< দ্বিতীয় রাজাবলি 19 >
1 ১ রাজা হিষ্কিয় এই কথা শোনার পর নিজের কাপড় ছিঁড়লেন আর চটের পোশাক পরলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
রাজা হিষ্কিয় একথা শুনে নিজের কাপড় ছিঁড়লেন। তিনি শোকের পোশাক পরে সদাপ্রভুর মন্দিরে গেলেন।
2 ২ তিনি রাজবাড়ীর পরিচালক ইলীয়াকীম, রাজার লেখক শিব্ন ও যাজকদের প্রাচীনদের চট পরিয়ে আমোসের ছেলে যিশাইয় ভাববাদীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
তিনি রাজপ্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম, সচিব শিব্ন ও গুরুত্বপূর্ণ যাজকদের, আমোষের পুত্র, ভাববাদী যিশাইয়ের কাছে প্রেরণ করলেন। তারা সবাই শোকের পোশাক পরেছিলেন।
3 ৩ তাঁরা যিশাইয়কে বললেন, “হিষ্কিয় বলছেন যে, আজকের দিন টা হল কষ্টের, তিরস্কার হওয়ার ও অসম্মানের দিন। কারণ যেন সন্তানেরা জন্ম হবার মুখে এসেছে কিন্তু তাদের জন্ম দেবার শক্তি নেই।
তারা গিয়ে তাঁকে বললেন, “হিষ্কিয় একথাই বলেন: আজকের এই দিনটি হল মর্মান্তিক যন্ত্রণা, তিরস্কার ও কলঙ্কময় একদিন, ঠিক যেমন সন্তান প্রসবের সময় এসে গিয়েছে, অথচ যেন সন্তান প্রসবের শক্তিই নেই।
4 ৪ অশূরের রাজা যিনি জীবন্ত ঈশ্বরকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে রব্শাকিকে পাঠিয়েছেন কিন্তু আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু হয়তো সেই সব কথা শুনে তাকে ধমক দেবেন। তাই যারা এখনও বেঁচে আছে তাদের জন্য আপনি প্রার্থনা করুন।”
হয়তো সদাপ্রভু, আপনার ঈশ্বর সেই সৈন্যাধ্যক্ষের সব কথা শুনে থাকবেন, যাকে তার মনিব, আসিরীয় রাজা, জীবন্ত ঈশ্বরকে বিদ্রুপ করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন। সদাপ্রভু, আপনার ঈশ্বর, যে কথা শুনেছেন, তার জন্য তিনি হয়তো তাঁকে তিরস্কার করবেন। সেই কারণে, যারা এখনও বেঁচে আছে, আপনি অবশিষ্ট তাদের জন্য প্রার্থনা করুন।”
5 ৫ তখন রাজা হিষ্কিয়ের কর্মচারীরা যিশাইয়ের কাছে আসলেন,
যখন রাজা হিষ্কিয়ের কর্মচারীরা যিশাইয়ের কাছে গেলেন,
6 ৬ এবং যিশাইয় তাঁদের বললেন “তোমাদের মালিককে বল যে, সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘তুমি যা শুনেছ, অর্থাৎ অশূরের রাজার কর্মচারীরা আমার বিরুদ্ধে যে সব অপমানের কথা বলেছে তাতে তুমি ভয় পেয়ো না।
যিশাইয় তাদের বললেন, “তোমরা গিয়ে তোমাদের মনিবকে বলো, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন: আসিরীয় রাজার অধীন ব্যক্তিরা আমার সম্পর্কে যেসব নিন্দার উক্তি করেছে, যেগুলি তোমরা শুনেছ, সে সম্পর্কে ভয় পেয়ো না।
