত করে দিলেন। তিনি প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র ও ঢালও বানিয়েছিলেন।
৫হিষ্কিয় দেয়ালের সব ভাঙ্গা অংশগুলো এবং পাহারা দেওয়ার ঘরগুলোর মত উঁচু করে সারাই করে নিজেকে শক্তিশালী করলেন। এছাড়া সেই দেয়ালের বাইরে তিনি আর একটা দেয়াল তৈরী করলেন এবং দায়ূদ শহরের মিল্লো আরও মজবুত করলেন এবং তিনি অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও ঢাল তৈরী করলেন।
6 প্রজাদের উপর তিনি সেনাপতিদের নিযুক্ত করে দিলেন এবং নগরের সিংহদুয়ারের সামনের চকে তাদের একত্রিত করে এই কথা বলে তাদের উৎসাহ দিলেন:
৬তিনি লোকদের উপরে সেনাপতিদের নিযুক্ত করলেন এবং শহরের দরজার বড় জায়গায় তাদের জড়ো করে এই কথা বলে উৎসাহ দিলেন,
7 “তোমরা বলবান ও সাহসী হও। আসিরিয়ার রাজাকে ও তাঁর সাথে থাকা বিশাল সৈন্যদল দেখে তোমরা ভয় পেয়ো না বা হতাশ হোয়ো না, কারণ তাঁর সাথে যে বা যারা আছে, তাদের তুলনায় আমাদের সাথে যিনি আছেন, তাঁর ক্ষমতা অনেক বেশি।
৭“আপনারা শক্তিশালী হন এবং সাহস করুন। অশূর রাজা ও তাঁর বিরাট সৈন্যদল দেখে আপনারা ভয় পাবেন না অথবা হতাশ হবেন না, কারণ তাঁর সঙ্গে যারা আছে তাদের চেয়েও যিনি আমাদের সঙ্গে আছেন তিনি আরও মহান।
8 তাঁর সাথে আছে শুধু মানুষের হাত, কিন্তু আমাদের সাথে আছেন আমাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি আমাদের সাহায্য করতে ও আমাদের হয়ে যুদ্ধ করতেও সক্ষম।” যিহূদার রাজা হিষ্কিয় প্রজাদের যে কথা বললেন, তা শুনে তারা ভরসা পেয়েছিল।
৮তাঁর সঙ্গে রয়েছে কেবল মানুষের শক্তি, কিন্তু আমাদের সাহায্য করতে ও আমাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” লোকেরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কথা শুনে তাঁর কথার উপর নির্ভর করে নিজেরা সান্ত্বনা পেল।
9 পরে, আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীব ও তাঁর সব সৈন্যসামন্ত যখন লাখীশ অবরোধ করে বসেছিলেন, তখন সেখান থেকে তিনি যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের ও জেরুশালেমে উপস্থিত যিহূদার সব প্রজার কাছে এই খবর দিয়ে তাঁর কর্মকর্তাদের জেরুশালেমে পাঠালেন:
৯পরে অশূর রাজা সনহেরীব তাঁর সমস্ত সৈন্যদলের সঙ্গে লাখীশ ঘেরাও করলেন এবং তাঁর কয়েকজন লোককে তিনি যিরূশালেমে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কাছে এবং সেখানে উপস্থিত যিহূদার সমস্ত লোকদের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন,
10 “আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীব একথাই বলেন: তোমরা কীসের উপর ভরসা করে জেরুশালেমে অবরুদ্ধ হয়ে বসে আছ?
১০অশূর রাজা সনহেরীব এই কথা বলছেন, তোমরা কিসের উপর নির্ভর করে আছ যে কারণে তোমরা ঘেরাও হলেও যিরূশালেমেই থাকবে?
11 হিষ্কিয় যখন বলছে, ‘আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই আসিরিয়ার রাজার হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করবেন,’ তখন আসলে সে তোমাদের বিভ্রান্ত করছে, যেন তোমরা ক্ষুধাতৃষ্ণায় মারা যাও।
১১খিদে ও পিপাসায় যাতে তোমরা মর তাই হিষ্কিয় এই কথা বলে কি তোমাদের ভুলাচ্ছে না? তখন সে বলেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই অশূর রাজার হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করবেন।
12 এই হিষ্কিয়ই কি নিজে এই দেবতার পূজার্চনার উঁচু উঁচু স্থান ও বেদিগুলি যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকজনের কাছে এই কথা বলে দূর করে দেয়নি যে, ‘একটিই যজ্ঞবেদির সামনে তোমাদের আরাধনা করতে হবে ও সেটির উপরেই নৈবেদ্য উৎসর্গ করতে হবে’?
