< ইয়োবের বিবরণ 10 >

1 আমার প্রাণ জীবনে ক্লান্ত হয়েছে; আমি স্বাধীনভাবে আমার অভিযোগ প্রকাশ করব; আমি আমার প্রাণের তিক্ততায় কথা বলব।
“আমি আমার এই জীবনকে ঘৃণা করি; তাই আমি আমার অভিযোগকে লাগামছাড়া হতে দেব ও আমার প্রাণের তিক্ততায় কথা বলব।
2 আমি ঈশ্বরকে বলব, আমায় নিছক দোষী করবেন না; আমাকে দেখাও কেন তুমি আমায় দোষী করেছ।
আমি ঈশ্বরকে বলব: আমাকে দোষী সাব্যস্ত কোরো না, কিন্তু আমাকে বলে দাও আমার বিরুদ্ধে তোমার কী অভিযোগ আছে।
3 এটা কি তোমার জন্য ভালো যে তুমি আমায় উপদ্রব করবে, তোমার হাতের কাজ কি তুচ্ছ করবে যখন তুমি পাপীদের পরিকল্পনায় হাঁসবে?
আমার উপরে জুলুম চালাতে, তোমার হাতের কাজকে পদদলিত করতে কি তোমার আনন্দ হয়, যদিও দুষ্টদের পরিকল্পনা দেখে তোমার হাসি পায়?
4 তোমার কি মাংসের চোখ? তুমি কি মানুষের মত দেখ?
তোমার কি মানুষের মতো চোখ আছে? তুমি কি নশ্বর মানুষের মতো দেখতে পাও?
5 তোমার দিন গুলো কি মানুষের দিনের মত অথবা তোমার বছরগুলো কি লোকেদের বছরের মত,
তোমার আয়ু কি নশ্বর মানুষের মতো বা তোমার জীবনকাল কি বলশালী এক মানুষের মতো
6 যে তুমি আমার অপরাধের অনুসন্ধান করছ এবং আমার পাপ খুঁজছ,
যে তোমাকে আমার দোষ খুঁজে বেড়াতে হবে ও আমার পাপ প্রমাণ করতে হবে—
7 যদিও তুমি জানো আমি দোষী নই এবং কেউ কি নেই যে আমাকে তোমার হাত থেকে উদ্ধার করে?
যদিও তুমি জানো যে আমি দোষী নই ও কেউই তোমার হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করতে পারবে না?
8 তোমার হাত আমায় গড়েছে এবং আমায় সারা দেহে গড়েছে করেছে, তবুও তুমি আমায় ধ্বংস করছ।
“তোমার হাত আমাকে গড়ে তুলেছে ও আমাকে নির্মাণ করেছে। এখন কি তুমি ঘুরে দাঁড়িয়ে আমাকে ধ্বংস করবে?
9 স্মরণ কর, আমি বিনয় করি, যে তুমি আমায় মাটির পাত্রের মত গড়েছ; তুমি কি আবার আমায় ধূলোয় ফেরাবে?
মনে রেখো যে তুমি মাটির মতো করে আমাকে গড়ে তুলেছ। এখন কি তুমি আবার আমাকে মাটিতে মিশিয়ে দেবে?
10 ১০ তুমি কি আমায় দুধের মত ঢালোনি এবং ছানার মত কি ঘন কর নি?
তুমি কি আমাকে দুধের মতো ঢেলে দাওনি ও পনিরের মতো আমাকে ঘন করোনি,
11 ১১ তুমি আমায় চামড়া এবং মাংস দিয়ে ঢেকেছ এবং হার ও শিরা দিয়ে আমায় বুনেছো।
চর্ম-মাংস দিয়ে আমাকে আচ্ছাদিত করোনি এবং অস্থি ও মাংসপেশী দিয়ে আমাকে একসঙ্গে সংযুক্ত করোনি?