7 ৭ দেখো, আমি তার মধ্যে এমন একটা আত্মা দেব যার ফলে সে একটা সংবাদ শুনতে পাবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে। আমি তাকে তার নিজের দেশে তলোয়ারের দ্বারা শেষ করে দেব’।”
তোমরা শোনো! আমি তার মধ্যে এমন এক মনোভাব দেব, যার ফলে সে যখন এক সংবাদ শুনবে, সে তার স্বদেশে ফিরে যাবে। সেখানে আমি তাকে তরোয়ালের দ্বারা বিনষ্ট করব।’”
8 ৮ পরে রব্শাকি ফিরে গেলেন এবং দেখলেন যে, অশূরের রাজা লিব্নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। কারণ তিনি লাখীশ থেকে চলে গিয়েছিলেন একথা রব্শাকি শুনেছিলেন।
সেই সৈন্যাধ্যক্ষ যখন শুনতে পেলেন যে, আসিরীয় রাজার লাখীশ ত্যাগ করে চলে গেছেন, তিনি ফিরে গেলেন এবং দেখলেন, রাজা লিব্নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন।
9 ৯ অশূরের রাজা সন্হেরীব শুনতে পেলেন যে, কূশ দেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়েছেন। তাই তিনি আবার দূতদের দিয়ে হিষ্কিয়ের কাছে খবর পাঠালেন,
পরে সন্হেরীব একটি সংবাদ শুনতে পেলেন যে, মিশরের কূশ দেশের রাজা তির্হক তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সমরাভিযান শুরু করেছেন। তাই, আবার তিনি এই কথা বলে হিষ্কিয়ের কাছে দূতদের পাঠালেন:
10 ১০ “তোমরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়কে বলবে, তুমি যাঁকে বিশ্বাস কর সেই ঈশ্বর এইরকম বলে তোমাদের প্রতারণা না করুক যে, রাজা অশূরের হাতে যিরূশালেমকে দেওয়া হবে না।
“যিহূদার রাজা হিষ্কিয়কে গিয়ে বলো: যে দেবতার উপর আপনি নির্ভর করে আছেন, তিনি যেন এই কথা বলে আপনাকে না ঠকান যে, ‘আসিরিয়ার রাজার হাতে জেরুশালেমকে সমর্পণ করা হবে না।’
11 ১১ দেখো, অশূরের রাজারা কিভাবে অন্য সব দেশগুলি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই শুনেছ; তাহলে তুমি কি রক্ষা পাবে?
তোমরা নিশ্চয়ই শুনেছ, সব দেশের প্রতি আসিরীয় রাজা কী করেছেন। তিনি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছেন। আর তোমরা কি তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাবে?
12 ১২ আমার পূর্বপুরুষেরা যে সব জাতিকে ধ্বংস করেছেন তাদের দেবতারা, অর্থাৎ গোষণ, হারণ, রেৎসফ এবং তলঃসরে বাসকারী এদনের লোকদের দেবতারা কি তাদের রক্ষা করেছে?
ওইসব জাতির দেশগুলি, যাদের আমার পিতৃপুরুষেরা ধ্বংস করেছিলেন, কেউ কি তাদের উদ্ধার করতে পেরেছে—অর্থাৎ গোষণ, হারণ, রেৎসফ ও তেল-অৎসরে বসবাসকারী এদনের লোকেদের দেবতারা?
13 ১৩ হমাতের রাজা, অর্পদের রাজা, সফর্বয়িম শহরের রাজা অথবা হেনা ও ইব্বার রাজা কোথায়?”
হমাতের রাজা বা অর্পদের রাজা কোথায় গেল? লায়ীর, সফর্বয়িম, হেনা ও ইব্বার রাজারাই বা কোথায় গেল?”
