< উপদেশক 9 >
1 ১ কারণ আমি সমস্ত কিছুর বিষয়ে আমার মনে চিন্তা করি ধার্মিকতার এবং জ্ঞানী লোকেদের কাজের বিষয়ে বোঝার জন্য। তারা সবাই ঈশ্বরের হাতে। কেউ জানে না ভালবাসা বা ঘৃণা কার কাছে কি আসবে।
সেইজন্য আমি এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করলাম এবং দেখলাম যে, ধার্মিক ও জ্ঞানবান লোকেরা এবং তাদের কাজ সবই ঈশ্বরের হাতে, কিন্তু কেউ জানে না তাদের জন্য প্রেম না ঘৃণা অপেক্ষা করছে।
2 ২ প্রত্যেকেরই একই ভাগ্য। একই ভাগ্য ধার্মিক ও পাপীদের জন্য অপেক্ষা করে, ভালো ও খারাপের জন্য, শুচি ও অশুচি জন্য এবং যে বলিদান করে এবং যে বলিদান করতে পারে না সকলেরই একই ভাগ্য। যেমন ভালো মরে, তেমনি পাপীও মরে। যেমন এক ব্যক্তি যে শপথ করে মরবে, তেমনি যে শপথ করতে ভয় পায় সেও মরবে।
সকলের শেষ অবস্থা একই—ধার্মিক ও দুষ্ট, ভালো ও মন্দ, শুচি ও অশুচি, যারা উৎসর্গ অনুষ্ঠান করে ও যারা তা করে না। ভালো লোকের জন্যও যা, পাপীর জন্যও তা; যারা শপথ করে তাদের জন্যও যা, যারা তা করতে ভয় পায় তাদের জন্যও তা।
3 ৩ একটা মন্দ ভাগ্য সব কিছুর জন্য আছে যা সূর্য্যের নিচে হয়েছে, প্রত্যেকের জন্য এক ভাগ্য। মানুষের হৃদয় মন্দতায় পূর্ণ এবং পাগলামি তাদের হৃদয়ে থাকে যতদিন তারা জীবিত থাকে। তাই মৃত্যুর পরে তারা মরাদের কাছে যায়।
সূর্যের নিচে যা কিছু ঘটে তার মধ্যে দুঃখের বিষয় হল: সকলের একই দশা ঘটে। এছাড়া মানুষের হৃদয় মন্দে পরিপূর্ণ এবং যতদিন তারা বেঁচে থাকে ততদিন তাদের হৃদয়ে বিচারবুদ্ধিহীনতা থাকে, আর তারপরে সে মারা যায়।
4 ৪ কারণ তখনও কারোর জন্য আশা থাকে যে জীবিত, ঠিক যেমন মরা সিংহের থেকে জীবিত কুকুর ভাল।
জীবিত লোকদের আশা আছে—এমনকি, মরা সিংহের চেয়ে জীবিত কুকুরও ভালো!
5 ৫ কারণ জীবিত জানে যে তারা মরবে, কিন্তু মরা কিছুই জানে না। তাদের আর কোন পুরষ্কার থাকে না কারণ তাদের স্মৃতি ভুলে যাওয়া হয়েছে।
কারণ জীবিত লোকেরা জানে যে তাদের মরতে হবে, কিন্তু মৃতেরা কিছুই জানে না; তাদের আর কোনো পুরস্কার নেই, আর তাদের কথাও লোকে ভুলে গেছে।
6 ৬ তাদের ভালবাসা, ঘৃণা এবং হিংসা অনেক দিন আগেই উধাও হয়ে গেছে। সূর্য্যের নিচে যা কিছু করা হয়েছে তাতে তারা আর কোন জায়গা পাবে না।
তাদের ভালোবাসা, তাদের ঘৃণা এবং তাদের হিংসা অনেক আগেই অদৃশ্য হয়ে গেছে; সূর্যের নিচে যা কিছু ঘটবে তাতে তাদের আর কখনও কোনো অংশ থাকবে না।
7 ৭ তোমার পথে যাও, আনন্দের সঙ্গে তোমার রুটি খাও এবং খুশি মনে তোমার আঙ্গুর রস পান কর, কারণ ঈশ্বর ভাল কাজে আনন্দ করতে অনুমতি দেন।
তুমি যাও, আনন্দের সঙ্গে তোমার খাবার খাও, আনন্দিত হৃদয়ে দ্রাক্ষারস পান করো, কারণ তোমার এসব কাজ ঈশ্বর আগেই গ্রাহ্য করেছেন।
8 ৮ তোমার কাপড় সবদিন সাদা থাকুক এবং তোমার মাথা তেলে অভিষিক্ত হোক।
সবসময় সাদা কাপড় পরবে আর মাথায় তেল দেবে।
9 ৯ সুখে জীবনযাপন কর তোমার সেই স্ত্রীর সঙ্গে যাকে তুমি অসারতায় সারা জীবন ভালবেসেছ, সেই দিন যা ঈশ্বর তোমায় দিয়েছেন সূর্য্যের নিচে তোমার জীবনকালের অসারতায়। সেটা তোমার জীবনে সূর্য্যের নিচে তোমার কাজের পুরষ্কার।
