< যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 21 >
1 ১ তারপর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে এল এবং
সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল
2 ২ মানুষের সন্তান, তুমি যিরুশালেমের দিকে মুখ রাখ, পবিত্র জায়গার বিরুদ্ধে কথা বল ও ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল।
“হে মানবসন্তান, তুমি জেরুশালেমের দিকে মুখ করে পবিত্রস্থানের বিরুদ্ধে প্রচার করো। ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করো
3 ৩ ইস্রায়েল দেশকে বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ; আমি কোষ থেকে আমার তরোয়াল বের করে তোমাদের মধ্য থেকে ধার্মিক ও দুষ্টকে বিচ্ছিন্ন করব।
আর তাকে বলো ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন আমি তোমার বিপক্ষে। আমি খাপ থেকে আমার তরোয়াল বের করে তোমার মধ্য থেকে ধার্মিক ও দুষ্ট সবাইকে মেরে ফেলব।
4 ৪ তোমাদের মধ্য থেকে ধার্মিক ও দুষ্টকে বিচ্ছিন্ন করব, আমার তরোয়াল কোষ থেকে বের হয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তর পর্যন্ত সব প্রাণীর বিরুদ্ধে যাবে;
দক্ষিণ থেকে উত্তরের সকলকে মেরে ফেলার জন্য আমার তরোয়াল খাপ থেকে বের হবে কারণ আমি ধার্মিক ও দুষ্ট সবাইকে মেরে ফেলব।
5 ৫ তারপর সব প্রাণী জানবে যে আমি, সদাপ্রভু কোষ থেকে আমি তরোয়াল বের করেছি, তা আর ফিরিয়ে আনা যাবেনা।
তখন সব লোক জানবে যে, আমি সদাপ্রভুই খাপ থেকে তরোয়াল বের করেছি; তা আর ফিরবে না।’
6 ৬ এবং তুমি মানুষের সন্তান, আর্তনাদ কর যেন তোমার কোমর ভেঙে গেছে, তাদের চোখের সামনে গভীর মনবেদনার সঙ্গে আর্তনাদ কর।
“সেইজন্য হে মানবসন্তান, তুমি কোঁকাও, ভগ্ন হৃদয়ে ও গভীর দুঃখে তাদের সামনে কোঁকাও।
7 ৭ তারপর এটা হবে যে তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, কি কারণে আর্তনাদ করছো? তখন বলবে, কারণ যে খবরটা আসছে; তখন প্রত্যেক হৃদয় গলে যাবে, প্রত্যেক হাত দুর্বল হবে, প্রত্যেক আত্মা নিস্তেজ হবে ও প্রত্যেক হাঁটু জলের মত হয়ে পড়বে; দেখ, যেটা আসছে, সেটা সফলও হবে! এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
আর তারা যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তুমি কেন কোঁকাচ্ছ?’ তুমি বলবে, ‘খবরের জন্য, কারণ তা আসছে। প্রত্যেক হৃদয় গলে যাবে ও প্রত্যেক হাত দুর্বল হবে; প্রত্যেক আত্মা নিস্তেজ হবে ও প্রত্যেক হাঁটু জলের মতো দুর্বল হয়ে যাবে।’ তা আসছে! তা নিশ্চয় ঘটবে, সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন।”
8 ৮ তারপর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল:
9 ৯ মানুষের সন্তান, ভাববাণী বল, সদাপ্রভু এ কথা বলেন; তুমি বল, তরোয়াল, তরোয়াল ওটা ধারালো ও পালিশ করা হয়েছে।
“হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “‘একটি তরোয়াল, একটি তরোয়াল, ধার দেওয়া ও পালিশ করা,
