< গণনার বই 20 >

1 ইস্রায়েল সন্তানরা, অর্থাৎ সমস্ত মণ্ডলী প্রথম মাসে সীন মরুপ্রান্তে উপস্থিত হল এবং লোকেরা কাদেশে বাস করল; আর সেখানে মরিয়মের মৃত্যু হল ও কবর দেওয়া হল।
প্রথম মাসে সমগ্র ইস্রায়েলী সমাজ, সীন মরুভূমিতে উপস্থিত হয়ে কাদেশে অবস্থান করল। সেই স্থানে মরিয়ম মারা গেলেন এবং তাঁকে কবর দেওয়া হল।
2 সেখানে মণ্ডলীর জন্য জল ছিল না; তাতে লোকেরা মোশির ও হারোণের বিরুদ্ধে জড়ো হল।
সেখানে সমাজের ব্যবহার্য কোনো জল ছিল না। তাই জনতা মোশি ও হারোণের বিপক্ষে একত্র হল।
3 তারা মোশির সঙ্গে ঝগড়া করে বলল, “হায়, আমাদের ভাইয়েরা যখন সদাপ্রভুর সামনে মারা গেল, তখন কেন আমাদের মৃত্যু হল না?
তারা মোশির সঙ্গে বিবাদ করে বলল, “আমাদের ভ্রাতৃবর্গ যখন সদাপ্রভুর সামনে মারা গেল, তখন আমরাও যদি মারা যেতাম!
4 তোমরা আমাদের ও আমাদের পশুদের মৃত্যুর জন্য সদাপ্রভুর মণ্ডলীকে কেন এই মরুপ্রান্তে আনলে?
কেন তোমরা সদাপ্রভুর সমাজকে এই প্রান্তরে নিয়ে এলে, যেন আমরা ও আমাদের পশুপাল এই জায়গায় মারা যাই?
5 এই ভয়ঙ্কর জায়গায় আনার জন্য আমাদেরকে মিশর থেকে কেন বের করে নিয়ে আসলে? এখানে চাষ কিংবা ডুমুর কিংবা আঙ্গুর কিংবা ডুমুর হয় না এবং পান করার জলও নেই।”
কেন তোমরা মিশর থেকে আমাদের বের করে এই ভয়ংকর জায়গায় নিয়ে এলে? এখানে কোনো শস্য বা ডুমুর, দ্রাক্ষালতা বা বেদানা নেই। পান করার জন্য জলও নেই!”
6 তখন মোশি ও হারোণ সমাজের সামনে থেকে সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে গিয়ে উপুড় হয়ে পড়লেন। সদাপ্রভুর মহিমা তাদের কাছে প্রকাশিত হল।
মোশি ও হারোণ, মণ্ডলী থেকে পৃথক হয়ে সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে গেলেন এবং তারা উপুড় হয়ে পড়লেন আর তাদের সামনে সদাপ্রভুর মহিমা প্রকাশিত হল।
7 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
8 “তুমি লাঠি নাও এবং তুমি ও তোমার ভাই হারোণ মণ্ডলীকে জড়ো করে তাদের সাক্ষাৎে ঐ শিলাকে বল, তাতে সে নিজে জল দেবে; এই ভাবে তুমি তাদের জন্য শিলা থেকে জল বের করে মণ্ডলীকে ও তাদের পশুদেরকে পান করাবে।”
“তোমার লাঠিটি নাও এবং তুমি ও তোমার ভাই হারোণ মণ্ডলীকে একত্র করো। তাদের দৃষ্টিগোচরে ওই শৈলকে গিয়ে বলো, সে তার অভ্যন্তরস্থ জল নির্গত করবে। তুমি শৈল থেকে সমাজের জন্য জল নির্গত করবে, যেন তারা ও তাদের পশুপাল সেই জলপান করতে পারে।”
9 তখন মোশি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তাঁর সামনে থেকে ঐ লাঠি নিলেন।
অতএব মোশি, সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে সেই লাঠিটি গ্রহণ করলেন, যেমন তিনি তাকে আদেশ দিয়েছিলেন।
10 ১০ তখন মোশি ও হারোণ সেই শিলার সামনে সমাজকে জড়ো করে তাদেরকে বললেন, “হে বিদ্রোহীরা, এখন শোনো; আমরা তোমাদের জন্য কি এই শিলা থেকে জল বের করব?”
তিনি এবং হারোণ, মণ্ডলীকে সেই শৈলের সামনে একত্র করলেন এবং মোশি তাদের বললেন, “বিদ্রোহীকুল, তোমরা শোনো, আমরা কি এই শৈল থেকে তোমাদের জন্য জল নির্গত করব?”
