< ২য় করিন্থীয় 4 >
1 ১ যেহেতু আমরা সেবা কাজের দায়িত্ব পেয়েছি সেইজন্য আমরা ঈশ্বরের দয়া পেয়েছি এবং আমরা নিরাশ হই না;
এই কারণে, ঈশ্বরের করুণার মাধ্যমে আমাদের যেহেতু এই পরিচর্যা আছে, আমরা নিরুৎসাহ হই না।
2 ২ বরং অন্যেরা যে সব লজ্জার ও গুপ্ত কাজ করে তা আমরা করি না। আমরা ছলনা করি না এবং ঈশ্বরের বাক্যকে ভুল ব্যাখ্যা করি না, কিন্তু ঈশ্বরের সামনে সত্য প্রকাশ করে মানুষের বিবেক নিজেদেরকে যোগ্য করে তোলে।
বরং, আমরা গোপনীয় ও লজ্জাজনক পথগুলি ত্যাগ করেছি; আমরা ধূর্ততার আশ্রয় নিই না, কিংবা ঈশ্বরের বাক্যকে বিকৃতও করি না। এর বিপরীতে, সহজসরলভাবে সত্যকে প্রকাশ করে আমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সব মানুষের বিবেকের কাছে নিজেদের যোগ্য করে তুলি।
3 ৩ কিন্তু আমাদের সুসমাচার যদি ঢাকা থাকে, তবে যারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছেই ঢাকা থাকে।
আবার, আমাদের সুসমাচার যদি আবৃত থাকে, তাহলে যারা ধ্বংস হচ্ছে, তা তাদের কাছেই আবৃত থাকে।
4 ৪ এই যুগের দেবতা অর্থাৎ জগতের শাসনকর্তারা অবিশ্বাসী লোকদের মনকে অন্ধ করে রেখেছে যেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি যে খ্রীষ্ট, তাঁর গৌরবের সুসমাচারের আলো তারা দেখতে না পায়। (aiōn )
এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করেছে, যেন তারা খ্রীষ্টের মহিমার যে সুসমাচার তার আলো দেখতে না পায়। সেই খ্রীষ্টই হলেন ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি। (aiōn )
5 ৫ কারণ আমরা নিজেদেরকে প্রচার করছি না কিন্তু যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু বলে প্রচার করছি এবং নিজেদেরকে যীশু খ্রীষ্টের জন্য তোমাদের দাস বলে প্রচার করছি।
কারণ আমরা নিজেদের বিষয়ে প্রচার করি না, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টকে প্রভুরূপে করি এবং যীশুর কারণে নিজেদের পরিচয় দিই তোমাদের দাসরূপে।
6 ৬ কারণ সেই ঈশ্বর যিনি বললেন, অন্ধকার থেকে আলো প্রকাশ হবে এবং তিনি আমাদের হৃদয়ে আলো জ্বেলেছিলেন যেন তাঁর মহিমা বোঝার জন্য আলো প্রকাশ পায় আর এই মহিমা যীশু খ্রীষ্টের মুখমন্ডলে আছে।
কারণ যে ঈশ্বর বলেছিলেন, “অন্ধকারের মধ্য থেকে জ্যোতি উদ্ভাসিত হোক,” তিনি তাঁর জ্যোতি আমাদের হৃদয়ে উদ্দীপিত করলেন, যেন খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলে বিরাজিত ঈশ্বরের যে মহিমা, তার জ্ঞানের আলো আমাদের প্রদান করেন।
7 ৭ কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে (আমাদের পার্থিব দেহ) রেখেছি, যেন লোকে বুঝতে পারে যে এই মহাশক্তি আমাদের থেকে নয় কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে।
কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে ধারণ করছি, যেন এরকম প্রত্যক্ষ হয় যে সর্বগুণে উৎকৃষ্টতর এই পরাক্রম আমাদের থেকে নয়, কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে।
8 ৮ আমরা সব দিক দিয়ে কষ্টে আছি কিন্তু আমরা ভেঙে পড়ি নি; দিশেহারা হলেও আমরা হতাশ হয়ে পড়ছি না,
আমরা চতুর্দিক থেকেই প্রবলরূপে নিষ্পেষিত হচ্ছি, কিন্তু চূর্ণ হচ্ছি না; হতবুদ্ধি হচ্ছি, কিন্তু নিরাশ হচ্ছি না;
9 ৯ অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর আমাদের ত্যাগ করেননি, মাটিতে ছুঁড়ে ফেললেও আমরা নষ্ট হয়ে যাইনি।
