< বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 13 >
1 ১ পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করল; তাতে সদাপ্রভু চল্লিশ বছর তাদেরকে পলেষ্টীয়দের হাতে সমর্পণ করলেন।
ইস্রায়েলীরা আবার সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ কাজকর্ম করল, তাই সদাপ্রভু চল্লিশ বছরের জন্য ফিলিস্তিনীদের হাতে তাদের সমর্পণ করলেন।
2 ২ সেই দিনের দানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সরা-নিবাসী মানোহ নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে সন্তান হয়নি।
দানীয় গোষ্ঠীভুক্ত, সরা নিবাসী মানোহ বলে একজন ব্যক্তির স্ত্রী বন্ধ্যা ছিলেন। তিনি সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি।
3 ৩ পরে সদাপ্রভুর দূত সে স্ত্রীকে দর্শন দিয়ে বললেন, “দেখ, তুমি বন্ধ্যা, তোমার সন্তান হয় না, কিন্তু তুমি গর্ভধারণ করে ছেলের জন্ম দেবে।
সদাপ্রভুর দূত সেই স্ত্রীকে দর্শন দিয়ে বললেন, “তুমি তো বন্ধ্যা ও সন্তানহীনা, কিন্তু তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এক ছেলের জন্ম দিতে যাচ্ছ।
4 ৪ অতএব সাবধান, আঙ্গুরের রস কি সুরা পান কর না এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন কর না।
এখন দেখো, তুমি যেন দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনও গাঁজানো পানীয় পান কোরো না এবং অশুচি কোনো কিছু খেয়ো না।
5 ৫ কারণ দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; আর তার মাথায় ক্ষুর উঠবে না, কারণ সেই বালক গর্ভ থেকেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নাসরীয় হবে এবং সে পলেষ্টীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলকে উদ্ধার করতে আরম্ভ করবে।”
তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এমন এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে যার মাথায় কখনও ক্ষুর ছোঁয়ানো যাবে না কারণ ছেলেটি হবে একজন নাসরীয়, গর্ভে থাকার সময় থেকেই সে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত হবে। ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে ইস্রায়েলকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সেই নেতৃত্ব দেবে।”
6 ৬ তখন সেই স্ত্রী এসে নিজের স্বামীকে বললেন, “ঈশ্বরের এক জন লোক আমার কাছে এসেছিলেন, তাঁর চেহারা ঈশ্বরীয় দূতের রূপের মতো, অতি ভয়ঙ্কর; তিনি কোথা থেকে আসলেন, তা আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিনি, আর তিনিও আমাকে তাঁর নাম বলেননি।
তখন সেই মহিলাটি তাঁর স্বামীর কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “ঈশ্বরের একজন লোক আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁকে দেখতে লাগছিল ঈশ্বরের এক দূতের মতো, খুবই ভয়ংকর। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিনি তিনি কোথা থেকে এসেছেন, এবং তিনিও আমাকে তাঁর নাম বলেননি।
7 ৭ কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; এখন দ্রাক্ষারস কিম্বা সুরা পান কর না এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন কর না কারণ সেই বালক জন্ম থেকে মৃত্যুদিন পর্যন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নাসরীয় হবে।”
কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি অন্তঃসত্ত্বা হবে এবং এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে। তাই এখন থেকে, তুমি দ্রাক্ষারস বা অন্য কোনও গাঁজানো পানীয় পান কোরো না এবং অশুচি কোনো কিছু খেয়ো না, কারণ সেই ছেলেটি গর্ভ থেকে তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশে এক নাসরীয় হয়ে থাকবে।’”
8 ৮ তখন মানোহ সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ করে বললেন, “হে প্রভু, ঈশ্বরের যে লোককে আপনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে আবার আমাদের কাছে আসতে দিন এবং যে বালকটি জন্মাবে, তার প্রতি আমাদের কি কর্তব্য, তা আমাদেরকে বুঝিয়ে দিন।”
তখন মানোহ সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন: “হে প্রভু, আপনার এই দাসকে ক্ষমা করবেন। আমি আপনার কাছে মিনতি করছি, ঈশ্বরের যে লোকটিকে আপনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, তিনি যেন আবার ফিরে এসে আমাদের শিক্ষা দেন কীভাবে আমরা সেই ছেলেটিকে বড়ো করে তুলব, যার জন্ম হতে চলেছে।”
9 ৯ তখন ঈশ্বর মানোহের রবে কর্ণপাত করলেন; ঈশ্বরের সেই দূত আবার সেই স্ত্রীর কাছে আসলেন; সেই দিনের তিনি মাঠে বসেছিলেন; তখন তাঁর স্বামী মানোহ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না।
ঈশ্বর মানোহের প্রার্থনা শুনলেন, এবং ঈশ্বরের দূত আবার সেই মহিলাটির কাছে এলেন, যখন তিনি ক্ষেতে ছিলেন; কিন্তু তাঁর স্বামী মানোহ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না।
10 ১০ সেই স্ত্রী শীঘ্র দৌড়িয়ে গিয়ে নিজের স্বামীকে সংবাদ দিলেন, তাঁকে বললেন, “দেখ, সে দিন যে লোকটী আমার কাছে এসেছিলেন, তিনি আমাকে দর্শন দিয়েছেন।”
মহিলাটি দৌড়ে গিয়ে তাঁর স্বামীকে বললেন, “সেদিন যে লোকটি আমাকে দর্শন দিয়েছিলেন, তিনি এখানে এসেছেন!”
