যিহিস্কেল ভাববাদীর বই 16
পরে সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
“হে মানবসন্তান, জেরুশালেমের ঘৃণ্য কাজ সকলের বিষয় তার কাছে ঘোষণা করো
3 ৩ এবং ঘোষণা কর, প্রভু সদাপ্রভু যিরুশালেমকে এই কথা বলেন, “তোমার উৎপত্তি ও জন্মস্থান কনানীয়দের দেশ, তোমার বাবা ইমোরীয় ও মা হিত্তীয়া।
আর বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু জেরুশালেমকে এই কথা বলেন, তোমার পিতৃপুরুষগণ ও জন্মস্থান কনানীয়দের দেশে; তোমার বাবা ইমোরীয় এবং তোমার মা হিত্তীয়।
4 ৪ তোমার জন্মের দিনের, তোমার মা নাভি কাটেনি, তোমাকে জলে তোমাকে পরিষ্কার অথবা তোমাকে লবণ মাখান বা তোমাকে কাপড়ে জড়ায়নি।
তুমি যেদিন জন্মেছিলে তোমার নাড়ি কাটা হয়নি, তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য ধোয়া হয়নি, তোমার গায়ে নুন মাখানো হয়নি কিংবা তোমাকে কাপড় দিয়ে জড়ানো হয়নি।
5 ৫ তোমার প্রতি কোনো চোখ দয়া সহকারে এর কোনো কাজ করে নি, যে দিন তুমি জন্ম গ্রহণ করেছিলে, তুমি নিজের জন্য ঘৃণার সঙ্গে খোলা মাঠে নিক্ষিপ্তা হয়েছিলে।
কেউ তোমাকে মমতার চোখে দেখেনি কিংবা এসব করার জন্য সহানুভূতি দেখায়নি। তোমাকে বরং খোলা মাঠে ফেলে রাখা হয়েছিল, কারণ যেদিন তুমি জন্মেছিলে সেদিন তোমাকে ঘৃণা করা হয়েছিল।
6 ৬ কিন্তু আমি তোমার কাছ দিয়ে গেলাম, আমি দেখলাম তুমি তোমার রক্তের মধ্যে মোচড় খাচ্ছ; তাই আমি তোমার রক্তে বললাম, ‘জীবিত!’
“‘আর আমি কাছ দিয়ে যাবার সময় তোমাকে তোমার রক্তের মধ্যে শুয়ে ছটফট করতে দেখলাম এবং আমি তোমাকে বললাম, “জীবিত হও!”
7 ৭ আমি তোমাকে ক্ষেতের উদ্ভিদের মতো, অনেক বাড়ালাম, তাতে তুমি বৃদ্ধি পেয়ে বড় হয়ে উঠলে, অলংকার হলে, তোমার স্তনযুগল মজবুত ও চুল ঘন হল; কিন্তু তুমি বিবস্ত্রা ও উলঙ্গিনী ছিলে।
আমি তোমাকে ক্ষেত্রের চারার মতো বড়ো করে তুললাম। তুমি বৃদ্ধি পেয়ে বড়ো হয়ে উঠে সব থেকে সুন্দর রত্ন হলে। তোমার বুক গড়ে উঠল, লোম গজাল, কিন্তু তুমি উলঙ্গিনী ও কাপড় ছাড়াই ছিলে।
8 ৮ পরে আমি তোমার পাশ দিয়ে গিয়ে তোমার দিকে তাকালাম, দেখ, প্রেমের দিন তোমার জন্যে এসেছে, এই জন্য আমি তোমার উপরে নিজের পোশাক বিস্তার করে তোমার উলঙ্গতা ঢেকে দিলাম এবং আমি শপথ করে তোমার সঙ্গে নিয়ম স্থির করলাম” এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন, “তাতে তুমি আমার হলে।
