< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 21 >
1 ১ মিস্পাতে ইস্রায়েল-লোকেরা এই শপথ করেছিল, আমরা কেউ বিন্যামীনের মধ্যে কারও সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দেব না।
ইস্রায়েলী লোকজন মিস্পাতে এক শপথ নিয়েছিল: “আমাদের মধ্যে কেউই তার মেয়ের সঙ্গে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত কোনও ছেলের বিয়ে দেবে না।”
2 ২ পরে লোকেরা বৈথেলে এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই জায়গায় ঈশ্বরের সামনে বসে খুব জোরে চিত্কার করে কাঁদতে লাগল।
লোকেরা বেথেলে গেল, এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের সামনে বসে জোর গলায় প্রচণ্ড কান্নাকাটি করল।
3 ৩ তারা বলল, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আজ ইস্রায়েলের মধ্যে এক বংশের লোপ হল, ইস্রায়েলের মধ্যে কেন এমন হল?”
“ইস্রায়েলের ঈশ্বর, হে সদাপ্রভু,” তারা চিৎকার করে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্যে এমন ঘটনা কেন ঘটল? আজ কেন ইস্রায়েল থেকে একটি গোষ্ঠী বিলুপ্ত হতে চলেছে?”
4 ৪ পরদিনের লোকেরা ভোরবেলায় উঠে সেই জায়গায় যজ্ঞবেদি তৈরী করল এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করল।
পরদিন ভোরবেলায় লোকেরা এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করল এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করল।
5 ৫ পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “সমাজে সদাপ্রভুর কাছে আসেনি, ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে এমন কে আছে?” কারণ মিস্পাতে সদাপ্রভুর কাছে যে না আসবে, সে অবশ্য হত হবে, এই মহাদিব্যি তারা করেছিল।
পরে ইস্রায়েলীরা জিজ্ঞাসা করল, “ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠীর মধ্যে কারা সদাপ্রভুর সামনে সমবেত হয়নি?” কারণ তারা এক আনুষ্ঠানিক শপথ নিয়েছিল যে মিস্পাতে যদি কেউ সদাপ্রভুর সামনে না আসে তবে তাকে মেরে ফেলা হবে।
6 ৬ আর ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের ভাই বিন্যামীনের জন্য অনুতাপ করে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্য থেকে আজ এক বংশ উচ্ছিন্ন হল।
ইত্যবসরে ইস্রায়েলীরা তাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীর জন্য শোকসন্তপ্ত হল। “আজ ইস্রায়েল থেকে একটি গোষ্ঠী বিচ্ছিন্ন হল,” তারা বলল।
7 ৭ এখন তার অবশিষ্ট লোকদের বিয়ের বিষয়ে কি কর্তব্য? আমরা তো সদাপ্রভুর নামে এই দিব্যি করেছি যে, আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দেব না।”
“আমরা কীভাবে তবে যারা এখনও অবশিষ্ট আছে তাদের জন্য স্ত্রীর বিধান করব, যেহেতু আমরা তো সদাপ্রভুর নামে শপথ নিয়েছি যে তাদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দেব না।”
8 ৮ অতএব তারা বলল, “মিস্পাতে সদাপ্রভুর কাছে আসেনি, ইস্রায়েলের এমন কোন বংশ কি আছে?” আর দেখ, যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউ শিবিরস্থ ঐ সমাজে আসেনি।
পরে তারা জিজ্ঞাসা করল, “ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে কোন গোষ্ঠী মিস্পাতে সদাপ্রভুর সামনে আসেনি?” তারা জানতে পারল যে যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউ সেই সভায় যোগ দেওয়ার জন্য শিবিরে আসেনি।
