< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 21 >

1 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে তাদেরই সাথে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোরাম রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। আর তাঁর ছেলে যিহোরাম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
2 যিহোরামের ভাই তথা যিহোশাফটের ছেলেরা হলেন অসরিয়, যিহীয়েল, সখরিয়, অসরিয়াহূ, মীখায়েল ও শফটিয়। এরা সবাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটের ছেলে।
যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের মধ্যে তাঁর ভাইদের নাম ছিল অসরিয়, যিহীয়েল, সখরিয়, অসরিয়, মীখায়েল ও শফটিয়, এরা সবাই ছিল ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটের ছেলে।
3 তাদের বাবা, তাদের রুপোর ও সোনার প্রচুর উপহার এবং মূল্যবান জিনিসপত্র দিলেন। এছাড়াও যিহূদাতে বেশ কয়েকটি সুরক্ষিত নগরও তিনি তাদের দিলেন, কিন্তু রাজ্যটি তিনি যিহোরামকেই দিলেন, যেহেতু তিনি তাঁর বড়ো ছেলে ছিলেন।
আর তাদের বাবা তাদেরকে অনেক সম্পত্তি, অর্থাৎ রূপা, সোনা ও অনেক দামী জিনিস এবং যিহূদা দেশে প্রাচীরে ঘেরা গ্রাম নগরগুলি দান করেছিলেন, কিন্তু যিহোরাম বড় ছেলে বলে তাঁকে রাজ্য দিয়েছিলেন।
4 যিহোরাম তাঁর বাবার রাজ্যে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার পর তাঁর সব ভাইকে ও তাদের সাথে সাথে ইস্রায়েলের কয়েকজন কর্মকর্তাকেও তরোয়াল দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করলেন।
যিহোরাম তাঁর বাবার রাজ্য অধীনে এনে নিজেকে শক্তিশালী করলেন; আর নিজের সমস্ত ভাইদের এবং ইস্রায়েলের কয়েকজন শাসনকর্তাকেও তরোয়াল দিয়ে হত্যা করলেন।
5 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি আট বছর রাজত্ব করলেন।
যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে আট বছর রাজত্ব করেন।
6 আহাবের বংশের মতো তিনিও ইস্রায়েলের রাজাদের পথেই চলেছিলেন, কারণ তিনি আহাবের এক মেয়েকে বিয়ে করলেন। সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তিনি তাই করলেন।
আহাবের বংশের লোকদের মতই তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন; কারণ তিনি আহাবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তিনি তাই করতেন।
7 তা সত্ত্বেও, দাউদের সাথে সদাপ্রভু যে নিয়ম স্থাপন করলেন, তার জন্যই সদাপ্রভু দাউদের বংশকে ধ্বংস করতে চাননি। চিরকাল তাঁর জন্য ও তাঁর বংশধরদের জন্য এক প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা সদাপ্রভু করলেন।
তবুও সদাপ্রভু দায়ূদের সঙ্গে তাঁর করা নিয়মের জন্য এবং তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের চিরকাল একটা প্রদীপ দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেইজন্য তিনি দায়ূদের বংশকে ধ্বংস করতে চাইলেন না।
8 যিহোরামের রাজত্বকালে, ইদোমীয়েরা যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল ও নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করে নিয়েছিল।
তাঁর দিনের ইদোম যিহূদার কর্তৃত্ব না মেনে নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করল।
9 তাই যিহোরাম তাঁর কর্মকর্তাদের ও তাঁর সব রথ সাথে নিয়ে সেখানে গেলেন। ইদোমীয়েরা তাঁকে ও তাঁর রথের সেনাপতিদের ঘিরে ধরেছিল, কিন্তু রাতের অন্ধকারে তিনি উঠে ঘেরাও ভেদ করে পালিয়েছিলেন।
কাজেই যিহোরাম তাঁর সেনাপতিদের ও সব রথ নিয়ে সেখানে গেলেন; আর রাতের বেলায় তিনি উঠে, যারা তাঁকে ঘেরাও করেছিল, সেই ইদোমীয়দের ও তাদের রথের সেনাপতিদের আঘাত করলেন।
10 আজও পর্যন্ত ইদোম যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েই আছে। একই সময়ে লিব্‌নাও বিদ্রোহ করে বসেছিল, কারণ যিহোরাম, তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে পরিত্যাগ করলেন।
১০এই ভাবে ইদোম আজও যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে আছে; আর ঐ দিনের লিব্‌নাও তাঁর কর্তৃত্ব অস্বীকার করল, কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিলেন।
11 যিহূদার পাহাড়ি এলাকাগুলিতে তিনি আবার পূজার্চনার জন্য উঁচু কয়েকটি স্থান তৈরি করে দিলেন এবং জেরুশালেমের লোকজনকে দিয়ে বেশ্যাবৃত্তি করিয়েছিলেন ও যিহূদাকে বিপথে পরিচালিত করলেন।
