< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 23 >

1 সপ্তম বছরে যিহোয়াদা নিজের শক্তি দেখিয়েছিলেন। তিনি এই শত-সেনাপতিদের সাথে এক চুক্তি করলেন: যিরোহমের ছেলে অসরিয়, যিহোহাননের ছেলে ইশ্মায়েল, ওবেদের ছেলে অসরিয়, অদায়ার ছেলে মাসেয়, ও সিখ্রির ছেলে ইলীশাফট।
পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা নিজেকে শক্তিশালী করে শতপতিদের যিহোরামের ছেলে অসরিয়কে, যিহোহাননের ছেলে ইশ্মায়েলকে, ওবেদের ছেলে অসরিয়, অদায়ার ছেলে মাসেয় ও সিখ্রির ছেলে ইলীশাফটকে নিয়ে একটা চুক্তি করলেন।
2 তারা যিহূদা দেশের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে সবকটি নগর থেকে লেবীয়দের ও ইস্রায়েলী বংশের কর্তাব্যক্তিদের একত্রিত করলেন। তারা জেরুশালেমে আসার পর,
পরে তাঁরা যিহূদা দেশে ঘুরে যিহূদার সমস্ত নগর থেকে লেবীয়দেরকে এবং ইস্রায়েলের পিতার বংশের নেতাদের জড়ো করলে তারাও যিরূশালেমে এল।
3 সমগ্র জনসমাজ ঈশ্বরের মন্দিরে রাজার সাথে এক চুক্তি করল। যিহোয়াদা তাদের বললেন, “সদাপ্রভু দাউদের বংশধরদের সম্বন্ধে যে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই প্রতিজ্ঞানুসারেই রাজপুত্র রাজত্ব করবেন।
পরে সব সমাজ মিলে ঈশ্বরের গৃহে রাজার সঙ্গে একটি চুক্তি করল। আর যিহোয়াদা তাদের বললেন, “দেখ, দায়ূদের সন্তানদের বিষয়ে সদাপ্রভু যে কথা বলেছেন, সেই অনুসারে রাজপুত্রই রাজত্ব করবেন।
4 এখন তোমাদের এই কাজটি করতে হবে: যারা সাব্বাথবারে দায়িত্ব পালন করো, সেই যাজক ও লেবীয়দের এক-তৃতীয়াংশকে দরজায় পাহারা দিতে হবে,
তোমরা এই কাজ করবে: তোমাদের অর্থাৎ যাজকদের ও লেবীয়দের যে তিন ভাগের এক ভাগ যারা বিশ্রামবারে কাজ করবে, তারা দারোয়ান হবে।
5 তোমাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রাজপ্রাসাদ পাহারা দেবে ও আরও এক-তৃতীয়াংশ ভিত্তিমূলের দরজায় পাহারা দেবে, এবং অন্য আরও যারা অবশিষ্ট থাকবে, তাদের সদাপ্রভুর মন্দিরের উঠোনে থাকতে হবে।
অন্য এক ভাগ রাজবাড়ীতে থাকবে, আর এক ভাগ ভিত্তি-দরজা থাকবে এবং সবাই থাকবে সদাপ্রভুর গৃহের উঠানে।
6 দায়িত্ব পালনকারী যাজক ও লেবীয়েরা ছাড়া আর কেউ সদাপ্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করবে না; তারা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে, যেহেতু তারা ঈশ্বরসেবায় উৎসর্গীকৃত, কিন্তু অন্যান্য সবাইকে, মন্দিরে প্রবেশ না করা সংক্রান্ত সদাপ্রভুর আদেশ পালন করতে হবে।
কিন্তু যাজকরা ও সেবা-কাজে থাকা লেবীয়েরা ছাড়া আর কাউকে সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকতে দিও না; এরা ঢুকবে, কারণ এরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্র; কিন্তু অন্য সব লোক সদাপ্রভুর আদেশ রক্ষা করবে।
7 লেবীয়দের প্রত্যেককে, হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাজাকে ঘিরে ধরে থাকতে হবে। যে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করবে, তাকে মেরে ফেলতে হবে। রাজা যেখানে যেখানে যাবেন, তোমরা তাঁর কাছাকাছি থেকো।”
আর লেবীয়েরা প্রত্যেকে নিজের নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে, আর যে কেউ গৃহে ঢুকবে, তাকে মেরে ফেলা হবে এবং রাজা যখন ভিতরে যাওয়া-আসা করেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।”
