< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 20 >

1 পরে ইস্রায়েলীয়রা সবাই বাইরে এল, দান (অঞ্চল) থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ও গিলিয়দ দেশ সমেত সমস্ত মণ্ডলী এক মানুষের মতো মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে সমবেত হল।
পরে দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা থেকে এবং গিলিয়দ দেশ থেকে এসে সমগ্র ইস্রায়েল একজন মানুষের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর সামনে সমবেত হল।
2 ঈশ্বরের প্রজাদের সেই সমাজে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সমস্ত জনসমাজের অধ্যক্ষ ও চারলাখ খড়গধারী পদাতিক উপস্থিত হল।
ইস্রায়েলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সব লোকজনের নেতারা ঈশ্বরের প্রজাদের জনসমাবেশে 4,00,000 তরোয়ালধারী লোকের মধ্যে তাঁদের স্থান গ্রহণ করলেন।
3 আর ইস্রায়েলীয়রা মিস্‌পাতে উঠে গিয়েছে, এই কথা বিন্যামীনরা শুনতে পেল। পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “বল দেখি, এই খারাপ কাজ কিভাবে হল?”
(বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকজন শুনেছিল যে ইস্রায়েলীরা মিস্‌পাতে গিয়েছে) পরে ইস্রায়েলীরা বলল, “আমাদের বলো কীভাবে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটল।”
4 সেই লেবীয়, মৃত স্ত্রীর পুরুষ উত্তর করে বলল্‌, “আমি ও আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত গিবিয়াতে প্রবেশ করেছিলাম।”
অতএব সেই নিহত মহিলাটির স্বামী—সেই লেবীয় লোকটি বলল, “আমি ও আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অন্তর্গত গিবিয়াতে গিয়েছিলাম।
5 আর গিবিয়ার গৃহস্থেরা আমার বিরুদ্ধে উঠে রাত্রিবেলায় আমার জন্য গৃহের চারদিক্‌ ঘিরে রাখল। তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল, আর আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করায় সে মারা গেল।
রাতের বেলায় গিবিয়ার লোকজন আমাকে ধরার জন্য এসেছিল এবং আমাকে হত্যা করার মতলবে, সেই বাড়িটি ঘিরে ধরেছিল। তারা আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করল, ও সে মরে গেল।
6 পরে আমি নিজ উপপত্নীকে নিয়ে খণ্ড খণ্ড করে ইস্রায়েলের অধিকারস্থ প্রদেশের সব জায়গায় পাঠালাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে খারাপ কাজ করেছে।
আমি আমার উপপত্নীকে নিয়ে, তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে ইস্রায়েলের অধিকারভুক্ত প্রত্যেকটি এলাকায় একটি করে টুকরো পাঠিয়ে দিলাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে এই নীচ ও জঘন্য কাজটি করেছে।
7 দেখ, তোমরা সবাই ইস্রায়েল সন্তান; অতএব এ বিষয়ে নিজের নিজের মতামত বলে মন্ত্রণা স্থির কর।
এখন তোমরা, ইস্রায়েলীরা সবাই, চিৎকার করে ওঠো ও আমায় বলো তোমরা কী করার সিদ্ধান্ত নিলে।”
8 তখন সকল লোক এক মানুষের মতো উঠে বলল, “আমরা কেউ নিজের তাঁবুতে যাব না, কেউ নিজের বাড়িতে ফিরে যাব না;
সব লোকজন উঠে দাঁড়িয়ে একযোগে বলে উঠল, “আমরা কেউ ঘরে যাব না। না, আমাদের মধ্যে একজনও তার বাড়িতে ফিরে যাবে না।
9 কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি এই কাজ করব, আমরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যাব।
কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি আমরা যা করব তা হল এই: গুটিকাপাতের মাধ্যমে ক্রম স্থির করে আমরা গিবিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাব।
10 ১০ আর আমরা লোকদের জন্য খাদ্য দ্রব্য আনতে ইস্রায়েল-বংশসমূহের মধ্যে একশো লোকের প্রতি দশ, হাজারের প্রতি একশো ও দশ হাজারের প্রতি এক হাজার লোক গ্রহণ করব, যেন আমরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গিয়ে ইস্রায়েলের মধ্যে কৃত সমস্ত খারাপ কাজ অনুসারে প্রতিফল দিতে পারি।”
ইস্রায়েলের সব গোষ্ঠী থেকে প্রতি একশো জনের মধ্যে দশজন, প্রতি 1,000 জনের মধ্যে একশো জন এবং প্রতি 10,000 জনের মধ্যে 1,000 জনকে নিয়ে আমরা তাদের সৈন্যবাহিনীর খাদ্য সরবরাহের জন্য নিযুক্ত করব। পরে, সৈন্যবাহিনী যখন বিন্যামীনের অন্তর্গত গিবিয়াতে পৌঁছাবে, তখন ইস্রায়েলের মধ্যে করা এই জঘন্য কাজের জন্য তারা তাদের উপযুক্ত দণ্ড দেবে।”
11 ১১ এই ভাবে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক মানুষের মতো একযোগ হয়ে ঐ নগরের প্রতিকূলে জড়ো হল।
অতএব ইস্রায়েলীরা সবাই একত্রিত হয়ে সেই নগরটির বিরুদ্ধে একজন মানুষের মতো সংঘবদ্ধ হল।
12 ১২ পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশগুলি বিন্যামীন বংশের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে বলল, “তোমাদের মধ্যে এ কি খারাপ কাজ হয়েছে?”
ইস্রায়েলের বিভিন্ন গোষ্ঠী বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত এলাকার সর্বত্র লোক মারফত বলে পাঠাল, “তোমাদের মধ্যে এসব কী ভয়াবহ অপকর্ম হয়েছে?
13 ১৩ তোমরা এখন ঐ লোকদেরকে, গিবিয়া-নিবাসী পাষণ্ডদেরকে, সমর্পণ কর, আমরা তাদেরকে হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার বন্ধ করব। কিন্তু বিন্যামীন নিজের ভাইদের অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের কথা শুনতে রাজি হল না।
এখন গিবিয়ার সেইসব দুর্জন লোককে তোমরা আমাদের হাতে তুলে দাও যেন আমরা তাদের হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার লোপ করতে পারি।” কিন্তু বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের স্বজাতীয় ইস্রায়েলীদের কথা শুনতে চাইল না।
14 ১৪ বরং ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বিন্যামীনরা নানা নগর থেকে গিবিয়াতে গিয়ে জড়ো হল।
তাদের নগরগুলি থেকে বেরিয়ে এসে তারা ইস্রায়েলীদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য গিবিয়ায় সমবেত হল।
15 ১৫ সেই দিন নানা নগর থেকে আসা বিন্যামীনদের ছাব্বিশ হাজার খড়গধারী লোক গণনা করা হল; এরা গিবিয়া-নিবাসীদের থেকে আলাদা; তারাও সাতশো মনোনীত লোক গণনা করা হল।
অবিলম্বে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা তাদের নগরগুলি থেকে 26,000 তরোয়ালধারী লোক সংগ্রহ করল। এর পাশাপাশি গিবিয়াতে বসবাসকারী লোকদের মধ্যে থেকেও 700 জন দক্ষ যুবক সংগ্রহ করা হল।
16 ১৬ আবার এই সকল লোকের মধ্যে সাতশো মনোনীত লোক বাঁ-হাতি ছিল; তাদের প্রত্যেক জন চুল লক্ষ্য করে ফিঙ্গার পাথর মারতে পারত, লক্ষ্যচ্যুত হত না।
এইসব সৈনিকের মধ্যে বাছাই করা 700 জন সৈনিক ছিল ন্যাটা, যাদের প্রত্যেকেই চুলের মতো সূক্ষ্ম নিশানায় গুলতি দিয়ে পাথর ছুঁড়তে পারত ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হত না।
