< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 21 >
1 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাদেরই সাথে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোরাম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
2 যিহোরামের ভাই তথা যিহোশাফটের ছেলেরা হলেন অসরিয়, যিহীয়েল, সখরিয়, অসরিয়াহূ, মীখায়েল ও শফটিয়। এরা সবাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটের ছেলে।
3 তাদের বাবা, তাদের রুপোর ও সোনার প্রচুর উপহার এবং মূল্যবান জিনিসপত্র দিলেন। এছাড়াও যিহূদাতে বেশ কয়েকটি সুরক্ষিত নগরও তিনি তাদের দিলেন, কিন্তু রাজ্যটি তিনি যিহোরামকেই দিলেন, যেহেতু তিনি তাঁর বড়ো ছেলে ছিলেন।
4 যিহোরাম তাঁর বাবার রাজ্যে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার পর তাঁর সব ভাইকে ও তাদের সাথে সাথে ইস্রায়েলের কয়েকজন কর্মকর্তাকেও তরোয়াল দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করলেন।
5 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি আট বছর রাজত্ব করলেন।
6 আহাবের বংশের মতো তিনিও ইস্রায়েলের রাজাদের পথেই চলেছিলেন, কারণ তিনি আহাবের এক মেয়েকে বিয়ে করলেন। সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তিনি তাই করলেন।
7 তা সত্ত্বেও, দাউদের সাথে সদাপ্রভু যে নিয়ম স্থাপন করলেন, তার জন্যই সদাপ্রভু দাউদের বংশকে ধ্বংস করতে চাননি। চিরকাল তাঁর জন্য ও তাঁর বংশধরদের জন্য এক প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা সদাপ্রভু করলেন।
8 যিহোরামের রাজত্বকালে, ইদোমীয়েরা যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল ও নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করে নিয়েছিল।
9 তাই যিহোরাম তাঁর কর্মকর্তাদের ও তাঁর সব রথ সাথে নিয়ে সেখানে গেলেন। ইদোমীয়েরা তাঁকে ও তাঁর রথের সেনাপতিদের ঘিরে ধরেছিল, কিন্তু রাতের অন্ধকারে তিনি উঠে ঘেরাও ভেদ করে পালিয়েছিলেন।
10 আজও পর্যন্ত ইদোম যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েই আছে। একই সময়ে লিব্নাও বিদ্রোহ করে বসেছিল, কারণ যিহোরাম, তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করলেন।
11 যিহূদার পাহাড়ি এলাকাগুলিতে তিনি আবার পূজার্চনার জন্য উঁচু কয়েকটি স্থান তৈরি করে দিলেন এবং জেরুশালেমের লোকজনকে দিয়ে বেশ্যাবৃত্তি করিয়েছিলেন ও যিহূদাকে বিপথে পরিচালিত করলেন।
12 যিহোরাম ভাববাদী এলিয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন, যে চিঠিতে বলা হল: “আপনার পূর্বপুরুষ দাউদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তুমি তোমার বাবা যিহোশাফটের বা যিহূদার রাজা আসার পথে চলোনি।
13 কিন্তু তুমি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলেছ, এবং তুমি যিহূদাকে ও জেরুশালেমের লোকজনকে দিয়ে এমনভাবে বেশ্যাবৃত্তি করিয়েছ, যেমনটি আহাবের বংশও করত। এছাড়াও তুমি তোমার ভাইদের, তোমার নিজের পরিবারের সেই লোকদের হত্যা করেছ, যারা তোমার চেয়ে ভালো ছিল।
14 তাই এখন সদাপ্রভু ভয়ংকর এক যন্ত্রণায় তোমার প্রজাদের, তোমার ছেলেদের, তোমার স্ত্রীদের ও তোমার যা যা আছে, সবকিছুর উপর আঘাত হানতে চলেছেন।
15 তুমি নিজে, নাড়িভুঁড়ির দীর্ঘস্থায়ী এক রোগে ততদিন দারুণ অসুস্থ হয়ে ভুগতে থাকবে, যতদিন না সেই রোগে তোমার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসছে।’”
16 সদাপ্রভু যিহোরামের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীদের শত্রুতা ও কূশীয়দের কাছাকাছি বসবাসকারী আরবীয়দের শত্রুতা খুব বাড়িয়ে তুলেছিলেন।
17 তারা যিহূদা আক্রমণ করল, ঝাঁকে ঝাঁকে সেখানে ঢুকে পড়েছিল এবং রাজপ্রাসাদে যত জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছিল, সেসব জিনিসপত্র ও তাঁর ছেলে ও স্ত্রীদেরও তুলে নিয়ে গেল। একমাত্র ছোটো ছেলে অহসিয় ছাড়া আর কোনও ছেলে অবশিষ্ট ছিল না।
18 এসব কিছু ঘটে যাওয়ার পর, সদাপ্রভু যিহোরামকে নাড়িভুঁড়ির দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত করলেন।
19 কালক্রমে, দ্বিতীয় বছরের শেষদিকে, সেই রোগের কারণে তাঁর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে এসেছিল, এবং প্রচণ্ড যন্ত্রণাভোগ করতে করতে তিনি মারা গেলেন। তাঁর প্রজারা তাঁর সম্মানে কোনও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত আগুন জ্বালায়নি, যেভাবে তারা তাঁর পূর্বপুরুষদের ক্ষেত্রে করল।
20 বত্রিশ বছর বয়সে যিহোরাম রাজা হলেন, এবং আট বছর তিনি জেরুশালেমে রাজত্ব করলেন। তিনি মারা যাওয়ায় কেউ দুঃখ প্রকাশ করেননি, এবং তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল, কিন্তু রাজাদের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হয়নি।