< গণনার বই 23 >
1 ১ বিলিয়ম বালাককে বলল, “আপনি এখানে আমার জন্য সাতটি বেদি তৈরী করুন এবং এখানে আমার জন্য সাতটি ষাঁড় ও সাতটি ভেড়ার আয়োজন করুন।”
বিলিয়ম বলল, “আমার জন্য আপনি এখানে সাতটি বেদি নির্মাণ করুন এবং সাতটি ষাঁড় ও সাতটি মেষের আয়োজন করুন।”
2 ২ তাতে বালাক বিলিয়মের অনুরোধে সেই রকম করলেন। তখন বালাক ও বিলিয়ম এক একটি বেদিতে এক একটি ষাঁড় ও এক একটি ভেড়া উৎসর্গ করলেন।
বিলিয়মের কথামতো বালাক সব কাজ করলেন। তারা উভয়ে প্রতিটি বেদিতে, একটি ষাঁড় ও একটি মেষ উৎসর্গ করলেন।
3 ৩ তখন বিলিয়ম বালাককে বলল, “আপনি আপনার হোমবলির কাছে দাঁড়িয়ে থাকুন এবং আমি যাই, হয় তো সদাপ্রভু আমার কাছে দেখা দেবেন। তাহলে তিনি আমাকে যা জানাবেন, আমি তা আপনাকে বলব।” পরে সে পর্বতের ওপরে চলে গেল।
তারপর বালাককে বিলিয়ম বলল, “যখন আমি একান্তে যাই, আপনি আপনার নৈবেদ্যের পাশে অপেক্ষা করুন। সম্ভবত সদাপ্রভু আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। যা কিছু তিনি আমার কাছে প্রকাশ করেন, আমি আপনাকে অবহিত করব।” তারপর সে এক অনুর্বর পাহাড়ের উপরে উঠে গেল।
4 ৪ ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে দেখা দিলেন, আর সে তাঁকে বলল, “আমি সাতটি বেদি তৈরী করেছি; আর এক একটি বেদিতে এক একটি ষাঁড় ও এক একটি ভেড়া উৎসর্গ করেছি।”
ঈশ্বর তার সঙ্গে দেখা করলেন এবং বিলিয়ম বলল, “আমি সাতটি বেদি নির্মাণ করেছি। প্রত্যেকটির উপর একটি করে ষাঁড় ও একটি করে মেষ উৎসর্গ করেছি।”
5 ৫ তখন সদাপ্রভু বিলিয়মের মুখে এক বাক্য দিলেন, আর বললেন, “তুমি বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে এইরকম কথা বল।”
সদাপ্রভু বিলিয়মের মুখে একটি বাণী দিলেন এবং বললেন, “বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে তাকে এই বার্তা শোনাও।”
6 ৬ তাতে সে তার কাছে ফিরে গেল, আর দেখ, মোয়াবের শাসনকর্ত্তাদের সঙ্গে বালাক তাঁর হোমের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সে তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে দেখল তিনি মোয়াবের সমস্ত কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর নৈবেদ্যের কাছে দাঁড়িয়ে আছেন।
7 ৭ তখন বিলিয়ম তার ভাববাণী করে বলল, বালাক অরাম থেকে আমাকে আনালেন, “মোয়াবের রাজা পূর্বদিকের পর্বতমালা থেকে আনলেন, ‘এস, আমার জন্য যাকোবকে অভিশাপ দাও, এস, ইস্রায়েলকে উপর তুচ্ছ কর।’
তখন বিলিয়ম তার প্রত্যাদেশ ব্যক্ত করল, “অরাম থেকে বালাক আমাকে আনলেন, মোয়াব রাজা, প্রাচ্যের পর্বতসমূহ থেকে আনলেন, সে বলল, ‘এসো, আমার অনুকূলে যাকোবকে অভিশাপ দাও, এসো, ইস্রায়েলের বিষয় অমঙ্গলের কথা বলো।’
8 ৮ ঈশ্বর যাকে অভিশাপ দেন নি, আমি কিভাবে তাকে অভিশাপ দেব? সদাপ্রভু যাকে তুচ্ছ করেন নি, আমি কিভাবে তাকে তুচ্ছ করব?
