< মালাখি ভাববাদীর বই 2 >
1 ১ যাজকেরা, তোমাদের জন্য আমার এই আদেশ।
“তবে এখন, যাজকেরা, তোমরা শোনো, এই সতর্কবাণী তোমাদেরই জন্য।
2 ২ “যদি আমার নামের মহিমা মেনে নেবার জন্য তোমরা কথা না শোন ও মনোযোগ না দাও,” বাহিনীগণের সদাপ্রভু বলেন, “তবে তোমাদের ওপরে অভিশাপ দেব, তোমাদের আশীর্বাদকে অভিশাপে পরিণত করব; প্রকৃত পক্ষে, ইতিমধ্যেই আমি তাদেরকে অভিশাপ দিয়েছি, কারণ তোমরা আমার আদেশ হৃদয়ে গ্রহণ করনা।
যদি তোমরা না শোনো এবং যদি তোমরা আমার নামের মহিমা করতে মনস্থ না করো,” সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু বলেন, “আমি তোমাদের ওপর অভিশাপ পাঠাব, ও তোমাদের সকল আশীর্বাদকে অভিশাপ দেব। হ্যাঁ, আমি সেই সবকিছুকে ইতিমধ্যে অভিশাপ দিয়েছি, কারণ তোমরা আমার নামের মহিমা করতে মনস্থ করোনি।
3 ৩ দেখ, আমি তোমাদের বংশধরকে তিরস্কার করব, তোমাদের মুখে বিষ্ঠা মাখাবো, তোমাদের উপহারের বিষ্ঠা এবং লোকেরা তার সঙ্গে তোমাদেরকে দূরে নিয়ে যাবে।
“তোমাদের জন্য, আমি তোমাদের বংশধরদের তিরস্কার করব; তোমাদের উৎসবের বলি থেকে সার নিয়ে তা তোমাদের মুখে মাখিয়ে দেব এবং তোমাদের সেইভাবেই নিয়ে যাওয়া হবে।
4 ৪ এবং তোমরা জানতে পারবে যে আমিই তোমাদের কাছে এই নিয়ম পাঠিয়েছি, যেন লেবির সঙ্গে আমার এই নিয়ম থাকে,” বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
আর তোমরা জানবে যে, আমি তোমাদের কাছে এই সতর্কবাণী পাঠিয়েছি যাতে লেবীয়দের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থায়ী হয়,” সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু বলেন।
5 ৫ তার সঙ্গে আমার যে নিয়ম ছিল, তা জীবন ও শান্তির এবং আমি তাকে এইগুলো দিয়েছিলাম যেন আমাকে সম্মান করে। সে আমাকে সম্মান দিয়েছে এবং আমার নামে শ্রদ্ধার সঙ্গে ভয়ে দাঁড়িয়েছে।
“তার সঙ্গে আমার নিয়ম হয়েছিল, জীবন ও শান্তির নিয়ম, আর আমি উভয়ই তাকে দিয়েছিলাম; যেন সে আমাকে শ্রদ্ধা করে এবং সে আমাকে সত্যিই ভয় করেছিল এবং আমার নামে ভয়ে কেঁপেছিল।
6 ৬ তাদের মুখে সত্যের শিক্ষা ছিল ও তার ঠোঁটে অধার্মিকতা পাওয়া যায় নি। সে শান্তিতে ও সততায় আমার সঙ্গে চলাফেরা করত এবং অনেককে পাপ থেকে ফেরাত।
তার মুখে সত্যের বিধান ছিল এবং কোনও প্রকার মিথ্যা তার ঠোঁটে খুঁজে পাওয়া যেত না। শান্তিতে ও ন্যায়পরায়ণতায় সে আমার সঙ্গে পথ চলেছে এবং পাপ থেকে মন ফিরিয়েছে।
7 ৭ কারণ যাজকের ঠোঁট অবশ্যই জ্ঞান রক্ষা করবে, তার মুখ থেকে লোকেরা অবশ্যই শিক্ষার খোঁজ করবে, কারণ সে আমার, বাহিনীগণের সদাপ্রভুর দূত।
