< ইয়োবের বিবরণ 34 >

1 আবার ইলীহূ কথা বলতে থাকলেন:
পরে ইলীহূ বললেন:
2 “হে জ্ঞানীরা, আমার কথা শুনুন, আপনাদের যাদের জ্ঞান আছে, আমাকে শুনুন,
“হে জ্ঞানীগুণীরা, আমার কথা শুনুন; হে পণ্ডিত ব্যক্তিরা, আমার কথায় কর্ণপাত করুন।
3 কারণ জিভ যেমন খাবারের স্বাদ নেয় তেমনি কান কথার পরীক্ষা করে।
জিভ যেভাবে খাদ্যের স্বাদ যাচাই করে কানও সেভাবে কথার পরীক্ষা করে।
4 আসুন যা ন্যায্য তা আমরা বেছে নিই: আসুন যা আমাদের মধ্যে ভাল তার আবিষ্কার করি।
আসুন, যা ন্যায্য আমরা তা আমাদের জন্য ঠিক করে নিই; আসুন, যা ভালো আমরা তা একসাথে শিখে নিই।
5 কারণ ইয়োব বললেন, ‘আমি ধার্মিক, কিন্তু ঈশ্বর আমার অধিকার নিয়ে নিয়েছেন।
“ইয়োব বলছেন, ‘আমি নির্দোষ, কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি ন্যায়বিচার করেননি।
6 আমার অধিকার অগ্রাহ্য হয়, আমি মিথ্যাবাদীর মত বিবেচিত হব। আমার আঘাত সারে না, যদিও আমি পাপ বিহীন।’
আমি যদিও ন্যায়বান, তাও আমাকে মিথ্যাবাদীরূপে গণ্য করা হয়েছে; আমি যদিও নিরপরাধ, তাও তাঁর তির এক দুরারোগ্য আঘাত দিয়েছে।’
7 ইয়োবের মত লোক কে, কে জলের মত উপহাস পান করে,
ইয়োবের মতো আর কেউ কি আছেন, যিনি জলের মতো অবজ্ঞা পান করেন?
8 তিনি মন্দ কাজকারীদের সঙ্গে থাকেন এবং তিনি পাপীদের সঙ্গে হাঁটেন?
তিনি দুর্বৃত্তদের সঙ্গ দেন; তিনি দুর্জনদের সহযোগী হন।
9 কারণ তিনি বলেছেন, ‘ঈশ্বর যা চান সেই কাজ করার মধ্যে দিয়ে মানুষের কোন আনন্দ নেই।’
কারণ তিনি বলেছেন, ‘ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে কোনও লাভ নেই।’
10 ১০ তাই আমার কথা শোন, তোমরা বুদ্ধিমান লোকেরা: এটা ঈশ্বরের দূরে থাক যে তিনি মন্দ কাজ করবেন; সর্বশক্তিমানের থেকে এটা দূরে থাক যে তিনি পাপ করবেন।
“তাই হে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা, আমার কথা শুনুন। এ হতেই পারে না যে ঈশ্বর অমঙ্গল করবেন, সর্বশক্তিমান অন্যায় করবেন।
11 ১১ কারণ তিনি মানুষকে তার কাজের ফল দিয়ে থাকেন; তিনি প্রত্যেক মানুষকে তার নিজের পথ অনুযায়ী পুরষ্কার দেন।
মানুষের কর্মের ফলই তিনি প্রত্যেককে দেন; তাদের আচরণ অনুসারে তাদের যা প্রাপ্য তিনি তাদের তাই দেন।
12 ১২ সত্যি, ঈশ্বর কোন মন্দ কাজ করেন নি, না সর্বশক্তিমান কোনদিন ন্যায়বিচার বিকৃত করেছেন।
চিন্তাও করা যায় না যে ঈশ্বর অন্যায় করবেন, সর্বশক্তিমান ন্যায়বিচার বিকৃত করবেন।
13 ১৩ পৃথিবীর কর্তৃত্বভার তাকে কে দিয়েছে? সমস্ত পৃথিবীর দায়িত্ব তাকে কে দিয়েছে?
পৃথিবীর উপরে কে তাঁকে নিযুক্ত করেছে? সমগ্র জগতের দায়িত্ব কে তাঁর হাতে সঁপে দিয়েছে?
