< মথি 18 >
1 ১ সেই দিন শিষ্যেরা যীশুর কাছে এসে বললেন, “তবে স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে?”
2 ২ তিনি একটি শিশুকে তাঁর কাছে ডাকলেন ও তাদের মধ্য দাঁড় করিয়ে দিলেন,
3 ৩ এবং বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যদি মন না ফেরাও ও শিশুদের মতো না হয়ে ওঠ, তবে কোন ভাবেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।”
4 ৪ অতএব যে কেউ নিজেকে এই শিশুর মতো নত করে, সে স্বর্গরাজ্যে শ্রেষ্ঠ।
5 ৫ আর যে কেউ এই রকম কোন শিশুকে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে,
6 ৬ কিন্তু যেসব শিশুরা আমাকে বিশ্বাস করে এবং যদি কেউ তাদের বিশ্বাসে বাধা দেয়, তার গলায় ভারী ভারি পাথর বেঁধে তাকে সমুদ্রের গভীর জলে ডুবিয়ে দেওয়া বরং তার পক্ষে ভাল।
7 ৭ লোককে বাধার কারণ এবং মানুষের পাপের কারণ হওয়ার জন্য জগতকে ধিক! কারণ বাধার দিন অবশ্যই আসবে, কিন্তু ধিক সেই ব্যক্তিকে, যার মাধ্যমে তা আসে।
8 ৮ আর তোমার হাত কি পা যদি তোমায় পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তা কেটে ফেলে দাও, দুই হাত কিম্বা দুই পা নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে প্রবেশ করার থেকে বরং খোঁড়া কিম্বা পঙ্গু হয়ে ভালোভাবে জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল। (aiōnios )
9 ৯ আর তোমার চোখ যদি তোমায় পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তা উপড়িয়ে ফেলে দাও, দুই চোখ নিয়ে অগ্নিময় নরকে যাওয়ার থেকে বরং একচোখ নিয়ে জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল। (Geenna )
10 ১০ এই ছোট শিশুদের একজনকেও তুচ্ছ কোর না, কারণ আমি তোমাদের বলছি, তাদের দূতগণ স্বর্গে সবদিন আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখ দর্শন করেন।
11 ১১
12 ১২ তোমাদের কি মনে হয়? কোন ব্যক্তির যদি একশটি ভেড়া থাকে, আর তাদের মধ্যে একটি হারিয়ে যায়, তবে সে কি অন্য নিরানব্বইটাকে ছেড়ে, পাহাড়ে গিয়ে ঐ হারানো ভেড়াটির খোঁজ করে না?
13 ১৩ আর যদি সে কোন ভাবে সেটি পায়, তবে আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে নিরানব্বইটা হারিয়ে যায় নি, তাদের থেকে সে বেশি আনন্দ করে যেটা সে হারিয়ে ফেলেছিল সেটিকে খুঁজে পেয়ে।
14 ১৪ তেমনি এই ছোট শিশুদের মধ্য একজনও যে ধ্বংস হয়, তা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা নয়।
15 ১৫ আর যদি তোমার ভাই তোমার বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করে, তবে তাঁর কাছে যাও এবং গোপনে তাঁর সেই দোষ তাঁকে বুঝিয়ে দাও। সে যদি তোমার কথা শোনে, তবে তুমি আবার তোমার ভাইকে ফিরে পেলে।
16 ১৬ কিন্তু যদি সে না শোনে, তবে আরও দুই একজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যাও, যেন “দুই কিম্বা তিনজন সাক্ষীর মুখে সমস্ত কথা সঠিক প্রমাণিত করা হয়।”
17 ১৭ আর যদি সে তাদের কথা অমান্য করে, তখন মণ্ডলীকে বল, আর যদি মণ্ডলীর কথাও অমান্য করে তবে সে তোমার কাছে অযিহুদী লোকের ও কর আদায়কারীদের মতো হোক।
18 ১৮ আমি তোমাদেরকে সত্য বলছি, তোমরা পৃথিবীতে যা কিছু বাঁধবে, তা স্বর্গে বাঁধা হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু খুলবে তা স্বর্গে খোলা হবে।
19 ১৯ আমি তোমাদের কে সত্য বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের মধ্যে দুই জন যদি একমত হয়ে কোন বিষয় নিয়ে প্রার্থনা কর, তবে আমার স্বর্গের পিতা তোমাদের জন্য তা পূরণ করবেন।
20 ২০ কারণ যেখানে দুই কি তিনজন আমার নামে একত্র হয়, সেইখানে আমি তাদের মধ্যে আছি।
21 ২১ তখন পিতর তাঁর কাছে এসে বললেন, “প্রভু, আমার ভাই আমার কাছে কত বার অপরাধ করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাতবার পর্যন্ত কি?”