8 যাজক যিহোয়াদা যে আদেশ দিলেন, লেবীয়েরা ও যিহূদার সব লোকজন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করল। প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকজনকে সাথে রেখেছিল—যারা সাব্বাথবারে কাজে যোগ দিত ও যাদের ছুটি হয়ে যেত, তাদেরও—কারণ যাজক যিহোয়াদা কোনো বিভাগকেই ছুটি দেননি।
পরে যিহোয়াদা যাজক যে আদেশ দিলেন, লেবীয়েরা ও যিহূদার সবাই তাই করল; ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের, অর্থাৎ যারা বিশ্রামবারে বাইরে যাওয়া-আসা করে, তাদেরকে নিল, কারণ যিহোয়াদা যাজক এদের কোনো দলকেই ছুটি দেন নি।
9 পরে তিনি শত-সেনাপতিদের হাতে সেইসব বর্শা ও ছোটো-বড়ো ঢাল তুলে দিলেন, যেগুলি ছিল রাজা দাউদের এবং সেগুলি ঈশ্বরের মন্দিরে রাখা ছিল।
আর রাজা দায়ূদের যে সব বর্শা, ঢাল ও ঈশ্বরের গৃহে ছিল, যিহোয়াদা যাজক সেগুলি নিয়ে শতপতিদের দিলেন।
10 রাজার চারপাশে—যজ্ঞবেদির ও মন্দিরের কাছে, মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে শুরু করে উত্তর দিক পর্যন্ত, সর্বত্র হাতে অস্ত্রশস্ত্র সমেত তিনি সব লোকজনকে মোতায়েন করে দিলেন।
১০আর তিনি সমস্ত লোককে স্থাপন করলেন, প্রত্যেক জন নিজের নিজের হাতে অস্ত্র নিয়ে দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদির ও গৃহের কাছে রাজার চারদিকে দাঁড়ালেন।
11 যিহোয়াদা ও তাঁর ছেলেরা রাজপুত্রকে বাইরে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন; তারা তাঁকে নিয়ম-পুস্তকের একটি অনুলিপি উপহার দিয়ে তাঁকে রাজা ঘোষণা করে দিলেন। তারা তাঁকে অভিষিক্ত করে চিৎকার করে উঠেছিলেন, “রাজা দীর্ঘজীবী হোন!”
১১তারপর তাঁরা রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন ও তাঁকে ব্যবস্থার বই দিলেন এবং তারা তাঁকে রাজা করলেন এবং যিহোয়াদা ও তাঁর ছেলেরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; পরে তাঁরা বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”
12 অথলিয়া লোকজনের দৌড়াদৌড়ির ও রাজার উদ্দেশে হর্ষধ্বনির শব্দ শুনে সদাপ্রভুর মন্দিরে তাদের কাছে চলে গেলেন।
১২আর লোকেরা দৌড়াদৌড়ি করে রাজার প্রশংসা করলে অমলিয়া সেই আওয়াজ শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে গেল;
13 তিনি তাকিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন যে রাজা মন্দিরের প্রবেশদ্বারে তাঁর স্তম্ভের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কর্মকর্তারা ও শিঙাবাদকেরা রাজার পাশেই আছে, এবং দেশের সব লোকজন আনন্দ করছে ও শিঙা বাজাচ্ছে, এবং বাদ্যকরেরা তাদের বাজনাগুলি নিয়ে প্রশংসাগান পরিচালনা করছে। তখন অথলিয়া তাঁর কাপড় ছিঁড়ে চিৎকার করে উঠেছিলেন, “রাজদ্রোহ, রাজদ্রোহ!”
১৩আর দেখল, গৃহে ঢুকবার পথে রাজা তাঁর মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে আছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে আর গায়কেরা বাজনা বাজিয়ে প্রশংসা গান করছে; তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে বলল, “এ তো বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!”
