< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 24 >
1 ১ বাবিলে আমাদের বন্দিত্বের সময়ে আবার নবম বৎসরের দশম মাসে, মাসের দশম দিনের সদাপ্রভুর এ বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
নবম বছরের দশম মাসের দশম দিনে, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
2 ২ “মানুষের সন্তান তুমি নিজে এই দিনের র নাম এই সঠিক দিনের র নাম লিখে রাখ, আজকের এইদিনের বাবিল-রাজ যিরূশালেমের ঘেরাও হল
“হে মানবসন্তান, তুমি আজকের, আজকেরই তারিখ লিখে রাখো, কারণ আজকেই ব্যাবিলনের রাজা জেরুশালেম অবরোধ করবে।
3 ৩ তুমি এই বিদ্রোহী কুলের উদ্দেশ্যে এক প্রবাদ বাক্য বল, তাদেরকে নীতিগল্প বল এবং তাদেরকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, চড়াও হাঁড়ী চড়াও, তার মধ্যে জল দাও।
এই বিদ্রোহী জাতির কাছে একটি দৃষ্টান্তের কথা বলো: ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “‘হাঁড়ি চড়াও, হাঁড়ি চড়াও এবং তার মধ্যে জল দাও।
4 ৪ তার ভেতর খাবারের টুকরো রাখ, প্রত্যেক ভালো টুকরো, উরু ও কাঁধ রাখ, ভর্তি কর সবচেয়ে ভালো হাড় দিয়ে।
তার মধ্যে মাংসের টুকরো দাও, প্রত্যেকটা ভালো টুকরো—ঊরু এবং কাঁধের। ভালো ভালো হাড় দিয়ে তা ভর্তি করো;
5 ৫ পালের মধ্যে থেকে সবচেয়ে ভালো মেষ নাও এবং তার নিচে হাড় দিয়ে গাদা কর, সম্পূর্ণভাবে সেদ্ধ কর।
পাল থেকে সেরা ভেড়াটা নাও। হাড়গুলির জন্য হাঁড়ির নিচে কাঠ সাজাও; তা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে হাড়গুলি তাতে রান্না করো।
6 ৬ অতএব প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, ধিক্ সেই রক্তে পূর্ণ শহরকে, সেই হাঁড়ীকে, যার মধ্যে কলঙ্ক আছে ও যার কলঙ্ক তার ভেতর থেকে বের হবে না। এটা থেকে টুকরো টুকরো করে নাও কিন্তু গণনা করা হয়নি।
“‘কারণ সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “‘ধিক্ সেই রক্তপাতকারী নগরকে, সে যেন একটি হাঁড়ি যাতে ময়লার স্তর পড়ে গেছে, যা পরিষ্কার হবে না! তাদের বিষয় গুটিকাপাত না করে একটি একটি করে মাংস বের করে খালি করো।
7 ৭ কারণ তার রক্ত তার মধ্যে আছে; সে মসৃণ পাথরের ওপরে তা রেখেছে, ধূলো দিয়ে ঢেকে রাখবার জন্য মাটিতে রাখেনি।
“‘কেননা তাদের মধ্যে তার রক্তপাত করা হয়েছে সেই রক্ত পাথরের উপর ঢালা হয়েছে; তা মাটিতে ঢালা হয়নি, যেখানে ধুলোয় তা ঢাকা পড়বে।
8 ৮ রাগ করে প্রতিশোধ নেবার জন্য, আমি তার রক্ত মসৃণ পাথরের ওপরে রেখেছি, যাতে ঢাকা না পড়ে।
ক্রোধ খুঁচিয়ে তুলে যেন প্রতিশোধ নেওয়া হয় সেইজন্য আমি সেই রক্ত পাথরের উপরে রেখেছি যেন সেটি ঢাকা না পড়ে।
9 ৯ তাই প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, ধিক্ সেই রক্তে পূর্ণ শহরকে। আমি কাঠের স্তুপকে বাড়াবো।
“‘অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “‘ধিক্ সেই রক্তপাতকারী নগরকে! আমিও কাঠ জড়ো করে উঁচু করব।
10 ১০ আরো কাঠ নাও, আগুন জ্বালাও, মাংস সম্পূর্ণভাবে রান্না কর ঝোল কর, হাড় ভালো করে পোড়াও।
অনেক কাঠ সাজাও এবং আগুন জ্বালাও। ভালো করে মশলা মিশিয়ে মাংস রান্না করো; এবং হাড়গুলি পুড়তে দাও।
