< যাত্রাপুস্তক 34 >
1 ১ পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি প্রথম ফলকের মত দুটি পাথরের ফলক কাটো; প্রথম যে দুটি ফলক তুমি ভেঙে ফেলেছ, তাতে যা যা লেখা ছিল, সেই সব কথা আমি এই দুটি ফলকে লিখব।
2 ২ আর তুমি সকালে প্রস্তুত হও, সকালে সীনয় পর্বতে উঠে আসবে ও সেখানে পর্বতের চূড়ায় আমার কাছে উপস্থিত হও।
3 ৩ কিন্তু তোমার সঙ্গে কোনো মানুষ উপরে না আসুক এবং এই পর্বতে কোথাও কোন মানুষ দেখা না যাক, আর পশুপালও এই পর্বতের সামনে না চরুক।”
4 ৪ পরে মোশি প্রথম পাথরের মত দুটি পাথরের ফলক কাটলেন এবং সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে সকালে উঠে সীনয় পর্বতের উপরে গেলেন ও সেই দুটি পাথরের ফলক হাতে করে নিলেন।
5 ৫ তখন সদাপ্রভু মেঘে নেমে এসে সেখানে তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করলেন।
6 ৬ সদাপ্রভু তাঁর সামনে দিয়ে গেলেন ও এই ঘোষণা করলেন, “সদাপ্রভু, সদাপ্রভু, করুণাময় ও কৃপাবান ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান;
7 ৭ হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত অনুগ্রহদানকারী, অপরাধের, খারাপ কাজের ও পাপের ক্ষমাকারী; তবুও তিনি অবশ্যই পাপের শাস্তি দেন; ছেলে নাতিদের উপরে, তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত, তিনি বাবাদের অপরাধের শাস্তি দেন।”
8 ৮ তখন মোশি তাড়াতাড়ি মাটিতে মাথা নত করলেন এবং আরাধনা করলেন।
9 ৯ তখন তিনি বললেন, “হে প্রভু, যদি এখন আমি আপনার কাছে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমাদের মধ্যে দিয়ে যান, কারণ এই জাতি একগুঁয়ে। আমাদের অপরাধ ও পাপ সকল ক্ষমা করুন এবং আমাদের আপনার উত্তরাধিকারী হিসাবে গ্রহণ করুন।”
10 ১০ তখন তিনি বললেন, “দেখ, আমি এক চুক্তি করি; সমস্ত পৃথিবীতে ও যাবতীয় জাতির মধ্যে যা কখনও করা হয়নি, এমন আশ্চর্য্য কাজ আমি তোমার সমস্ত লোকের সামনে করব; তাতে যে সব লোকের মধ্যে তুমি আছ, তারা সদাপ্রভুর কাজ দেখবে, কারণ তোমার কাছে যা করব, তা ভয়ঙ্কর।
11 ১১ আজ আমি তোমাকে যা আদেশ করি, তা মান্য কর; দেখ, আমি ইমোরীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়কে তোমার সামনে থেকে দূর করে দেব।
12 ১২ সাবধান, যে দেশে তুমি যাচ্ছ, সেই দেশবাসীদের সঙ্গে নিয়ম স্থির কোরো না, পাছে তা তোমার কাছে ফাঁদের মত হয়।
13 ১৩ কিন্তু তোমরা তাদের বেদিগুলি ভেঙে ফেলবে, তাদের থামগুলি ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করবে ও সেখানকার আশেরা মূর্তিগুলি কেটে ফেলবে।
14 ১৪ তুমি অন্য দেবতার আরাধনা কোরো না, কারণ সদাপ্রভু নিজের গৌরব রক্ষণে উদ্যোগী নাম ধারন করেন; তিনি নিজের গৌরব রক্ষণে উদ্যোগী ঈশ্বর।
15 ১৫ তুমি সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে নিয়ম করবে না; তারা ব্যভিচার করে এবং তারা নিজেদের দেবতাদের অনুগামী হয়ে নিজের দেবতাদের কাছে বলিদান করে এবং তারা তোমাকে বলির দ্রব্য খাওয়াবার জন্য তোমাকে আমন্ত্রণ জানাবে;
16 ১৬ কিংবা তুমি তোমার ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের গ্রহণ করবে এবং তাদের মেয়েরা ব্যভিচার করবে ও তোমার ছেলেদের নিজের দেবতাদের উপাসনা করিয়ে অবিশ্বস্ত করাবে।
17 ১৭ তুমি তোমার জন্য ছাঁচে ঢালা কোন দেবতা তৈরী কোরো না।