10 ১০ ওটা ধারালো করা হয়েছে, যেন হত্যা করা যায়, পালিশ করা হয়েছে, যেন বিদ্যুতের মত হয়; তবে আমরা কি আনন্দ করব আমার ছেলের রাজদন্ডের জন্য? আগুয়ান তরোয়াল ঘৃণা করে প্রত্যেক দন্ড।
ধার দেওয়া হয়েছে কেটে ফেলার জন্য, পালিশ করা হয়েছে যেন বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে! “‘আমার ছেলে যিহূদার রাজদণ্ডের জন্য কি আনন্দ করব? সেই তরোয়াল সেইরকম প্রত্যেক লাঠিকে তুচ্ছ করে।
11 ১১ তাই তরোয়াল পালিশ করার জন্য দেওয়া হয়েছে, যেন হাত দিয়ে ধরা যায়; তরোয়াল ধারালো ও পালিশ করা হয়েছে, যেন হত্যাকারীর হাতে দেওয়া যায়।
“‘তরোয়াল পালিশ করার জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে যেন হাতে ধরা যায়; হত্যাকারীর হাতে দেবার জন্য এটি ধার দেওয়া ও পালিশ করা হয়েছে।
12 ১২ সাহায্যের জন্য ডাকো এবং বিলাপ করো, মানুষের সন্তান, কারণ আমার লোকেদের বিরুদ্ধে খড়্গ আসছে, এটা ইস্রায়েলের সব অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপস্থিত হয়েছে; যাদের ওপর তরোয়াল আরোপিত করা হয়েছে তারা আমার লোক অতএব দুঃখে তুমি তোমার উরুতে আঘাত কর।
হে মানবসন্তান, কাঁদো ও বিলাপ করো, কারণ এটি আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে; এটি ইস্রায়েলের সমস্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আর আমার প্রজাদের সঙ্গে তাদেরও তরোয়ালেতে ফেলা হবে। কাজেই তুমি বুক চাপড়াও।
13 ১৩ কারণ পরীক্ষা করা হয়েছে, সেই রাজদণ্ড যদি আর না থাকে, তাতে কি? এ কথা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
“‘পরীক্ষা নিশ্চয়ই আসবে। যিহূদার রাজদণ্ড, যা তরোয়াল তুচ্ছ করে, যদি আর না থাকে তাতে কি? এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’
14 ১৪ এখন তুমি মানুষের সন্তান, ভাববাণী বল এবং একসঙ্গে দুহাতে আঘাত কর; কারণ তরোয়াল আক্রমণ করবে এমনকি তিনবার, একটা তরোয়াল এক জনকে হত্যা করবে, এই তরোয়াল অনেক লোককে হত্যা করবে, তা সব জায়গায় তাদের হত্যাকারী হবে।
“অতএব, হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো আর হাততালি দাও। সেই তরোয়াল দু-বার, এমনকি, তিনবার আঘাত করুক। এটি হত্যা করার সেই তরোয়াল, মহাহত্যা করার এই তরোয়াল, যা তাদের উপর চারিদিক থেকে আসবে।
15 ১৫ তাদের হৃদয় গলানোর জন্য এবং অনেক বাধা পাওয়ার জন্য আমি তাদের সব শহর-দ্বারে তরোয়ালের ত্রাস রাখলাম, আঃ। তা বিদ্যুতের মত তৈরী, হত্যাকারীর জন্য মুক্ত।
কেটে ফেলার জন্য তাদের সব দ্বারে দ্বারে আমি তরোয়াল বসিয়েছি যেন তাদের হৃদয় সব গলে যায় এবং অনেকে পড়ে। দেখো! সেই তরোয়াল বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে, এটি হত্যার জন্য ধার দেওয়া হয়েছে।
16 ১৬ তরোয়াল, ডানদিকে আঘাত কর, বাঁদিকে আঘাত কর; যে দিকে তোমার ব্লেডের তীক্ষ্ণ ধার ইচ্ছা করে সে দিকে যাও।
হে তরোয়াল, ডানদিকে আঘাত করো, তারপর বাঁদিকে করো, যেদিকে তোমার ফলা ঘুরানো যায়।
17 ১৭ আমিও দুহাতে একসঙ্গে আঘাত করব এবং তারপর রাগ দেখাব বাকীদের ওপরে আমি সদাপ্রভু এটা বললাম।