“‘পরে আমি তোমার পাশ দিয়ে যাবার সময় তোমার দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে তোমার এখন প্রেম করবার সময় হয়েছে। আমি আমার পোশাকের কোনা তোমার উপরে ছড়িয়ে দিলাম ও তোমার উলঙ্গ শরীর ঢাকলাম। আমি শপথ করে তোমার সঙ্গে নিয়ম স্থির করলাম, আর তুমি আমার হলে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।
“‘আমি তোমাকে জলে স্নান করালাম, তোমার গা থেকে সমস্ত রক্ত ধুয়ে দিলাম এবং গায়ে তেল লাগিয়ে দিলাম।
10 ১০ আমি তোমাকে অলংকরা করা কাপড় পড়ালাম, চামড়ার চটি পরালাম এবং তোমাকে মসীনা পোশাকের জড়ালাম ও রেশমের পোশাকে ঢেকে দিলাম।
আমি তোমার গায়ে নকশা তোলা কাপড় দিলাম, ও পায়ে সূক্ষ্ম চামড়ার চটি পরালাম। আমি মিহি মসিনার কাপড় তোমাকে পরালাম এবং দামি কাপড় দিয়ে তোমাকে ঢাকলাম।
আমি তোমাকে গহনা দিয়ে সাজালাম তোমার হাতে চুড়ি ও গলায় হার,
নাকে নোলক, কানে দুল ও মাথায় একটি সুন্দর মুকুট দিলাম।
13 ১৩ এই ভাবে তুমি সোনায় ও রূপায় সুশোভিত হলে; তোমার পোশাক মসীনা সুতো ও রেশম দ্বারা বানানো এবং অলংকরা হল, তুমি ভালো সূজী, মধু ও তেল খেতে এবং খুব সুন্দরী হয়ে অবশেষে রাণীর পদ পেলে।
এইভাবে সোনা ও রুপো দিয়ে তোমাকে সাজানো হল; তোমার কাপড় ছিল মিহি মসিনার, ব্যয়বহুল বস্ত্র ও নকশা তোলা কাপড়ের। তোমার খাবার ছিল মধু, জলপাই তেল ও মিহি ময়দা। তুমি খুব সুন্দরী হয়ে অবশেষে রানি হলে।
14 ১৪ আর তোমার সৌন্দর্যের জন্য জাতিদের মধ্যে তোমার কীর্তি ছড়িয়ে পড়ল, কারণ আমি তোমাকে যে শোভা দিয়েছিলাম, তা দ্বারা তোমার সৌন্দর্য সম্পূর্ণ হয়েছিল,” এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
আর তোমার সৌন্দর্যের জন্য তোমার খ্যাতি জাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তোমাকে আমি যে শোভা দিয়েছিলাম তা তোমার সৌন্দর্য নিখুঁত হয়েছিল, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।
15 ১৫ পরে তুমি নিজের সৌন্দর্যে নির্ভর করে নিজ কীর্তির অভিমানে ব্যভিচারিণী হলে; যে কেউ কাছ দিয়ে যেত, তার উপরে তোমার ব্যভিচার ঢেলে দিতে; তুমি তার সম্পত্তি হতে!