11 ১১ তারপর হাঁড়ী ফাঁকা হলে তা কয়লার ওপরে তা রাখ, যেন তা গরম হলে তার পিতল দগ্ধ হয় এবং তার মধ্যে তার অশুচি গলে যায় ও তার কলঙ্ক শেষ হয়ে যায়।
তারপর খালি হাঁড়ি কয়লার উপরে রাখো যতক্ষণ না সেটি গরম হয় আর তামা পুড়ে লাল হয় যেন তার অশুচিতা সব গলে যায় এবং ময়লার স্তর পুড়ে যায়
12 ১২ সে পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়েছে, কারণ তার কলঙ্ক তার ভেতর থেকে আগুনের দ্বারা বের হয়নি।
সব চেষ্টার কোনও ফল হয়নি; তার ময়লার পুরু স্তর পরিষ্কার করা যায়নি, এমনকি আগুন দিয়েও নয়।
13 ১৩ তোমার লজ্জাজনক ব্যবহার তোমার অশুচি কাজে আছে; আমি তোমাকে শুচি করলেও তুমি শুচি হলে না, এই জন্য তুমি অশুচি থেকে শুচি করা হবে না, যতক্ষণ না আমি আমার রাগ থেকে মুক্ত করবো।
“‘এখন তোমার অশুচিতা হল ব্যভিচার। কারণ আমি তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু তুমি তোমার অশুচিতা থেকে পরিষ্কার হলে না, তুমি আবার পরিষ্কার হবে না যতক্ষণ না আমার ক্রোধ তোমার উপরে ঢেলে আমি শান্ত হব।
14 ১৪ আমি সদাপ্রভু, এটা বললাম হবে, আমি এটা করব, আমি ক্ষান্ত হব না, এর থেকে বিরত হবো না, তোমার যেমন আচরণ এবং তোমার যেমন কাজ, তারা তোমার বিচার করবে।” একথা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
“‘আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম। আমার কাজ করার জন্য সময় এসে গেছে। আমি নিজেকে আটকাব না; মমতা করব না কিংবা নরম হব না। তোমার আচরণ এবং তোমার কাজ অনুসারে তোমার বিচার করা হবে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’”
15 ১৫ তারপর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
16 ১৬ মানুষের সন্তান, দেখ, আমি তোমার চোখের ইচ্ছা তোমার থেকে নিয়ে নেব মহামারীর সঙ্গে কিন্তু তুমি শোক করবেনা কি কাঁদবে না এবং তোমার চোখের জল পড়বে না।
“হে মানবসন্তান, আমি এক আঘাতেই তোমার কাছ থেকে তোমার স্ত্রী যাকে তুমি ভীষণ ভালোবাসো তাকে নিয়ে নেব। তবুও তুমি বিলাপ করো না, কেঁদো না কিংবা চোখের জল ফেলো না।
17 ১৭ তুমি নিরবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়, মৃতের জন্য অন্তেষ্টি কাজ কোরো না; তুমি মাথায় পাগড়ি বাঁধ এবং পায়ে জুতো পরো, মাথায় ঘোমটা দিও না অথবা স্ত্রীর মৃতুতে দুঃখ পাওয়া লোকেদের পাঠানো রুটি খেওনা।
নীরবে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলো, মৃতের জন্য শোকপ্রকাশ করো না। তুমি পাগড়ি বেঁধো ও পায়ে চটি দিয়ো; শোককারীদের স্বাভাবিক রীতি মেনো না অথবা তোমার সান্ত্বনাকারী বন্ধুদের দেওয়া কোনও খাবার গ্রহণ করো না।”
18 ১৮ তাই আমি সকালে লোকেদের সঙ্গে কথা বললাম এবং সন্ধ্যাবেলায় আমার স্ত্রী মারা গেল এবং সকালে আমি পাওয়া আদেশ অনুযায়ী কাজ করলাম।
তখন আমি সকালবেলায় লোকদের সঙ্গে কথা বললাম, আর সন্ধ্যাবেলায় আমার স্ত্রী মারা গেলেন। পরদিন সকালে আমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছিল তেমনই করলাম।
19 ১৯ লোকেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি আমাদের বলবে না এগুলোর মানে কি যেগুলো তুমি করছো?