11 ১১ তখন মোশি তাঁর হাত তুলে ঐ লাঠি দিয়ে শিলায় দুবার আঘাত করলেন, তাতে প্রচুর জল বের হল এবং মণ্ডলী ও তাদের পশুরা পান করল।
তারপর মোশি হাত তুলে, তাঁর লাঠি দিয়ে দু-বার সেই শৈলে আঘাত করলেন। জল পূর্ণ বেগে নির্গত হল এবং সমাজ ও তাদের পশুপাল সেই জলপান করল।
12 ১২ তখন সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “তোমরা ইস্রায়েল সন্তানদের সাক্ষাৎে আমাকে পবিত্র বলে মান্য করতে আমার কথায় বিশ্বাস করলে না, তাই আমি তাদেরকে যে দেশ দিয়েছি, সেই দেশে তোমরা এই মণ্ডলীকে প্রবেশ করাবে না।”
সদাপ্রভু কিন্তু মোশি ও হারোণকে বললেন, “যেহেতু তোমরা, ইস্রায়েলীদের দৃষ্টিতে পবিত্র বলে আমাকে সম্মান দিয়ে, আমার উপর পর্যাপ্ত বিশ্বাস রাখলে না, তাই যে দেশ আমি তাদের দান করব, তোমরা এই মণ্ডলীকে সেই দেশে নিয়ে যাবে না।”
13 ১৩ সেই জলের নাম মরীবা [বিবাদ]; যেহেতু ইস্রায়েল সন্তানরা সদাপ্রভুর সঙ্গে ঝগড়া করল, আর তিনি তাদের মধ্যে পবিত্র হিসাবে মান্য হলেন।
এই ছিল মরীবার জল, যেখানে ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর সঙ্গে বিবাদ করেছিল এবং সেই স্থানে তিনি তাদের মধ্যে পবিত্র প্রমাণিত হয়েছিলেন।
14 ১৪ মোশি কাদেশ থেকে ইদোমীয় রাজার কাছে দূতের মাধ্যমে বলে পাঠালেন, “তোমার ভাই ইস্রায়েল বলছে, ‘আমাদের যত কষ্ট হয়েছে, তা তুমি জানো।
মোশি কাদেশ থেকে ইদোমের রাজার কাছে বার্তাবাহকদের মাধ্যমে এই বার্তা প্রেরণ করলেন, “আপনার ভাই ইস্রায়েল এই কথা বলছে, আমাদের প্রতি যে সমস্ত কষ্ট ঘটেছিল, সেই বিষয় আপনি অবগত আছেন।
15 ১৫ আমাদের পূর্বপুরুষরা মিশরে নেমে গিয়েছিলেন, সেই মিশরে আমরা অনেক দিন বাস করছিলাম। পরে মিশরীয়েরা আমাদের প্রতি ও আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি খারাপ ব্যবহার করতে লাগল।
আমাদের পূর্বপুরুষেরা মিশরে গিয়েছিলেন এবং বহু বছর আমরা সেখানে বসবাস করেছিলাম। মিশরীয়েরা আমাদের ও আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি দুর্ব্যবহার করেছিল,
16 ১৬ যখন আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে কাঁদলাম, তিনি আমাদের রব শুনলেন এবং দূত পাঠিয়ে আমাদেরকে মিশর থেকে বের করে আনলেন। দেখ, আমরা তোমার দেশের শেষে অবস্থিত কাদেশ শহরে আছি।
কিন্তু আমরা সদাপ্রভুর কাছে যখন কাঁদলাম তিনি আমাদের কান্না শুনে একজন স্বর্গদূত পাঠিয়েছিলেন এবং মিশর থেকে আমাদের বের করে নিয়ে এলেন। “এখন আমরা, আপনার অঞ্চলের প্রান্তে কাদেশ নগরে অবস্থান করছি।
17 ১৭ আমি অনুরোধ করি, তুমি তোমার দেশের মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে যেতে দাও। আমরা শস্যক্ষেত দিয়ে যাব না, কুয়োর জলও পান করব না; শুধুমাত্র রাজপথ দিয়ে যাব; যে পর্যন্ত তোমার সীমানা পার না হই, ততক্ষণ ডানে কিংবা বামে ফিরব না’।”
কৃপা করে আপনার দেশের মধ্যে দিয়ে আমাদের যাত্রা করতে দিন। আমরা কোনো চাষের জমি বা দ্রাক্ষাকুঞ্জের মধ্য দিয়ে যাব না, কুয়ো থেকে জলও পান করব না। আমরা সরাসরি রাজপথ দিয়ে যাব এবং যতক্ষণ না আপনার সীমানা পার হই, আমরা ডানদিকে বা বাঁদিকে ঘুরব না।”
18 ১৮ ইদোমের রাজা তাঁকে বলল, “তুমি আমার দেশের মধ্যে দিয়ে যেতে পাবে না, গেলে আমি তরোয়াল নিয়ে তোমাকে আক্রমণ করব।”
কিন্তু ইদোম উত্তর দিল, “তোমরা এই দেশের মধ্য দিয়ে যেতে পারবে না। যদি সেই চেষ্টা করো, তাহলে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যাব এবং তরোয়াল নিয়ে তোমাদের আক্রমণ করব।”