আমিও হাততালি দেব, আর আমার ক্রোধ শান্ত হবে। আমি সদাপ্রভুই এই কথা বলেছি।”
18 ১৮ সদাপ্রভুর এ বাক্য আমার কাছে এল এবং বলল,
সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল:
19 ১৯ এখন তুমি, মানুষের সন্তান, দুটো রাস্তা ভাগ করে দাও বাবিল-রাজের তরোয়াল আসবার জন্য। দুটো রাস্তা শুরু করবে একই দেশের মধ্যে এবং একটা চিহ্ন স্তম্ভ তাদের জন্যে থাকবে শহরে আসার জন্য
“হে মানবসন্তান, ব্যাবিলনের রাজার তরোয়ালের জন্য দুটি রাস্তায় চিহ্ন দাও, সেই দুটি রাস্তাই এক দেশ থেকে বের হবে। যেখানে রাস্তা ভাগ হয়ে নগরের দিকে গেছে সেখানে পথনির্দেশ করার খুঁটি দাও।
20 ২০ একটা রাস্তা চিহ্নিত কর বাবিলনের সৈন্যদের রব্বাতে আসার জন্য, অম্মোনীয়দের শহর। আর একটি চিহ্নিত কর যিহূদার সৈন্যদের নিয়ে যাবার জন্য এবং যিরুশালেম যা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা।
তরোয়ালের জন্য অম্মোনীয়দের রব্বা নগরের বিরুদ্ধে যাবার একটি রাস্তা এবং যিহূদা ও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যাবার অন্য একটি রাস্তায় চিহ্ন দাও।
21 ২১ কারণ বাবিল-রাজ রাস্তার সংযোগস্থলে থামবে ভবিষ্যদ্বানী অনুমান করার জন্য, সে কিছু তীর সঞ্চালন করবে, ঠাকুরদের কাছে নির্দেশ চাইবে। সে যকৃৎ পরীক্ষা করবে।
কারণ ব্যাবিলনের রাজা পূর্বলক্ষণ জানার জন্য যেখানে দুটি রাস্তা মিশেছে সেখানে দাঁড়াবে; সে তির ছুড়বে, তার দেবতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবে ও যকৃত পরীক্ষা করবে।
22 ২২ তার ডানদিকে নির্দেশ আসবে যিরুশালেমের বিষয়ে, তার জন্য ঠিক জায়গায় থেকে মেষদের আঘাত করার বিরুদ্ধে তার জন্যতার মুখ খোলে হত্যার আদেশ শুরু করার জন্য। তার জন্য তার যুদ্ধের চিত্কার, তার জন্য দরজার বিপক্ষে থেকে মেষদের আঘাত করা। তার জন্য মাটির ঢিবি করা এবং অবরোধ করার জন্য উঁচু দেওয়াল দেওয়া।
তার ডান হাতে আসবে জেরুশালেমের গণনা, যেখানে সে প্রাচীর ও দ্বার ভাঙবার যন্ত্র বসাবে, হত্যা করার হুকুম দেবে, ঢালু ঢিবি ও উঁচু ঢিবি তৈরি করবে।
23 ২৩ যিরুশালেমে এটা মনে হবে তাদের দৃষ্টিতে বেকার; যারা ব্যাবিলনীয়দের কাছে শপথ করেছিল; কিন্তু রাজা তাদের দোষারোপ করল চুক্তি ভঙ্গ করার জন্য তাদের অবরোধ করল।
যারা তার আনুগত্য স্বীকার করেছে তাদের কাছে এই লক্ষণ মিথ্যা মনে হবে, কিন্তু তাদের দোষের কথা সে তাদের মনে করিয়ে দেবে এবং তাদের বন্দি করে নিয়ে যাবে।
24 ২৪ এজন্য প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, কারণ তোমার নিজেদের অপরাধ স্মরণ করেছ, কারণ তোমাদের অধর্ম্ম সব প্রকাশিত হল, তাই তোমাদের সব কাজে তোমাদের পাপ প্রকাশিত হয়, তোমার স্মরণীয় হওয়াতে শত্রুদের হাতে ধরা পড়বে।
“এজন্য সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘তোমরা খোলাখুলিভাবে পাপ করে তোমাদের দোষ দেখিয়ে দিয়েছ, তোমাদের সব কাজে তোমাদের অন্যায় প্রকাশ পাচ্ছে—তার ফলে তোমাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে।