১১আরও তিনি যিহূদার অনেক পর্বতে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন এবং যিরূশালেমের অধিবাসীদের ব্যভিচার করালেন ও যিহূদাকে বিপথে চালালেন।
12 যিহোরাম ভাববাদী এলিয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন, যে চিঠিতে বলা হল: “আপনার পূর্বপুরুষ দাউদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: ‘তুমি তোমার বাবা যিহোশাফটের বা যিহূদার রাজা আসার পথে চলোনি।
১২পরে তাঁর কাছে এলিয় ভাববাদীর কাছ থেকে একটা লিপি আসল; “তোমার বাবা দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তুমি তোমার নিজের বাবা যিহোশাফটের পথে ও যিহূদার রাজা আসার পথে চলনি;
13 কিন্তু তুমি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলেছ, এবং তুমি যিহূদাকে ও জেরুশালেমের লোকজনকে দিয়ে এমনভাবে বেশ্যাবৃত্তি করিয়েছ, যেমনটি আহাবের বংশও করত। এছাড়াও তুমি তোমার ভাইদের, তোমার নিজের পরিবারের সেই লোকদের হত্যা করেছ, যারা তোমার চেয়ে ভালো ছিল।
১৩কিন্তু ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলেছ এবং আহাবের বংশের কাজ অনুসারে যিহূদাকে ও যিরূশালেমের লোকেদেরকে ব্যভিচার করিয়েছ; আরও তোমার চেয়ে ভাল যে তোমার বাবার বংশের ভাইদের মেরে ফেলেছ;
14 তাই এখন সদাপ্রভু ভয়ংকর এক যন্ত্রণায় তোমার প্রজাদের, তোমার ছেলেদের, তোমার স্ত্রীদের ও তোমার যা যা আছে, সবকিছুর উপর আঘাত হানতে চলেছেন।
১৪তাই দেখ, সদাপ্রভু তোমার প্রজাদেরকে, তোমার সন্তানদের, তোমার স্ত্রীদেরকে ও তোমার সমস্ত সম্পত্তির উপর ভয়ঙ্কর আঘাতে আহত করবেন।
15 তুমি নিজে, নাড়িভুঁড়ির দীর্ঘস্থায়ী এক রোগে ততদিন দারুণ অসুস্থ হয়ে ভুগতে থাকবে, যতদিন না সেই রোগে তোমার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসছে।’”
১৫আর তুমি অন্ত্রের অসুখে ভুগতে থাকবে আর সেই অসুখে তোমার অন্ত্র বের হয়ে আসবে।’”
16 সদাপ্রভু যিহোরামের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীদের শত্রুতা ও কূশীয়দের কাছাকাছি বসবাসকারী আরবীয়দের শত্রুতা খুব বাড়িয়ে তুলেছিলেন।
১৬পরে সদাপ্রভু যিহোরামের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়দের মন ও কূশীয়দের কাছে আরবীয়দের মন উত্তেজিত করে তুললেন
17 তারা যিহূদা আক্রমণ করল, ঝাঁকে ঝাঁকে সেখানে ঢুকে পড়েছিল এবং রাজপ্রাসাদে যত জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছিল, সেসব জিনিসপত্র ও তাঁর ছেলে ও স্ত্রীদেরও তুলে নিয়ে গেল। একমাত্র ছোটো ছেলে অহসিয় ছাড়া আর কোনও ছেলে অবশিষ্ট ছিল না।
১৭এবং তারা যিহূদার বিরুদ্ধে এসে প্রাচীর ভেঙে রাজবাড়ীতে পাওয়া সব সম্পত্তি এবং তাঁর ছেলেদের ও তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে গেল; ছোট ছেলে যিহোয়াহস ছাড়া তাঁর আর কোনো ছেলে বাকি থাকল না।
18 এসব কিছু ঘটে যাওয়ার পর, সদাপ্রভু যিহোরামকে নাড়িভুঁড়ির দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত করলেন।
১৮এই সমস্ত ঘটনার পরে সদাপ্রভু তাঁকে দারুন অন্ত্রের অসুখ দিলেন যা ভাল হবার না।
19 কালক্রমে, দ্বিতীয় বছরের শেষদিকে, সেই রোগের কারণে তাঁর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে এসেছিল, এবং প্রচণ্ড যন্ত্রণাভোগ করতে করতে তিনি মারা গেলেন। তাঁর প্রজারা তাঁর সম্মানে কোনও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত আগুন জ্বালায়নি, যেভাবে তারা তাঁর পূর্বপুরুষদের ক্ষেত্রে করল।
১৯তাতে দ্বিতীয় বছরের শেষে সেই রোগের দরুন তাঁর অন্ত্র বের হয়ে আসল এবং তিনি খুব যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেলেন। আর তাঁর প্রজারা তাঁর জন্য তাঁর পূর্বপুরুষদের নিয়ম অনুযায়ী আগুন জ্বালাল না।
20 বত্রিশ বছর বয়সে যিহোরাম রাজা হলেন, এবং আট বছর তিনি জেরুশালেমে রাজত্ব করলেন। তিনি মারা যাওয়ায় কেউ দুঃখ প্রকাশ করেননি, এবং তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল, কিন্তু রাজাদের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হয়নি।
২০তিনি বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করা শুরু করেন এবং আট বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন; তাঁর মৃত্যুতে কেউ দুঃখ প্রকাশ করে নি। আর লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁকে কবর দিল, কিন্তু রাজাদের কবরের জায়গা ছিল না।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 21 >