18 ১৮ তুমি খামির বিহীন রুটির উৎসব পালন করবে। আবীব মাসের যে নির্ধারিত দিনের যেরকম করতে আদেশ করেছি, সেই রকম তুমি সেই সাত দিন খামির বিহীন রুটি খাবে, কারণ সেই আবীব মাসে তুমি মিশর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে।
19 ১৯ প্রথমজাত সবাই এবং গরু, ভেড়ার পালের মধ্যে প্রথমজাত পুরুষ পশু সমস্তই আমার।
20 ২০ প্রথমজাত গাধার পরিবর্তে তুমি ভেড়ার বাচ্চা দিয়ে তাকে মুক্ত করবে; যদি মুক্ত না কর, তবে তার ঘাড় ভাঙ্গবে। তোমার প্রথমজাত সব ছেলেগুলিকে তুমি মুক্ত করবে। আর কেউ খালি হাতে আমার সামনে আসবে না।
21 ২১ তুমি ছয়দিন পরিশ্রম করবে, কিন্তু সপ্তম দিনের বিশ্রাম করবে; চাষের ও ফসল কাটার দিনের ও বিশ্রাম করবে।
22 ২২ তুমি সাত সপ্তাহের উৎসব, অর্থাৎ কাটা গমের প্রথম ফলের উৎসব এবং বছরের শেষভাগে ফল সংগ্রহের উৎসব পালন করবে।
23 ২৩ বছরের মধ্যে তিনবার তোমাদের সমস্ত পুরুষ ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হবে।
24 ২৪ কারণ আমি তোমার সামনে থেকে জাতিদেরকে দূর করে দেব ও তোমার সীমানা বিস্তার করব এবং তুমি বছরের মধ্যে তিন বার তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হবার জন্য গেলে তোমার জমিতে কেউ লোভ করবে না।
25 ২৫ তুমি আমার বলির রক্ত খামিরযুক্ত খাদ্যের সঙ্গে উৎসর্গ করবে না ও নিস্তারপর্ব্বের উৎসবের বলিদ্রব্য সকাল পর্যন্ত রাখা যাবে না।
26 ২৬ তুমি নিজের জমির প্রথম ফলের অগ্রিমাংশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে আনবে। তুমি ছাগলছানাকে তার মায়ের দুধে সিদ্ধ করবে না।”
27 ২৭ আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি এই সব বাক্য লিপিবদ্ধ কর, কারণ আমি এই সব বাক্য অনুসারে তোমার ও ইস্রায়েলের সঙ্গে চুক্তি স্থির করলাম।”
28 ২৮ সেই দিনের মোশি চল্লিশ দিন রাত সেখানে সদাপ্রভুর সঙ্গে থাকলেন, খাবার খেলেন না ও জল পান করলেন না। আর তিনি সেই দুটি পাথরে নিয়মের বাক্যগুলি অর্থাৎ দশ আজ্ঞা লিখলেন।
29 ২৯ পরে মোশি দুটি সাক্ষ্যপাথর হাতে নিয়ে সীনয় পর্বত থেকে নামলেন; যখন পর্বত থেকে নামলেন, তখন, সদাপ্রভুর সঙ্গে আলাপের দিন তার মুখের চামড়া যে উজ্জ্বল হয়েছিল, তা মোশি জানতে পারলেন না।
30 ৩০ পরে যখন হারোণ ও সমস্ত ইস্রায়েল সন্তান মোশিকে দেখতে পেল, তখন দেখ, তার মুখের চামড়া উজ্জ্বল, আর তারা তাঁর কাছে আসতে ভয় পেল।
31 ৩১ কিন্তু মোশি তাদেরকে ডাকলে হারোণ ও মণ্ডলীর শাসনকর্ত্তা সবাই তাঁর কাছে ফিরে আসলেন, আর মোশি তাদের সঙ্গে আলাপ করলেন।
32 ৩২ তারপরে ইস্রায়েল সন্তানরা সবাই তাঁর কাছে আসল; তাতে তিনি সীনয় পর্বতে বলা সদাপ্রভুর আজ্ঞাগুলি সব তাদেরকে জানালেন।
33 ৩৩ পরে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ হলে মোশি তাঁর মুখে ঢাকা দিলেন।
34 ৩৪ কিন্তু মোশি যখন সদাপ্রভুর সঙ্গে কথা বলতে ভিতরে তাঁর সামনে যেতেন ও যখন বাইরে আসতেন, তখন সেই আবরণ খুলে রাখতেন; পরে যে সব আজ্ঞা পেতেন, বের হয়ে ইস্রায়েল সন্তানদের তা বলতেন।
35 ৩৫ মোশির মুখের চামড়া উজ্জ্বল, এটা ইস্রায়েল সন্তানরা তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখত; কিন্তু পরে মোশি সদাপ্রভুর সঙ্গে কথা বলতে যে পর্যন্ত আবার না যেতেন, ততক্ষণ তাঁর মুখে আবার ঢাকা দিয়ে রাখতেন।