14 ১৪ যদি তিনি তার উদ্দেশ্য কেবল নিজের ওপরই রাখেন এবং যদি তিনি নিজের আত্মা এবং প্রাণবায়ু সংগ্রহ করেন,
যদি তাঁর ইচ্ছা হত এবং তিনি তাঁর আত্মা ও শ্বাসবায়ু ফিরিয়ে নিতেন,
15 ১৫ তবে সমস্ত মানুষ একসঙ্গে ধ্বংস হবে; মানবজাতি আবার ধূলোয় ফিরে যাবে।
তবে সমগ্র মানবজাতি একসাথে ধ্বংস হয়ে যেত ও মানবসমাজ ধুলোতে ফিরে যেত।
16 ১৬ এখন যদি আপনার বোধশক্তি থাকে, এটা শুনুন; আমার কথা শুনুন।
“আপনার যদি বোধশক্তি থাকে, তবে শুনুন; আমি যা বলছি তাতে কর্ণপাত করুন।
17 ১৭ যে ন্যায়বিচার ঘৃণা করে সেকি শাসন করতে পারে? আপনি কি ঈশ্বরকে দোষী করবেন, যিনি ধার্মিক এবং পরাক্রমী?
যে ন্যায়বিচার ঘৃণা করে সে কি শাসন করবে? আপনি কি ন্যায়পরায়ণ ও পরাক্রমী ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করবেন?
18 ১৮ ঈশ্বর, যিনি একজন রাজাকে বলেছেন, ‘তুমি নীচ,’ অথবা একজন অভিজাত ব্যক্তিকে বলেছেন, ‘তুমি পাপী?’
তিনিই কি সেই ব্যক্তি নন, যিনি রাজাদের বলেন, ‘তোমরা অপদার্থ,’ ও অভিজাত লোকজনকে বলেন, ‘তোমরা দুষ্ট,’
19 ১৯ ঈশ্বর, যিনি নেতাদের প্রতি কখনও পক্ষপতিত্ব দেখান নি এবং গরিবদের থেকে ধনীদের বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন নি, কারণ তারা সবাই তাঁর হাতের তৈরী।
যিনি রাজপুরুষদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখান না এবং দরিদ্রদের তুলনায় ধনীদের বেশি প্রশ্রয় দেন না, কারণ তারা সবাই তাঁরই হাতের কর্ম?
20 ২০ তারা হঠাৎ মারা যাবে; মাঝরাতে লোকেরা কেঁপে উঠবে এবং মারা যাবে; পরাক্রমীরা মারা যাবে, কিন্তু মানুষের হাতের দ্বারা নয়।
এক পলকে, মাঝরাতেই তাদের মৃত্যু হয়; মানুষজন প্রকম্পিত হয় ও তারা মারা যায়; পরাক্রমীরা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই অপসারিত হয়।
21 ২১ কারণ মানুষের চলার পথে ঈশ্বরের চোখ আছে; তিনি তার সমস্ত পায়ের চিহ্ন দেখেন।
“নশ্বর মানুষের পথের প্রতি তাঁর দৃষ্টি আছে; তিনি তাদের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন।
22 ২২ সেখানে কোন অন্ধকার নেই, কোন ঘন আঁধার নেই যেখানে অপরাধীরা নিজেদের লোকাতে পারে।
এমন কোনও গভীর অন্ধকার, গাঢ় ছায়া নেই, যেখানে দুর্বৃত্তেরা গিয়ে লুকাতে পারে।
23 ২৩ কারণ একজন ব্যক্তিকে বার বার পরীক্ষা করার ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই; বিচারে তাঁর সামনে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
ঈশ্বরকে আর মানুষের পরীক্ষা করতে হবে না, যেন বিচারিত হওয়ার জন্য তাদের তাঁর সামনে আসতে হয়।
24 ২৪ তিনি পরাক্রমীদের টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গেছেন তাদের পথের জন্য যার আর কোন তদন্ত করার প্রয়োজন নেই; তিনি অন্যদের তাদের জায়গায় রেখেছেন।
বিনা তদন্তে তিনি পরাক্রমীদের চূর্ণবিচূর্ণ করেন ও তাদের স্থানে তিনি অন্যদের নিযুক্ত করেন।
25 ২৫ এই ভাবে তিনি তাদের কাজের বিষয়ে জানেন; রাতে তিনি এই লোকেদের ফেলে দেন; তাতে তারা ধ্বংস হয়।
কারণ তিনি তাদের কাজকর্ম লক্ষ্য করেন, রাতারাতি তিনি তাদের উৎখাত করেন ও তারা চূর্ণ হয়।
