< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 1 >
1 ১ আমি ত্রিশ বছরের ছিলাম তখন চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিনে, যখন আমি কবার নদীর ধারে বন্দিদের মধ্যে বাস করছিলাম, তখন স্বর্গ খুলে গেল, আর আমি ঈশ্বরের দর্শন পেলাম।
ত্রিশতম বছরের চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিনে আমি যখন কবার নদীর ধারে বন্দিদের মধ্যে ছিলাম তখন আকাশ খুলে গেল আর আমি ঈশ্বরের দর্শন পেলাম।
2 ২ ঐ মাসের পঞ্চম দিনের এটা ছিল রাজা যিহোয়াখীনের বন্দিত্বের পঞ্চম বছর,
সেই মাসের পঞ্চম দিনে, সেটি রাজা যিহোয়াখীনের নির্বাসনের পঞ্চম বছর ছিল,
3 ৩ সদাপ্রভুর বাক্য শক্তিতে কলদীয়দের দেশে কবার নদীর ধারে বুষির ছেলে যিহিস্কেল যাজকের কাছে এল এবং সেখানে সদাপ্রভু তাঁর উপরে হাত রাখলেন।
ব্যাবিলনীয়দের দেশে কবার নদীর ধারে বুষির ছেলে যাজক যিহিষ্কেলের কাছে সদাপ্রভুর বাক্য উপস্থিত হল। সেখানে সদাপ্রভুর হাত তাঁর উপর ছিল।
4 ৪ তারপর আমি দেখলাম, সেখানে উত্তরদিক থেকে ঘূর্ণি বায়ু এল, একটা বড় মেঘ তার সঙ্গে আগুনের ঝলকানি ছিল এবং তার চারদিকে ও ভেতরে উজ্জ্বলতা ছিল মেঘের মধ্যে হলদেটে আগুন ছিল।
আমি তাকিয়ে দেখলাম উত্তর দিক থেকে ঝড় আসছে—একটি বিরাট মেঘের সঙ্গে বিদ্যুৎ আর উজ্জ্বল আলো। আগুনের মাঝখানে উজ্জ্বল ধাতুর মতো কিছু ঝকমক করছিল,
5 ৫ আর তার মধ্য থেকে চারটে জীবন্ত প্রাণীর মূর্ত্তি দেখা গেল। তাদের চেহারা মানুষের মত দেখতে ছিল,
আর আগুনে মধ্যে চারটি জীবন্ত প্রাণীর মতো কিছু দেখা গেল। তাদের চেহারা দেখতে ছিল মানুষের মতো
6 ৬ কিন্তু তাদের প্রত্যেকের চারটে করে মুখ ও প্রত্যেকের চারটে করে ডানা ছিল।
কিন্তু তাদের প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল।
7 ৭ তাদের পা ছিল সোজা, পায়ের পাতা বাছুরের খুরের মত ছিল, পিতলের মত চকচক করছিল।
তাদের পা সোজা; তাদের পায়ের পাতা বাছুরের খুরের মতো; আর সেগুলি পালিশ করা ব্রোঞ্জের মতো চকচক করছিল।
8 ৮ তবুও তাদের ডানার নিচে চার পাশে মানুষের হাত ছিল, তাদের চারজনের প্রত্যেকেরই, একই রকম মুখ ও ডানা ছিল
তাদের চারপাশের ডানার নিচে মানুষের মতো হাত ছিল। তাদের প্রত্যেকের মুখ ও ডানা ছিল,
9 ৯ তাদের ডানা অন্য প্রাণীর সঙ্গে স্পর্শ ছিল, তাদের যাওয়ার দিন তারা ফিরে তাকাতো না; তারা সামনে সোজা চলে যেতো।
এবং তাদের ডানাগুলি একটির সঙ্গে অন্যটি ছুঁয়েছিল। তারা প্রত্যেকে সোজা এগিয়ে যেতেন; যাবার সময় ফিরতেন না।
10 ১০ তাদের মুখের আকার মানুষের মুখের মত ছিল; আর ডান দিকে চারটে সিংহের মুখ ছিল, আর বাদিকে চারটে গরুর মুখ ছিল, অবশেষে ঈগল পাখির মুখ ছিল।
তাদের মুখগুলি এইরকম দেখতে ছিল: চারজনের প্রত্যেকের একটি করে মানুষের মুখ ছিল এবং প্রত্যেকের ডানদিকের মুখ সিংহের ও বাঁদিকের ষাঁড়ের; প্রত্যেকের আবার একটি করে ঈগলের মুখও ছিল।
11 ১১ তাদের মুখগুলো যেমন ছিল ও ডানাগুলো ওপর দিকে ছড়ানো, যাতে প্রত্যেকের এক জোড়া ডানা অন্য প্রাণীর ডানাকে স্পর্শ করে এবং ডানাগুলো তাদের শরীর ঢেকে রেখেছিল।
তাদের মুখগুলি এরকম ছিল। তাদের ডানাগুলি উপরদিকে মেলে দেওয়া ছিল; প্রত্যেকের দুই ডানা তাঁর দুই পাশের প্রাণীর দেহ ছুঁয়েছিল, আর দুই ডানা দিয়ে সেই দেহ ঢাকা ছিল।
12 ১২ তারা প্রত্যেকে সামনের দিকে সোজা যেত; যে দিকে যেতে আত্মা তাদের নির্দেশ দিতেন সেই দিকে পিছনে না ফিরে তারা যেত।
তারা প্রত্যেকে সামনের দিকে যেতেন। আত্মা যেদিকে যেতেন তারাও না ঘুরে সেদিকে যেতেন।
13 ১৩ জীবন্ত প্রাণীগুলো দেখতে আগুনের জলন্ত কয়লার মত বা মশালের মত; সেই আগুন ঐ প্রাণীদের মধ্যে চলাফেরা করত ও সেই আগুন থেকে বিদ্যুৎ চমকাত।
এই জীবন্ত প্রাণীদের মধ্যে জ্বলন্ত কয়লা কিংবা মশালের মতো আগুন জ্বলছিল এবং তা সেই প্রাণীদের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছিল; সেই আগুন উজ্জ্বল এবং তার মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ বেরিয়ে আসছিল।
14 ১৪ জীবন্ত প্রাণীরা খুব তাড়াতাড়ি যাওয়া আসা করত, তাদের দেখতে বিদ্যুতের মত।
প্রাণীগুলি বিদ্যুৎ চমকাবার মতো যাতায়াত করছিলেন।
15 ১৫ তারপর আমি জীবন্ত প্রাণীদেরকে দেখলাম; জীবন্ত প্রাণীদের পাশে মাটির ওপর একটা চাকা ছিল।
আমি যখন ওই জীবন্ত প্রাণীগুলির দিকে তাকালাম তখন দেখলাম প্রত্যেক প্রাণী যাদের চারটে করে মুখ ছিল তাদের পাশে মাটিতে একটি করে চাকা পড়ে আছে।
16 ১৬ চাকাগুলোর রূপ এবং গঠনপ্রণালী ছিল এইরকম: প্রত্যেক চাকা পান্নার মত, চারটে একই রকম ছিল এবং তাদের দেখতে একটা চাকার সঙ্গে বিভক্ত অন্য চাকার মতো।
সেই চাকাগুলির আকার ও গঠন এইরকম সেগুলি বৈদূর্যমণির মতো ঝকমক করছিল এবং চারটে চাকাই এক রকম দেখতে ছিল। একটি চাকার ভিতরে যেন আর একটি চাকা এইভাবে প্রত্যেকটি চাকা তৈরি ছিল।
17 ১৭ যখন চাকা ঘুরত, তখন চার দিকের যে কোনো এক দিকে তারা যেত, গমনকালে ফিরত না।
চাকাগুলি চারিদিকের একদিকে চলত যেদিকে প্রাণীগুলির মুখ থাকত; প্রাণীগুলি চলবার সময় চাকাগুলি দিক পরিবর্তন করত না।
18 ১৮ চাকার বেড়ি অনুযায়ী সেগুলো উঁচু এবং ভয়ঙ্কর ছিল, কারণ সেগুলোর চারিদিকে চোখে ভর্তি ছিল।
সেগুলির বেড় ছিল উঁচু ও ভয়ংকর এবং চারটে বেড়ের চারিদিকে চোখে ভরা ছিল।
19 ১৯ যখনই জীবন্ত প্রাণীগুলো যেতো তাদের পাশে ঐ চাকাগুলোও যেতো; যখন জীবন্ত প্রাণীগুলো ভূমি থেকে উঠত, চাকাগুলো ও উঠত।
জীবন্ত প্রাণীগুলি যখন চলত তাদের পাশের চাকাগুলিও চলত; আর যখন জীবন্ত প্রাণীগুলি মাটি থেকে উঠত, চাকাগুলিও উঠত।
20 ২০ যে কোন জায়গায় আত্মা যেত, তারাও সেখানে যেত, যেখানে আত্মা যেতো, চাকাগুলোও তাদের পাশে উঠত, কারণ সেই জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা ঐ চাকাগুলোর মধ্যে থাকতো।
আত্মা যখন যেদিকে যেতেন, তারাও সেদিকে যেত, এবং চাকাগুলি তাদের সঙ্গে উঠত, কারণ জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা সেই চাকার মধ্যে ছিল।
21 ২১ যখন প্রাণীরা চলত, তখন চাকাগুলোও চলত এবং যখন সেই প্রাণীরা দাঁড়িয়ে পড়ত, চাকাগুলোও দাঁড়িয়ে পড়ত; যখন প্রাণীরা ভূমি থেকে উঠত, চাকাগুলোও তাদের পাশে উঠত, কারণ সেই জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা ঐ চাকার মধ্যে ছিল।