“‘কিন্তু তুমি তোমার সৌন্দর্যের উপর নির্ভরশীল হয়েছ ও বেশ্যা হওয়ার জন্য তোমার সুনাম ব্যবহার করেছ। যে কেউ তোমার পাশ দিয়ে যেত তার সঙ্গে তুমি ব্যভিচার করতে এবং সে তোমাকে ভোগ করত।
16 ১৬ তারপর তুমি নিজের কোনো কোনো পোশাক নিয়ে নিজের জন্য বিভিন্ন রঙের ঘর তৈরী করতে এবং তার ওপরে বেশ্যাক্রিয়া করতে; এরকম হবেও না, হবারও নয়।
তুমি তোমার কোনও কোনও কাপড় নিয়ে পূজার উঁচু জায়গায় সাজিয়ে সেখানে তোমার বেশ্যার কাজ করতে। তুমি তার কাছে যেতে এবং সে তোমার সৌন্দর্য অধিকার করত।
17 ১৭ আর আমার সোনা ও আমার রূপা দ্বারা বানানো যে সব সুন্দর অলংকার আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, তুমি তা নিয়ে পুরুষাকৃতি প্রতিমা তৈরী করে তাদের সঙ্গে ব্যভিচার করতে।
আমার সোনা ও রুপো দিয়ে তৈরি গয়না, যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, সেই সুন্দর গয়না নিয়ে তুমি নিজের জন্য পুরুষ প্রতিমা করে সেগুলির সঙ্গে ব্যভিচার করতে।
আর তুমি তোমার নকশা তোলা কাপড় নিয়ে সেগুলিকে পরাতে এবং তাদের সামনে আমার তেল ও ধূপ রাখতে।
19 ১৯ আর আমি তোমাকে আমার যে খাবার দিয়েছিলাম, যে ভালো সূজী, তেল ও মধু তোমাকে খেতে দিয়েছিলাম, তা তুমি সুগন্ধের জন্য তাদের সামনে রাখতে; এটাই করা হত, এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
আর যে খাবার আমি তোমাকে দিয়েছিলাম—মিহি ময়দা, জলপাই তেল ও মধু যা আমি তোমাকে খেতে দিয়েছিলাম—তুমি সেগুলি তাদের সামনে সুগন্ধি হিসেবে রাখতে। এসবই ঘটেছে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।
20 ২০ “আর তুমি, আমার জন্য জন্ম দেওয়া তোমার যে ছেলে মেয়েরা, তাদেরকে নিয়ে খাবার হিসাবে ওদের কাছে উৎসর্গ করেছ।
“‘আর তোমার যে ছেলে এবং মেয়েদের আমার জন্য গর্ভে ধরেছিলে তাদের মূর্তিদের কাছে তুমি খাবার হিসেবে বলিদান করেছিলে। তোমার বেশ্যাবৃত্তি কি যথেষ্ট ছিল না?
21 ২১ তোমার ব্যভিচার কি ছোট বিষয় যে, তুমি আমার সন্তানদেরকেও হত্যা করে উৎসর্গ করেছ এবং বলিদান করেছ প্রতিমার কাছে
তুমি আমার সন্তানদের হত্যা করে মূর্তিদের কাছে উৎসর্গ করেছিলে।
22 ২২ নিজের সমস্ত জঘন্য কাজে ও ব্যভিচারে মগ্ন হওয়াতে তুমি নিজের যৌবনাবস্থার সেই দিন মনে করনি, যখন তুমি বিবস্ত্রা ও উলঙ্গিনী ছিলে, নিজ রক্তে আছাড় খাচ্ছিলে।
তোমার সব ঘৃণ্য অভ্যাস এবং তোমার বেশ্যাবৃত্তিতে তুমি তোমার যৌবন স্মরণ করোনি, যখন তুমি উলঙ্গিনী ও খালি গায়ে নিজের রক্তের মধ্যে ছটফট করছিলে।
“‘ধিক্! ধিক্ তোমাকে, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। তোমার অন্য সব দুষ্টতার পরেও,
তুমি নিজের জন্য ঢিবি তৈরি করেছ ও প্রত্যেকটি খোলা জায়গায় উঁচু প্রতিমার আসন প্রস্তুত করেছ।
25 ২৫ প্রত্যেক রাস্তার মাথায় তুমি নিজের উচ্চস্থান তৈরী করেছ, নিজের সৌন্দর্য্যকে ঘৃণার জিনিস করেছ, প্রত্যেক পথিকের জন্য নিজের পা খুলে দিয়েছ এবং নিজের বেশ্যা-ক্রিয়া বাড়িয়েছ।
রাস্তার মোড়ে মোড়েও প্রতিমার আসন তৈরি করে তোমার সৌন্দর্যকে তুমি অপমান করেছ, বাছবিচারহীনভাবে যে কেউ তোমার পাশ দিয়ে গেছে তুমি তাদের সঙ্গে ব্যভিচার করেছ।
