< ইয়োবের বিবরণ 16 >
1 ১ তারপর ইয়োব উত্তর দিলেন এবং বললেন,
পরে ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 ২ “আমি এরকম অনেক শুনেছি; তোমরা সবাই দুঃখদায়ক সান্ত্বনাকারী।
“আমি এই ধরনের অনেক কথা শুনেছি; তোমরা শোচনীয় সান্ত্বনাকারী, তোমরা সবাই!
3 ৩ অর্থহীন কথার কি কোন শেষ আছে? তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা এরকম উত্তর দিচ্ছ?
তোমাদের এইসব দীর্ঘ এলোমেলো বক্তৃতা কি কখনও শেষ হবে না? তোমাদের কী এমন কষ্ট যে তোমরা তর্ক করেই যাচ্ছ?
4 ৪ আমিও তোমাদের মত কথা বলতে পারি যেমন তোমরা কর; যদি তোমাদের প্রাণ আমার প্রাণের জায়গায় থাকত, তাহলে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে কথা সংগ্রহ করতে এবং জুড়তে পারতাম এবং উপহাস করে তোমাদের কাছে আমার মাথা নাড়তাম।
আমিও তোমাদের মতো কথা বলতে পারতাম, যদি তোমরা আমার জায়গায় থাকতে; আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা দিতে পারতাম ও তোমাদের দেখে মাথা নাড়াতে পারতাম।
5 ৫ আহা, আমি আমার মুখের কোথায় কেমন করে তোমাদের উত্সাহিত করব! আমার মুখের সান্ত্বনা কিভাবে তোমাদের দুঃখ হালকা করবে!
কিন্তু আমার মুখ তোমাদের উৎসাহ দেবে; আমার ঠোঁট থেকে সান্ত্বনা বের হয়ে তোমাদের যন্ত্রণার উপশম করবে।
6 ৬ যদি আমি কথা বলি, আমার কষ্ট কমবে না; যদি আমি কথা বলা বন্ধ রাখি, আমার কি উপকার হয়?
“তবুও আমি যদি কথা বলি, আমার ব্যথার উপশম হয় না; ও আমি যদি নীরব থাকি, তাও তা যায় না।
7 ৭ কিন্তু এখন, ঈশ্বর, তুমি আমায় ক্লান্ত করেছ; তুমি আমার সমস্ত পরিবারকে ধ্বংস করেছ।
হে ঈশ্বর, নিশ্চয় তুমি আমাকে নিঃশেষিত করে দিয়েছ; তুমি আমার সমগ্র পরিবারকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছ।
8 ৮ তুমি আমায় বেঁধেছ, যা নিজেই আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে; আমার শরীরের দুর্বলতা আমার বিরুদ্ধে উঠেছে এবং এটা আমার মুখের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
তুমি আমাকে কুঁকড়ে দিয়েছ—ও তা এক সাক্ষী হয়েছে; আমার শীর্ণতা উঠে দাঁড়িয়ে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
9 ৯ ঈশ্বর তাঁর ক্রোধে আমায় ছিন্ন ভিন্ন করেছেন এবং আমাকে নির্যাতন করেছেন; তিনি আমার বিরুদ্ধে দাঁত ঘর্ষণ করেছেন; আমার শত্রু তার তীক্ষ্ন চোখ আমার ওপর রেখেছে যেন সে আমায় ছিঁড়ে ফেলবে।
ঈশ্বর আমাকে আক্রমণ করে তাঁর ক্রোধে আমাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন ও আমার প্রতি দাঁত কড়মড় করেছেন; আমার প্রতিপক্ষ তাঁর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে আমাকে আক্রমণ করেছেন।
10 ১০ লোকেরা আমার বিরুদ্ধে মুখ খুলে হ্যাঁ করে; তারা আমার গালে থাপ্পড় মেরেছে নিন্দাপূর্ণ ভাবে; তারা আমার বিরুদ্ধে একসঙ্গে জোড় হয়েছে।