প্রাণীরা যখন চলতেন চাকাগুলিও চলত; প্রাণীগুলি স্থির হয়ে দাঁড়ালে চাকাগুলিও স্থির হয়ে দাঁড়াত, আর যখন প্রাণীরা মাটি থেকে উঠতেন, চাকাগুলি তাদের সঙ্গে উঠত, কারণ জীবন্ত প্রাণীদের আত্মা সেই চাকার মধ্যে ছিল।
22 ২২ আর সেই প্রাণীর মস্তকের উপরে এক বিস্তারিত গম্বুজ ছিল, এটা ভয়ঙ্কর ফটিকের আভার মত তাদের মাথার ওপরে ছড়িয়ে ছিল।
সেই জীবন্ত প্রাণীদের মাথার উপরে উন্মুক্ত এলাকার মতো কিছু একটি বিছানো ছিল, সেটি স্ফটিকের মতো ঝকমক করছিল এবং ভয়ংকর ছিল।
23 ২৩ সেই গম্বুজের নিচে, প্রত্যেক প্রাণীর ডানা সোজা ছড়িয়ে ছিল এবং অন্য প্রাণীর ডানার সঙ্গে লেগে ছিল। প্রত্যেক জীবন্ত প্রাণীর এক জোড়া ডানা তাদের ঢেকে রাখত, প্রত্যেকের এক জোড়া ডানা তাদের শরীর ঢেকে রাখত।
সেই খিলানের নিচে তাদের ডানাগুলি ছড়ানো ছিল এবং একজনের ডানা অন্যজনের ছুঁয়েছিল, আর প্রত্যেকের দেহ দুই ডানা দিয়ে ঢাকা ছিল।
24 ২৪ তারপর আমি তাদের ডানার শব্দ শুনলাম, যেন খুব জোরে বয়ে যাওয়া জলের শব্দের মত, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আওয়াজের মত। যখনই তারা যেত ঝড়বৃষ্টির মত শব্দ হত। এটা ছিল সৈন্যদের আওয়াজের মত। যখনই তারা দাঁড়িয়ে থাকত তারা তাদের ডানা নীচু করে রাখত।
প্রাণীগুলি চললে আমি তাদের ডানার শব্দ শুনতে পেলাম, যেন জলস্রোতের শব্দের মতো, যেন সর্বশক্তিমানের গলার স্বরের মতো, যেন সৈন্যবাহিনীর শোরগোলের মতো। তারা স্থির হয়ে দাঁড়ালে তাদের ডানা নামিয়ে নিতেন।
25 ২৫ তাদের মাথার ওপরের গম্বুজ থেকে একটা আওয়াজ আসত যখনই তারা স্থির হয়ে দাঁড়াত এবং তাদের ডানা নীচু করত।
তারা যখন ডানা নামিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তখন তাদের মাথার উপরকার সেই উন্মুক্ত এলাকার উপর থেকে একটি গলার স্বর শোনা গেল।
26 ২৬ তাদের মাথার ওপরে গম্বুজে একটা সিংহাসন ছিল যেটা দেখতে নীলকান্তমনির মত এবং সিংহাসনের ওপরে এক জনকে দেখা যেত যাকে একটা মানুষের মত দেখতে ছিল।
তাদের মাথার উপরকার সেই উন্মুক্ত এলাকার উপরে নীলকান্তমণির সিংহাসনের মতো কিছু একটি ছিল এবং তার উপরে মানুষের আকারের একজনকে দেখা গেল।
27 ২৭ আমি একটা আকার দেখলাম তাঁর কোমরের উপর থেকে চকচকে ধাতুর মত আগুনের আভা দেখলাম; তার কোমর থেকে নিচের দিকে এটা আগুনের মত এবং উজ্জ্বলতা তার চারদিকে ছিল
আমি দেখলাম কোমর থেকে উপর পর্যন্ত তিনি দেখতে ছিলেন উজ্জ্বল ধাতুর মতো, যেন সেটি আগুনে পূর্ণ, আর কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত তাঁকে আগুনের মতো দেখতে লাগছিল; তাঁর চারপাশে ছিল উজ্জ্বল আলো।
28 ২৮ এটা দেখতে ধনুকের মত যা বৃষ্টির দিনের মেঘের মধ্যে দেখা যায় যেন চারদিকে উজ্জ্বল আলো সদাপ্রভুর মহিমার মত সামনে এল। যখনই আমি তা দেখলাম আমি আমার মুখে অনুভব করলাম এবং এক জনের কথা বলার আওয়াজ শুনতে পেলাম।
বৃষ্টির দিনে মেঘের মধ্যে মেঘধনুকের মতোই তাঁর চারপাশে সেই আলো দেখা যাচ্ছিল। যা দেখা গেল তা ছিল সদাপ্রভুর মহিমার মতো। আমি যখন তা দেখলাম, আমি মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লাম, এবং আমি একজনের রব শুনতে পেলাম।