১২এই হিষ্কিয় নিজেই কি তার উঁচু জায়গা আর বেদীগুলো ধ্বংস করে দেয় নি? যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের কি সে আদেশ দেয়নি যে, মাত্র একটি বেদির সামনেই তাদের উপাসনা করতে হবে এবং তার উপরই ধূপ জ্বালাতে হবে?
13 “তোমরা কি জানো না, আমি ও আমার পূর্বসূরিরা অন্যান্য দেশের সব প্রজার প্রতি কী করেছি? সেইসব দেশের দেবতারা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশগুলি রক্ষা করতে পেরেছিল?
১৩অন্যান্য দেশের সব জাতিদের প্রতি আমি ও আমার পূর্বপুরুষেরা যা করেছি তা কি তোমরা জান না? সেই দেশের সব জাতির দেবতারা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশ উদ্ধার করতে পেরেছে?
14 আমার পূর্বসূরিরা যেসব দেশ ধ্বংস করে দিলেন, সেইসব দেশের দেবতাদের মধ্যে কে তার প্রজাদের আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছিল? তবে তোমাদের দেবতাই বা কীভাবে আমার হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করবে?
১৪যে জাতিগুলোকে আমার পূর্বপুরুষেরা ধ্বংস করে ফেলেছেন তাদের দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পেরেছিল? তাহলে কি সম্ভব যে তোমাদের ঈশ্বর আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?
15 এখন হিষ্কিয় যেন এভাবে তোমাদের ঠকাতে ও বিভ্রান্ত করতে না পারে। তাকে বিশ্বাস কোরো না, কারণ কোনও দেশের বা রাজ্যের কোনও দেবতা তার প্রজাদের আমার হাত থেকে বা আমার পূর্বসূরীদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। তবে তোমাদের দেবতাই বা কীভাবে আমার হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করবে!”
১৫এখন এইরূপে তোমরা হিষ্কিয়কে তোমাদের প্রতি ছলনা করতে ও ভুলিয়ে রাখতে দিয়ো না। তোমরা তাকে বিশ্বাস কোরো না, কারণ কোনো জাতির বা কোনো রাজ্যের দেবতা আমার কিম্বা আমার পূর্বপুরুষদের হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পারেনি। তাহলে কতটা নিশ্চিত যে, তোমাদের দেবতারা আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?
16 সন্হেরীবের কর্মকর্তারা সদাপ্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তাঁর দাস হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে আরও অনেক কথা বললেন।
১৬সনহেরীবের লোকেরা ঈশ্বর সদাপ্রভু ও তাঁর দাস হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে আরও অনেক কথা বলল।
17 রাজাও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে টিটকিরি দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন, এবং তাঁর বিরুদ্ধে এই কথা বললেন: “ঠিক যেভাবে অন্যান্য দেশের প্রজাদের দেবতারা, তাদের প্রজাদের আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি, সেভাবে হিষ্কিয়ের দেবতাও তার প্রজাদের আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না।”
১৭এছাড়া সন্হেরীব ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অপমান করবার জন্য চিঠিতে তাঁর বিরুদ্ধে এই কথা লিখলেন, “অন্যান্য দেশের জাতিদের দেবতারা যেমন আমার হাত থেকে তাদের লোকদের উদ্ধার করে নি, ঠিক সেইভাবে হিষ্কিয়ের ঈশ্বরও আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করবে না।”
18 জেরুশালেম নগরটি দখল করার লক্ষ্যে প্রাচীরের উপর দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে ভয় দেখিয়ে ও ভীতসন্ত্রস্ত করে দিয়ে তখন তারা হিব্রু ভাষায় চিৎকার করে কথা বলল।
১৮তাঁরা ইব্রীয় ভাষায় চিৎকার করে ঐ কথা বলতে লাগল, যাতে যিরূশালেমের যে লোকেরা দেয়ালের উপরে ছিল তারা ভীষণ ভয় পায় আর যাতে তারা শহরটা দখল করে নিতে পারে।
