< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 13 >
1 যারবিয়ামের রাজত্বকালের অষ্টাদশতম বছরে, অবিয় যিহূদার রাজা হলেন,
2 এবং তিনি জেরুশালেমে তিন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম মাখা, যিনি গিবিয়ার অধিবাসী ঊরিয়েলের মেয়ে ছিলেন। অবিয় ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই ছিল।
3 অবিয় চার লাখ সক্ষম যোদ্ধার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক সৈন্যদল সাথে নিয়ে যুদ্ধ করতে গেলেন, এবং যারবিয়াম আট লাখ সক্ষম যোদ্ধা সমন্বিত এক সৈন্যদল নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
4 ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকার সমারয়িমে দাঁড়িয়ে অবিয় বলে উঠেছিলেন, “হে যারবিয়াম ও ইস্রায়েলের সব লোকজন, তোমরা আমার কথা শোনো!
5 তোমরা কি জানো না যে এক লবণ-নিয়মের মাধ্যমে ইস্রায়েলের রাজপদ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু চিরতরে দাউদ ও তাঁর বংশধরদের হাতে তুলে দিয়েছেন?
6 অথচ নবাটের ছেলে যারবিয়াম, যে কি না দাউদের ছেলে শলোমনের সামান্য এক কর্মচারী ছিল, সে তার মনিবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল।
7 কয়েকজন অপদার্থ দুষ্টলোক তার চারপাশে একত্রিত হল এবং শলোমনের ছেলে রহবিয়াম যখন অল্পবয়স্ক ও সংশয়াপন্ন ছিলেন, এবং তাদের প্রতিরোধ করার পক্ষে খুব একটি শক্তিশালী ছিলেন না, তখনই তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করল।
8 “আর এখন তোমরা সদাপ্রভুর সেই রাজ্যের বিরোধিতা করতে চাইছ, যেটি দাউদের বংশধরদের হাতে রয়েছে। তোমরা তো সত্যিই বিশাল এক সৈন্যদল এবং তোমাদের সাথে সোনার সেই বাছুরগুলি আছে, যেগুলি দেবতারূপে যারবিয়াম তোমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছিল।
9 কিন্তু তোমরাই কি সদাপ্রভুর যাজকদের, হারোণের ছেলেদের, ও লেবীয়দের তাড়িয়ে দিয়ে, অন্যান্য দেশের লোকজনের দেখাদেখি নিজেদের ইচ্ছামতো যাজক তৈরি করে নাওনি? যে কেউ সাথে করে একটি এঁড়ে বাছুর ও সাতটি মেষ এনে নিজেকে উৎসর্গীকৃত বলে দাবি করে, সেই এমন সব বস্তুর যাজক হয়ে যায়, যেগুলি আদৌ দেবতাই নয়।
10 “আমাদের কাছে, সদাপ্রভুই আমাদের ঈশ্বর, এবং আমরা তাঁকে পরিত্যাগ করিনি। যেসব যাজক সদাপ্রভুর সেবা করলেন, তারা হারোণের বংশধর ও লেবীয়েরা তাদের কাজে সহযোগিতা করে।
11 প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তারা সদাপ্রভুর কাছে হোমবলি ও সুগন্ধি ধূপ উৎসর্গ করলেন। প্রথাগতভাবে শুচিশুদ্ধ টেবিলে তারা রুটি সাজিয়ে রাখেন এবং প্রতিদিন সকালে সোনার বাতিদানের প্রদীপগুলি তারা জ্বালিয়ে দেন। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অবশ্যপূরণীয় শর্তগুলি আমরা পূরণ করে যাচ্ছি। কিন্তু তোমরা তাঁকে পরিত্যাগ করেছ।
12 ঈশ্বর আমাদের সাথে আছেন; তিনিই আমাদের নেতা। তাঁর যাজকেরা তাদের শিঙাগুলি নিয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-নিনাদ করবেন। হে ইস্রায়েলী জনতা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোরো না, কারণ তোমরা কিছুতেই সফল হবে না।”
13 যারবিয়াম ইত্যবসরে ঘুরপথে পিছন দিকে সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন, যেন তিনি যখন যিহূদার সামনে থাকবেন, তখন আক্রমণ যেন তাদের পিছন দিক থেকেই শানানো হয়।
14 যিহূদার লোকজন পিছন ফিরে দেখেছিল, তারা সামনে ও পিছনে—দুই দিক থেকেই আক্রান্ত হয়েছে। তখন তারা সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে ফেলেছিল। যাজকেরা তাদের শিঙাগুলি বাজিয়েছিলেন
15 এবং যিহূদার লোকজন যুদ্ধ-নিনাদের স্বর তীব্র করে তুলেছিল। তাদের যুদ্ধ-নিনাদ শুনে ঈশ্বর যারবিয়াম ও সমগ্র ইস্রায়েলকে অবিয় ও যিহূদার সামনে ছত্রভঙ্গ করে দিলেন।
16 ইস্রায়েলীরা যিহূদার সামনে থেকে পালিয়ে গেল, এবং ঈশ্বর ইস্রায়েলীদের তাদের হাতে সঁপে দিলেন।
17 অবিয় ও তাঁর সৈন্যদল ইস্রায়েলীদের এত ক্ষতিসাধন করলেন, যে ইস্রায়েলীদের মধ্যে পাঁচ লাখ সক্ষম যোদ্ধা মারা পড়েছিল।
18 সেবার ইস্রায়েলীরা পরাজিত হল, এবং যিহূদার লোকজন বিজয়ী হল, কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে নির্ভর করল।
19 অবিয় যারবিয়ামের পিছু ধাওয়া করে তাঁর কাছ থেকে বেথেল, যিশানা ও ইফ্রোণ ও সেই নগরগুলির চারপাশের গ্রামগুলিও ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।
20 অবিয়ের সময়কালে যারবিয়াম আর শক্তি অর্জন করতে পারেননি। সদাপ্রভু তাঁকে আঘাত করলেন ও তিনি মারা গেলেন।
21 কিন্তু অবিয় শক্তি অর্জন করেই যাচ্ছিলেন। তিনি চোদ্দোজন স্ত্রীকে বিয়ে করলেন এবং তাঁর বাইশটি ছেলে ও ষোলোটি মেয়ে হল।
22 অবিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তিনি যা যা করলেন ও যা যা বললেন, সেসব ভাববাদী ইদ্দোর টীকারচনায় লেখা আছে।