ঈশ্বর যাদের অভিশাপ দেননি আমি কীভাবে তাদের অভিশাপ দিই? সদাপ্রভু যাদের অবলুপ্ত করেননি, আমি কীভাবে তাদের অবলুপ্তি ঘোষণা করব?
9 ৯ আমি শিলার চূড়া থেকে তাকে দেখেছি, গিরিমালা থেকে তাকে দর্শন করছি; দেখ, ঐ লোকেরা স্বাধীনভাবে বাস করে, তাদের জাতিদের মধ্যে গণনা করা হবে না।
শৈলময় শিখর থেকে আমি তাদের নিরীক্ষণ করি, উচ্চস্থল থেকে আমি তাদের লক্ষ্য করি; দেখতে পাই, স্বতন্ত্র এক জাতির নিবাস, যারা অন্য জাতিসমূহের পর্যায়ভুক্ত বলে নিজেদের গণ্য করে না।
10 ১০ যাকোবের ধূলো কে গণনা করতে পারে? ইস্রায়েলের চার ভাগের এক ভাগ সংখ্যা কে করতে পারে? ধার্ম্মিকের মৃত্যের মত আমার মৃত্যু হোক, তার শেষ গতির মত আমার শেষ গতি হোক।”
যাকোবের ধুলো, কে করতে গণনা পারে অথবা, ইস্রায়েলের এক-চতুর্থাংশের সংখ্যা নির্ণয় করতে পারে? ধার্মিকের মৃত্যুর মতো আমার মৃত্যু হোক, যেন তাদেরই অনুরূপ আমরাও পরিণতি হয়!”
11 ১১ তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি আমার প্রতি এ কি করলেন? আমার শত্রুদেরকে অভিশাপ দিতে আপনাকে আনালাম, কিন্তু দেখুন, আপনি তাদেরকে আশীর্বাদ করলেন।”
বালাক, বিলিয়মকে বললেন, “আপনি আমার প্রতি এ কী করলেন? আমি, আমার শত্রুদের অভিশাপ দিতে আপনাকে ডেকেছিলাম, কিন্তু আপনি কিছুই না করে, তাদের আশীর্বাদ করলেন।”
12 ১২ সে উত্তর দিল, “সদাপ্রভু আমার মুখে যে কথা দেন, সাবধান হয়ে তাই বলা কি আমার উচিত নয়?”
সে উত্তর দিল, “সদাপ্রভু আমার মুখে যে কথা দেন, আমি কি সেকথাই বলতে বাধ্য নই?”
13 ১৩ বালাক বললেন, “বিনয় করি, অন্য জায়গায় আমার সঙ্গে আসুন, আপনি সেখান থেকে তাদেরকে দেখতে পাবেন। আপনি তাদের শেষভাগ কেবলমাত্র দেখতে পাবেন, সবকিছু দেখতে পাবেন না। ওখানে থেকে আমার জন্য তাদেরকে অভিশাপ দিন।”
পরে বালাক তাকে বললেন, “আমার সঙ্গে অন্য স্থানে চলুন, সেখান থেকে আপনি তাদের দেখতে পাবেন। আপনি তাদের সবাইকে নয়, কিন্তু তাদের শিবিরের প্রান্তভাগ দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আমার অনুকূলে তাদের অভিশাপ দিন।”
14 ১৪ তখন বালাক তাকে পিস্গার চূড়ায় অবস্থিত সোফীম ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে সেখানে সাতটি বেদি তৈরী করলেন, আর প্রত্যেক বেদিতে এক একটি ষাঁড় ও এক একটি ভেড়া উৎসর্গ করলেন।
সেই লক্ষ্যে তিনি তাকে পিস্গা শিখরে সোফীমের ক্ষেতে নিয়ে গেলেন। সেখানে সাতটি বেদি নির্মাণ করে, প্রত্যেকটির উপর একটি করে ষাঁড় ও একটি মেষ উৎসর্গ করলেন।
15 ১৫ তখন সে বালাককে বলল, “আমি যতক্ষণ ওখানে সদাপ্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি, ততক্ষণ আপনি এখানে আপনকার হোমবলির কাছে দাঁড়িয়ে থাকুন।”
