< শমূয়েলের প্রথম বই 27 >

1 দাউদ মনে মনে ভেবেছিলেন, “একদিন না একদিন আমাকে শৌলের হাতে মরতেই হবে। আমার পক্ষে ফিলিস্তিনীদের দেশে পালিয়ে যাওয়াই ভালো। তখন শৌল ইস্রায়েলে আর কোথাও আমার খোঁজ করবেন না, ও আমি তাঁর হাত এড়িয়ে পালিয়ে যেতে পারব।”
পরে দায়ূদ মনে মনে ভাবলেন, “কোনো একদিন এই শৌলের হাতেই আমাকে মারা পড়তে হবে, তাই পলেষ্টীয়দের দেশে পালিয়ে যাওয়াই আমার পক্ষে সবচেয়ে ভাল হবে। তাহলে ইস্রায়েল দেশের মধ্যে তিনি আর আমাকে খুঁজে বেড়াবেন না, আর আমিও তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাব।”
2 অতএব দাউদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা 600 জন লোক দেশ ছেড়ে মায়োকের ছেলে গাতের রাজা আখীশের কাছে পৌঁছে গেলেন।
এই ভেবে দায়ূদ তাঁর সঙ্গের ছয়শো লোক নিয়ে সেই জায়গা ছেড়ে মায়োকের ছেলে আখীশের কাছে গেলেন। আখীশ গাতের রাজা ছিলেন।
3 দাউদ ও তাঁর লোকজন গাতে আখীশের কাছেই থেকে গেলেন। প্রত্যেকে তাদের পরিবার সমেতই সেখানে ছিল, এবং দাউদের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী: যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়ম ও নাবলের বিধবা কর্মিলীয়া অবীগল।
দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা গাতে আখীশের কাছে বাস করতে লাগলেন। তাঁর লোকদের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল তাদের পরিবার, আর দায়ূদের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রীয়েল গ্রামের অহীনোয়ম এবং কর্মিল গ্রামের অবীগল। অবীগল ছিলেন নাবলের বিধবা স্ত্রী।
4 শৌলকে যখন বলা হল দাউদ গাতে পালিয়ে গিয়েছেন, তখন তিনি আর তাঁর খোঁজ করেননি।
শৌল যখন জানতে পারলেন যে, দায়ূদ গাতে পালিয়ে গেছেন তখন তিনি তাঁর খোঁজ করা বন্ধ করে দিলেন।
5 তখন দাউদ আখীশকে বললেন, “আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়েছি, তবে আমার থাকার জন্য যেন পল্লি-অঞ্চলে একটি স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। আপনার দাস কেন আপনার সঙ্গে রাজধানী নগরে বসবাস করবে?”
পরে দায়ূদ আখীশকে বললেন, “আপনি যদি আমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তবে এই দেশের কোন একটা গ্রামে আমাকে কিছু জায়গা দিন যাতে আমি সেখানে গিয়ে বাস করতে পারি। আপনার এই দাস কেন আপনার সঙ্গে রাজধানীতে বাস করবে?”
6 অতএব সেদিন আখীশ তাঁকে সিক্লগ নগরটি দান করে দিলেন, ও সেদিন থেকেই সেটি যিহূদার রাজাদের অধিকারে চলে গেল।
তখন আখীশ সিক্লগ শহরটা দায়ূদকে দান করলেন। সেইজন্য আজও সিক্লগ যিহূদার রাজাদের অধিকারে আছে।
7 দাউদ ফিলিস্তিনী এলাকায় এক বছর চার মাস ধরে বসবাস করলেন।
দায়ূদ পলেষ্টীয়দের দেশে এক বছর চার মাস ছিলেন।
8 ইতিমধ্যে দাউদ ও তাঁর লোকজন গিয়ে গশূরীয়, গির্ষীয় ও অমালেকীয়দের উপরে অতর্কিত আক্রমণ শানিয়েছিলেন। (প্রাচীনকাল থেকেই এইসব লোকজন শূর ও মিশর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাস করত)
সেই দিনের মধ্যে তিনি তাঁর লোকদের নিয়ে গশূরীয়, গির্ষীয় ও অমালেকীয়দের দেশে লুট পাট করতে গিয়েছিলেন। এই সব জাতির লোকেরা অনেক কাল আগে শূর থেকে মিশর পর্যন্ত সমস্ত এলাকাটায় বাস করত।
9 যখনই দাউদ কোনো এলাকা আক্রমণ করতেন, তিনি সেখানে একটিও পুরুষ বা স্ত্রীলোককে জীবিত ছাড়তেন না, কিন্তু মেষ ও গবাদি পশু, গাধা ও উট, এবং পোশাক-পরিচ্ছদ লুট করতেন। পরে তিনি আখীশের কাছে ফিরে আসতেন।
দায়ূদ যখন কোন এলাকা আক্রমণ করতেন তখন সেখানকার স্ত্রী-পুরুষ সবাইকে মেরে ফেলতেন এবং তাদের ভেড়া, গরু, গাধা, উট, আর কাপড়-চোপড় নিয়ে আসতেন। যখন তিনি আখীশের কাছে ফিরে আসতেন
10 আখীশ যখন জিজ্ঞাসা করতেন, “আজ তুমি কোথায় অতর্কিত আক্রমণ শানাতে গেলে?” দাউদ তখন উত্তর দিতেন, “যিহূদার নেগেভে” অথবা “যিরহমেলীয়দের নেগেভে” বা “কেনীয়দের নেগেভে।”
১০তখন আখীশ জিজ্ঞাসা করতেন, “আজ কোথায় লুটপাট করতে গিয়েছিলে?” উত্তরে দায়ূদ বলতেন যে, তিনি যিহূদার দক্ষিণাঞ্চলে কিম্বা যিরহমেলীয়দের দক্ষিণাঞ্চলে কিম্বা কেনীয়দের দক্ষিণাঞ্চলে গিয়েছিলেন।
11 গাতে নিয়ে আসার জন্য তিনি কোনো পুরুষ বা স্ত্রীলোককে জীবিত রাখতেন না, কারণ তিনি ভাবতেন, “এরা হয়তো আমাদের বিষয়ে বলে দেবে, ‘দাউদ এ ধরনের কাজ করেছেন।’” আর যতদিন তিনি ফিলিস্তিনী এলাকায় বসবাস করলেন, ততদিন তিনি এরকমই করে গেলেন।
১১কিন্তু দায়ূদ কোন স্ত্রীলোক কিম্বা পুরুষকে গাতে নিয়ে আসবার জন্য বাঁচিয়ে রাখতেন না, কারণ তিনি মনে করতেন, তারা তাদের বিষয় সব কথা জানিয়ে দিয়ে বলবে যে, দায়ূদ এই কাজ করেছে। পলেষ্টীয়দের দেশে আসবার পর থেকে দায়ূদ বরাবরই এই রকম করতেন,
12 আখীশ দাউদকে বিশ্বাস করতেন ও মনে মনে বলতেন, “সে তার নিজের জাতি ইস্রায়েলের কাছে নিজেকে আপত্তিকর করে তুলেছে, তাই সারা জীবন সে আমার দাস হয়েই থাকবে।”
১২কিন্তু আখীশ দায়ূদকে বিশ্বাস করতেন আর ভাবতেন দায়ূদ এই সব কাজ করে তাঁর নিজের জাতি ইস্রায়েলীয়দের কাছে নিজেকে খুব ঘৃণার পাত্র করে তুলেছে আর তাতে সে চিরকাল আমার দাস হয়ে থাকবে।

< শমূয়েলের প্রথম বই 27 >