19 ১৯ তখন ইস্রায়েল সন্তানরা তাকে বলল, “আমরা রাজপথ দিয়েই যাব। আমরা কিংবা আমাদের পশুরা যদি তোমার জল পান করি, তবে আমরা তার দাম দেব। আর কিছু নয়, শুধুমাত্র আমাদের পায়ে হেঁটে যেতে দাও।”
প্রত্যুত্তরে ইস্রায়েলীরা বলল, “আমরা প্রধান পথ ধরেই যাত্রা করব। যদি আমরা, বা আমাদের পশুপাল কেউ জলপান করে, তার জন্য আমরা মূল্য দেব। আমরা শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে পার হতে চাই, অন্য কিছু নয়।”
20 ২০ কিন্তু ইদোমের রাজা উত্তর দিল, “তুমি যেতে পাবে না।” সুতরাং ইদোমের রাজা অনেক লোক সঙ্গে নিয়ে শক্তিশালী হয়ে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে এল।
তারা আবার উত্তর দিল, “তোমরা যেতে পারবে না।” তারপর ইদোম এক বড়ো এবং শক্তিশালী সেনাদল নিয়ে তাদের বিপক্ষে বেরিয়ে এল।
21 ২১ ইদোমের রাজা ইস্রায়েলকে তার সীমানা অতিক্রম করা অনুমতি প্রত্যাখান করল। তার জন্য ইস্রায়েল তার কাছ থেকে অন্য পথ দিয়ে গেল।
যেহেতু ইদোম, তাদের ভূখণ্ড দিয়ে যেতে দিল না, তাই ইস্রায়েলীরা তাদের কাছ থেকে ফিরে এল।
22 ২২ সুতরাং ইস্রায়েল সন্তানরা, সমস্ত মণ্ডলী কাদেশ থেকে চলে গিয়ে হোর পর্বতে উপস্থিত হল।
সমগ্র ইস্রায়েলী সমাজ কাদেশ থেকে যাত্রা করে হোর পর্বতে উপস্থিত হল।
23 ২৩ ইদোম দেশের সীমানার কাছাকাছি হোর পর্বতে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
ইদোমের সীমানার কাছে, হোর পর্বতে, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
24 ২৪ “হারোণ তার লোকেদের কাছে জড়ো হবে, আমি ইস্রায়েল সন্তানকে যে দেশ দিয়েছি, সেই দেশে সে প্রবেশ করবে না। কারণ তোমরা উভয়েই মরীবা জলের কাছে আমার কথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলে।
“হারোণ তাঁর স্বজনবর্গের কাছে সংগৃহীত হবে। ইস্রায়েলীদের আমি যে দেশ দিতে চাই, সেখানে সে প্রবেশ করবে না, কারণ তোমরা উভয়েই মরীবার জলের কাছে আমার বিরুদ্ধাচারণ করেছিলে।
25 ২৫ তুমি হারোণকে ও তার ছেলে ইলীয়াসরকে হোর পর্বতের উপরে নিয়ে যাও।
হারোণ ও তাঁর ছেলে ইলীয়াসরকে নিয়ে হোর পর্বতে যাও।
26 ২৬ হারোণের থেকে তার যাজকের পোশাক নিয়ে তার ছেলে ইলীয়াসরকে তা পরাও। হারোণ তার লোকেদের কাছে জড়ো হবে এবং সেখানে মারা যাবে।”
হারোণের পোশাক খুলে ইলীয়াসরকে পরিয়ে দাও, কারণ হারোণ তাঁর স্বজনবর্গের কাছে সংগৃহীত হবে; সে সেখানেই মারা যাবে।”
27 ২৭ মোশি সদাপ্রভুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন। তাঁরা সমস্ত মণ্ডলীর সাক্ষাৎে হোর পর্বতে উঠলেন।
সদাপ্রভু যে রকম বলেছিলেন, মোশি, ঠিক তাই করলেন। তাঁরা সমগ্র সমাজের দৃষ্টিগোচরে হোর পর্বতে উঠে গেলেন।
28 ২৮ মোশি হারোণের যাজকের পোশাক নিয়ে তাঁর ছেলে ইলীয়াসরকে তা পড়ালেন। হারোণ সেই পর্বতের চূড়ায় মারা গেলেন। তখন মোশি ও ইলীয়াসর পর্বত থেকে নেমে আসলেন।
মোশি, হারোণের পোশাক খুলে, তাঁর পুত্র ইলীয়াসরকে পরিয়ে দিলেন। হারোণ সেই পর্বতের উপরে মারা গেলেন। তারপর মোশি ও ইলীয়াসর পর্বত থেকে নেমে এলেন।
29 ২৯ যখন সমস্ত মণ্ডলী দেখল যে, হারোণ মারা গেছেন, তখন সমস্ত ইস্রায়েল কুল হারোণের জন্য ত্রিশ দিন পর্যন্ত কাঁদল।
যখন সমগ্র সমাজ অবগত হল যে হারোণ মারা গিয়েছেন, তখন ইস্রায়েলীরা সবাই তাঁর জন্য ত্রিশ দিন শোক করল।

< গণনার বই 20 >