14 যাজক যিহোয়াদা, সৈন্যদলের উপরে নিযুক্ত শত-সেনাপতিদের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন, এবং তাদের বললেন: “অথলিয়াকে সৈন্যশ্রেণীর মাঝখান দিয়ে বের করে নিয়ে যাও এবং যে কেউ তার অনুগামী হয়, তার উপর তরোয়াল চালিয়ে দিয়ে তাকে হত্যা করো।” কারণ যাজক এও বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরে তাকে হত্যা কোরো না।”
১৪কিন্তু যিহোয়াদা যাজক সৈন্যদলের উপরে নিযুক্ত শতপতিদের বাইরে এনে বললেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে তার পিছনে আসবে তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে;” কারণ যাজক আদেশ দিয়েছিলেন যে, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে ওকে হত্যা কোরো না।
15 তাই অথলিয়া যখন প্রাসাদের মাঠে, অশ্বদ্বারের প্রবেশদ্বারে পৌঁছেছিলেন, তখন তারা সেখানেই তাঁকে ধরে হত্যা করল।
১৫কাজেই লোকেরা তাঁর জন্য দুই সারি হয়ে রাস্তা ছেড়ে দিলে সে রাজবাড়ীর অশ্বদ্বারে ঢুকবার পথে গেল; সেখানে তারা তাকে হত্যা করল।
16 যিহোয়াদা তখন এই নিয়ম স্থির করে দিলেন যে তিনি, প্রজারা ও রাজা স্বয়ং, সদাপ্রভুর প্রজা হয়েই থাকবেন।
১৬তারপর যিহোয়াদা তাঁর, সব লোকের ও রাজার মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়।
17 সব লোকজন বায়ালের মন্দিরে গিয়ে সেটি ভেঙে ফেলেছিল। তারা যজ্ঞবেদি ও প্রতিমার মূর্তিগুলিও পিষে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল এবং বায়ালের পুজারী মত্তনকে সেই যজ্ঞবেদির সামনেই হত্যা করল।
১৭পরে সব লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙে ফেলল, তার যজ্ঞবেদি ও মূর্তিগুলি চুরমার করে দিল এবং বেদিগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল।
18 পরে যিহোয়াদা সদাপ্রভুর মন্দির দেখাশোনার ভার লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত সেই যাজকদের হাতে তুলে দিলেন, মন্দিরের কাজ দাউদ আগেই যাদের হাতে তুলে দিলেন। তাদের দায়িত্ব ছিল সদাপ্রভুর হোমবলিগুলি মোশির বিধানে লেখা নিয়মানুসারে উৎসর্গ করা, এবং দাউদের আদেশ পালন করে তারা আনন্দ করতে করতে ও গান গাইতে গাইতে সে কাজ করলেন।
১৮তারপর দায়ূদের আদেশ মতে আনন্দের সঙ্গে গান করে মোশির ব্যবস্থা অনুসারে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে দায়ূদ যে লেবীয় যাজকদের সদাপ্রভুর গৃহের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন, তাদের হাতে যিহোয়াদা সদাপ্রভুর গৃহের দেখাশোনার ভার দিলেন।
19 সদাপ্রভুর মন্দিরের দরজাগুলিতেও তিনি দ্বাররক্ষী মোতায়েন করে দিলেন, যেন কোনো ধরনের অশুচি লোক সেখানে ঢুকতে না পারে।
১৯আর কোনো রকম অশুচি লোক যাতে ঢুকতে না পারে সেইজন্য তিনি সদাপ্রভুর গৃহের দরজাগুলিতে দারোয়ান রাখলেন।
20 যিহোয়াদা শত-সেনাপতিদের, অভিজাত শ্রেণীর মানুষজনকে, প্রজাদের শাসনকর্তাদের এবং দেশের সব লোকজনকে সাথে নিয়ে রাজাকে সদাপ্রভুর মন্দির থেকে বের করে এনেছিলেন। তারা উপর দিকের দরজাটি দিয়ে প্রাসাদে ঢুকেছিলেন এবং রাজাকে রাজসিংহাসনে বসিয়ে দিলেন।
২০পরে তিনি শতপতিদের, কুলীনদের, লোকেদের শাসনকর্ত্তাদের ও দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন, তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে বের করে আনলেন; তারপর তাঁরা উঁচু দরজা দিয়ে রাজবাড়ীতে গিয়ে রাজাকে রাজ সিংহাসনে বসালেন।
21 দেশের প্রজারা সবাই আনন্দ করল, এবং নগরে শান্তি বিরাজ করছিল, কারণ অথলিয়ার উপর তরোয়াল চালিয়ে দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হল।
২১তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 23 >