22 ২২ যীশু তাঁকে বললেন, “তোমাকে বলছি, সাতবার পর্যন্ত না, কিন্তু সত্তর গুণ সাতবার পর্যন্ত।”
23 ২৩ এজন্য স্বর্গরাজ্য এমন একজন রাজার সমান, যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব নিতে চাইলেন।
24 ২৪ তিনি হিসাব আরম্ভ করলে তখন এক জনকে তাঁর কাছে নিয়ে আসা হল, যে তাঁর কাছে দশ হাজার তালন্ত (এক তালন্ত সমান পনেরো বত্সরের পারিশ্রমিকের সমানের থেকেও বেশী টাকা) ঋণ নিয়েছিল।
25 ২৫ কিন্তু তার শোধ করার সামর্থ না থাকায় তার প্রভু তাকে ও তার স্ত্রী, সন্তানদের এবং সব কিছু বিক্রি করে আদায় করতে আদেশ দিলেন।
26 ২৬ তাতে সেই দাস তাঁর পায়ে পড়ে প্রণাম করে বলল, হে প্রভু, আমার প্রতি ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সব কিছু শোধ করব।
27 ২৭ তখন সেই দাসকে দেখে তার রাজার করুণা হল ও তাকে মুক্ত করলেন এবং তার ঋণ ক্ষমা করলেন।
28 ২৮ কিন্তু সেই দাস বাইরে গিয়ে তার সহদাসদের মধ্য এক জনকে দেখতে পেল, যে তার একশ সিকি ধার নিয়েছিল, সে তার গলাটিপে ধরে বলল, “তুই যা ধার নিয়েছিস, তা শোধ কর।”
29 ২৯ তখন তার দাস তার পায়ে পড়ে অনুরোধের সঙ্গে বলল, আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর, আমি তোমার ঋণ শোধ করব।
30 ৩০ তবুও সে রাজি হল না, কিন্তু গিয়ে তাকে জেলখানায় বন্দী করে রাখল, যতক্ষণ না সে ঋণ শোধ করে।
31 ৩১ এই ব্যাপার দেখে তার অন্য দাসেরা খুবই দুঃখিত হল, আর তাদের রাজার কাছে গিয়ে সমস্ত বিষয়ে জানিয়ে দিল।
32 ৩২ তখন তার রাজা তাকে কাছে ডেকে বললেন, “দুষ্ট দাস! তুমি আমার কাছে অনুরোধ করেছিলে বলে আমি তোমার ঐ সমস্ত ঋণ ক্ষমা করেছিলাম,
33 ৩৩ আমি যেমন তোমার প্রতি দয়া করেছিলাম, তেমনি তোমার দাসদের প্রতি দয়া করা কি তোমারও উচিত ছিল না?”
34 ৩৪ আর তার রাজা রেগে গিয়ে তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য জেলখানার রক্ষীদের কাছে তাকে সমর্পণ করলেন, যতক্ষণ না সে সমস্ত ঋণ শোধ করে।
35 ৩৫ আমার স্বর্গীয় পিতাও তোমাদের প্রতি এমন করবেন, যদি তোমরা সবাই হৃদয় থেকে নিজের নিজের ভাইকে ক্ষমা না কর।