আমাকে বিদ্রুপ করার জন্য লোকেরা তাদের মুখ খুলেছে; অবজ্ঞাভরে তারা আমার গালে চড় মেরেছে ও আমার বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে।
11 ১১ ঈশ্বর আমায় অধার্মিকদের হাতে দেন এবং পাপীদের হাতে আমায় ফেলে দেন।
ঈশ্বর আমাকে অধার্মিক লোকদের হাতে সমর্পণ করেছেন ও দুর্জনদের খপ্পরে ছুঁড়ে দিয়েছেন।
12 ১২ আমি শান্তিতে ছিলাম এবং তিনি আমায় ভেঙে ফেললেন। সত্যি, তিনি আমায় ঘাড় ধরে নিয়ে গেছেন এবং আমায় ছুঁড়ে ফেলে টুকরো টুকরো করেছেন; তিনি আবার আমায় তাঁর লক্ষ হিসাবে রেখেছেন।
আমার সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু তিনি আমাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন; তিনি আমার ঘাড় ধরে আমাকে আছাড় মেরেছেন। তিনি আমাকে তাঁর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন;
13 ১৩ তাঁর ধনুকধারীরা আমায় ঘিরে রেখেছে; ঈশ্বর আমার যকৃত ভেদ করেছেন এবং আমায় দয়া করেন নি; তিনি মাটিতে আমার পিত্ত ঢালেন।
তাঁর তিরন্দাজরা আমাকে ঘিরে ধরেছে। দয়া না দেখিয়ে, তিনি আমার কিডনি বিদ্ধ করেছেন ও আমার পিত্ত মাটিতে ফেলে দিয়েছেন।
14 ১৪ তিনি আমার দেওয়াল বার বার ভেঙ্গেছেন; তিনি যোদ্ধার মত আমার দিকে দৌড়ে আসেন।
বারবার তিনি আমার উপরে ফেটে পড়েছেন; একজন যোদ্ধার মতো তিনি আমার দিকে ধেয়ে এসেছেন।
15 ১৫ আমি আমার চামড়ার উপরে চট বুনেছি; আমি আমার শিং মাটিতে কলুষিত করেছি।
“আমি আমার চামড়ার উপরে চটের কাপড় বুনে নিয়েছি ও আমার ললাটটি ধুলোতে সমাধিস্থ করেছি।
16 ১৬ আমার মুখ কেঁদে লাল হয়েছে; মৃত্যুছায়া আমার চোখের উপরে আছে
কেঁদে কেঁদে আমার মুখমণ্ডল লাল হয়ে গিয়েছে, আমার চোখের চারপাশে কালি পড়েছে;
17 ১৭ যদিও আমার হাতে কোন হিংস্রতা নেই এবং আমার প্রার্থনা বিশুদ্ধ।
তাও আমার হাতে হিংস্রতা নেই ও আমার প্রার্থনা বিশুদ্ধ।
18 ১৮ পৃথিবী, আমার থেকে অন্যায় কে লুকিয়ো না; আমার কান্না যেন বিশ্রামের জায়গা না পায়।
“হে পৃথিবী, আমার রক্ত ঢেকে রেখো না; আমার কান্না যেন কখনও বিশ্রামে শায়িত না হয়!
19 ১৯ এমনকি এখনো, দেখ, আমার সাক্ষী স্বর্গে আছে; যিনি আমার হয়ে সাক্ষী দেবেন উর্ধে থাকেন।
এখনও আমার সাক্ষী স্বর্গেই আছেন; আমার উকিল ঊর্ধ্বেই আছেন।
20 ২০ আমার বন্ধুরা আমায় উপহাস করে, কিন্তু আমার চোখের জল পড়ে ঈশ্বরের কাছে।
আমার মধ্যস্থতাকারীই আমার বন্ধু হন যখন আমার চোখ ঈশ্বরের কাছে অশ্রুপাত করে;
21 ২১ আমি চাই সেই সাক্ষী যেন এই ব্যক্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে অনুরোধ করে, যেমন একজন মানুষ তার প্রতিবেশীর প্রতি করে!
একজন লোকের হয়ে তিনি ঈশ্বরের কাছে ওকালতি করেন যেভাবে এক বন্ধুর জন্য একজন ওকালতি করে।
22 ২২ কারণ যখন কিছু বছর পার হয়, আমি একটা জায়গায় যাব যেখান থেকে আমি আর ফিরব না।”
“যে পথে গিয়ে আর ফিরে আসা যায় না, আমি সেই পথটি ধরার আগে শুধু কয়েকটি বছর পার হয়ে যাবে।