9 ৯ লোক সকল গণনা হল, কিন্তু দেখ, যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদের এক জনও সে জায়গায় নেই।
কারণ তারা যখন লোকগণনা করল, তখন দেখা গেল যে যাবেশ-গিলিয়দের লোকদের মধ্যে কেউ সেখানে নেই।
10 ১০ তাতে মণ্ডলী বলবানদের মধ্য থেকে বারো হাজার লোককে সে জায়গায় পাঠাল, আর তাদেরকে এই আজ্ঞা করল, “তোমরা যাও, যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদেরকে স্ত্রীলোক ও বালক-বালিকাশুদ্ধ খড়গ দিয়ে আঘাত কর।
অতএব জনসমাজ 12,000 যোদ্ধাকে নির্দেশ দিয়ে পাঠাল যেন তারা যাবেশ-গিলিয়দে যায় এবং মহিলা ও শিশুসহ সেখানে বসবাসকারী সব লোককে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করে।
11 ১১ আর এই কাজ করবে; প্রত্যেক পুরুষকে এবং পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের প্রত্যেক স্ত্রীকে নিঃশেষে বিনষ্ট করবে।”
“তোমাদের এরকম করতে হবে,” তারা বলল। “প্রত্যেক পুরুষমানুষকে এবং যে কুমারী নয়, এমন প্রত্যেক মহিলাকে হত্যা কোরো।”
12 ১২ আর তারা যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদের মধ্যে এমন চারশো কুমারী পেল, যারা পুরুষের সঙ্গে শয়ন করে তার পরিচয় প্রাপ্ত হয়নি। তারা কনান দেশস্থ শীলোর শিবিরে তাদেরকে আনল।
যাবেশ-গিলিয়দে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে তারা এমন 400 জন তরুণীর খোঁজ পেল, যারা কোনো পুরুষমানুষের সঙ্গে কখনও শোয়নি, এবং তারা তাদের কনান দেশের শীলোতে অবস্থিত শিবিরে নিয়ে এল।
13 ১৩ পরে সমস্ত মণ্ডলী লোক পাঠিয়ে রিম্মোণ পর্বতে অবস্থিত বিন্যামীনদের সঙ্গে আলাপ করল ও তাদের কাছে সন্ধি ঘোষণা করল।
পরে সমগ্র জনসমাজ রিম্মোণ পাষাণ-পাথরে বসবাসকারী বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের কাছে এক শান্তি-প্রস্তাব দিয়ে পাঠাল।
14 ১৪ সেই দিনের বিন্যামীনের লোকেরা ফিরে আসল, আর তারা যাবেশ-গিলিয়দস্থ যে কন্যাদেরকে জীবিত রেখেছিল, ওদের সঙ্গে তাদের বিবাহ দিল; তা সত্বেও ওদের অকুলান হল।
অতএব বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা সেই সময় ফিরে এল এবং যাবেশ-গিলিয়দের যে মেয়েদের বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে সেই লোকদের বিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু তাদের সবার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মেয়ে পাওয়া গেল না।
15 ১৫ আর সদাপ্রভু ইস্রায়েল-বংশগুলির মধ্যে ছিদ্র করেছিলেন; এই কারণ লোকেরা বিন্যামীনের জন্য অনুতাপ করল।
লোকেরা বিন্যামীনের জন্য মনঃক্ষুণ্ণ হল, কারণ সদাপ্রভু ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে এক ফাঁক তৈরি করলেন।
16 ১৬ পরে মণ্ডলীর প্রাচীনেরা বললেন, “বিন্যামীন থেকে স্ত্রীজাতি উচ্ছিন্ন হয়েছে, অতএব অবশিষ্টদের বিয়ে দেবার জন্য আমাদের কি কর্তব্য?”
আর জনসমাজের প্রাচীনেরা বললেন, “বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত মহিলারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, এখন অবশিষ্ট পুরুষমানুষদের জন্য আমরা কীভাবে স্ত্রীর ব্যবস্থা করব?