17 ১৭ বিন্যামীন ভিন্ন ইস্রায়েলের খড়গধারী চারলাখ লোক গণনা করা হল; এরা সবাই যোদ্ধা ছিল।
বিন্যামীনকে বাদ দিয়ে ইস্রায়েল তরোয়ালধারী এমন 4,00,000 লোক জোগাড় করল, যারা সবাই যুদ্ধের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন ছিল।
18 ১৮ ইস্রায়েলীয়রা উঠে বৈথেলে গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করল; তারা বলল, “বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমাদের মধ্যে প্রথমে কে যাবে?” সদাপ্রভু বললেন, “প্রথমে যিহূদা যাবে।”
ইস্রায়েলীরা বেথেলে গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জানতে চাইল। তারা বলল, “বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের মধ্যে থেকে কারা আগে যাবে?” সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যিহূদা গোষ্ঠী আগে যাবে।”
19 ১৯ পরে ইস্রায়েলীয়রা সকালে উঠে গিবিয়ার সামনে শিবির তৈরী করল।
পরদিন সকালে ইস্রায়েলীরা উঠে গিবিয়ার কাছে শিবির স্থাপন করল।
20 ২০ পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে গেল; তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ইস্রায়েলীয়রা গিবিয়ার বিরুদ্ধে সৈন্য স্থাপন করল।
ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বাইরে গেল এবং গিবিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবস্থান নিল।
21 ২১ তখন বিন্যামীনরা গিবিয়া থেকে বের হয়ে ঐ দিনের ইস্রায়েলের মধ্যে বাইশ হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল।
বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে সেদিন যুদ্ধক্ষেত্রে 22,000 ইস্রায়েলীকে হত্যা করল।
22 ২২ পরে ইস্রায়েলীয়রা নিজেদেরকে আশ্বাস দিয়ে, প্রথম দিনের যে জায়গায় সৈন্য স্থাপন করেছিল, আবার সেই জায়গায় সৈন্য স্থাপন করল।
কিন্তু ইস্রায়েলীরা পরস্পরকে উৎসাহিত করল এবং প্রথম দিন যেখানে তারা নিজেদের মোতায়েন করেছিল, সেখানেই আবার তাদের অবস্থান গ্রহণ করল।
23 ২৩ আর ইস্রায়েলীয়রা উঠে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল এবং সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কি আবার যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “তার বিরুদ্ধে যাও।”
ইস্রায়েলীরা গিয়ে সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করল, এবং তাঁর কাছে জানতে চাইল। তারা বলল, “আমরা কি আবার আমাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব?” সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “তাদের বিরুদ্ধে চলে যাও।”
24 ২৪ পরে ইস্রায়েলীয়রা দ্বিতীয় দিনের বিন্যামীনদের প্রতিকুলে উপস্থিত হল।
পরে ইস্রায়েলীরা দ্বিতীয় দিনে বিন্যামীনের দিকে এগিয়ে গেল।
25 ২৫ আর বিন্যামীন সেই দ্বিতীয় দিনের তাদের বিরুদ্ধে গিবিয়া থেকে বের হয়ে আবার ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আঠার হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
এবার, বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে এমন আরও 18,000 ইস্রায়েলীকে হত্যা করল, যারা সবাই ছিল তরোয়ালধারী সৈনিক।