26 ২৬ তুমি মিশরীয়দের সঙ্গে বেশ্যাদের মতো কাজ করেছ, তোমার প্রতিবেশী যযাদের লালসাপূর্ণ ইচ্ছা এবং তুমি আরো অনেক বেশ্যাবৃত্তির কাজের প্রতিজ্ঞা করেছ সেইজন্য তুমি আমাকে রাগিয়ে দিয়েছ।
তোমার কামুক প্রতিবেশী মিশরীয়দের সঙ্গে তুমি ব্যভিচার করেছ, এবং আমাকে অসন্তুষ্ট করার জন্য তোমার ব্যভিচারের কাজ আরও বাড়িয়েছ।
27 ২৭ সুতরাং দেখ! আমি আমার হাতের দ্বারা তোমাকে আঘাত করব এবং তোমার খাবার উচ্ছিন্ন করব। যে পলেষ্টীয়দের মেয়েরা তোমার লালসাপূর্ণ আচরণে লজ্জিতা হয়েছে, তাদের ইচ্ছায় তোমাকে সমর্পণ করলাম।
সেইজন্য আমি তোমার বিরুদ্ধে হাত বাড়িয়ে তোমার এলাকা কমিয়ে দিয়েছি; ফিলিস্তিয়ার মেয়েরা, যারা তোমার শত্রু তারা তোমার কামুক স্বভাবের জন্য লজ্জা পেয়েছে, আমি তাদের হাতে তোমাকে তুলে দিয়েছি।
28 ২৮ তুমি সন্তুষ্ট না হওয়াতে অশূরীয়দের সঙ্গে বেশ্যাক্রিয়া করেছ; তুমি তাদের সঙ্গে ব্যাভিচার করলেও সন্তুষ্ট হওনি।
আসিরীয়দের সঙ্গেও তুমি ব্যভিচার করেছ, কারণ তুমি অতৃপ্ত ছিলে, কিন্তু তারপরেও তোমার তৃপ্তি হয়নি।
তারপরে তুমি তোমার ব্যভিচারের কাজ বাড়িয়ে বণিকদের দেশ ব্যাবিলনের সঙ্গেও ব্যভিচার করেছ, কিন্তু এতেও তোমার তৃপ্তি হয়নি।
30 ৩০ তোমার হৃদয় কেন দুর্বল? প্রভু সদাপ্রভু বলেন, যে তুমি তো এই সব করেছ, এটা বিশৃঙ্খল এবং লজ্জাহীন মহিলার কাজ?
“‘সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন, যখন তুমি এই সমস্ত করো, নির্লজ্জ বেশ্যার মতো ব্যবহার করো তখন তোমার বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ পূর্ণ হয়েছে!
31 ৩১ তুমি প্রত্যেক রাস্তার মাথায় তোমার ধর্মীয় স্থান তৈরী করেছ, প্রত্যেক সার্বজনীন জায়গায় তোমার উচ্চস্থান তৈরী করেছ; এতে তুমি বেশ্যার মতো হওনি; তুমি তো পণ অবজ্ঞা করেছ।
যখন তুমি নিজের জন্য রাস্তার কোণে ঢিবি তৈরি করেছ ও প্রত্যেকটি খোলা জায়গায় উঁচু প্রতিমার আসন প্রস্তুত করেছ, তখন বেশ্যার মতো কাজ করোনি কারণ তুমি তোমার পাওনা টাকে অগ্রাহ্য করেছ।
“‘তুমি ব্যভিচারিণী স্ত্রী! তুমি তোমার স্বামীর চেয়ে অপরিচিতদের পছন্দ করেছ!
33 ৩৩ লোকে প্রত্যেক বেশ্যাকেই পারিশ্রমিক দেয়, কিন্তু তুমি তোমার সব প্রেমিককেই উপহার দিয়েছ এবং তোমার বেশ্যাবৃত্তিক্রমে তারা যেন সব দিক থেকে তোমার কাছে আসে, এই জন্য তাদেরকে ঘুষ দিয়েছ।
প্রত্যেক বেশ্যা পারিশ্রমিক পায়, কিন্তু তুমি তোমার সব প্রেমিকদের উপহার দিয়ে থাকো, তোমার কাছ থেকে অবৈধ অনুগ্রহ পাবার জন্য যাতে তারা সব জায়গা থেকে তোমার কাছে আসে সেইজন্য তুমি তাদের ঘুস দিয়ে থাকো।
34 ৩৪ এতে অন্যান্য স্ত্রী থেকে তোমার বিপরীত; কারণ কোনো লোক তোমার সঙ্গে শোয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করে না। পরিবর্তে, তুমি তাদের বেতন দাও! কেউ তোমাকে বেতন দাও।
অন্যান্য স্ত্রীদের থেকে তোমার বেশ্যাবৃত্তি ঠিক উল্টো; তোমার অনুগ্রহ পাবার জন্য কেউ তোমার পিছনে দৌড়ায় না। তুমি একেবারে আলাদা, কারণ তুমি টাকা নাও না বরং টাকা দিয়ে থাকো।
“‘অতএব, হে বেশ্যা, সদাপ্রভুর বাক্য শোনো!
