< শমূয়েলের প্রথম বই 16 >
1 সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইস্রায়েলের রাজারূপে আমি শৌলকে অগ্রাহ্য করেছি, তাই তুমি আর কত দিন তার জন্য কান্নাকাটি করবে? তোমার শিঙায় তেল ভরে নাও ও বেরিয়ে পড়ো; আমি তোমাকে বেথলেহেমে যিশয়ের কাছে পাঠাচ্ছি। আমি তার ছেলেদের মধ্যে একজনকে রাজা হওয়ার জন্য মনোনীত করেছি।”
2 কিন্তু শমূয়েল বললেন, “আমি কীভাবে যাব? শৌল যদি শুনতে পায়, তবে সে আমাকে মেরে ফেলবে।” সদাপ্রভু বললেন, “তুমি সাথে করে একটি বকনা-বাছুর নিয়ে গিয়ে বলো, ‘আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান উৎসর্গ করতে এসেছি।’
3 বলিদানের অনুষ্ঠানে যিশয়কে নিমন্ত্রণ কোরো, আর আমি তোমায় জানিয়ে দেব ঠিক কী করতে হবে। আমি যার দিকে ইঙ্গিত করব, তুমি তাকেই অভিষিক্ত করবে।”
4 সদাপ্রভু যা বললেন শমূয়েল ঠিক তাই করলেন। তিনি বেথলেহেমে পৌঁছালে, তাঁকে দেখে নগরের প্রাচীনেরা শিহরিত হলেন। তাঁরা প্রশ্ন করলেন, “আপনি শান্তিভাব নিয়ে এসেছেন তো?”
5 শমূয়েল উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, শান্তিভাব নিয়েই এসেছি; আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান উৎসর্গ করতে এসেছি। তোমরা নিজেদের শুচিশুদ্ধ করো ও আমার সঙ্গে বলিদান উৎসর্গ করতে চলো।” পরে তিনি যিশয় ও তাঁর ছেলেদের শুদ্ধকরণ করে বলিদান উৎসর্গ করার জন্য তাঁদের নিমন্ত্রণ জানালেন।
6 তাঁরা সেখানে পৌঁছালে, শমূয়েল ইলীয়াবকে দেখে ভাবলেন, “সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিই নিশ্চয় এখানে সদাপ্রভুর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।”
7 কিন্তু সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “এর চেহারা বা উচ্চতা দেখতে যেয়ো না, কারণ আমি একে অগ্রাহ্য করেছি। মানুষ যা দেখে সদাপ্রভু তা দেখেন না। মানুষ বাইরের চেহারাই দেখে, কিন্তু সদাপ্রভু অন্তর দেখেন।”
8 পরে যিশয় অবীনাদবকে ডেকে তাকে শমূয়েলের সামনে দিয়ে হাঁটালেন। কিন্তু শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও মনোনীত করেননি।”
9 যিশয় পরে শম্মকে হাঁটালেন, কিন্তু শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও মনোনীত করেননি।”
10 যিশয় তাঁর সাত ছেলেদের প্রত্যেককেই শমূয়েলের সামনে দিয়ে হাঁটালেন, কিন্তু শমূয়েল তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু এদের কাউকেই মনোনীত করেননি।”
11 অতএব তিনি যিশয়কে প্রশ্ন করলেন, “তোমার কি এই কটিই ছেলে আছে?” “সবচেয়ে ছোটো একজন আছে,” যিশয় উত্তর দিলেন। “সে তো মেষ চরাচ্ছে।” শমূয়েল বললেন, “তাকে ডেকে পাঠাও; সে না আসা পর্যন্ত আমরা খেতে বসব না।”
12 অতএব যিশয় লোক পাঠিয়ে তাকে ডেকে আনালেন। সে ছিল সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও তার চোখদুটি ছিল সুন্দর এবং দেখতেও সে ছিল রূপবান। তখন সদাপ্রভু বলে উঠলেন, “ওঠো ও একে অভিষিক্ত করো; এই সেই লোক।”
13 তাই শমূয়েল তেলের শিঙা নিয়ে তাকে তার দাদাদের উপস্থিতিতে অভিষিক্ত করলেন, আর সেইদিন থেকেই সদাপ্রভুর আত্মা দাউদের উপর সপরাক্রমে নেমে এলেন। পরে শমূয়েল রামায় চলে গেলেন।
14 ইত্যবসরে সদাপ্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে গেলেন, এবং সদাপ্রভুর কাছ থেকে এক মন্দ আত্মা এসে তাঁকে উত্যক্ত করল।
15 শৌলের পরিচারকেরা তাঁকে বলল, “দেখুন, ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা এক মন্দ-আত্মা আপনাকে উত্যক্ত করছে।
16 আমাদের প্রভু এখানে তাঁর দাসদের আদেশ করুন, আমরা এমন একজনকে খুঁজে আনি যে বীণা বাজাতে পারে। মন্দ আত্মাটি যখন ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনার উপর নেমে আসবে তখন সে বীণা বাজাবে, এবং আপনার ভালো লাগবে।”
17 অতএব শৌল তাঁর পরিচারকদের বললেন, “এমন কাউকে খুঁজে বের করো যে বেশ ভালো বাজাতে জানে এবং তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”
18 দাসদের মধ্যে একজন উত্তর দিল, “আমি বেথলেহেম নিবাসী যিশয়ের ছেলেদের মধ্যে একজনকে দেখেছি যে বীণা বাজাতে জানে। সে একজন বীরপুরুষ ও এক যোদ্ধাও। সে বেশ ভালো কথা বলে ও রূপবানও বটে। সদাপ্রভুও তার সহবর্তী।”
19 তখন শৌল যিশয়ের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমার কাছে তোমার ছেলে সেই দাউদকে পাঠিয়ে দাও, যে মেষপাল দেখাশোনা করছে।”
20 অতএব যিশয় একটি গাধার পিঠে কিছু রুটি ও এক মশক ভরা দ্রাক্ষারস, এবং একটি কচি পাঁঠা সমেত তাঁর ছেলে দাউদকে শৌলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
21 দাউদ শৌলের কাছে এসে তাঁর সেবাকাজে বহাল হলেন। শৌলের তাকে খুব পছন্দ হল, এবং দাউদ তাঁর অস্ত্র-বহনকারীদের মধ্যে একজন হয়ে গেলেন।
22 পরে শৌল যিশয়কে বলে পাঠালেন, “দাউদকে আমার সেবাকাজে বহাল থাকতে দাও, কারণ আমার ওকে ভালো লেগেছে।”
23 যখনই ঈশ্বরের কাছ থেকে আত্মাটি নেমে আসত, দাউদ তার বীণাটি নিয়ে বাজাতে শুরু করতেন। তখনই শৌল স্বস্তি পেতেন; তাঁর ভালো লাগত, ও মন্দ আত্মাটি তাঁকে ছেড়ে চলে যেত।