26 ২৬ পরে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা, সমস্ত লোক, গিয়ে বৈথেলে উপস্থিত হল এবং সেই জায়গায় সদাপ্রভুর সামনে কাঁদল ও বসে থাকল এবং সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করে সদাপ্রভুর সামনে হোম ও মঙ্গলের জন্য বলি উৎসর্গ করল।
পরে ইস্রায়েলীরা সবাই—সমগ্র সৈন্যবাহিনী বেথেলে গেল, এবং সেখানে বসে তারা সদাপ্রভুর সামনে কান্নাকাটি করতে লাগল। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা উপবাস করল এবং সদাপ্রভুর কাছে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক-নৈবেদ্য উৎসর্গ করল।
27 ২৭ সেই দিনের ঈশ্বরের নিয়ম সিন্দুক ঐ জায়গায় ছিল,
আর ইস্রায়েলীরা সদাপ্রভুর কাছে জানতে চাইল। (সেই সময় ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুকটি সেখানে ছিল,
28 ২৮ এবং হারোণের নাতি ইলীয়াসরের পুত্র পীনহস তার সামনে দণ্ডায়মান ছিলেন; অতএব ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুকে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এখনও কি আবার যাব? না থামব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও, কারণ কাল আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করব।”
এবং হারোণের নাতি, তথা ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস সেটির সামনে থেকে পরিচর্যা করতেন) তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা কি আবার আমাদের স্বজাতীয় বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, কি যাব না?” সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “যাও, কারণ আগামীকাল আমি তাদের তোমাদের হাতে সমর্পণ করে দেব।”
29 ২৯ পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারদিকে ঘাঁটি বসাল।
পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারপাশে ওৎ পেতে বসে থাকল।
30 ৩০ পরে তৃতীয় দিনের ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে উঠে গিয়ে অন্যান্য দিনের র মতো গিবিয়ার কাছে সৈন্য রচনা করল।
তৃতীয় দিনে তারা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বিরুদ্ধে উঠে গেল এবং গিবিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিল, যেভাবে আগেও তারা নিয়েছিল।
31 ৩১ তখন বিন্যামীনরা ঐ লোকদের বিরুদ্ধে বের হল এবং নগর থেকে দূরে আকর্ষিত হয়ে প্রথম বারের মতো লোকদেরকে আঘাত ও হত্যা করতে লাগল, বিশেষত বৈথেলে যাবার ও ক্ষেত্রস্থ গিবিয়াতে যাবার দুই রাজপথে তারা ইস্রায়েলের মধ্যে অনুমান ত্রিশ জনকে হত্যা করল।
বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের সম্মুখীন হওয়ার জন্য বেরিয়ে এল এবং তাদের নগর থেকে দূরে আকৃষ্ট করা হল। আগের মতোই তারা ইস্রায়েলীদের হত্যা করতে শুরু করল, তাতে খোলা মাঠে এবং পথের উপরে—একটি বেথেলের অভিমুখে ও অন্যটি গিবিয়ার অভিমুখে, প্রায় ত্রিশজন মরে পড়ে থাকল।
32 ৩২ তাতে বিন্যামীনরা বলল, “ওরা আমাদের সামনে আগের মতো পরাজিত হচ্ছে।” কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা বলেছিল, “এস, আমরা পালিয়ে ওদেরকে নগর থেকে রাজপথে আকর্ষণ করি।”
একদিকে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বলছিল, “আগের মতোই আমরা ওদের পরাজিত করছি,” অন্যদিকে ইস্রায়েলীরা বলছিল, “এসো আমরা পিছিয়ে যাই এবং নগর থেকে ওদের পথের দিকে আকর্ষণ করি।”