নির্যাতিত হচ্ছি, কিন্তু পরিত্যক্ত হচ্ছি না; আঘাতে ধরাশায়ী হচ্ছি, কিন্তু বিধ্বস্ত হচ্ছি না।
10 ১০ আমরা সবদিন আমাদের দেহে যীশুর মৃত্যু বয়ে নিয়ে চলেছি, যেন যীশুর জীবনও আমাদের শরীরে প্রকাশিত হয়।
আমরা সবসময়ই, আমাদের শরীরে যীশুর মৃত্যুকে বহন করে চলেছি, যেন আমাদের শরীরে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়।
11 ১১ আমরা জীবিত হলেও যীশুর জন্য সবদিন মৃত্যুমুখে তুলে দেওয়া হচ্ছে যেন আমাদের মানুষ শরীরে যীশুর জীবন প্রকাশিত হয়।
কারণ আমরা যারা জীবিত আছি, তাদের সবসময়ই যীশুর কারণে মৃত্যুর কাছে সমর্পণ করা হচ্ছে, যেন আমাদের এই মানবিক দেহে তাঁর জীবনও প্রকাশিত হতে পারে।
12 ১২ এই কারণে আমাদের মধ্যে মৃত্যু কাজ করছে এবং জীবন তোমাদের মধ্যে কাজ হচ্ছে।
তাহলে এখন, মৃত্যু আমাদের শরীরে সক্রিয় ঠিকই, কিন্তু তোমাদের মধ্যে জীবন সক্রিয় আছে।
13 ১৩ আর আমাদের কাছে বিশ্বাসের সেই আত্মা আছে, যেরূপ পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “আমি বিশ্বাস করলাম, তাই কথা বললাম;” ঠিক সেই রকম আমরাও বিশ্বাস করছি তাই কথাও বলছি;
বিশ্বাসের সেই একই আত্মা আমাদের আছে বলে, যেমন লেখা আছে, “আমি বিশ্বাস করেছি, তাই কথা বলেছি,” সেই অনুযায়ী আমরাও বিশ্বাস করি ও সেই কারণে কথা বলি।
14 ১৪ কারণ আমরা জানি যিনি প্রভু যীশুকে জীবিত করে তুলেছেন, তিনি যীশুর সঙ্গে আমাদের জীবিত করে তুলবেন এবং তোমাদের সামনে হাজির করবেন।
কারণ আমরা জানি যে, যিনি প্রভু যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন, তিনি যীশুর সঙ্গে আমাদেরও উত্থাপিত করবেন এবং তোমাদের সঙ্গে আমাদেরও তাঁর সান্নিধ্যে উপস্থিত করবেন।
15 ১৫ কারণ সব কিছুই তোমাদের জন্য হয়েছে, যেন ঈশ্বরের যে অনুগ্রহ অনেক লোককে দেওয়া হয়েছে সেই অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য এবং ঈশ্বরের প্রচুর গৌরবার্থে আরও বেশি করে ধন্যবাদ দেওয়া হয়।
এসবই তোমাদের কল্যাণের জন্য, যেন যে অনুগ্রহ আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে উপস্থিত হচ্ছে, তা ঈশ্বরের মহিমার উদ্দেশে উপচে পড়া ধন্যবাদ জ্ঞাপনের কারণ হয়।
16 ১৬ সুতরাং আমরা কখনো হতাশ হয়ে পড়ি না, যদিও আমাদের বাহ্যিক দেহটি নষ্ট হচ্ছে কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীক মানুষটি দিনের দিনের নতুন হচ্ছে।
সেই কারণে, আমরা নিরুৎসাহ হই না। যদিও বাহ্যিকভাবে আমরা ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছি, তবুও অভ্যন্তরীণভাবে দিন-প্রতিদিন আমরা নতুন হচ্ছি।
17 ১৭ ফলে আমরা এই অল্প দিনের র জন্য যে সামান্য কষ্টভোগ করছি তার জন্য আমরা চিরকাল ধরে ঈশ্বরের মহিমা পাব যেটা কখনো মাপা যায় না। (aiōnios )
কারণ আমাদের তুচ্ছ ও ক্ষণস্থায়ী কষ্টসমস্যাগুলি আমাদের জন্য যে চিরন্তন মহিমা অর্জন করছে, তা সেইসব কষ্টসমস্যাকে বিপুলরূপে অতিক্রম করে। (aiōnios )
18 ১৮ কারণ আমরা যা দেখা যায় তা দেখছি না বরং তার দিকেই দেখছি যা দেখা যায় না। কারণ যা যা দেখা যায় তা অল্প দিনের র জন্য, কিন্তু যা দেখা যায় না তা চিরকালের জন্য স্থায়ী। (aiōnios )
তাই কোনো দৃশ্যমান বস্তুর দিকে নয়, কিন্তু যা অদৃশ্য তার প্রতি আমরা দৃষ্টি নিবদ্ধ করি। কারণ যা কিছু দৃশ্যমান, তা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু যা কিছু অদৃশ্য তাই চিরন্তন। (aiōnios )