সূর্যের নিচে ঈশ্বর তোমাকে যে অসার জীবন দিয়েছেন, তোমার জীবনের সেইসব দিনগুলি তোমার স্ত্রী, যাকে তুমি ভালোবাসো, তার সঙ্গে আনন্দে তোমার সকল অসার দিনগুলি কাটাও। কারণ সূর্যের নিচে যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হচ্ছো তা তোমার জীবনের পাওনা।
10 ১০ যা কিছু তোমার হাত খুঁজে পায় কাজের জন্য, তোমার শক্তি দিয়ে তা কর, কারণ কবরে কোন কাজ বা কোন ব্যাখ্যা বা কোন জ্ঞান বা কোন প্রজ্ঞা নেই, সেই জায়গা যেখানে তোমরা যাচ্ছ। (Sheol )
তোমার হাতে যে কোনো কাজ আসুক না কেন তা তোমার সমস্ত শক্তি দিয়েই কোরো, কারণ তুমি যে জায়গায় যাচ্ছ, সেই মৃতস্থানে, সেখানে কোনো কাজ বা পরিকল্পনা বা বৃদ্ধি কিংবা বিদ্যা বা প্রজ্ঞা বলে কিছুই নেই। (Sheol )
11 ১১ আমি কিছু আকর্ষণীয় জিনিস সূর্য্যের নিচে দেখেছি: দৌড় দ্রুতগামীদের অন্তর্গত নয়। যুদ্ধ শক্তিশালীদের অন্তর্গত নয়। রুটি জ্ঞানীদের অন্তর্গত নয়। ধন-সম্পত্তি বুদ্ধিমান লোকেদের অন্তর্গত নয়। অনুগ্রহ বিজ্ঞদের অন্তর্গত নয়। বরং, দিন এবং সুযোগ সকলকে প্রভাবিত করে।
আমি সূর্যের নিচে আরও একটি ব্যাপার দেখলাম দ্রুতগামীদের জন্য দৌড় নয় বা শক্তিশালীদের জন্য যুদ্ধ নয় কিংবা জ্ঞানবানদের জন্য খাবার কিংবা বুদ্ধিদীপ্তদের জন্য ধনসম্পদ বা বিজ্ঞদের জন্য অনুগ্রহ আসে না; কিন্তু সকলের জন্য সময় ও সুযোগ আসে।
12 ১২ কারণ কেউ জানে না তার মৃত্যুর দিন, ঠিক যেমন মাছ মৃত্যুর জালে জড়িয়ে পড়ার মত অথবা ঠিক যেমন পাখি ফাঁদে ধরা পড়ার মত। যেমন পশুরা ফাঁদে পড়ে, তেমন মানুষেরা বন্দী হয় খারাপ দিনের যা হঠাৎ তাদের ওপর এসে পড়ে।
আবার, কেউ জানে না তাদের সময় কখন উপস্থিত হবে মাছ যেমন নিষ্ঠুর জালে ধরা পড়ে, কিংবা পাখিরা ফাঁদে পড়ে, তেমনি মানুষ অশুভকালে ধরা পড়ে যা তাদের উপরে হঠাৎ এসে পড়ে।
13 ১৩ আমি আবার প্রজ্ঞাকে দেখেছি সূর্য্যের নিচে এমনভাবে যা আমার কাছে অসামান্য মনে হল।
আমি সূর্যের নিচে প্রজ্ঞা সম্বন্ধে আর একটি ব্যাপার দেখলাম যা আমার মনে গভীরভাবে দাগ কাটল
14 ১৪ একটা ছোট শহর যাতে অল্প লোক ছিল এবং এক মহান রাজা এল এর বিরুদ্ধে এবং এটা ঘেরাও করল এবং তার বিরুদ্ধে একটা বড় ঢালু বাঁধ তৈরী করল।
একবার একটি ছোটো নগর ছিল যেখানে অল্প লোক বাস করত। আর একজন শক্তিশালী রাজা তার বিরুদ্ধে এসে, তার চারিদিকে বিরাট অবরোধ নির্মাণ করল।
15 ১৫ সেই শহরে এক জ্ঞানবান দরিদ্রকে পাওয়া গেল, যে তার জ্ঞান দিয়ে সেই শহরকে রক্ষা করল। তবুও তারপরে, কেউ সেই দরিদ্রকে মনে রাখলো না।
সেই নগরে একজন জ্ঞানবান গরিব লোক বাস করত, এবং সে তার প্রজ্ঞা দিয়ে নগরটি রক্ষা করল। কিন্তু কেউ সেই গরিব লোকটাকে মনে রাখল না।
16 ১৬ তাই আমার সিদ্ধান্ত, “শক্তির থেকে প্রজ্ঞা ভাল, কিন্তু সেই দরিদ্র লোকের প্রজ্ঞাকে তুচ্ছ করা হয়েছে এবং তার কথা কেউ শোনেনি।”
তাই আমি বললাম, “শক্তির চেয়ে প্রজ্ঞা ভালো।” কিন্তু সেই গরিব লোকের প্রজ্ঞাকে তুচ্ছ করা হয় এবং তার কথা কেউ শোনে না।
17 ১৭ মূর্খদের ওপর শাসনকারী কোন মানুষের চিত্কারের থেকে জ্ঞানীদের কথা শান্তিতে শোনা ভাল।
বোকাদের শাসনকর্তার চিৎকারের চেয়ে বরং জ্ঞানবানের শান্তিপূর্ণ কথা শোনা ভালো।
18 ১৮ যুদ্ধের অস্ত্রের থেকে প্রজ্ঞা ভাল, একজন পাপী অনেক মঙ্গল নষ্ট করে।
যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্রের চেয়ে প্রজ্ঞা ভালো, কিন্তু একজন পাপী অনেক ভালো কাজ নষ্ট করে।