17 ১৭ আরও বললেন, “ইস্রায়েলের মধ্যে এক বংশের লোপ যেন না হয়, তার জন্য বিন্যামীনের ঐ রক্ষাপ্রাপ্ত লোকদের একটি অধিকার থাকা আবশ্যক।
বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকদের বংশরক্ষাও তো করতে হবে,” তাঁরা বললেন, “যেন ইস্রায়েলের একটি গোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন হয়ে না যায়।
18 ১৮ কিন্তু আমরা ওদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে পারি না; কারণ ইস্রায়েলীয়রা এই দিব্যি করেছে, যে কেউ বিন্যামীনকে মেয়ে দেবে, সে অভিশাপগ্রস্ত হবে।”
আমরা তো আমাদের মেয়েদের সঙ্গে তাদের বিয়ে দিতে পারব না, যেহেতু আমরা, ইস্রায়েলীরা এই শপথ নিয়েছি: ‘যে কেউ বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত কাউকে কন্যাদান করবে, সে অভিশপ্ত হোক।’
19 ১৯ শেষে তাঁরা বললেন, “দেখ, শীলোতে প্রতিবছর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক উৎসব হয়ে থাকে।” ওটা বৈথেলের উত্তরদিকে, বৈথেল থেকে যে রাজপথ শিবিষয় নৈবেদ্যের দিকে গিয়েছে, তার পূর্ব্বদিকে এবং লবোনার দক্ষিণদিকে অবস্থিত।
কিন্তু দেখো, সেই শীলোতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে প্রতি বছর এক উৎসব হয়, যা বেথেলের উত্তরে, এবং বেথেল থেকে শিখিমের দিকে চলে যাওয়া পথের পূর্বদিকে, এবং লবোনার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।”
20 ২০ তাতে তাঁরা বিন্যামীনদেরকে আজ্ঞা করলেন, “তোমরা গিয়ে দ্রাক্ষাক্ষেত্রে লুকিয়ে থাক;
অতএব তাঁরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “যাও ও দ্রাক্ষাক্ষেতে লুকিয়ে থাকো
21 ২১ নিরীক্ষণ কর, আর দেখ, যদি শীলোর কন্যারা দলের মধ্যে নাচ করতে করতে বাইরে বের হয় আসে, তবে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত্র থেকে বের হয়ে এসে প্রত্যেক শীলোর কন্যাদের মধ্য থেকে নিজের নিজের স্ত্রী ধরে নিয়ে বিন্যামীন দেশে চলে যাও।
এবং লক্ষ্য রাখো। শীলোর তরুণীরা যখন দল বেঁধে নাচ করতে করতে বেরিয়ে আসবে, তখন দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে তোমরা প্রত্যেকে তাদের মধ্যে এক একজনকে নিজেদের স্ত্রী করে নিয়ো। পরে বিন্যামীন দেশে ফিরে যেয়ো।
22 ২২ আর তাদের পিতা কিম্বা ভায়েরা যদি বিবাদ করবার জন্য আমাদের কাছে আসে, তবে আমরা তাদেরকে বলব, তোমরা আমাদের অনুরোধে তাদেরকে দান কর; কারণ যুদ্ধের দিনের আমরা তাদের প্রত্যেক জনের জন্য স্ত্রী পায়নি; আর তোমরাও তাদেরকে দাওনি, দিলে এখন অপরাধী হতে।”
তাদের বাবারা বা ভাইরা যখন আমাদের কাছে অভিযোগ জানাবে, তখন আমরা তাদের বলব, ‘তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে আমাদের একটু উপকার করো, কারণ যুদ্ধের সময় আমরা তাদের জন্য স্ত্রী পাইনি। তোমরা তোমাদের শপথ ভাঙার দোষে দোষী হবে না, কারণ তোমরা তো তোমাদের মেয়েদের তাদের হাতে তুলে দাওনি।’”
23 ২৩ তখন বিন্যামীনরা সেরকম করে নিজেদের সংখ্যানুসারে নৃত্যকারিণী কন্যাদের মধ্য থেকে স্ত্রী ধরে গ্রহণ করল; পরে নিজের নিজের অধিকারে ফিরে গেল এবং আবার নগরগুলি নির্মাণ করে তাদের মধ্যে বাস করল।
অতএব বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা সেরকমই করল। সেই তরুণীরা যখন নাচছিল, তখন প্রত্যেকজন পুরুষমানুষ এক একজনকে ধরে তার স্ত্রী হওয়ার জন্য তাকে তুলে নিয়ে গেল। পরে তারা তাদের অধিকারভুক্ত এলাকায় ফিরে গেল এবং নগরগুলি পুনর্নির্মাণ করে সেগুলিতে বসতি স্থাপন করল।
24 ২৪ আর সেই দিনের ইস্রায়েলীয়রা সেখান থেকে প্রত্যেকে নিজের নিজের বংশের ও গোষ্ঠীর কাছে চলে গেল; তারা সেখান থেকে বের নিজের নিজের অধিকারে গেল।
সেই সময় ইস্রায়েলীরা সেই স্থান ত্যাগ করে প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব অধিকার অনুসারে তাদের গোষ্ঠী ও বংশভুক্ত এলাকায়, নিজেদের ঘরে ফিরে গেল।
25 ২৫ সেই দিনের ইস্রায়েলের মধ্যে (কোনো) রাজা ছিল না; যার দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হত, সে তাই করত।
সেই সময় ইস্রায়েলে কোনও রাজা ছিলেন না; প্রত্যেকে, তাদের যা ভালো বলে মনে হত, তাই করত।