25 ২৫ এবং তুমি অপবিত্র ও দুষ্ট ইস্রায়েল-শাসক তোমার শাস্তির দিন এসেছে, তোমার অপরাধের দিন শেষ।
“‘ওহে অপবিত্র ও দুষ্ট ইস্রায়েলের রাজপুত্র, তোমার দিন উপস্থিত হয়েছে, তোমার শাস্তির সময় চরমসীমায় পৌঁছেছে,
26 ২৬ প্রভু সদাপ্রভু এ কথা বলেন, পাগড়ী সরাও ও রাজমুকুট খোল, যা আছে, তা আর থাকবে না; যা সহজ সরল তা উচ্চ হোক ও যা উচ্চ তা সহজ সরল হোক।
সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমার পাগড়ি খোলো, মুকুট নামিয়ে ফেলো। যেমন ছিল তেমন আর হবে না; ছোটোকে বড়ো আর বড়োকে ছোটো করা হবে।
27 ২৭ আমি সব কিছু ধ্বংস, ধ্বংস, ধ্বংস করব; মুকুট আর থাকবে না, যতদিন তিনি না আসেন, এটায় যাঁর অধিকার; আমি তাঁকে দেব।
ধ্বংস! ধ্বংস! আমি এসব ধ্বংস করে দেব! যাঁর সত্যিকারের অধিকার আছে তিনি না আসা পর্যন্ত এগুলি আর পুনরুদ্ধার হবে না; আমি তাঁকেই এসব কিছু দেব।’
28 ২৮ মানুষের সন্তান, ভাববাণী কর এবং বল, প্রভু সদাপ্রভু অম্মোন সন্তানদের বিষয়ে ও তাদের টিটকারির বিষয়ে এই কথা বলেন; একটা তরোয়াল, একটা তরোয়াল নিস্কসিত হয়েছে, এটা শাণিত হত্যা করে গ্রাস করার জন্য, তাই এটা বিদ্যুতের মত হবে।
“আর তুমি, হে মানবসন্তান, ভাববাণী বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু অম্মোনীয়দের ও তাদের অপমানের বিষয়ে এই কথা বলেন: “‘একটি তরোয়াল, একটি তরোয়াল, খোলা হয়েছে হত্যা করার জন্য, পালিশ করা হয়েছে গ্রাস করার জন্য ও যেন তা বিদ্যুতের মতো ঝকমক করে!
29 ২৯ ভাববাদীরা তোমার জন্য মিথ্যা দর্শন পায় ও তোমার জন্য মিথ্যা ধর্ম অনুষ্ঠান করে, এই তরোয়াল দুষ্টদের ঘাড়ের ওপরে পড়বে তাদের হত্যা করা হবে যাদের শাস্তির দিন এসে গেছে এবং যাদের অপরাধের দিন শেষ হতে চলেছে
এদিকে লোকেরা তোমার বিষয়ে মিথ্যা দর্শন পেলেও এবং মিথ্যা ভবিষ্যৎ-কথনের চর্চা করলেও যাদের মেরে ফেলা হবে সেই দুষ্টদের গলার উপর তোমাকে রাখা হবে, তাদের দিন এসে পড়েছে, তাদের শাস্তির সময় চরমসীমায় পৌঁছেছে।
30 ৩০ তরোয়াল তার কোষে ফিরিয়ে রাখ; তোমার সৃষ্টির জায়গায় ও যে দেশে উৎপন্ন হয়েছিলে, সেখানে আমি তোমার বিচার করব।
“‘তরোয়াল খাপে ফিরিয়ে নাও। যে জায়গায় তোমাদের সৃষ্টি, তোমাদের সেই পূর্বপুরুষদের দেশে আমি তোমাদের বিচার করব।
31 ৩১ আমি তোমার উপরে আমার রাগ ঢেলে দেব আমি তোমার বিরুদ্ধে আমার প্রচন্ড রাগে ফুঁ দেব এবং তোমাকে নিষ্ঠুর, ধ্বংসের কারিগরের হাতে সমর্পণ করব।
আমার ক্রোধ আমি তোমার উপর ঢেলে দেব এবং তোমাদের বিরুদ্ধে আমার ভীষণ অসন্তোষের আগুনে ফুঁ দেব; আমি তোমাদের এমন নিষ্ঠুর লোকদের হাতে তুলে দেব যারা ধ্বংস করতে দক্ষ।
32 ৩২ তুমি জ্বালানীর কাঠের মত হবে; তোমার রক্ত দেশের মধ্যে পতিত হবে; লোকে তোমাকে স্মরণ করবে না, কারণ আমি সদাপ্রভু এটা বললাম।
তোমরা আগুনের জন্য কাঠের মতো হবে, তোমাদের রক্ত তোমাদের দেশের মধ্যেই পড়বে, তোমাদের আর স্মরণ করা হবে না, কারণ আমি সদাপ্রভুই এই কথা বলছি।’”