< লুক 10 >
1 ১ এর পরে প্রভু আরও সত্তর জনকে নিযুক্ত করলেন, আর তিনি যেখানে যেখানে যাবেন বলে ঠিক করতেন, সেই সমস্ত শহরে ও জায়গায় তাঁর যাওয়ার আগে দুই জন দুই জন করে তাদের পাঠালেন।
2 ২ তিনি তাদের বললেন, “ফসল প্রচুর বটে, কিন্তু কাটার লোক অল্প, এই জন্য ফসলের মালিকের কাছে প্রার্থনা কর, যেন তিনি নিজের শস্য ক্ষেত্রে লোক পাঠিয়ে দেন।”
3 ৩ তোমরা যাও। দেখ, নেকড়েদের মধ্যে যেমন মেষ শাবক, তেমনি আমিও তোমাদের পাঠাচ্ছি।
4 ৪ তোমরা টাকার থলি কি ঝুলি কি জুতো সঙ্গে নিয়ে যেও না এবং রাস্তায় কাউকেই শুভেচ্ছা জানিও না।
5 ৫ আর যে কোন বাড়িতে প্রবেশ করবে, প্রথমে বলো, এই বাড়ির শান্তি হোক।
6 ৬ আর সেখানে যদি শান্তির সন্তান থাকে, তবে তোমাদের শান্তি তার সঙ্গে থাকবে, না হলে তোমাদের কাছে ফিরে আসবে।
7 ৭ আর সেই বাড়িতেই থেকো এবং তারা যা দেয়, তাই খেও ও পান কোর, কারণ কর্মচারী তার বেতনের যোগ্য! এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যেও না।
8 ৮ আর তোমরা যে কোন শহরে প্রবেশ কর, লোকেরা যদি তোমাদের গ্রহণ করে, তবে যা তোমাদের সামনে খাওয়ার জন্য রাখা হবে, তাই খেও।
9 ৯ আর সেখানকার অসুস্থদের সুস্থ করো এবং তাদেরকে বলো, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে পড়েছে।
10 ১০ কিন্তু তোমরা যে কোন শহরে প্রবেশ কর, লোকে যদি তোমাদেরকে গ্রহণ না করে, তবে বের হয়ে সেই শহরের রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে এই কথা বলো,
11 ১১ তোমাদের শহরের যে ধূলো আমাদের পায়ে লেগেছে, তাও তোমাদের বিরুদ্ধে ঝেড়ে দিই, কিন্তু এটা জেনে রাখো যে, ঈশ্বরের রাজ্য খুব কাছে এসে পড়েছে।
12 ১২ আমি তোমাদের বলছি, সেই দিন সেই শহরের দশা থেকে বরং সদোমের দশা সহনীয় হবে।
13 ১৩ কোরাসীন, ধিক তোমাকে! বৈৎসদা, ধিক তোমাকে! কারণ তোমাদের মধ্যে যে সব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে, সে সব যদি সোর ও সীদোনে করা যেত, তবে অনেকদিন আগে তারা চট পরে ছাইয়ে বসে মন ফেরাত।
14 ১৪ কিন্তু বিচারে তোমাদের দশা হতে বরং সোর ও সীদোনের দশা সহনীয় হবে।
15 ১৫ আর হে কফরনাহূম, তুমি নাকি স্বর্গ পর্যন্ত উন্নত হবে? তুমি নরক পর্যন্ত নেমে যাবে। (Hadēs )
16 ১৬ যে তোমাদের মানে, সে আমাকেই মানে এবং যে তোমাদের অগ্রাহ্য করে, সে আমাকেই অগ্রাহ্য করে আর যে আমাকে অগ্রাহ্য করে, সে তাঁকেই অগ্রাহ্য করে, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
17 ১৭ পরে সেই সত্তর জন আনন্দের সঙ্গে ফিরে এসে বলল, “প্রভু, আপনার নামে ভূতেরাও আমাদের বশীভূত হয়।”
18 ১৮ তিনি তাদের বললেন, “আমি শয়তানকে বিদ্যুতের মতো স্বর্গ থেকে পড়তে দেখছিলাম।
19 ১৯ দেখ, আমি তোমাদের সাপ ও বিছাকে পায়ে মাড়াবে এবং শত্রুর সমস্ত শক্তির উপরে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা দিয়েছি। কিছুই কোন মতে তোমাদের ক্ষতি করবে না,
20 ২০ কিন্তু ভূতেরা যে তোমাদের বশীভূত হয় এতে আনন্দ কর না, কিন্তু তোমাদের নাম যে স্বর্গে লেখা আছে, তাতে আনন্দ কর।”
21 ২১ সেই দিন তিনি পবিত্র আত্মায় আনন্দিত হলেন ও বললেন, “হে পিতা, হে স্বর্গের ও পৃথিবীর প্রভু, আমি তোমার প্রশংসা করছি, কারণ তুমি জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমানদের থেকে এইসব বিষয় গোপন রেখে শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ।
22 ২২ সব কিছুই আমার পিতার মাধ্যমে আমাকে সমর্পণ করা হয়েছে এবং পুত্র কে, তা কেউ জানে না, একমাত্র পিতা জানেন, আর পিতা কে, তা কেউ জানেন না, শুধুমাত্র পুত্র জানেন, আর পুত্র যার কাছে তাঁকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করে, সে জানে।”
23 ২৩ পরে তিনি শিষ্যদের দিকে ফিরে তাদের গোপনে বললেন, “ধন্য সেই সমস্ত চোখ, তোমরা যা যা দেখছ, যারা তা দেখে।”
24 ২৪ কারণ আমি তোমাদের বলছি, “তোমরা যা যা দেখছ, সে সব অনেক ভাববাদী ও রাজা দেখতে ইচ্ছা করলেও দেখতে পায়নি এবং তোমরা যা যা শুনছ, তা তাঁরা শুনতে ইচ্ছা করলেও শুনতে পায়নি।”
25 ২৫ আর দেখ, একজন ব্যবস্থার গুরু এসে তাঁর পরীক্ষা করার জন্য বলল, হে গুরু অনন্ত জীবন পেতে হোলে আমাকে কি কি করতে হবে? (aiōnios )
26 ২৬ তিনি তাকে বললেন, আইন ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? সেখানে তুমি কি পাঠ কর?