26 ২৬ অন্যদের চোখের সামনে, তাদের পাপ কাজের জন্য তিনি তাদের অপরাধীদের মত মেরে ফেলেন
তাদের দুষ্টতার জন্য তিনি এমন এক স্থানে তাদের দণ্ড দেন যেখানে সবাই তাদের দেখতে পায়,
27 ২৭ কারণ তারা তাঁর পথে অনুসরণ করা ছেড়ে দিয়েছিল এবং তাঁর পথে চলতে অস্বীকার করেছিল।
কারণ তারা তাঁর অনুগমন করা থেকে ফিরে গিয়েছে ও তাঁর কোনো পথের প্রতি তাদের মনে কোনো কদর নেই।
28 ২৮ এই ভাবে, তারা গরিবদের কান্না তাঁর কাছে আনল; তিনি পীড়িতদের কান্না শুনলেন।
তাদের কারণে দরিদ্রদের আর্তনাদ তাঁর কাছে পৌঁছেছে, ও অভাবগ্রস্তদের কান্না তিনি শুনে ফেলেছেন।
29 ২৯ যখন তিনি নীরব থাকেন, কে তাঁকে দোষ দিতে পারে? যদি তিনি তাঁর মুখ লোকান, যে তাঁকে দেখতে পাবে? তিনি একই ভাবে দেশ এবং ব্যক্তির শাসন করেন,
কিন্তু তিনি যদি নীরব থাকেন, কে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করবে? তিনি যদি তাঁর মুখ ঢেকে রাখেন, কে তাঁকে দেখতে পাবে? তবুও তিনি ব্যক্তিবিশেষ ও জাতি উভয়ের উপরেই বিরাজমান,
30 ৩০ যাতে একজন অধার্ম্মিক লোক শাসন করতে না পারে, যাতে কোন কেউ লোকেদের ফাঁদে ফেলতে না পারে।
যেন অধার্মিকেরা শাসন করতে না পারে, ও প্রজাদের জন্য ফাঁদ বিছাতে না পারে।
31 ৩১ ধর কেউ যদি ঈশ্বরকে বলে, ‘আমি অবশ্যই দোষী, কিন্তু আমি আর পাপ করব না;
“ধরুন কেউ ঈশ্বরকে বলছে, ‘আমি দোষী কিন্তু আমি আর অপরাধ করব না।
32 ৩২ যা আমি দেখতে পাই না, তা আমায় শেখাও; আমি পাপ করেছি, কিন্তু আমি আর করব না।’
আমি যা দেখতে পাই না তা আমাকে শিক্ষা দাও; আমি যদি অন্যায় করে থাকি, তবে আমি আর তা করব না।’
33 ৩৩ আপনি কি মনে করেন যে ঈশ্বর ঐ ব্যক্তির পাপের শাস্তি দেবেন, যেহেতু আপনি ঈশ্বরের কাজ অপছন্দ করেন? আমি না, আপনাকে অবশ্যই নির্বাচন করতে হবে। সুতরাং আপনি যা জানেন বলুন।
যখন আপনি অনুতাপ করতে রাজি হচ্ছেন না তখন ঈশ্বর কি আপনার শর্তে আপনাকে পুরস্কৃত করবেন? আমাকে নয়, আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে; তাই বলুন আপনি কী জানেন।
34 ৩৪ বুদ্ধিমান লোকেরা আমায় বলবেন সত্যি, প্রত্যেক জ্ঞানী লোক যারা আমার কথা শুনবে তারা বলবে,
“বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা ঘোষণা করবেন, যারা আমার কথা শুনেছেন সেই জ্ঞানবানেরা আমায় বলবেন,
35 ৩৫ ‘ইয়োব জ্ঞানহীনের মত কথা বলছে; তার কথা গুলো জ্ঞানহীন।’
‘ইয়োব অজ্ঞের মতো কথা বলছেন; তাঁর কথায় অন্তর্দৃষ্টির অভাব আছে।’
36 ৩৬ আহা, ইয়োবকে যদি শেষ পর্যন্ত পরীক্ষিত হয় ভাল কারণ তার কথ পাপী মানুষদের মত।
ওহো, একজন দুষ্টলোকের মতো উত্তর দেওয়ার জন্য যদি ইয়োবের চরম পরীক্ষা নেওয়া যেত!
37 ৩৭ কারণ তিনি তার পাপের সঙ্গে বিদ্রোহ যোগ করেন; তিনি উপহাসে আমাদের মধ্যে হাততালি দেন; তিনি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেন।”
তাঁর পাপে তিনি বিদ্রোহও যোগ করেছেন; ঘৃণাপূর্ণভাবে তিনি আমাদের মধ্যে হাততালি দিয়েছেন ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন।”

< ইয়োবের বিবরণ 34 >