< লুক 13 >
1 ১ সেই দিনের কয়েক জন লোক যীশুকে সেই গালীলীয়দের বিষয়ে বলল, যাদের রক্ত পীলাত তাদের বলির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিলেন।
2 ২ তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি মনে কর, সেই গালীলীয়দের এই শাস্তি হয়েছে বলে তারা অন্য সব গালীলীয়দের থেকে কি বেশি পাপী ছিল?”
3 ৩ আমি তোমাদের বলছি, তা নয়; আর যদি মন না ফেরাও, তবে তোমরাও তাদের মত বিনষ্ট হবে।
4 ৪ সেই আঠারো জন, যাদের উপরে শীলোহের উঁচু দূর্গের চূড়া চাপা পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছিল, তোমরা কি তাদের বিষয়ে মনে করছ যে, তারা কি যিরুশালেমের অন্য সব লোকদের থেকে বেশি পাপী ছিল?
5 ৫ আমি তোমাদের বলছি, “তা নয়; আর যদি মন না ফেরাও, তবে তোমরাও সেভাবে ধ্বংস হবে।”
6 ৬ এরপর যীশু তাদের শিক্ষা দেবার জন্য এই দৃষ্টান্তটি বললেন; “কোনো একজন লোকের আঙ্গুর ক্ষেতে একটা ডুমুরগাছ লাগানো ছিল; আর তিনি এসে সেই গাছে ফলের খোঁজ করলেন, কিন্তু পেলেন না।
7 ৭ তাতে তিনি মালীকে বললেন, দেখ, আজ তিন বছর ধরে এই ডুমুরগাছে ফলের খোঁজ করছি, কিন্তু কিছুই পাচ্ছি না; এটাকে কেটে ফেল; এটা কেন জমি নষ্ট করবে।
8 ৮ সে তাঁকে বলল, প্রভু, এ বছর ওটা রেখে দিন, আমি ওর চারপাশ খুঁড়ে সার দেব,
9 ৯ তারপর যদি ওই গাছে ফল হয়তো ভালই, না হলে ওটা কেটে ফেলবেন।”
10 ১০ কোনো এক বিশ্রামবারে যীশু কোনও একটা সমাজঘরে শিক্ষা দিচ্ছিলেন।
11 ১১ সেখানে একজন স্ত্রীলোক ছিল, যাকে আঠারো বছর ধরে একটা দুর্বল করার মন্দ আত্মা ধরেছিল, সে কুঁজো ছিল, কোনো মতে সোজা হতে পারত না।
12 ১২ তাকে দেখে যীশু কাছে ডাকলেন, “আর বললেন, হে নারী, তুমি তোমার দুর্বলতা থেকে মুক্ত হলে।”
13 ১৩ পরে তিনি তার উপরে হাত রাখলেন; তাতে সে তখনই সোজা হয়ে দাঁড়াল, আর ঈশ্বরের গৌরব করতে লাগল।
14 ১৪ কিন্তু বিশ্রামবারে যীশু সুস্থ করেছিলেন বলে, সমাজঘরের নেতা রেগে গেলেন এবং সে উত্তর করে লোকদের বলল, ছয় দিন আছে, সেই সব দিনের কাজ করা উচিত; অতএব ঐ সব দিনের এসে সুস্থ হও, বিশ্রামবারে নয়।
15 ১৫ কিন্তু যীশু তাকে উত্তর করে বললেন, “ভণ্ডরা, তোমাদের প্রত্যেক জন কি বিশ্রামবারে নিজের নিজের বলদ কিংবা গাধাকে গোয়াল থেকে খুলে নিয়ে জল খাওয়াতে নিয়ে যাও না?
16 ১৬ তবে এই স্ত্রীলোক, অব্রাহামের কন্যা, দেখ যাকে শয়তান আজ আঠারো বছর ধরে বেঁধে রেখেছিল, এর এই বন্ধন থেকে বিশ্রামবারে মুক্তি পাওয়া কি উচিত নয়?”
17 ১৭ তিনি এই কথা বললে, তাঁর বিরোধীরা সবাই লজ্জিত হল; কিন্তু তাঁর মাধ্যমে যে সমস্ত গৌরবময় কাজ হচ্ছিল, তাতে সমস্ত সাধারণ লোক আনন্দিত হল।
18 ১৮ তখন তিনি বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য কিসের মত? আমি কিসের সঙ্গে তার তুলনা করব?”