27 ২৭ সে উত্তরে বলল, “তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে এবং তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।”
28 ২৮ তিনি তাকে বললেন, “ঠিক উত্তর দিয়েছ, তাই কর, তাতে জীবন পাবে।”
29 ২৯ কিন্তু সে নিজেকে নির্দোষ দেখানোর জন্য যীশুকে বলল, “ভালো, আমার প্রতিবেশী কে?”
30 ৩০ এই কথায় যীশু বললেন, “এক ব্যক্তি যিরুশালেম থেকে যিরীহোর দিকে নেমে যাচ্ছিলেন, এমন দিনের সে ডাকাতদের হাতে পড়ল, তারা তার পোশাক খুলে নিল এবং তাকে মেরে আধমরা করে ফেলে চলে গেল।”
31 ৩১ ঘটনাক্রমে একজন যাজক সেই পথ দিয়েই নেমে আসছিলেন, সে তাকে দেখে এক পাশ দিয়ে চলে গেল।
32 ৩২ পরে একই ভাবেই একজন লেবীয় ও সেই স্থানে এসে দেখল এবং এক পাশ দিয়ে চলে গেল।
33 ৩৩ কিন্তু একজন শমরীয় সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল এবং তার কাছে গেল, আর তাকে দেখে তার খুব করুণা হল,
34 ৩৪ এবং কাছে গিয়ে তেল ও আঙ্গুরের রস ঢেলে দিয়ে তার ক্ষত জায়গাগুলো বেঁধে দিল, পরে তার পশুর উপরে তাকে বসিয়ে এক সরাইখানায় নিয়ে গেল ও তার যত্ন করল।
35 ৩৫ পরের দিন দুটি দিনারী বের করে সরাইখানার মালিককে দিয়ে বলল, “এই ব্যক্তির যত্ন করো, যদি বেশি কিছু ব্যয় হয়, আমি যখন ফিরে আসব, তখন শোধ করব।”
36 ৩৬ তোমার কি মনে হয়, এই তিন জনের মধ্যে কে ঐ ডাকাতদের হাতে পড়া ব্যক্তির প্রতিবেশী হয়ে উঠল?
37 ৩৭ সে বলল, “যে ব্যক্তি তার প্রতি দয়া করল, সেই।” তখন যীশু তাকে বললেন, যাও, “তুমিও তেমন কর।”
38 ৩৮ আর যখন তাঁরা যাচ্ছিলেন, তিনি কোন একটা গ্রামে প্রবেশ করলেন, আর মার্থা নামে এক মহিলার বাড়িতে তিনি আতিথ্য গ্রহণ করলেন।
39 ৩৯ মার্থার, মরিয়ম নামে তাঁর এক বোন ছিলেন, তিনি প্রভুর পায়ের কাছে বসে তাঁর কথা শুনতে লাগলেন।
40 ৪০ কিন্তু মার্থা খাবার তৈরির কাজে বেশি ব্যতিব্যস্ত ছিলেন, আর তিনি কাছে এসে বললেন, “প্রভু, আপনি কি কিছু মনে করছেন না যে, আমার বোন সমস্ত কাজের ভার একা আমার উপরে ফেলে রেখেছে? অতএব ওকে বলুন, যেন আমার সাহায্য করে।”
41 ৪১ কিন্তু প্রভু উত্তরে তাঁকে বললেন, “মার্থা, মার্থা, তুমি অনেক বিষয়ে চিন্তিত আছ,
42 ৪২ কিন্তু অল্প কয়েকটি বিষয়, বরং একটি মাত্র বিষয় প্রয়োজন, কাজেই মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টি মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে নেওয়া যাবে না।”