< দ্বিতীয় রাজাবলি 1 >
1 ১ আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াব ইস্রায়েলের অধীনে আর থাকলো না।
আহাবের মৃত্যুর পর, মোয়াব ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেছিল।
2 ২ আর অহসিয় শমরিয়াতে তাঁর বাড়ির উপরের কুঠরীর জানালা দিয়ে নীচে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হলেন; তাতে তিনি কয়েকজন দূতকে বলে পাঠালেন, “যাও, ইক্রোণের দেবতা বাল্-সবূবের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা কর যে, এই অসুস্থতা থেকে আমি সুস্থ হব কি না?”
ইত্যবসরে অহসিয় শমরিয়ায় তাঁর প্রাসাদের উপরের ঘরের জাফরি ভেঙে পড়ে গেলেন ও গুরুতরভাবে আহত হলেন। তাই তিনি দূতদের বলে পাঠালেন, “তোমরা গিয়ে ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে জেনে এসো, আমি এই আঘাত থেকে সুস্থ হব, কি না।”
3 ৩ কিন্তু সদাপ্রভুর দূত তিশ্বীয় এলিয়কে বললেন, “তুমি গিয়ে শমরিয়ার রাজার দূতেদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বল, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তোমরা ইক্রোণের দেবতা বাল্-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছ?’
কিন্তু সদাপ্রভুর দূত তিশবীয় এলিয়কে বললেন, “শমরিয়ার রাজার পাঠানো দূতদের কাছে গিয়ে তুমি তাদের একথা জিজ্ঞাসা করো, ‘ইস্রায়েলে কি কোনও ঈশ্বর নেই যে তোমরা ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে পরামর্শ চাইতে যাচ্ছ?’
4 ৪ তাই সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ, তা থেকে তুমি আর নামবে না, তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।” এই বলে এলিয় চলে গেলেন।
তাই সদাপ্রভু একথা বলেন: ‘যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেটি ছেড়ে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মরবে!’” এই বলে এলিয় চলে গেলেন।
5 ৫ আর সেই ভাববাদীদের মণ্ডলী রাজার কাছে ফিরে আসলে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন ফিরে আসলে?”
দূতেরা রাজার কাছে ফিরে আসার পর তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন ফিরে এলে?”
6 ৬ তারা বলল, “একজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, ‘যে রাজা তোমাদের পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে বল যে’, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্ সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে লোক পাঠিয়েছ? অতএব তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ সেখান থেকে আর নামবে না; তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
“একজন আমাদের সাথে দেখা করতে এলেন,” তারা উত্তর দিয়েছিল। “আর তিনি আমাদের বললেন, ‘যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, তোমরা সেই রাজার কাছে ফিরে যাও এবং তাঁকে গিয়ে বলো, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েলে কি কোনও ঈশ্বর নেই যে তুমি ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের পরামর্শ নেওয়ার জন্য তার কাছে দূত পাঠিয়েছ? তাই যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেটি ছেড়ে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মারা যাবে!”’”
7 ৭ রাজা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে লোকটা তোমাদের সঙ্গে দেখা করে এই কথা বলেছে সে দেখতে কেমন?”
রাজামশাই তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যিনি তোমাদের সাথে দেখা করতে এলেন ও তোমাদের এইসব কথা বললেন, তাঁকে দেখতে কেমন?”
8 ৮ উত্তরে তারা বলল, “তার গা লোমে ভরা ছিল এবং তাঁর কোমরে ছিল চামড়ার কোমর-বন্ধনী।” রাজা বললেন, “সে তিশ্বীয় এলিয়।”
তারা উত্তর দিয়েছিল, “তাঁর গায়ে ছিল লোমের এক পোশাক এবং তাঁর কোমরে বাঁধা ছিল চামড়ার এক কোমরবন্ধ।” রাজামশাই বললেন, “তিনি তিশবীয় এলিয় ছিলেন।”
9 ৯ এরপর রাজা একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, এলিয় তখন একটা পাহাড়ের উপরে বসে ছিলেন। সেই সেনাপতি এলিয়ের কাছে উঠে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে নেমে আসতে বলেছেন।”
পরে এলিয়র কাছে তিনি পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত একজন সেনাপতিকে পাঠালেন। এলিয় যখন একটি পাহাড়ের চূড়ায় বসেছিলেন, তখন সেই সেনাপতি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজামশাই বলেছেন, ‘আপনি নিচে নেমে আসুন!’”