বালাককে বিলিয়ম বলল, “যখন আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই, আপনি আপনার নৈবেদ্যের পাশে অপেক্ষা করুন।”
16 ১৬ সুতরাং সদাপ্রভু বিলিয়মের কাছে দেখা দিয়ে তার মুখে এক বাক্য দিলেন এবং বললেন, “তুমি বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে এইরকম কথা বল।”
সদাপ্রভু বিলিয়মের সঙ্গে দেখা করে তার মুখে বাণী দিলেন এবং বললেন, “বালাকের কাছে ফিরে যাও ও এই বার্তা তাকে দাও।”
17 ১৭ তাতে সে তাঁর কাছে উপস্থিত হল; আর দেখ, মোয়াবের শাসনকর্ত্তাদের সঙ্গে বালাক তাঁর হোমবলির কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর বালাক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভু কি বললেন?”
সে তাঁর কাছে গিয়ে দেখল তিনি মোয়াবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর নৈবেদ্যের কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। বালাক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সদাপ্রভু কী কথা বললেন?”
18 ১৮ তখন সে তার ভাববাণী করে বলল, “ওঠ, বালাক, শোন; হে সিপ্পোরের ছেলে, আমার কথায় কান দাও।
তখন তিনি তার প্রত্যাদেশ ব্যক্ত করলেন, “বালাক, ওঠো ও শ্রবণ করো, সিপ্পোরের ছেলে, আমার কথায় কর্ণপাত করো।
19 ১৯ ঈশ্বর মানুষ নন যে মিথ্যা বলবেন, তিনি মানুষের সন্তান নন যে অনুশোচনা করবেন। তিনি কি কাজ না করেই প্রতিশ্রুতি করেন? তিনি কি সম্পন্ন না করার জন্য কোন কিছু বলেন?
সদাপ্রভু মানব নন যে তাঁকে মিথ্যা বলতে হবে, মনুষ্য সন্তান নন যে তাঁর মতের পরিবর্তন করবেন। তিনি কথা দিয়ে কি কাজে রূপায়িত করেন না? প্রতিজ্ঞা করে তিনি কি পূর্ণ করেন না?
20 ২০ দেখ, আমি আশীর্বাদ করার আদেশ পেলাম, তিনি আশীর্বাদ করেছেন, আমি বিপরীতে যেতে পারি না।
আমি আশীর্বাদ করার আদেশ পেয়েছি; তিনি আশীর্বাদ করেছেন, আমি তার অন্যথা করতে পারি না।
21 ২১ তিনি যাকোবের মধ্যে অস্বচ্ছলতা দেখতে পাননি, ইস্রায়েলের উপদ্রব দেখেন নি, তার ঈশ্বর সদাপ্রভু তার সঙ্গে সঙ্গে থাকেন, রাজার জয়ধ্বনি তাদের মধ্যে আছে।
“যাকোবের মধ্যে কোনো দুর্বিপাক দেখা যায়নি, ইস্রায়েলে কোনো ক্লেশ প্রত্যক্ষ হয়নি; সদাপ্রভু, তাদের ঈশ্বর, তাদের সহায় আছেন রাজার জয়োল্লাস তাদের সঙ্গে বিদ্যমান।
22 ২২ ঈশ্বর মিশর থেকে তাদেরকে এনেছেন, সে বন্য ষাঁড়ের মত শক্তিশালী।
ঈশ্বর, মিশর থেকে তাদের নিয়ে এসেছেন, বন্য বৃষের মতো তারা শক্তিধর;
23 ২৩ কোনো মায়াশক্তি নেই যা যাকোবের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে কোনো মন্দ পূর্বাভাস নেই। পরিবর্তে যাকোবের ও ইস্রায়েলের বিষয় অবশ্যই বলা হবে, ‘দেখ ঈশ্বর কি করেছেন!’
যাকোবের বিপক্ষে কোনও ইন্দ্রজাল, ইস্রায়েলের বিপক্ষে কোনও ভবিষ্যৎ-কথন কৃতকার্য হবে না। যাকোব এবং ইস্রায়েল সম্পর্কে এখন বলা হবে, ‘দেখো, ঈশ্বর কী কাজই না সাধন করেছেন!’
24 ২৪ দেখ, ঐ জাতি সিংহীর মত উঠছে, যেমন একটি সিংহ উত্থিত হয় ও আক্রমণ করে। সে শুয়ে পড়বে না যতক্ষণ না সে তার শিকার না খায় এবং যতক্ষণ না সে যাকে হত্যা করেছে তার রক্ত পান করে।”
সেই জাতি সিংহীর মতো উত্থিত হয়, সিংহের মতোই তারা গাত্রোত্থান করে। তারা যতক্ষণ না শিকার বিদীর্ণ করে ততক্ষণ বিশ্রাম করে না, এবং নিহতদের রক্ত পান করে।”
25 ২৫ তখন বালাক বিলিয়মকে বললেন, “আপনি তাদেরকে অভিশাপও দেবেন না, আশীর্বাদও করবেন না।”
বালাক তখন বিলিয়মকে বললেন, “তাদের অভিশাপ দেবেন না, কিংবা আশীর্বাদও করবেন না।”
26 ২৬ কিন্তু বিলিয়ম উত্তর দিয়ে বালাককে বলল, “সদাপ্রভু আমাকে যা কিছু বলতে বলবেন, তাই বলব, এ কথা কি আপনাকে বলি নি?”
বিলিয়ম উত্তর দিল, “আমি কি আপনাকে একথা বলিনি, যে আমি শুধু সেই কাজই করব, যা সদাপ্রভু আমাকে করতে বলবেন?”
27 ২৭ তাই বালাক বিলিয়মকে বললেন, “বিনয় করি, আসুন, আমি আপনাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাই, হয় তো সেখান থেকে আমার জন্য তাদেরকে আপনার অভিশাপ দেওয়া ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সন্তুষ্টজনক হবে।”
তারপরে বিলিয়মকে বালাক বললেন, “আসুন আমি আপনাকে অন্য এক স্থানে নিয়ে যাই। সম্ভবত ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন, যেন আপনি আমার পক্ষে সেখান থেকে তাদের অভিশাপ দেন।”
28 ২৮ তাই বালাক মরুপ্রান্তের দিকে পিয়োর চূড়ায় বিলিয়মকে নিয়ে গেলেন।
আর বালাক মরুভূমি অভিমুখী পিয়োর শৃঙ্গে বিলিয়মকে নিয়ে গেলেন।
29 ২৯ বিলিয়ম বালাককে বলল, “এখানে আমার জন্য সাতটি বেদি তৈরী করুন এবং এখানে আমার জন্য সাতটি ষাঁড় ও সাতটি ভেড়ার আয়োজন করুন।”
বিলিয়ম বলল, “এখানে আমার জন্য আপনি সাতটি বেদি নির্মাণ করুন এবং সাতটি ষাঁড় ও সাতটি মেষের বলিদানের আয়োজন করুন।”
30 ৩০ তখন বালাক বিলিয়মের কথা অনুযায়ী কাজ করলেন এবং প্রত্যেক বেদিতে এক একটি ষাঁড় ও এক একটি ভেড়া উৎসর্গ করলেন।
বিলিয়মের কথামতো বালাক তাই করলেন এবং প্রত্যেকটি বেদির উপরে একটি করে ষাঁড় ও একটি মেষ উৎসর্গ করা হল।