14 ১৪ হিষ্কিয় দূতদের কাছ থেকে চিঠিখানা নিলেন এবং সেটি পড়লেন। পরে তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন এবং তাঁর সামনে চিঠিটা মেলে দিলেন।
সেই দূতদের কাছ থেকে পত্রখানি গ্রহণ করে হিষ্কিয় পাঠ করলেন। তারপর তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে গেলেন এবং সদাপ্রভুর সামনে তা মেলে ধরলেন।
15 ১৫ হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন এবং বললেন, “বাহিনীগনের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, করূবের মাঝে অবস্থিত হে সদাপ্রভু, তুমিই একমাত্র পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের ঈশ্বর। তুমি মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছ।
আর হিষ্কিয় এই বলে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন: “দুই করূবের মাঝে বিরাজমান হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, একমাত্র তুমিই পৃথিবীর সব রাজ্যের ঈশ্বর। তুমিই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছ।
16 ১৬ হে সদাপ্রভু, কান ফেরাও এবং শোন; তোমার চোখ খোল সদাপ্রভু এবং দেখ, সন্হেরীবের কথা শোন যা জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করবার জন্য বলে পাঠিয়েছে।
হে সদাপ্রভু, তুমি কর্ণপাত করো ও শোনো; হে সদাপ্রভু, তুমি তোমার দৃষ্টি উন্মোচন করো ও দেখো; জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করে সন্হেরীব যেসব কথা বলেছে, তা তুমি শ্রবণ করো।
17 ১৭ সত্য, হে সদাপ্রভু, যে অশূরের রাজারা সব জাতিকে এবং তাদের দেশ ধ্বংস করেছে।
“একথা সত্যি, হে সদাপ্রভু, যে আসিরীয় রাজারা এই সমস্ত জাতি ও তাদের দেশগুলিকে বিনষ্ট করেছে।
18 ১৮ তারা তাদের দেবতাদের আগুনে ফেলে দিয়েছে। কারণ সেগুলো তো ঈশ্বর ছিল না কিন্তু শুধুমাত্র মানুষের হাতে তৈরী কেবল কাঠ আর পাথর; সেইজন্য অশূরেরা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
তারা তাদের দেবতাদের আগুনে নিক্ষেপ করে তাদের ধ্বংস করেছে, কারণ তারা দেবতা নয়, কিন্তু ছিল কেবলমাত্র কাঠ ও পাথরের তৈরি, মানুষের হাতে তৈরি শিল্প।
19 ১৯ এখন হে সদাপ্রভু আমাদের ঈশ্বর, অশূরের রাজার হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষা কর, যাতে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমি, একমাত্র তুমিই ঈশ্বর।”
এখন, হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তাঁর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো, যেন পৃথিবীর সব রাজ্য জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, একমাত্র তুমিই ঈশ্বর।”
20 ২০ তখন আমোসের ছেলে যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে একটি খবর পাঠালেন, সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলছেন যে, অশূরের রাজা সন্হেরীব সম্বন্ধে আপনার প্রার্থনা আমি শুনেছি।
পরে আমোষের ছেলে যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে এই খবর দিয়ে পাঠালেন: “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীবের বিষয়ে তোমার করা প্রার্থনাটি আমি শুনেছি।
21 ২১ তার বিষয়ে সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, “সিয়োন কুমারী মেয়ে তোমাকে তুচ্ছ করছে এবং হাঁসাহাঁসি করছে। যিরূশালেমের মেয়েরা তোমার দিকে মাথা নাড়ছে।
তার বিরুদ্ধে বলা সদাপ্রভুর বাণী হল এই: “কুমারী-কন্যা সিয়োন তোমাকে অবজ্ঞা ও উপহাস করে। জেরুশালেম-কন্যা তার মাথা নাড়ায় যখন তোমরা পলায়ন করো।