19 ১৯ তা সরষে দানার মত, যা কোনো লোক নিয়ে নিজের বাগানে ছড়ালো; পরে তা বেড়ে গাছ হয়ে উঠল এবং পাখিরা স্বর্গ থেকে এসে তার ডালে বাসা বাঁধলো।
20 ২০ আবার তিনি বললেন, “আমি কিসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা করব?
21 ২১ তা এমন খামির মত, যা কোনো স্ত্রীলোক নিয়ে ময়দার মধ্যে ঢেকে রাখল, শেষে পুরোটাই খামিরে পূর্ণ হয়ে উঠল।”
22 ২২ আর তিনি শহরে শহরে ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিতে দিতে যিরুশালেমের দিকে যাচ্ছিলেন।
23 ২৩ তখন একজন লোক তাঁকে বলল, প্রভু, যারা উদ্ধার পাচ্ছে, তাদের সংখ্যা কি অল্প?
24 ২৪ তিনি তাদেরকে বললেন, “সরু দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে প্রাণপণে চেষ্টা কর; কারণ আমি তোমাদের বলছি, অনেকে ঢুকতে চেষ্টা করবে, কিন্তু পারবে না।
25 ২৫ ঘরের মালিক উঠে দরজা বন্ধ করলে পর তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে দরজায় কড়া নাড়াতে নাড়াতে বলবে, প্রভু, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন; আর তিনি উত্তর করে তোমাদের বলবেন, আমি জানি না, তোমরা কোথা থেকে এসেছ;
26 ২৬ তখন তোমরা বলবে, আমরা আপনার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছি এবং আমাদের রাস্তায় রাস্তায় আপনি উপদেশ দিয়েছেন।
27 ২৭ কিন্তু তিনি বলবেন, তোমাদের বলছি, আমি জানি না, তোমরা কোথা থেকে এসেছ; হে অধর্মচারীরা, আমার কাছ থেকে দূর হও।
28 ২৮ সেই জায়গায় কান্নাকাটি ও দাঁতে দাঁত ঘর্ষণ হবে; তখন তোমরা দেখবে, অব্রাহাম, ইসহাক ও যাকোব এবং ভাববাদী সবাই ঈশ্বরের রাজ্যে আছেন, আর তোমাদের বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
29 ২৯ আর লোকেরা পূর্ব ও পশ্চিম থেকে এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে আসবে এবং ঈশ্বরের রাজ্যে একসঙ্গে বসবে।
30 ৩০ আর দেখ, এই ভাবে যারা শেষের, তারা প্রথম হবে এবং যারা প্রথম, তারা এমন কোনো কোনো লোক শেষে পড়বে।”
31 ৩১ সেই দিনের কয়েক জন ফরীশী কাছে এসে তাঁকে বলল, “চলে যাও, এখান থেকে চলে যাও; কারণ হেরোদ তোমাকে হত্যা করতে চাইছেন।”
32 ৩২ তিনি তাদের বললেন, তোমরা গিয়ে সেই শিয়ালকে বল, দেখ, আজ ও কাল আমি ভূত ছাড়াচ্ছি, ও রোগীদের সুস্থ করছি এবং তৃতীয় দিনের আমি আমার কাজ শেষ করব।
33 ৩৩ যাই হোক, আজ, কাল ও পরশু দিনের পর আমাকে চলতে হবে; কারণ এমন হতে পারে না যে, যিরুশালেমের বাইরে আর কোথাও কোনো ভাববাদী বিনষ্ট হয়।
34 ৩৪ যিরূশালেম, যিরূশালেম, তুমি ভাববাদীদেরকে হত্যা করেছ, ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের পাথর মেরে থাক! মুরগি যেমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে একত্র করে, তেমনি আমিও কত বার তোমার সন্তানদের একত্র করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু তোমরা রাজি হলে না।
35 ৩৫ দেখ, তোমাদের বাড়ি তোমাদের জন্য খালি হয়ে পড়ে থাকবে। আর আমি তোমাদের বলছি, তোমরা এখন থেকে আমাকে আর দেখতে পাবে না, যত দিন পর্যন্ত তোমরা না বলবে, “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন।”