11 ১১ মানোহ উঠে নিজের স্ত্রীর পিছন পিছন গেলেন এবং সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই স্ত্রীর সঙ্গে যিনি কথা বলেছিলেন, আপনি কি সেই ব্যক্তি?” তিনি বললেন, “আমিই সেই।”
মানোহ উঠে তাঁর স্ত্রীকে অনুসরণ করলেন। সেই লোকটির কাছে পৌঁছে তিনি বললেন, “আপনিই কি সেই ব্যক্তি যিনি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন?” “আমিই সেই ব্যক্তি,” তিনি বললেন।
12 ১২ মানোহ বললেন, “এখন আপনার বাক্য সত্য হোক; সেই বালকের প্রতি কি বিধি ও কি কর্তব্য?”
অতএব মানোহ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার কথা যখন পূর্ণ হবে, তখন সেই ছেলেটির জীবন ও কর্ম নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মটি কী হবে?”
13 ১৩ সদাপ্রভুর দূত মানোহকে বললেন, “আমি ঐ স্ত্রীকে যে সব কথা বলেছি, সে সব বিষয়ে সে সাবধান থাকুক।
সদাপ্রভুর দূত তাঁকে উত্তর দিলেন, “তোমার স্ত্রীকে আমি যা যা করতে বলেছি, সে যেন অবশ্যই তা করে।
14 ১৪ সে দ্রাক্ষালতা জাতীয় কোন বস্তু ভোজন করবে না, দ্রাক্ষারস কি সুরা পান করবে না এবং কোন অশুচি দ্রব্য ভোজন করবে না; আমি তাকে যা কিছু আজ্ঞা করেছি, সে তা পালন করুক।”
সে যেন এমন কিছু না খায় যা দ্রাক্ষালতা থেকে উৎপন্ন, অথবা যেন দ্রাক্ষারস বা গাঁজানো অন্য কোনও পানীয় পান না করে বা অশুচি কোনো কিছু না খায়। আমি তাকে যেসব আদেশ দিয়েছি, সে যেন অবশ্যই তা পালন করে।”
15 ১৫ পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “অনুরোধ করি, একটু অপেক্ষা করুন, আমরা আপনার জন্য একটি ছাগলের বাচ্চা মেরে রান্না করে দিই।”
মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “আমরা চাই আপনি ততক্ষণ অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না আমরা আপনার জন্য একটি কচি পাঁঠার মাংস রান্না করে আনছি।”
16 ১৬ সদাপ্রভুর দূত মানোহকে বললেন, “তুমি আমাকে অপেক্ষা করালেও আমি তোমার খাদ্য দ্রব্য ভোজন করব না; আর তুমি যদি হোমবলি উৎসর্গ কর, তবে সদাপ্রভুরই উদ্দেশ্যে তা কর।” বস্তুত তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, তা মানোহ জানতে পারেননি।
সদাপ্রভুর দূত উত্তর দিলেন, “তুমি আমাকে অপেক্ষা করালেও, আমি তোমার আনা কোনও খাবার খাব না। কিন্তু তুমি যদি হোমবলি উৎসর্গ করো, তবে তা সদাপ্রভুর উদ্দেশেই করো।” (মানোহ বুঝতে পারেননি যে তিনি সদাপ্রভুর দূত।)
17 ১৭ পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “আপনার নাম কি? আপনার বাক্য সফল হলে আমরা আপনার গৌরব করব।”
পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতের কাছে জানতে চাইলেন, “আপনার নাম কী, যেন আপনার কথা যখন পূর্ণ হবে, তখন আমরা আপনাকে সম্মান জানাতে পারি?”