22 ২২ তুমি কাকে তুচ্ছ করেছ? কার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছ? তুমি কার বিরুদ্ধে চিৎকার করেছ এবং গর্ব সহকারে চোখ তুলে তাকিয়েছ? তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধেই এই সব করেছ।
তুমি কাকে অপমান ও কার নিন্দা করেছ? তুমি কার বিরুদ্ধে তোমার কণ্ঠস্বর তুলেছ ও গর্বিত চক্ষু উপরে তুলেছ? তা করেছ ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতমের বিরুদ্ধেই।
23 ২৩ তোমার লোকদের দিয়ে তুমি প্রভুকে অপমান করে বলেছ যে, আমি সব রথ দিয়ে পাহাড়গুলোর চূড়ায় উঠেছি, লেবাননের সবচেয়ে উঁচু চূড়ায় উঠেছি। আমি তার সবচেয়ে লম্বা লম্বা এরস গাছ আর ভাল ভাল দেবদারু গাছ কেটে ফেলব। আমি তার বনের শেষপ্রান্ত, সুন্দর ফলবান জায়গায় ঢুকব।
তোমার দূতদের দ্বারা তুমি প্রভুর উপরে অপমানের বোঝা চাপিয়েছ। আবার তুমি বলেছ, ‘আমার বহুসংখ্যক রথের দ্বারা আমি পর্বতসমূহের শিখরে, লেবাননের সর্বোচ্চ চূড়াগুলির উপরে আরোহণ করেছি। আমি তার দীর্ঘতম সিডার গাছগুলিকে, তার উৎকৃষ্টতম দেবদারু গাছগুলিকে কেটে ফেলেছি। আমি তার প্রত্যন্ত এলাকায়, তার সুন্দর বনানীতে পৌঁছে গেছি।
24 ২৪ আমি বিদেশের মাটিতে কুয়ো খুঁড়েছি এবং সেখানকার জল খেয়েছি। আমি নিজের পা দিয়ে মিশরের সব নদীগুলো শুকনো করব।
আমি বিজাতীয় ভূমিতে কুয়ো খনন করেছি এবং সেখানকার জলপান করেছি। আমার পায়ের তলা দিয়ে আমি মিশরের সব স্রোতোধারা শুকিয়ে দিয়েছি।’
25 ২৫ তুমি কি শোন নি যে, বহুদিন পূর্বেই আমি তা ঠিক করে রেখেছিলাম? বহুকাল আগেই আমি তার পরিকল্পনা করেছিলাম? আর এখন আমি তা করলাম। তোমার মাধ্যমে দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহরগুলো ধ্বংস করে পাথরের ঢিবি করতে পেরেছি।
“তুমি কি শুনতে পাওনি? বহুপূর্বে আমি তা স্থির করেছিলাম। পুরাকালে আমি তার পরিকল্পনা করেছিলাম; কিন্তু এখন আমি তা ঘটতে দিয়েছি, সেই কারণে তুমি সুরক্ষিত নগরগুলিকে পাথরের ঢিবিতে পরিণত করেছ।
26 ২৬ সেখানকার লোকেরা শক্তিহীন হয়েছে এবং ভীষণ ভয় ও লজ্জা পেয়েছে। তারা ক্ষেতের চারার মত, গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাসের মত, ছাদের উপরে গজানো ঘাসের মত যা বেড়ে উঠবার আগেই শুকিয়ে যাবে সেরকম হলো।
সেইসব জাতির লোকেরা ক্ষমতাহীন হয়েছে, তারা হতাশ হয়ে লজ্জিত হয়েছে। তারা হল মাঠের গাছগুলির মতো, গজিয়ে ওঠা কোমল অঙ্কুরের মতো, যেমন ছাদের উপরে ঘাস গজিয়ে ওঠে, কিন্তু বেড়ে ওঠার আগেই তাপে শুকিয়ে যায়।
27 ২৭ কিন্তু তোমার মধ্যে বসে থাকা আর কখন বাইরে যাওয়া বা ভিতরে আসা এবং কেমন করে আমার বিরুদ্ধে রেগে ওঠ আমি তা জানি।
“কিন্তু আমি জানি তোমার অবস্থান কোথায়, কখন তুমি আস ও যাও, আর কীভাবে তুমি আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করো।
28 ২৮ কারণ আমার বিরুদ্ধে তুমি রেগে উঠেছ এবং তোমার গর্বের কথা আমার কানে এসেছে বলে আমি আমার কড়া তোমার নাকে লাগাব এবং তোমার মুখে আমার বল্গা লাগাব; আর যে পথ দিয়ে তুমি এসেছ সেই পথেই তোমাকে ফিরিয়ে দেব৷”
যেহেতু তুমি আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করো, আর যেহেতু তোমার অভব্য আচরণের কথা আমার কানে পৌঁছেছে, আমি তোমার নাকে আমার বড়শি ফোটাব, তোমার মুখে দেব আমার বলগা, আর যে পথ দিয়ে তুমি এসেছ, সেই পথেই তোমাকে ফিরিয়ে দেব।
29 ২৯ আর হে হিষ্কিয়, তোমার জন্য চিহ্ন হবে এই, এই বছরে নিজের থেকেই যা জন্মাবে তোমরা তাই খাবে এবং দ্বিতীয় বছরে তা থেকে যা জন্মাবে তা খাবে। কিন্তু তৃতীয় বছরে তোমরা অবশ্যই বীজ বুনবে ও ফসল কাটবে আর আঙুর গাছ লাগিয়ে তার ফল খাবে।