10 ১০ উত্তরে এলিয় সেই সেনাপতিকে বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই, তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন লোককে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে সেই সেনাপতি ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
এলিয় সেই সেনাপতিকে উত্তর দিলেন, “আমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের লোক, তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলুক!” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে সেই সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলেছিল।
11 ১১ পরে রাজা আবার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠালেন। সেই সেনাপতি এলিয়কে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে এখনই নেমে আসতে বলেছেন।”
এই অবস্থা দেখে রাজামশাই অন্য আরেকজন সেনাপতিকে তাঁর পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত এলিয়র কাছে পাঠালেন। সেই সেনাপতিও এলিয়কে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা একথা বলেছেন, ‘আপনি এক্ষুনি নিচে নেমে আসুন!’”
12 ১২ উত্তরে এলিয় বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তাকে ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
“আমি যদি সত্যিই ঈশ্বরের লোক,” এলিয় উত্তর দিলেন, “তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলুক!” তখন আকাশ থেকে ঈশ্বরের আগুন নেমে এসে তাঁকে ও তাঁর পঞ্চাশ জন লোককে গ্রাস করে ফেলেছিল।
13 ১৩ পরে রাজা তৃতীয় বার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে পাঠালেন। এই তৃতীয় সেনাপতি উপরে উঠে গিয়ে এলিয়ের সামনে হাঁটু পেতে অনুরোধ করে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, আমি অনুরোধ করি, আমার ও আপনার এই পঞ্চাশজন দাসের প্রাণ রক্ষা করুন।
অতএব রাজামশাই তৃতীয় একজন সেনাপতিকে তাঁর পঞ্চাশ জন সৈন্য সমেত সেখানে পাঠালেন। তৃতীয় এই সেনাপতি সেখানে গিয়ে এলিয়র সামনে নতজানু হলেন। “হে ঈশ্বরের লোক,” তিনি ভিক্ষা চেয়েছিলেন, “দয়া করে আপনার দাস—আমার ও এই পঞ্চাশ জন লোকের প্রাণের মর্যাদা রক্ষা করুন!
14 ১৪ দেখুন, আকাশ থেকে আগুন পড়ে এর আগে দুজন সেনাপতি ও তাদের পঞ্চাশ পঞ্চাশ জনকে পুড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু এবার আপনি আমার প্রাণ রক্ষা করুন।”
দেখুন, আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে প্রথম দুজন সেনাপতি ও তাদের লোকজনকে গ্রাস করল। কিন্তু এখন আমার প্রাণের মর্যাদা রক্ষা করুন!”
15 ১৫ তখন সদাপ্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “তুমি ওর সঙ্গে নেমে যাও, ওকে ভয় কোরো না।” তখন এলিয় তাঁর সঙ্গে নেমে রাজার কাছে গেলেন।
সদাপ্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “এর সাথে তুমি নিচে নেমে যাও; একে ভয় পেয়ো না।” অতএব এলিয় উঠে তাঁর সাথে রাজার কাছে চলে গেলেন।
16 ১৬ তিনি রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য দূতদের পাঠিয়েছিলে; এর কারণ কি এই যে, ইস্রায়েলের মধ্যে ঈশ্বর নেই, যাঁর বাক্য জিজ্ঞাসা করা যায়? তাই তুমি যে বিছানায় শুয়ে আছ, তা থেকে আর নামবে না। তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
তিনি রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু একথাই বলেন: ইস্রায়েলে তোমাকে পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও ঈশ্বর কি ছিলেন না, যে তুমি পরামর্শ নেওয়ার জন্য ইক্রোণের দেবতা বায়াল-সবূবের কাছে দূত পাঠিয়েছিলে? যেহেতু তুমি এই কাজ করেছ, তাই যে বিছানায় তুমি শুয়ে আছ, সেখান থেকে তুমি আর উঠতে পারবে না। তুমি অবশ্যই মরবে!”
17 ১৭ আর এলিয়কে দিয়ে সদাপ্রভুর বলা বাক্য অনুযায়ী অহসিয় মারা গেলেন। অহসিয়ের কোন ছেলে ছিল না বলে তাঁর জায়গায় যিহোরাম রাজা হলেন। যিহূদার রাজা যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে, রাজা হলেন।
তাই এলিয় যা বললেন, সদাপ্রভুর সেই কথানুসারে তিনি মারা গেলেন। যেহেতু অহসিয়ের কোনও ছেলে ছিল না, তাই যিহোশাফটের ছেলে যিহূদার রাজা যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে রাজারূপে যোরাম অহসিয়ের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
18 ১৮ অহসিয়ের বাকি সমস্ত কাজের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইতে কি লেখা নেই?
অহসিয়ের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, এবং তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই?