< প্রথম রাজাবলি 8 >
1 পরে রাজা শলোমন জেরুশালেমে তাঁর কাছে দাউদ-নগর, অর্থাৎ সিয়োন থেকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি নিয়ে আসার জন্য ইস্রায়েলের প্রাচীনদের, সমস্ত গোষ্ঠীপতিকে ও ইস্রায়েলী পরিবারের প্রধানদের ডেকে পাঠালেন।
2 ইস্রায়েলীরা সবাই বছরের সপ্তম মাস, এথানীম মাসে উৎসবের সময় রাজা শলোমনের কাছে একত্রিত হল।
3 ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই পৌঁছে যাওয়ার পর যাজকেরা সিন্দুকটি উঠিয়েছিলেন,
4 এবং তারা সদাপ্রভুর সেই সিন্দুকটি ও সমাগম তাঁবুটি এবং সেখানকার সব পবিত্র আসবাবপত্রাদি নিয়ে এলেন। যাজকেরা ও লেবীয়রা সেগুলি বহন করে এনেছিলেন,
5 আর রাজা শলোমন ও তাঁর কাছে একত্রিত হওয়া ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজ সিন্দুকটির সামনে উপস্থিত হয়ে এত মেষ ও গবাদি পশুবলি দিলেন, যে সেগুলি নথিভুক্ত করে বা গুনে রাখা সম্ভব হয়নি।
6 যাজকেরা পরে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকটি মন্দিরের ভিতরদিকের পীঠস্থানে, অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থানে সেটির জন্য ঠিক করে রাখা স্থানে নিয়ে এলেন, এবং দুটি করূবের ডানার নিচে রেখে দিলেন।
7 করূব দুটি সেই সিন্দুক রাখার স্থানের উপর তাদের ডানা মেলে ধরেছিল এবং সেই সিন্দুক ও সেটির হাতলগুলি আড়াল করে রেখেছিল।
8 সেই হাতলগুলি এত লম্বা ছিল যে বের হয়ে আসা হাতলের শেষপ্রান্তগুলি ভিতরদিকের পীঠস্থানের সামনে থেকে দেখা যেত, কিন্তু পবিত্রস্থানের বাইরে থেকে দেখা যেত না; আর সেগুলি আজও সেখানেই আছে।
9 সেই সিন্দুকে পাথরের সেই দুটি পাথরের ফলক ছাড়া আর কিছুই ছিল না, যেগুলি ইস্রায়েলীরা মিশর দেশ থেকে বের হয়ে আসার পর সদাপ্রভু তাদের সাথে যেখানে এক নিয়ম স্থাপন করলেন, সেই হোরেবে মোশি সিন্দুকে ভরে রেখেছিলেন।
10 যাজকেরা পবিত্রস্থান থেকে সরে যাওয়ার পর সদাপ্রভুর মন্দিরটি মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গেল।
11 এবং সেই মেঘের কারণে যাজকেরা তাদের পরিচর্যা করে উঠতে পারেননি, যেহেতু সদাপ্রভুর প্রতাপে তাঁর মন্দিরটি পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
12 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু বলেছেন যে তিনি ঘন মেঘের মাঝে বসবাস করবেন;
13 বাস্তবিকই আমি তোমার জন্য এক দর্শনীয় মন্দির তৈরি করেছি, সেটি এমন এক স্থান, যেখানে তুমি চিরকাল বসবাস করবে।”
14 ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজ যখন সেখানে দাঁড়িয়েছিল, রাজামশাই তখন তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাদের আশীর্বাদ করলেন।
15 পরে তিনি বললেন: “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি নিজের হাতে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করেছেন, যেটি তিনি নিজের মুখে আমার বাবা দাউদের কাছে করলেন। কারণ তিনি বললেন,
16 ‘যেদিন আমি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে এনেছিলাম, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমার নামের উদ্দেশে মন্দির নির্মাণের জন্য আমি ইস্রায়েলের গোষ্ঠীভুক্ত কোনও নগর মনোনীত করিনি, কিন্তু আমার প্রজা ইস্রায়েলকে শাসন করার জন্য আমি দাউদকে মনোনীত করেছিলাম।’
17 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে একটি মন্দির নির্মাণ করার বাসনা আমার বাবা দাউদের অন্তরে ছিল।
18 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দাউদকে বললেন, ‘আমার নামে একটি মন্দির নির্মাণ করার কথা ভেবে তুমি ভালোই করেছ।
19 তবে, তুমি সেই মন্দির নির্মাণ করবে না, কিন্তু তোমার সেই ছেলে, যে তোমারই রক্তমাংস—সেই আমার নামে একটি মন্দির নির্মাণ করবে।’
20 “সদাপ্রভু তাঁর করা প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করেছেন: আমি আমার বাবা দাউদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছি এবং সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞানুসারে এখন আমি ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসেছি, এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে আমি মন্দিরটি নির্মাণ করেছি।