19 যারা মানুষের হাতে গড়া, জগতের অন্যান্য লোকজনের সেই দেবতাদের বিষয়ে তারা যেভাবে কথা বলল, জেরুশালেমের ঈশ্বরের বিষয়েও তারা সেভাবেই কথা বলল।
১৯তারা মানুষের হাতে তৈরী পৃথিবীর সব জাতির দেবতাদের সম্বন্ধে যা বলেছিল যিরূশালেমের ঈশ্বরের বিষয়েও তাই বলল।
20 রাজা হিষ্কিয় ও আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় এই বিষয় নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে জোর গলায় প্রার্থনা করলেন
২০সেইজন্য রাজা হিষ্কিয় ও আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে কান্নাকাটি করলেন।
21 আর সদাপ্রভু এমন এক স্বর্গদূত পাঠিয়ে দিলেন, যিনি আসিরিয়ার রাজার সৈন্যশিবিরের সব যোদ্ধা এবং সেনাপতি ও কর্মকর্তাকে নির্মূল করে দিলেন। তাই অপমানিত হয়ে তিনি নিজের দেশে ফিরে গেলেন। তিনি যখন তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলেন, তখন তাঁর ঔরসে জন্মানো ছেলেদের মধ্যে কয়েকজন তরোয়াল দিয়ে কেটে তাঁকে মেরে ফেলেছিল।
২১এতে সদাপ্রভু একজন স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে দিলেন তিনি অশূর রাজার শিবিরের মধ্যে সমস্ত যোদ্ধা, নেতা ও সেনাপতিদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেললেন। এতে সন্হেরীব লজ্জা পেয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। পরে তিনি তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলে, তাঁর কয়েকজন ছেলে তাঁকে তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলল।
22 এইভাবে হিষ্কিয়কে ও জেরুশালেমের লোকজনকে আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীবের হাত থেকে ও অন্যান্যদেরও হাত থেকে সদাপ্রভু রক্ষা করলেন। সবদিক থেকেই তিনি তাদের যত্ন নিয়েছিলেন।
২২এই ভাবে সদাপ্রভু অশূরের রাজা সন্হেরীবের এবং অন্যান্য সকলের হাত থেকে হিষ্কিয়কে ও যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকদের রক্ষা করলেন এবং তিনি সব দিক দিয়েই তাদের নিরাপদে রাখলেন।
23 অনেকেই সদাপ্রভুর জন্য নৈবেদ্য ও যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের জন্য দামি উপহার নিয়ে জেরুশালেমে এসেছিল। তখন থেকেই সব জাতির দৃষ্টিতে তিনি খুব সম্মানের পাত্রে পরিণত হলেন।
২৩এর জন্য অনেকেই যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার নিয়ে আসল এবং যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের জন্য দামী উপহার আনল। তাতে সেই দিন থেকে সমস্ত জাতির লোক তাঁকে খুব সম্মান ও উচ্চকৃত করতে লাগল।
24 সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হলেন। তিনি সেই সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, যিনি তাঁকে উত্তর দিলেন ও তাঁকে এক অলৌকিক চিহ্নও দিলেন।
২৪সেই দিন হিষ্কিয় খুব অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হলেন। হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন এবং তাঁকে একটা আশ্চর্য্য চিহ্ন দিলেন যে তিনি সুস্থ হবেন।
25 কিন্তু হিষ্কিয়ের অন্তর গর্বিত হল এবং তাঁকে যে করুণা দেখানো হল, তাতে তিনি ভালো সাড়া দেননি; তাই তাঁর উপর এবং যিহূদা ও জেরুশালেমের উপর সদাপ্রভু ক্রুদ্ধ হলেন।
২৫কিন্তু হিষ্কিয়ের হৃদয়ে গর্ব দেখা দিল। তাঁর প্রতি যে রকম আশীর্বাদ করা হয়েছিল সেই অনুসারে তিনি কাজ করলেন না; এতে তাঁর উপর এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে আসলো।
26 তখন হিষ্কিয় তাঁর অন্তরে উৎপন্ন গর্বের বিষয়ে অনুতাপ করলেন, এবং তাঁর সাথে সাথে জেরুশালেমের লোকেরাও অনুতাপ করল; তাই হিষ্কিয়ের রাজত্বকালে সদাপ্রভুর ক্রোধ তাদের উপর নেমে আসেনি।