33 ৩৩ অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত লোক নিজের নিজের জায়গা থেকে উঠে গিয়ে বাল্‌-তামরে সৈন্য স্থাপন করল; ইতিমধ্যে ইস্রায়েলের লুক্কায়িত লোকেরা নিজেদের জায়গা থেকে অর্থাৎ মারে-গেবা থেকে বের হল।
ইস্রায়েলের লোকজন সবাই তাদের স্থান থেকে সরে এসে বায়াল-তামরে অবস্থান গ্রহণ করল, এবং ওৎ পেতে বসে থাকা ইস্রায়েলীরা গিবিয়ার পশ্চিমদিকে অবস্থিত তাদের গুপ্ত স্থান ছেড়ে বেরিয়ে এল।
34 ৩৪ পরে সমস্ত ইস্রায়েল থেকে দশ হাজার মনোনীত লোক গিবিয়ার সামনে আসল, তাতে ঘোরতর সংগ্রাম হল; কিন্তু ওরা জানত না যে, অমঙ্গল ওদের কাছাকাছি।
পরে ইস্রায়েলের 10,000 জন যোগ্যতাসম্পন্ন যুবক সামনে থেকে গিবিয়ার উপর আক্রমণ চালাল। সেই যুদ্ধ এত ধুন্ধুমার হল যে বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা বুঝতেই পারেনি যে বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছে।
35 ৩৫ তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে আঘাত করলেন, আর সে দিন ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের পঁচিশ হাজার একশো লোককে সংহার করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে পরাজিত করলেন, এবং সেদিন ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 25,100 জন লোককে হত্যা করল। তারা সবাই ছিল তরোয়ালধারী সৈনিক।
36 ৩৬ এই ভাবে বিন্যামীনরা দেখল যে, তারা আহত হয়েছে; কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা বিন্যামীনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, যেহেতু তারা যাদেরকে গিবিয়ার বিরুদ্ধে স্থাপন করেছিল, সেই লুকিয়ে থাকা লোকদের উপরে নির্ভর করছিল।
তখন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা দেখল যে তারা পরাজিত হয়েছে। ইত্যবসরে ইস্রায়েলের লোকজন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল, কারণ তারা সেইসব লোকের উপরে নির্ভর করছিল, যারা গিবিয়ার কাছে ওৎ পেতে বসেছিল।
37 ৩৭ ইতিমধ্যে ঐ লুকিয়ে থাকা লোকেদের উপর সত্বর গিবিয়া আক্রমণ করল, আর প্রবেশ করে খড়গধারে সব নগরকে আঘাত করল।
যারা ওৎ পেতে বসেছিল, তারা আচমকাই গিবিয়াতে ঢুকে পড়ল, এবং চারপাশে ছড়িয়ে গিয়ে তরোয়াল চালিয়ে নগরবাসী সবাইকে আঘাত করল।
38 ৩৮ ইস্রায়েল-লোকদের ও লুক্কায়িত লোকদের মধ্যে এই চিহ্ন স্থির করা হয়েছিল, লুক্কায়িতেরা নগর থেকে ধোঁয়ার মেঘ উঠাবে।
ইস্রায়েলীরা ওৎ পেতে থাকা লোকদের বলে দিয়েছিল, যেন তারা নগর থেকে ধোঁয়াযুক্ত বিশাল মেঘ ছড়িয়ে দেয়,
39 ৩৯ অতএব ইস্রায়েল-লোকেরা সংগ্রাম করতে করতে মুখ ফেরাল। তখন বিন্যামীন তাদের অনুমান ত্রিশ জনকে আঘাত ও হত্যা করেছিল, কারণ তারা বলেছিল, প্রথম যুদ্ধের মতো এবারেও ওরা আমাদের সামনে আহত হল।
এবং তখনই ইস্রায়েলীরা পালটা আক্রমণ করবে। বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা ইস্রায়েলীদের (প্রায় ত্রিশ জনকে) হত্যা করতে শুরু করল, এবং তারা বলল, “প্রথমবারের যুদ্ধের মতোই আমরা তাদের পরাজিত করছি।”
40 ৪০ কিন্তু যখন নগর থেকে স্তম্ভাকারে ধূমময় মেঘ উঠতে লাগল, তখন বিন্যামীন পিছনে চেয়ে দেখল, আর দেখ, সব নগর ধূমময় হয়ে আকাশে উড়ে যাচ্ছে।