21 আমি সেখানে সেই সিন্দুকটির জন্য স্থান করে রেখেছি, যেখানে সদাপ্রভুর সেই নিয়মটি রাখা আছে, যা তিনি মিশর থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের বের করে আনার সময় তাদের সঙ্গে স্থাপন করলেন।”
22 পরে শলোমন ইস্রায়েলের সমগ্র জনসমাজের সামনে সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে উঠে দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে তাঁর দু-হাত মেলে ধরলেন
23 এবং বললেন: “হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, উপরে স্বর্গে বা নিচে পৃথিবীতে তোমার মতো আর কোনও ঈশ্বর নেই—যারা সর্বান্তঃকরণে তোমার পথে চলতে থাকে, তোমার সেইসব দাসের প্রতি তুমি তোমার প্রেমের নিয়ম পালন করে থাকো।
24 আমার বাবা, তথা তোমার দাস দাউদের কাছে করা প্রতিজ্ঞাটি তুমি পূরণ করেছ; নিজের মুখেই তুমি সেই প্রতিজ্ঞাটি করলে এবং নিজের হাতেই তুমি তা রক্ষাও করেছ—যেমনটি কি না আজ দেখা যাচ্ছে।
25 “এখন হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাস ও আমার বাবা দাউদের কাছে তোমার করা সেই প্রতিজ্ঞাটি পূরণ করো। যে প্রতিজ্ঞায় তুমি বললে, ‘শুধু যদি তোমার বংশধরেরা আমার সামনে চলার জন্য একটু সতর্ক হয়ে তোমার মতো বিশ্বস্ততাপূর্বক সবকিছু করে, তবে আমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসার জন্য তোমার কোনও উত্তরাধিকারীর অভাব হবে না।’
26 আর এখন, হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমার বাবা তোমার দাস দাউদের কাছে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করলে, তা যেন সত্যি হয়।
27 “কিন্তু ঈশ্বর কি সত্যিই পৃথিবীতে বসবাস করবেন? স্বর্গ, এমন কী সর্বোচ্চ স্বর্গও তোমাকে ধারণ করতে পারে না। তবে আমার নির্মাণ করা এই মন্দিরই বা কীভাবে করবে!
28 তবুও হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাসের প্রার্থনায় ও দয়া লাভের জন্য তার করা আজকের দিনে এই অনুরোধের প্রতি মনোযোগ দাও। তোমার উপস্থিতিতে তোমার এই দাস যে ক্রন্দন ও প্রার্থনা করছে, তা তুমি শোনো।
29 এই মন্দিরের প্রতি যেন দিনরাত তোমার চোখ খোলা থাকে, যেখানকার বিষয়ে তুমি বললে, ‘আমার নাম সেখানে বজায় থাকবে,’ যেন এই স্থানটির দিকে চেয়ে তোমার দাস যে প্রার্থনা করবে তা তুমি শুনতে পাও।
30 তোমার এই দাস ও তোমার প্রজা ইস্রায়েল যখন এই স্থানটির দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে তখন তুমি তাদের মিনতি শুনো। স্বর্গ থেকে, তোমার সেই বাসস্থান থেকে তুমি তা শুনো; এবং শুনে তাদের ক্ষমাও কোরো।
31 “যখন কেউ তার প্রতিবেশীর প্রতি কোনও অন্যায় করবে ও তাকে শপথ করতে বলা হবে এবং সে এই মন্দিরে রাখা তোমার এই যজ্ঞবেদির সামনে এসে শপথ করবে,
32 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনে সেইমতোই কাজ কোরো। তোমার দাসদের বিচার কোরো, দোষীকে শাস্তি দিয়ো ও তার কৃতকর্মের ফল তার মাথায় চাপিয়ে দিয়ো, এবং নিরপরাধের পক্ষসমর্থন করে, তার নিষ্কলুষতা অনুসারে তার প্রতি আচরণ কোরো।
33 “যখন তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার কারণে শত্রুর কাছে পরাজিত হয়ে আবার তোমার কাছে ফিরে এসে তোমার নামের গৌরব করবে, ও এই মন্দিরে তোমার কাছে প্রার্থনা ও মিনতি করবে,
34 তখন স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো এবং তাদের সেই দেশে ফিরিয়ে এনো, যেটি তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে।
35 “তোমার প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার কারণে যখন আকাশের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে ও বৃষ্টি হবে না, আর যখন তারা এই স্থানটির দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে ও তোমার নামের প্রশংসা করবে এবং তুমি যেহেতু তাদের কষ্ট দিয়েছ, তাই তারা তাদের পাপপথ থেকে ফিরে আসবে,