36 ৩৬ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমার লালসা ঢেলে দেওয়া হয়েছে এবং তোমার প্রেমিকদের সঙ্গে তোমার ব্যাভিচারের জন্য তোমার উলঙ্গতা প্রকাশিত হয়েছে এবং তোমার সব ঘৃণ্য মূর্তির জন্য, কারণ তোমার সন্তানদের রক্ত যা তুমি তোমার মূর্তিদেরকে দিয়েছ;
সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যেহেতু তুমি তোমার লালসা ঢেলে দিয়েছ ও বাছবিচার না করে তোমার প্রেমিকদের কাছে তোমার নিজের উলঙ্গতা প্রকাশ করেছ, এবং তোমার ঘৃণ্য মূর্তির কারণে ও তোমার সন্তানদের রক্ত তাদের দেওয়ার জন্য,
37 ৩৭ অতএব দেখ! আমি তোমার সেই সব প্রেমিকদেরকে জড়ো করব, যাদের সঙ্গে তুমি মিলিত হয়েছ এবং যাদেরকে তুমি ভালোবেসেছো ও যাদেরকে ঘৃণা করেছ; তোমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দিক থেকে তাদেরকে জড়ো করব, পরে তাদের সামনে তোমার উলঙ্গতা প্রকাশ করব, তাতে তারা তোমার সমস্ত উলঙ্গতা দেখবে।
সেই কারণে আমি তোমার প্রেমিকদের জড়ো করব, যাদের সঙ্গে তুমি আনন্দ উপভোগ করেছ, যাদের তুমি প্রেম করেছ ও যাদের তুমি ঘৃণা করেছ। আমি চারিদিক থেকে তোমার বিরুদ্ধে তাদের জড়ো করব ও তাদের সামনেই তোমার সব কাপড় খুলে ফেলব যাতে তারা তোমার উলঙ্গতা দেখতে পায়।
38 ৩৮ কারণ আমি তোমার ব্যাভিচারের ও রক্তপাতের জন্য বিচার করব এবং আমি তোমার ওপরে আমার রাগের রক্তপাত এবং ক্রোধ আনব।
যে স্ত্রীলোকেরা ব্যভিচার করে এবং যারা রক্তপাত করে তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয় সেই শাস্তিই আমি তোমাকে দেব; আমার ক্রোধ ও অন্তর্জ্বলনের জন্য আমি তোমার উপরে রক্তের প্রতিহিংসা নিয়ে আসব।
39 ৩৯ আমি তাদের হাতে তোমাকে দেব, তাতে তারা তোমার মন্দির ভেঙে ফেলবে, তোমার উচ্চস্থান সব ধ্বংস করবে, তোমাকে নগ্ন করবে এবং তোমার সব ধরনের অলংকার নিয়ে নেবে; তারা তোমাকে নগ্ন ও উলঙ্গিনী করে রাখবে।
তারপর আমি তোমাকে তোমার প্রেমিকদের হাতে তুলে দেব, আর তারা তোমার ঢিবি ও উঁচু প্রতিমার আসনগুলি ধ্বংস করবে। তারা তোমাকে বিবস্ত্রা করবে ও তোমার সুন্দর গহনাগুলি নিয়ে নেবে আর তোমাকে একেবারে উলঙ্গ করে রেখে যাবে।
40 ৪০ তারা তোমার বিরুদ্ধে জনসাধারণকে আনবে, তোমাকে পাথর মারবে ও তারা তাদের তরোয়ালের দ্বারা তোমাকে বিচ্ছিন্ন করবে।
তারা তোমার বিরুদ্ধে একদল লোককে উত্তেজিত করবে, যারা তোমাকে পাথর মারবে এবং তরোয়াল দিয়ে তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাটবে।
41 ৪১ এবং তোমার বাড়ি সব আগুনে পুড়িয়ে দেবে ও অনেক স্ত্রীলোকের সামনে তোমার ওপরে শাস্তির অনেক আইন সঞ্চালিত হবে; কারণ আমি তোমার ব্যাভিচার থামাব, তুমি আর তাদেরকে পণ দেবে না!