18 ১৮ সদাপ্রভুর দূত বললেন, “কেন আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ? তা তো আশ্চর্য্য।”
তিনি উত্তর দিলেন, “আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ কেন? তা তোমার বোধের অগম্য।”
19 ১৯ পরে মানোহ ঐ ছাগলের বাচ্চা ও ভক্ষ্য নৈবেদ্য নিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পাথরের ওপরে উৎসর্গ করলেন; তাতে ঐ দূত, আশ্চর্য্য ব্যাপার সাধন করলেন, মানোহ ও তাঁর স্ত্রী তা দেখছিলেন।
তখন মানোহ একটি কচি পাঁঠা নিলেন ও সঙ্গে নিলেন শস্য-নৈবেদ্য, এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশে তা একটি পাষাণ-পাথরের উপরে উৎসর্গ করলেন। আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রীর চোখের সামনেই সদাপ্রভু এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটালেন:
20 ২০ যখন অগ্নিশিখা বেদি থেকে আকাশের দিকে উঠল, তখন সদাপ্রভুর দূত ঐ বেদির শিখাতে উঠলেন; আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রী দেখলেন এবং তাঁরা ভূমিতে উপুড় হয়ে পড়লেন।
বেদি থেকে যখন আগুনের শিখা আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছিল, তখন সদাপ্রভুর দূত ওই শিখা ধরে উঠে গেলেন। তা দেখে, মানোহ ও তাঁর স্ত্রী মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লেন।
21 ২১ তারপরে সদাপ্রভুর দূত মানোহকে ও তাঁর স্ত্রীকে আর দর্শন দিলেন না; তখন তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, এটা মানোহ জানতে পারলেন।
সদাপ্রভুর দূত যখন আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রীকে দর্শন দিলেন না, তখন মানোহ বুঝতে পারলেন যে তিনি ছিলেন সদাপ্রভুর দূত।
22 ২২ পরে মানোহ নিজের স্ত্রীকে বললেন, “আমরা অবশ্য মারা যাব, কারণ ঈশ্বরকে দেখেছি।”
“আমাদের মৃত্যু অনিবার্য!” তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন। “আমরা ঈশ্বরকে দেখেছি!”
23 ২৩ কিন্তু তাঁর স্ত্রী বললেন, “আমাদেরকে হত্যা করতে যদি সদাপ্রভুর ইচ্ছা হত, তবে তিনি আমাদের হাত থেকে হোম ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য গ্রহণ করতেন না এবং এই সব আমাদেরকে দেখাতেন না, আর এই দিন আমাদেরকে এমন সব কথাও শোনাতেন না।”
কিন্তু তাঁর স্ত্রী উত্তর দিলেন, “সদাপ্রভু যদি আমাদের হত্যা করতে চাইতেন, তবে তিনি আমাদের হাত থেকে হোমবলি ও শস্য-নৈবেদ্য গ্রহণ করতেন না, বা এসব কিছু আমাদের দেখাতেন না বা এখন এসব কথাও আমাদের বলতেন না।”
24 ২৪ পরে ঐ মহিলা ছেলে প্রসব করে তাঁর নাম শিম্শোন রাখলেন। আর বালকটি বেড়ে উঠল ও সদাপ্রভু তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
পরে সেই মহিলাটি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন এবং তার নাম রাখলেন শিম্শোন। ছেলেটি বেড়ে উঠল এবং সদাপ্রভু তাকে আশীর্বাদ করলেন,
25 ২৫ আর সদাপ্রভুর আত্মা প্রথমে সরার ও ইষ্টায়োলের মধ্যস্থানে, মহনে-দানে, তাঁকে চালাতে লাগলেন।
এবং সে যখন সরা ও ইষ্টায়োলের মাঝখানে অবস্থিত মহনেদানে ছিল, তখন থেকেই সদাপ্রভুর আত্মা তাকে চালাতে শুরু করলেন।