12 ১২ তুমি আমায় জীবন দিয়েছ এবং চুক্তির বিশ্বস্ততা দিয়েছ; তোমার সাহায্য আমার আত্মাকে পাহারা দিয়েছে।
তুমি আমাকে জীবন দিয়েছ ও আমার প্রতি দয়া দেখিয়েছ, ও তোমার দূরদর্শিতায় আমার আত্মাকে পাহারা দিয়েছ।
13 ১৩ তবুও এইসব জিনিস তুমি তোমার হৃদয়ে লুকিয়ে রেখেছ, আমি জানি যে এটাই তুমি ভাবছিলে,
“কিন্তু তোমার অন্তরে তুমি এসব গুপ্ত রেখেছিলে, ও আমি জানি যে তোমার মনে এই ছিল:
14 ১৪ যদি আমি পাপ করে থাকি, তুমি তা লক্ষ করবে; তুমি আমার অপরাধ ক্ষমা করবে না।
আমি যদি পাপ করি, তবে তুমি আমার প্রতি লক্ষ্য রাখবে ও আমার অপরাধ ক্ষমা করবে না।
15 ১৫ যদি আমি পাপী হই, আমায় অভিশাপ দাও; এমনকি যদি আমি ধার্মিক হই, আমি আমার মাথা তুলতে পারব না, কারণ আমি অপমানে পূর্ণ হয়েছি এবং আমি আমার নিজের দুঃখ দেখছি।
আমি যদি দোষী—তবে আমার প্রতি হায়! আমি যদি নির্দোষও হয়ে থাকি, তাও আমি মাথা তুলতে পারব না, যেহেতু আমি লজ্জায় পরিপূর্ণ ও আমার দুঃখদুর্দশায় ডুবে আছি।
16 ১৬ যদি আমার মাথা নিজেই ওঠে, তুমি আমায় সিংহের মত শিকার করবে; আরও একবার তুমি নিজেকে দেখাবে আমার থেকে শক্তিশালী।
আমি যদি আমার মাথা তুলি, তবে তুমি এক সিংহের মতো চুপিসাড়ে আমাকে অনুসরণ করবে ও আবার আমার বিরুদ্ধে তোমার অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করবে।
17 ১৭ তুমি আমার বিরুদ্ধে নতুন সাক্ষী নিয়ে আসবে এবং তোমার রাগ আমার বিরুদ্ধে বাড়াবে; তুমি আমায় নতুন সৈন্য নিয়ে আক্রমণ করবে।
তুমি আমার বিরুদ্ধে নতুন নতুন সাক্ষী এনেছ ও আমার প্রতি তোমার ক্রোধ বৃদ্ধি পেয়েছে; তোমার সৈন্যবাহিনী আমার বিরুদ্ধে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়েছে।
18 ১৮ কেন, তাহলে, তুমি আমায় মায়ের পেট থেকে বার করে আনলে? কোন চোখ দেখার আগেই যদি আমি মারা যেতাম তবে ভালো হত।
“তুমি কেন তবে আমাকে গর্ভ থেকে বের করে আনলে? কোনও চোখ আমাকে দেখার আগে আমার মৃত্যু হলেই ভালো হত।
19 ১৯ যদি আমার অস্তিত্বই না থাকত; যদি আমার মায়ের পেট থেকে কবরে নিয়ে যাওয়া হত।
আমি অজাত অবস্থায় থাকলেই ভালো হত, বা গর্ভ থেকে সোজা কবরে চলে যেতে পারলেই ভালো হত!
20 ২০ আমার দিন কি খুব অল্প নয়? তাহলে থামো, আমাকে একা থাকতে দাও, তাহলে আমি কিছুটা বিশ্রাম পাব,
আমার জীবনের অল্প কয়েকটি দিন কি প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে না? আমার কাছ থেকে সরে যাও যেন সেই স্থানে যাওয়ার আগে, আমি এক মুহূর্তের আনন্দ উপভোগ করতে পারি
21 ২১ যেখান থেকে আমি আর ফিরব না সেখানে আমি যাওয়ার আগে, সেই অন্ধকার দেশে এবং সেই মৃত্যুছায়ার দেশে,
যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না, বিষাদ ও নিরেট অন্ধকারের সেই দেশ,
22 ২২ সেই দেশ যা মাঝরাতের অন্ধকারের মত অন্ধকার, সেই দেশ মৃত্যুছায়ার দেশ, সেখানকার আলো মাঝরাতের অন্ধকারের মত।
গভীর রাতের সেই দেশ, নিরেট অন্ধকারের ও বিশৃঙ্খলার সেই দেশ, যেখানে আলোও অন্ধকারের সমান।”

< ইয়োবের বিবরণ 10 >