তখন লোকেরা আমায় জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কি আমাদের বলবেন না এসব বিষয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কি? আপনি কেন এরকম অভিনয় করছেন?”
20 ২০ তাই আমি তাদেরকে বললাম, সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
তখন আমি তাদের বললাম, “সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এসেছে
21 ২১ তুমি ইস্রায়েল-কুলকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, দেখ, তোমার শক্তির গর্ব, তোমার চোখের ইচ্ছা এবং তোমার আত্মার প্রবৃতি আমার পবিত্র স্থানকে কলুষিত করছে, তাই তোমার ছেলেরা এবং মেয়েরা যাদের তুমি রেখে যাচ্ছ তারা তরোয়ালের কোপে পড়বে।
ইস্রায়েল কুলকে বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার পবিত্রস্থান—যা তোমাদের শক্তির অহংকার, যা তোমাদের চোখে সুখ ও তোমাদের মমতার জিনিস, সেটিকেই আমি অপবিত্র করব। তোমাদের যেসব ছেলেমেয়েদের তোমরা ফেলে গিয়েছ তারা তরোয়ালের আঘাতে মারা যাবে।
22 ২২ তখন তোমার সেরকমই কাজ করবে যেমন আমি করেছি; মাথায় ঘোমটা দেবেনা, অথবা দুঃখী লোকেদের পাঠানো রুটি খাবেনা।
তখন আমি যা করেছি তোমরাও তাই করবে। শোককারীদের স্বাভাবিক রীতি মেনো না অথবা তোমার সান্ত্বনাকারী বন্ধুদের দেওয়া কোনও খাবার গ্রহণ করো না।
23 ২৩ তার পরিবর্তে তোমার মাথায় পাগড়ি বাঁধ এবং পায়ে জুতো পরো, শোক করবে না কি কাঁদবে না, কারণ তোমার অপরাধ কমে যাবে এবং প্রত্যেকে তার ভাইয়ের জন্য আর্তনাদ করবে।
তোমরা তোমাদের মাথায় পাগড়ি বাঁধবে এবং পায়ে চটি পরবে। তোমরা শোক করবে না অথবা কাঁদবে না কিন্তু নিজের নিজের পাপের জন্য দুর্বল হয়ে যাবে এবং একজন অন্যজনের কাছে কোঁকাবে।
24 ২৪ তাই যিহিস্কেল তোমাদের জন্য চিহ্নস্বরূপ হবে; যেমন সব কিছু সে যা করেছে তুমি তাই করবে যখন এটা আসবে, তখন তোমার জানবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
তোমাদের কাছে যিহিষ্কেল একটি চিহ্নের মতো হবে; সে যা করেছে তোমরা ঠিক তাই করবে। যখন এটি হবে, তখন তোমরা জানবে যে আমিই সার্বভৌম সদাপ্রভু।’
25 ২৫ কিন্তু তুমি, মানুষের সন্তান, যে দিন আমি তাদের মন্দির দখল করি যা তাদের আনন্দ, তাদের গর্ব এবং যা তারা দেখে এবং আশা করে এবং যখন তাদের ছেলেদের এবং মেয়েদের নিয়ে নেবো
“আর তুমি, হে মানবসন্তান, যেদিন আমি তাদের সেই দুর্গ, তাদের আনন্দ ও গৌরব, তাদের চোখের সুখ, তাদের অন্তরের চাওয়া এবং তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে নেব,
26 ২৬ সেই দিন একজন শরণার্থী তোমার কাছে আসবে তোমাকে খবর দেওয়ার জন্য
সেদিন একজন পালিয়ে আসা লোক তোমাকে খবর দিতে আসবে।
27 ২৭ সেদিন তোমার মুখ খুলবে শরণার্থীর জন্য এবং তুমি কথা বলবে তুমি চুপ করে থাকতে পারবে না। তুমি তাদের জন্য চিহ্নস্বরূপ হবে যাতে তারা জানবে যে আমি সদাপ্রভু।
সেই সময় তোমার মুখ খুলে যাবে; তুমি তার সঙ্গে কথা বলবে আর নীরব থাকবে না। এইভাবে তুমি তাদের কাছে একটি চিহ্ন হবে, এবং তারা জানবে যে আমিই সদাপ্রভু।”