“আর ওহে হিষ্কিয়, এই হবে তোমার পক্ষে চিহ্নস্বরূপ: “এই বছরে তোমরা আপনা-আপনি উৎপন্ন শস্য, আর দ্বিতীয় বছরে তা থেকে যা উৎপন্ন হবে, তোমরা তাই ভোজন করবে। কিন্তু তৃতীয় বছরে তোমরা বীজবপন ও শস্যচ্ছেদন করবে, দ্রাক্ষাকুঞ্জ রোপণ করে তার ফল খাবে।
30 ৩০ যিহূদা গোষ্ঠীর যে লোকেরা তখনও বেঁচে থাকবে তারা আবার গাছের মত নীচে শিকড় বসাবে আর উপরে ফল দেবে।
আরও একবার যিহূদা রাজ্যের অবশিষ্ট লোকেরা পায়ের নিচে মূল খুঁজে পাবে ও তাদের উপরে ফল ধরবে।
31 ৩১ যিরূশালেম থেকে অবশিষ্ট লোকেরা আসবে, আর সিয়োন পাহাড় থেকে আসবে বেঁচে যাওয়া লোক। বাহিনীগনের সদাপ্রভুর আগ্রহেই এই সব করবে।
কারণ জেরুশালেম থেকে আসবে এক অবশিষ্টাংশ, আর সিয়োন পর্বত থেকে আসবে বেঁচে থাকা লোকের একদল। সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর উদ্যোগই তা সুসম্পন্ন করবে।
32 ৩২ সেজন্য অশূরের রাজার সম্পর্কে সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সে এই শহরে আসবে না কিম্বা এখানে একটা তীরও ছুড়বে না। সে ঢাল নিয়ে এর সামনে আসবে না কিম্বা ওঠা নামা করবার জন্য কিছু তৈরী করবে না।
“সেই কারণে, আসিরীয় রাজা সম্পর্কে সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “সে এই নগরে প্রবেশ করবে না, কিংবা এখানে কোনো তির নিক্ষেপ করবে না। সে এই নগরের সামনে ঢাল নিয়ে আসবে না, কিংবা কোনো জাঙ্গাল নির্মাণ করবে না।
33 ৩৩ সে যে পথ দিয়ে এসেছে সেই পথ দিয়েই ফিরে যাবে; এই শহরে সে প্রবেশ করবে না। এটাই হলো সদাপ্রভুর ঘোষণা।
যে পথ দিয়ে সে আসবে, সে পথেই যাবে ফিরে; সে এই নগরে প্রবেশ করবে না,” সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
34 ৩৪ কারণ আমি আমার ও আমার দাস দায়ূদের জন্য এই শহরটা রক্ষা করব ও তার ঢাল হয়ে থাকব।
“আমি আমার জন্য ও আমার দাস দাউদের জন্য এই নগর রক্ষা করে তা উদ্ধার করব!”
35 ৩৫ সেই রাতে সদাপ্রভুর দূত বের হয়ে অশূরীয়দের শিবির আক্রমণ করলেন এবং এক লক্ষ পঁচাশি হাজার সৈন্যকে মেরে ফেললেন। পরদিন ভোরবেলায় লোকেরা যখন উঠল তখন দেখতে পেল সব জায়গায় শুধু মৃতদেহ।
সেরাতেই সদাপ্রভুর দূত আসিরীয়দের সৈন্যশিবিরে গিয়ে এক লক্ষ পঁচাশি হাজার সৈন্য মেরে ফেলেছিলেন। পরদিন সকালে যখন লোকজন ঘুম থেকে উঠেছিল—দেখা গেল সর্বত্র শুধু মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়ে আছে!
36 ৩৬ সেজন্য অশূর রাজা সন্হেরীব তাঁর সৈন্যদল নিয়ে ইস্রায়েল থেকে চলে গেলেন এবং নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানে থাকতে লাগলেন।
তাই আসিরিয়ার রাজা সন্হেরীব সৈন্যশিবির ভেঙে দিয়ে সেখান থেকে সরে পড়েছিলেন। তিনি নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানেই থেকে গেলেন।
37 ৩৭ পরে, সন্হেরীব যেমন তাঁর দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পূজা করছিলেন, তাঁর ছেলেরা অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাঁকে তলোয়ার দিয়ে মেরে ফেলে তারা অরারট দেশে পালিয়ে গেল। তখন সন্হেরীবের জায়গায় তাঁর ছেলে এসর-হদ্দোন রাজা হলেন।
একদিন, যখন তিনি তাঁর দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পুজো করছিলেন, তাঁর দুই ছেলে অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তরোয়াল দিয়ে তাঁকে হত্যা করল, এবং আরারট দেশে পালিয়ে গেল। তাঁর ছেলে এসর-হদ্দোন রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।