“প্রকৃতপক্ষে যাজকদের মুখ ঈশ্বরের জ্ঞানের সম্ভার হওয়া উচিত, কারণ সে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর দূত এবং লোকেরা যাজকদের মুখ থেকেই উপদেশ চায়।
8 ৮ কিন্তু তোমরা সঠিক পথ থেকে সরে গেছ, নিয়মের বিষয়ে তোমরা অনেককে হোঁচট খাওয়াচ্ছ। তোমরা লেবির ব্যবস্থা নষ্ট করেছো, বাহিনীগণের সদাপ্রভু এ কথা বলেন।
কিন্তু তুমি বিপথে গিয়েছ এবং তোমার শিক্ষার মাধ্যমে অনেককে বিভ্রান্ত করেছ; লেবির সঙ্গে নিয়ম তুমি লঙ্ঘন করেছ,” সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু বলেন।
9 ৯ আমি সব প্রজাদের সামনে তোমাদেরকে তুচ্ছ ও লজ্জিত করব, কারণ তোমরা আমার পথ রক্ষা কর নি, কিন্তু তার পরিবর্তে তোমাদের শিক্ষার পক্ষপাতিত্ব করেছ।
“এজন্য আমি সমস্ত লোকের সামনে তোমাদেরকে অবজ্ঞা ও অপদস্থ করেছি, কারণ তোমরা আমার পথে চলোনি, উপরন্তু বিধানের বিষয়ে তোমরা পক্ষপাতিত্ব করেছ।”
10 ১০ আমাদের সবার পিতা কি একজন নন? এক ঈশ্বর কি আমাদের সৃষ্টি করেন নি? তাহলে আমরা কেন প্রত্যেকে নিজের নিজের ভাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করি, আমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ম অপবিত্র করি?
আমাদের সকলের কি একই বাবা নয়? একজন ঈশ্বরই কি আমাদের সৃষ্টি করেননি? তবে কেন আমরা একে অপরের প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ম অপবিত্র করি?
11 ১১ যিহূদা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ইস্রায়েলে ও যিরূশালেমে জঘন্য কাজ করা হয়েছে। কারণ যিহূদা সদাপ্রভুর পবিত্রস্থান অপবিত্র করেছে যা তিনি ভালবাসেন এবং অন্য দেবতার মেয়েকে বিয়ে করেছে।
যিহূদা অবিশ্বস্ত হয়েছে। ইস্রায়েলে ও জেরুশালেমে জঘন্য এক কাজ করা হয়েছে: যিহূদা, সেই মেয়েদের বিয়ে করেছে যারা অইহুদি এক দেবতার আরাধনা করে এবং এভাবে সদাপ্রভুর প্রেমের পবিত্রস্থান কলুষিত করেছে।
12 ১২ যে ব্যক্তি এই রকম কাজ করে, তার সঙ্গে সদাপ্রভু এই রকম করবেন, যাকোবের সমস্ত তাঁবু থেকে বাহিনীগণের সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যাকোবের বংশের যে কেউ উৎসর্গের জিনিস নিয়ে আসে, তাকে ধ্বংস করবেন।
যে ব্যক্তি এমন কাজ করেছে, সে যেই হোক না কেন, যদিও সে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর কাছে এক নৈবেদ্য নিয়ে আসে, তবুও যেন সদাপ্রভু যাকোবের তাঁবু থেকে তাকে উৎখাত করে।
13 ১৩ আর তোমরা এটিও করেছ, তোমরা চোখের জলে, কেঁদে ও দীর্ঘশ্বাসে সদাপ্রভুর বেদী ঢেকে রেখেছ, কারণ তিনি নৈবেদ্যের দিকে আর তাকান না কিংবা খুশী মনে তোমাদের হাত থেকে তা গ্রহণও করেন না।