কিন্তু নগর থেকে যখন ধোঁয়ার স্তম্ভ উপরে উঠতে শুরু করল, তখন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা মুখ ফিরিয়ে দেখল যে সমগ্র নগর থেকে গলগল করে ধোঁয়া আকাশে উঠে যাচ্ছে।
41 ৪১ আর ইস্রায়েলীয়রাও মুখ ফেরাল; তাতে অমঙ্গল আমাদের ওপরে এসে পড়ল দেখে বিন্যামীনের লোকেরা ভয় পেল।
তখন ইস্রায়েলীরাও তাদের পালটা আক্রমণ করল, এবং বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল, কারণ তারা বুঝতে পারল যে তাদের উপরে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
42 ৪২ অতএব তারা ইস্রায়েল-লোকদের সামনে মাঠের পথের দিকে ফিরল এবং নগর কিন্তু সেই জায়গাতেও যুদ্ধ তাদের অনুবর্ত্তী হল এবং নগর সব থেকে আসা লোকেরা সেখানে তাদেরকে সংহার করল।
অতএব তারা ইস্রায়েলীদের কাছ থেকে মরুপ্রান্তরের দিকে পালিয়ে গেল, কিন্তু তারা যুদ্ধ এড়িয়ে পালাতে পারল না। আর যেসব ইস্রায়েলী লোকজন নগর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তারা সেখানেই তাদের হত্যা করল।
43 ৪৩ তারা চারদিকে বিন্যামীনকে ঘিরে তাড়াতে লাগল এবং সূর্য্যোদয়ের দিকে গিবিয়ার সামনের দিক পর্যন্ত তাদের বিশ্রামের জায়গায় তাদেরকে দলিত করতে লাগল।
ইস্রায়েলীরা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের ঘিরে ধরল, তাড়া করল এবং খুব সহজেই পূর্বদিকে গিবিয়ার কাছে গিয়ে তাদের ছারখার করে দিল।
44 ৪৪ তাতে বিন্যামীনের আঠার হাজার লোক হত হল, তারা সকলেই যোদ্ধা ছিল।
বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 18,000 লোক নিহত হল। তারা সবাই ছিল বীর যোদ্ধা।
45 ৪৫ পরে অবশিষ্টেরা প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে যেতে লাগল, আর ওরা রাজপথে তাদের অন্য পাঁচ হাজার লোককে হত্যা করল; পরে বেগে তাদের পিছন পিছন তাড়া করে গিদোম পর্যন্ত গিয়ে তাদের দুই হাজার লোককে আঘাত করল।
তারা যখন মরুপ্রান্তরের দিকে পিছু ফিরে রিম্মোণ পাষাণ-পাথরের দিকে পালিয়ে গেল, তখন ইস্রায়েলীরা পথেই 5,000 জন লোককে হত্যা করল। গিদোম পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে তারা বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের পশ্চাদ্ধাবন করে গেল এবং আরও 2,000 লোককে হত্যা করল।
46 ৪৬ অতএব সেই দিন বিন্যামীনের মধ্যে খড়গধারী পঁচিশ হাজার লোক হত হল; তারা সবাই বলবান লোক ছিল।
সেদিন বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত 25,000 তরোয়ালধারী লোক নিহত হল। তারা সবাই ছিল বীর যোদ্ধা।
47 ৪৭ কিন্তু ছয়শো লোক প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে গিয়ে সেই রিম্মোণ পর্বতে চার মাস বাস করল।
কিন্তু তাদের মধ্যে 600 জন লোক মরুপ্রান্তরের দিকে পিছু ফিরে রিম্মোণ পাষাণ-পাথরের দিকে পালিয়ে গেল এবং চার মাস তারা সেখানেই থাকল।
48 ৪৮ পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীদের প্রতিকূলে ফিরে নগরস্থ মানুষ ও পশু প্রভৃতি যা যা পাওয়া গেল, সে সবকে খড়গ দিয়ে আঘাত করল; তারা যত নগর পেল, সে সব আগুনে পুড়িয়ে দিল।
ইস্রায়েলী লোকজন বিন্যামীন গোষ্ঠীর অধিকারভুক্ত এলাকায় ফিরে গেল এবং সব নগরে তরোয়াল চালিয়ে মানুষ, পশুপাল ও আরও যা যা পাওয়া গেল, সেসব ছারখার করে দিল। তারা যত নগর পেল, সেগুলিতে আগুন জ্বালিয়ে দিল।

< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 20 >