36 তখন স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো ও তোমার দাসদের, তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো। সঠিক জীবনযাপনের পথ তুমি তাদের শিক্ষা দিয়ো, এবং যে দেশটি তুমি তোমার প্রজাদের এক উত্তরাধিকাররূপে দিয়েছ, সেই দেশে তুমি বৃষ্টি পাঠিয়ো।
37 “যখন দেশে দুর্ভিক্ষ বা মহামারি দেখা দেবে, অথবা ফসল ক্ষেতে মড়ক লাগবে বা ছাতারোগ লাগবে, পঙ্গপাল বা ফড়িং হানা দেবে, অথবা শত্রুরা তাদের যে কোনো নগরে তাদের যখন অবরুদ্ধ করে রাখবে, যখন এরকম কোনও বিপত্তি বা রোগজ্বালার প্রকোপ পড়বে,
38 তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মধ্যে কেউ যদি প্রার্থনা বা মিনতি উৎসর্গ করে—তাদের নিজেদের অন্তরের দুর্দশা অনুভব করে এই মন্দিরের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়—
39 তবে তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বাসস্থান থেকে তা শুনো। তাদের ক্ষমা কোরো, ও প্রত্যেকের সাথে তাদের কৃতকর্মানুসারে আচরণ কোরো, যেহেতু তুমি তো তাদের অন্তর জানো (কারণ একমাত্র তুমিই প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ের খবর রাখো),
40 যে দেশটি তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, সেখানে যতদিন তারা বেঁচে থাকবে, যেন তোমাকে ভয় করে চলতে পারে।
41 “যে তোমার প্রজা ইস্রায়েলের অন্তর্ভুক্ত নয়, এমন কোনও বিদেশি
42 তোমার মহানামের ও তোমার পরাক্রমী হাতের এবং তোমার প্রসারিত বাহুর কথা শুনে যখন দূরদেশ থেকে আসবে—তারা যখন এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে,
43 তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার সেই বাসস্থান থেকে তা শুনো। সেই বিদেশি তোমার কাছে যা চাইবে, তা তাকে দিয়ো, যেন পৃথিবীর সব মানুষজন তোমার নাম জানতে পারে ও তোমাকে ভয় করে, ঠিক যেভাবে তোমার নিজস্ব প্রজা ইস্রায়েল করে এসেছে, এবং তারা যেন এও জানতে পারে যে এই যে ভবনটি আমি তৈরি করেছি, তা তোমার নাম বহন করে চলেছে।
44 “তোমার প্রজারা যখন তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করবে, তুমি তাদের যেখানেই পাঠাও না কেন, ও এই যে নগর ও মন্দিরটি আমি তোমার নামের উদ্দেশে নির্মাণ করেছি, সেদিকে চেয়ে তারা সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করবে,
45 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও মিনতি শুনো, এবং তাদের পক্ষসমর্থন কোরো।
46 “তারা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপ করবে—কারণ এমন কেউ নেই যে পাপ করে না—আর তুমি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হবে ও তাদেরকে তাদের সেই শত্রুদের হাতে তুলে দেবে, যারা তাদের নিজেদের দেশে বন্দি করে নিয়ে যাবে, তা সে বহুদূরে অথবা কাছেও হতে পারে;
47 এবং সেই দেশে বন্দি জীবন কাটাতে কাটাতে যদি তাদের মন পরিবর্তন হয়, ও তারা অনুতাপ করে ও তাদের সেই বন্দিদশার দেশে থাকতে থাকতেই যদি তারা তোমাকে অনুরোধ জানিয়ে বলে, ‘আমরা পাপ করেছি, আমরা অন্যায় করেছি, দুষ্টতামূলক আচরণ করেছি’;
48 এবং তাদের যে শত্রুরা তাদের বন্দি করল, তাদের সেই দেশে যদি তারা তাদের সব মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে তোমার কাছে ফিরে আসে ও তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশটি দিয়েছিলে, সেই দেশের ও তুমি যে নগরটি মনোনীত করলে, সেই নগরটির তথা আমি তোমার নামের উদ্দেশে যে মন্দিরটি নির্মাণ করেছি তার দিকে তাকিয়ে যদি তারা তোমার কাছে প্রার্থনা করে;
49 তবে তুমি তোমার বাসস্থান সেই স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও মিনতি শুনো, ও তাদের প্রতি সুবিচার কোরো,
50 এবং তোমার সেই প্রজাদের ক্ষমা কোরো, যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে; তোমার বিরুদ্ধে করা তাদের সব অপরাধ ক্ষমা কোরো, এবং তাদের বন্দিকারীদের মনে এমন ভাব উৎপন্ন কোরো, যেন তারা তাদের প্রতি দয়া দেখায়;