২৬তখন হিষ্কিয় তাঁর নিজের হৃদয়ের গর্বের জন্য নিজেকে নত করলেন এবং যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকেরাও তাই করল। সেইজন্য হিষ্কিয়ের দিনের সদাপ্রভুর ক্রোধ তাদের উপর নেমে আসল না।
27 হিষ্কিয়ের প্রচুর ধনসম্পত্তি ও সম্মান ছিল, আর তিনি তাঁর রুপো ও সোনার এবং তাঁর দামি মণিমুক্তো, মশলাপাতি, ঢাল ও সব ধরনের দামি জিনিসপত্রের জন্য কয়েকটি কোষাগার তৈরি করলেন।
২৭হিষ্কিয়ের অনেক ধন সম্পদ ও সম্মান ছিল। তাঁর নিজের জন্য সোনা রূপা, মণি মুক্তা, সুগন্ধি মশলা, ঢাল ও সমস্ত রকম দামী জিনিস (অলংকার) রাখবার জন্য তিনি ধনভান্ডার তৈরী করালেন।
28 এছাড়াও শস্য, নতুন দ্রাক্ষারস ও জলপাই তেল মজুত করে রাখার জন্য কয়েকটি গুদামঘর তৈরি করলেন; আর বিভিন্ন ধরনের গবাদি পশু রাখার জন্য গোশালা ও মেষের পাল রাখার জন্য খোঁয়াড়ও তৈরি করলেন।
২৮এছাড়া তিনি শস্য, নতুন আঙুর রস ও তেল রাখবার জন্য ভান্ডার ঘর তৈরী করালেন এবং বিভিন্ন রকম পশু, ছাগল ও ভেড়ার থাকবার ঘরও তৈরী করালেন।
29 তিনি বেশ কিছু গ্রাম গড়ে তুলেছিলেন এবং নিজের জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে মেষ ও গরু-ছাগল সংগ্রহ করলেন, কারণ ঈশ্বরই তাঁকে এত ধনসম্পত্তি দিলেন।
২৯তিনি নিজের জন্য অনেক গ্রাম ও শহর গড়ে তুললেন। তাঁর গরু, ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা অনেক হল, কারণ ঈশ্বর তাঁকে অনেক ধন সম্পদ দিয়েছিলেন।
30 এই হিষ্কিয়ই গীহোন জলের উৎসের উপর দিকের মুখ বন্ধ করে দিলেন এবং জলের স্রোত দাউদ-নগরের পশ্চিমদিকে টেনে নামিয়েছিলেন। যে কোনো কাজে তিনি হাত লাগালেন, তাতেই তিনি সফল হলেন।
৩০এই হিষ্কিয় গীহোন ফোয়ারার উপরের মুখ বন্ধ করে দায়ূদ শহরের পশ্চিম দিক দিয়ে জল নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সকল কাজেই সফল হয়েছিলেন।
31 কিন্তু ব্যাবিলনের শাসনকর্তারা যখন প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, দেশে ঠিক কী অলৌকিক চিহ্ন দেখা গিয়েছে, তখন আসলে ঈশ্বরই তাঁকে পরীক্ষা করে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর অন্তরে ঠিক কী আছে।
৩১দেশে যে আশ্চর্য্য চিহ্ন দেখানো হয়েছিল সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করবার জন্য যখন বাবিলের নেতারা দূত পাঠিয়েছিলেন তখন ঈশ্বর তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, যাতে তাঁর মনে কি আছে তা প্রকাশ পায়।
32 হিষ্কিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা এবং তাঁর নিষ্ঠামূলক কাজকর্মের বিবরণ যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের পুস্তকের অন্তর্গত আমোষের ছেলে ভাববাদী যিশাইয়ের দর্শন-গ্রন্থে লেখা আছে।
৩২হিষ্কিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং তাঁর ঈশ্বরভক্তির কাজ সম্বন্ধে আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয়ের দর্শনের বইতে এবং “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
33 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন এবং তাঁকে সেই পাহাড়ে কবর দেওয়া হল, যেখানে দাউদের সব বংশধরের কবর আছে। তিনি যখন মারা গেলেন, তখন সমগ্র যিহূদা দেশ ও জেরুশালেমের প্রজারা তাঁকে সম্মান জানিয়েছিল। তাঁর ছেলে মনঃশি রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
৩৩পরে হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদের বংশধরদের কবরের জায়গার উপরের জায়গায় তাঁকে কবর দেওয়া হল। তিনি মারা যাবার দিন যিহূদার সকলে এবং যিরূশালেমের লোকেরা তাঁকে উচ্চকৃত করলো। তাঁর ছেলে মনঃশি তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।