তারা তোমার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেবে এবং অনেক স্ত্রীলোকের চোখের সামনে তোমাকে শাস্তি দেবে। আমি তোমার বেশ্যাবৃত্তি বন্ধ করে দেব, তোমার প্রেমিকদের তুমি আর অর্থ দেবে না।
42 ৪২ তারপর আমি আপনার বিরুদ্ধে আমার রাগ শান্ত করব, তাতে তোমার ওপর থেকে আমার রাগ যাবে, কারণ আমি সন্তুষ্ট হব এবং রাগ করব না।
তারপর তোমার উপর আমার ক্রোধ ও অন্তরের জ্বালা থেমে যাবে; আমি শান্ত হব, আর অসন্তুষ্ট হব না।
43 ৪৩ তুমি নিজের যৌবনাবস্থা মনে করনি, যখন তুমি আমাকে এই সব বিষয়ে আমাকে রাগিয়েছ; দেখ, আমিও তোমার ব্যবহারের জন্য তোমাকে মাথায় শাস্তি দেব,” এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন; “ঐ সব অন্যায় আচরণের পরে তুমি আর ঘৃণ্য পদ্ধতিতে চলবে না!
“‘যেহেতু তুমি তোমার যৌবনের কথা মনে রাখোনি, কিন্তু এসব বিষয় দিয়ে আমাকে ক্রুদ্ধ করেছ, সেইজন্য আমিও তোমার কাজের ফল তোমাকে দেব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন। তোমার অন্য সমস্ত কুকর্মের সঙ্গে কি তুমি এই ঘৃণ্য কাজও যোগ করোনি?
“‘যে কেউ প্রবাদ ব্যবহার করে, সে তোমার বিরুদ্ধে এই প্রবাদ ব্যবহার করবে, “যেমন মা, তেমনি মেয়ে।”
45 ৪৫ তুমি তোমার মায়ের মেয়ে, যে নিজের স্বামীকে ও সন্তানদের ঘৃণা করত এবং তুমি তোমার বোনদের বোন, যারা নিজেদের স্বামী ও সন্তানদের ঘৃণা করত; তোমাদের মা হিত্তীয়া ও তোমাদের বাবা ইমোরীয় ছিল।
তুমি তোমার মায়ের উপযুক্ত মেয়ে, যে তার স্বামী ও ছেলেমেয়েদের ঘৃণা করত; এবং তুমি তোমার বোনদের উপযুক্ত বোন, যারা তাদের স্বামী ও সন্তানদের ঘৃণা করত। তোমার মা হিত্তীয়া আর বাবা ইমোরীয়।
46 ৪৬ তোমার বড় বোন শমরিয়া, সে নিজের মেয়েদের সঙ্গে তোমার উত্তর দিকে বাস করে এবং তোমার ছোট বোন সদোম, সে নিজের মেয়েদের সঙ্গে তোমার দক্ষিণ দিকে বাস করে।
তোমার দিদি শমরিয়া, যে তার মেয়েদের নিয়ে তোমার উত্তর দিকে বাস করে; আর তোমার বোন, যে তার মেয়েদের নিয়ে তোমার দক্ষিণে বাস করে, সে সদোম।
47 ৪৭ এখন তুমি যে তাদের পথে গিয়েছ ও তাদের ঘৃণার কাজ অনুসারে কাজ করেছ, তা নয়, বরং ওটা ছোট বিষয় বলে নিজের সব ব্যবহারে তাদের থেকেও খারাপ হয়েছ।
তুমি যে কেবল তাদের পথে চলেছ ও তাদের ঘৃণ্য কাজ অনুসরণ করেছ তাই নয়, কিন্তু বরং তোমার সমস্ত আচার-ব্যবহারে তুমি অল্প সময়ের মধ্যে তাদের চেয়ে আরও চরিত্রহীন হয়েছ।
48 ৪৮ যেমন আমি জীবন্ত” এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন “তোমার বোন সদোম ও তার মেয়েরা তোমার মত ও তোমার মেয়েদের মত খারাপ কাজ করে নি!
সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার জীবনের দিব্য, তোমার মেয়েরা ও তুমি যা করেছ তোমার বোন সদোম ও তার মেয়েরা কখনও তা করেনি।
49 ৪৯ দেখ! তোমার বোন সদোমের এই অপরাধ ছিল; তার ও তার মেয়েদের অহঙ্কার, যে কোনো বিষয়ে অমনোযোগী ও উদাসীন ছিল; গরিব ও অভাবগ্রস্তদের হাত তার এবং তার মেয়েদের কাছে যেত, কিন্তু সে তাদের সাহায্য করত না।
“‘তোমার বোন সদোমের এই পাপ ছিল: সে ও তার মেয়েরা ছিল অহংকারী, প্রচুর খেতো ও নিশ্চিন্তে বাস করত; তারা গরিব ও অভাবীদের সাহায্য করত না।
তারা অহংকারী ছিল ও আমার সামনে ঘৃণ্য কাজ করত। অতএব তুমি যেমন দেখেছ সেইভাবেই আমি তাদের দূর করে দিয়েছি।
51 ৫১ শমরিয়া তোমার পাপের অর্ধেক পাপও করে নি, পরিবর্তে, তুমি ঘৃণার কাজ তাদের থেকেও বেশি করেছ এবং নিজের করা সব ঘৃণার কাজের দ্বারা নিজের বোনদেরকে ধার্মিক দেখিয়েছ।
তুমি যেসব পাপ করেছ তার অর্ধেক শমরিয়া করেনি। তুমি তাদের চেয়ে আরও ঘৃণ্য কাজ করেছ। তুমি এই যেসব কাজ করেছ তা দেখে তোমার বোনদের বরং ধার্মিক মনে হয়েছে।
52 ৫২ বিশেষভাবে তুমি, তুমিও নিজের লজ্জা দেখাও, এই ভাবে তুমি দেখাও যে তোমার বোনেরা তোমার থেকে ভালো, কারণ সেই সব মন্দ অভ্যাসের মধ্যে তুমি পাপ করেছিলে। তোমার বোনেরা এখন তোমার চেয়ে ভাল বলে মনে হয়। বিশেষভাবে তুমি, নিজের লজ্জা দেখাও, কারণ এই ভাবে তুমি দেখো যে তোমার বোনেরা তোমার থেকে ভালো।
তোমার অপমান তোমাকেই বহন করতে হবে, কারণ তোমার কাজগুলি তোমার বোনদের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। যেহেতু তোমার পাপ তাদের থেকে জঘন্য, তাদের দেখায় যে তারা তোমার থেকে ধার্মিক। সেইজন্য, লজ্জিত হও ও তোমার অপমান বহন করো, কারণ তোমার কাজগুলি তাদের তোমার থেকে বেশি ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছে।
53 ৫৩ কারণ আমি তাদের বন্দিত্ব, সদোম ও তার মেয়েদের বন্দিত্ব এবং শমরিয়া ও তার মেয়েদের বন্দিত্ব ফেরাব এবং তাদের মধ্যে তোমার বন্দিদের ফেরাব;
“‘যাহোক, আমি সদোম ও তার মেয়েদের, শমরিয়া ও তার মেয়েদের এবং তাদের সঙ্গে তোমারও অবস্থা ফিরাব,
54 ৫৪ এইগুলির জন্য তুমি লজ্জিতবোধ করবে; তুমি অপদস্থ হবে কারণ যা কিছু করেছ তার জন্য এবং এই ভাবে তুমি তাদেরকে সান্ত্বনা দেবে।
যেন তুমি তোমার অপমান বহন করো এবং তাদের সান্ত্বনা দিতে যা করেছ তার জন্য লজ্জিত হও।
55 ৫৫ আর তোমার বোন সদোম ও তার মেয়েরা, আগের অবস্থা পাবে এবং শমরিয়া ও তার মেয়েরা আগের অবস্থা পাবে এবং তুমি ও তোমার মেয়েরা আগের অবস্থা পাবে।