আরেকটি কাজ তোমরা করো: তোমরা চোখের জলে সদাপ্রভুর বেদি ভাসিয়ে দাও। তোমরা কান্নাকাটি করো ও বিলাপ করো কারণ তিনি তোমাদের নৈবেদ্যর প্রতি আর অনুগ্রহপূর্বক দৃষ্টি দেন না বা তোমাদের হাত থেকে তা খুশিমনে গ্রহণ করেন না।
14 ১৪ কিন্তু তোমরা বলছ, “এর কারণ কি?” এর কারণ, সদাপ্রভু তোমার যৌবনকালের স্ত্রীর ও তোমার মধ্যে সাক্ষী হয়েছিলেন; ফলে তুমি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো; কিন্তু সে তোমার সঙ্গিনী ও তোমার নিয়মের স্ত্রী।
তবুও তোমরা জিজ্ঞাসা করো, “কেন?” কারণ সদাপ্রভু তোমার ও তোমার যৌবনের স্ত্রীর মধ্যে সাক্ষী হয়েছেন; তুমি তার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছ; যদিও সে তোমার সঙ্গী, তোমার বিবাহ নিয়মের স্ত্রী।
15 ১৫ তিনি কি তাকে, একই আত্মার অংশের মাধ্যমে বানান নি? কেন তিনি তোমাদের এক বানিয়েছেন? কারণ তিনি ঈশ্বর ভক্ত বংশ পাওয়ার আশা করছিলেন। তাই তোমরা নিজের নিজের আত্মার বিষয়ে সাবধান হও; কেউ নিজের যৌবনকালের স্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।
একই ঈশ্বর কি তোমাদের সৃষ্টি করেননি? দেহ এবং আত্মাতে তো তোমরা তাঁরই। আর সেই এক ঈশ্বর কি চান? ঈশ্বরভক্ত সন্তানসন্ততি। সুতরাং নিজেদের সম্পর্কে সতর্ক হও এবং তোমাদের যৌবনের স্ত্রীর প্রতি অবিশ্বস্ত হোয়ো না।
16 ১৬ কারণ আমি বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘৃণা করি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলেন, নিজের পোশাকে হিংস্রতা ঢাকে, এটা বাহিনীগণের সদাপ্রভু বলেন, “তাই তোমার নিজের আত্মায় নিজেকে রক্ষা করো এবং তাই কেউ যেন তাদের যৌবনকালের স্ত্রীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করে।”
“যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে ঘৃণা করে ও বিবাহবিচ্ছেদ করে,” সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “যাকে তার রক্ষা করা উচিত তার প্রতি সে অত্যাচার করে,” সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু বলেন। সুতরাং নিজেদের সম্পর্কে সতর্ক হও এবং অবিশ্বস্ত হোয়ো না।
17 ১৭ তোমরা তোমাদের কথা দিয়ে সদাপ্রভুকে অস্থির করে তুলেছো। কিন্তু তুমি বল, “কিভাবে তাঁকে অস্থির করেছি?” এই কথা বলার মাধ্যমে করেছো, যখন তোমরা বল, “যে কেউ খারাপ কাজ করে, সে সদাপ্রভুর চোখে ভাল এবং তিনি তাদের উপর সন্তুষ্ট,” কিংবা, “বিচারকর্ত্তা ঈশ্বর কোথায়?”
তোমরা তোমাদের কথার মাধ্যমে সদাপ্রভুকে ক্লান্ত করেছ। “আমরা কীভাবে তাঁকে ক্লান্ত করেছি?” তোমরা জিজ্ঞাসা করো। এই বলে, “সবাই যারা মন্দ কাজ করে তারা সদাপ্রভুর চোখে ভালো এবং তিনি তাদের উপর খুশি” অথবা এই বলে, “ন্যায়ের ঈশ্বর কোথায়?”