51 কারণ তারা যে তোমার সেই প্রজা ও উত্তরাধিকার, যাদের তুমি মিশর থেকে, সেই লোহা গলানো চুল্লি থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে।
52 “তোমার চোখ তোমার দাসের মিনতির প্রতি ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মিনতির প্রতিও খোলা থাকুক, এবং তারা যখনই তোমার কাছে কেঁদে উঠবে, তুমি যেন তা শুনতে পাও।
53 কারণ তুমি তাদের তোমার নিজস্ব উত্তরাধিকার হওয়ার জন্য জগতের সব জাতির মধ্যে থেকে আলাদা করে বেছে নিয়েছ, ঠিক যেভাবে তুমি, হে সার্বভৌম সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় তোমার দাস মোশির মাধ্যমে ঘোষণা করলে।”
54 সদাপ্রভুর কাছে এইসব প্রার্থনা ও মিনতি উৎসর্গ করা সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর শলোমন সদাপ্রভুর সেই যজ্ঞবেদির সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, যেখানে তিনি নতজানু হয়ে স্বর্গের দিকে দু-হাত প্রসারিত করে রেখেছিলেন।
55 তিনি উঠে দাঁড়িয়ে জোর গলায় সমগ্র ইস্রায়েলী জনতাকে আশীর্বাদ করে বললেন:
56 “সেই সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি তাঁর প্রতিজ্ঞানুসারে তাঁর প্রজা ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দিয়েছেন। তিনি তাঁর দাস মোশির মাধ্যমে যত ভালো ভালো প্রতিজ্ঞা করলেন, তার একটিও ব্যর্থ হয়নি।
57 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, তেমনি তিনি আমাদেরও সঙ্গে সঙ্গে থাকুন; তিনি যেন আমাদের না ছাড়েন বা আমাদের পরিত্যাগ না করেন।
58 তাঁর প্রতি বাধ্যতায় চলার জন্য ও তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের যে যে আদেশ, বিধিবিধান ও নিয়মকানুন দিলেন, সেগুলি পালন করার জন্য তিনি যেন আমাদের অন্তর তাঁর প্রতি ফিরিয়ে আনেন।
59 আর আমি সদাপ্রভুর সামনে যে প্রার্থনাটি করেছি তার এক-একটি কথা যেন দিনরাত আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছাকাছি থাকে, যেন তিনি প্রতিদিনের চাহিদা অনুসারে তাঁর দাসের ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের প্রতি সুবিচার করলেন,
60 যেন পৃথিবীর সব লোকজন জানতে পারে যে সদাপ্রভুই ঈশ্বর ও তিনি ছাড়া আর কেউ ঈশ্বর নয়।
61 আর তোমাদের অন্তর যেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিধিবিধান অনুসারে চলার ও তাঁর আদেশের বাধ্য হওয়ার জন্য তাঁর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত থাকে, যেমনটি এসময় হয়েছে।”
62 পরে রাজামশাই ও তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীরা সবাই সদাপ্রভুর সামনে বলি উৎসর্গ করলেন।
63 শলোমন সদাপ্রভুর কাছে এই মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন: 22,000-টি গবাদি পশু ও 1,20,000-টি মেষ ও ছাগল। এইভাবে রাজা ও ইস্রায়েলী সবাই সদাপ্রভুর মন্দিরটি উৎসর্গ করলেন।
64 সেদিনই রাজামশাই সদাপ্রভুর মন্দিরের সামনের দিকের প্রাঙ্গণের মাঝের অংশটুকুও উৎসর্গ করে দিলেন, এবং সেখানে তিনি হোমবলি, শষ্য-বলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের চর্বি উৎসর্গ করলেন, কারণ সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের যজ্ঞবেদিটি হোমবলি, শষ্য-বলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্যের চর্বি ধারণ করার পক্ষে বড়োই ছোটো হয়ে গেল।
65 অতএব শলোমন সেই সময় উৎসব পালন করলেন, এবং তাঁর সাথে সমস্ত ইস্রায়েলও পালন করল—সে এক বিশাল জনতা, হমাতের প্রবেশদ্বার থেকে মিশরের নির্ঝরিণী পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার লোকজন সেখানে উপস্থিত হল। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তারা সাত দিন ও আরও সাত দিন, মোট চোদ্দো দিন ধরে উৎসব উদ্যাপন করল।
66 পরদিন তিনি লোকজনকে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। তারা রাজামশাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও সদাপ্রভু তাঁর দাস দাউদ ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের প্রতি যেসব মঙ্গল করেছেন, তার জন্য খুশিমনে আনন্দ করতে করতে যে যার ঘরে ফিরে গেল।