আর তোমার বোনেরা, সদোম তার মেয়েদের ও শমরিয়া তার মেয়েদের সঙ্গে আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় ফিরে যাবে; এবং তুমি তোমার মেয়েদের নিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
তোমার অহংকারের দিনে তুমি তোমার বোন সদোমের নাম মুখে আনতে না,
57 ৫৭ তখন তোমার দুষ্টতা প্রকাশ পায়নি; যেমন এই দিনের অরামের মেয়েরা ও তার চারিদিকের নিবাসিনী সবাই, পলেষ্টীয়দের মেয়েরা, তোমাকে অবজ্ঞা করছে এরা চারিদিকে তোমাকে তুচ্ছ করে।
যখন তোমার দুষ্টতা প্রকাশ পায়নি। তবুও অরামের মেয়েরা ও তার প্রতিবেশীরা, ফিলিস্তিনীদের মেয়েরা তোমাকে অবজ্ঞা করে—তোমার চারিদিকে যারা আছে তারা তোমাকে ঘৃণা করে।
তুমি তোমার কুকর্ম ও ঘৃণ্য কাজের ফলভোগ করবে, সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
59 ৫৯ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তুমি যেমন কাজ করেছ, আমি তোমার প্রতি সেরকম কাজ করব; তুমি তো শপথ অবজ্ঞা করে নিয়ম ভেঙ্গেছ।
“‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন তোমার কাজ অনুসারে আমি তোমার সঙ্গে ব্যবহার করব, কারণ তুমি আমার শপথ অবজ্ঞা করে বিধান ভেঙেছ।
60 ৬০ কিন্তু তোমার যৌবনকালে তোমার সঙ্গে আমার যে নিয়ম ছিল, তা আমি মনে করব এবং তোমার পক্ষে চিরস্থায়ী এক নিয়ম স্থাপিত করব।
তবুও তোমার যৌবনকালে তোমার সঙ্গে আমার যে বিধান ছিল, তা আমি মনে করব এবং তোমার জন্য একটি চিরস্থায়ী বিধান স্থাপন করব।
61 ৬১ তখন তুমি নিজের আচার ব্যবহার মনে করে লজ্জিতা হবে, যখন নিজের বোনদেরকে, নিজের বড় ও ছোট বোনদেরকে গ্রহণ করবে; আর আমি তাদেরকে মেয়েদের মতো তোমাকে দেব, কিন্তু তোমার নিয়মের কারণে নয়।
তখন তুমি নিজের আচার-ব্যবহার স্মরণ করে লজ্জিতা হবে, যখন তুমি তোমার বোনদের, বড়ো ও ছোটো, তাদের তুমি গ্রহণ করবে। তোমার মেয়ে হিসেবে আমি তাদেরকে তোমাকে দেব, যদিও তারা তোমার সঙ্গে আমার বিধানের মধ্যে নেই।
অতএব আমি তোমার জন্য আমার বিধান স্থাপন করব, আর তুমি জানবে যে, আমিই সদাপ্রভু।
63 ৬৩ কারণ এই বিষয়, আমি যখন তোমার কাজ সব ক্ষমা করব, তখন তুমি যেন তা মনে করে লজ্জিতা হও ও নিজের অপমানের জন্য আর কখনও মুখ না খোলো।” এটা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
আমি যখন তোমার সব অন্যায় ক্ষমা করব তখন তুমি সেইসব অন্যায় কাজের জন্য লজ্জিত হবে এবং তোমার অপমানের জন্য আর কখনও মুখ খুলবে না, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।’”
