< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 34 >

1 যোশিয়ের বয়স আট বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেন এবং তিনি একত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
যোশিয় আট বছর বয়সে রাজা হলেন, এবং জেরুশালেমে তিনি একত্রিশ বছর রাজত্ব করলেন।
2 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ভাল তিনি তাই করতেন এবং তাঁর নিজের পূর্বপুরুষ দায়ূদের পথে চলতেন; সেই পথ থেকে ডানদিকে বা বাঁদিকে যেতেন না।
সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা ঠিক, যোশিয় তাই করলেন এবং তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের পথেই চলেছিলেন, ও সেখান থেকে ডাইনে বা বাঁয়ে, কোনোদিকেই সরে যাননি।
3 তাঁর রাজত্বের অষ্টম বছরে তাঁর বয়স কম থাকলেও তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলবার জন্য মন স্থির করলেন। রাজত্বের বারো বছরের দিন তিনি পূজার সব উঁচু জায়গা, আশেরা মূর্ত্তি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মূর্ত্তি যিহূদা ও যিরূশালেম থেকে পরিষ্কার করতে লাগলেন।
যখন তাঁর বয়স বেশ কম, অর্থাৎ তাঁর রাজত্বকালের অষ্টম বছরে, তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের ঈশ্বরের অন্বেষণ করতে শুরু করলেন। দ্বাদশতম বছরে, তিনি যিহূদা ও জেরুশালেমকে পরিষ্কার করে, সেখান থেকে পূজার্চনার উঁচু উঁচু স্থানগুলি, আশেরার খুঁটিগুলি ও প্রতিমার মূর্তিগুলি দূর করতে শুরু করলেন।
4 তাঁর উপস্থিতে লোকেরা বাল দেবতার বেদীগুলো ভেঙে ফেলল; সেগুলোর উপরে যে সব ধূপদানী ছিল সেগুলো কেটে টুকরা টুকরা করল এবং আশেরা খুঁটি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মুর্ত্তিগুলো ভেঙে ধূলোয় পরিণত করল। যারা সেগুলোর কাছে পশু বলি দিত তাদের কবরের উপরে সেই ধূলোগুলি ছড়িয়ে দিল।
তাঁর পরিচালনায় বায়াল-দেবতাদের বেদিগুলি ভেঙে ফেলা হল; সেগুলির উপরদিকে যে ধূপবেদিগুলি ছিল, সেগুলি তিনি কেটে টুকরো টুকরো করে দিলেন, এবং আশেরার খুঁটিগুলি ও প্রতিমার মূর্তিগুলিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন। সেগুলি ভেঙে গুঁড়ো করে সেই চূর্ণ তিনি তাদের কবরের উপর ছড়িয়ে দিলেন, যারা সেগুলির কাছে নৈবেদ্য উৎসর্গ করত।
5 তিনি বেদীগুলোর উপরে যাজকদের হাড় পোড়ালেন। এই ভাবে তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমকে শুচি করলেন।
তাদের বেদিতেই তিনি পূজারিদের অস্থি জ্বালিয়েছিলেন, এবং এইভাবে তিনি যিহূদা ও জেরুশালেমকে পরিষ্কার করলেন।
6 আর মনঃশি, ইফ্রয়িম ও শিমিয়োন এলাকার গ্রাম ও শহরগুলোতে এবং তার আশেপাশের ধ্বংসের জায়গা গুলোর মধ্যে, এমন কি, নপ্তালি এলাকা পর্যন্ত সব জায়গায় এইরকম করলেন।
একেবারে নপ্তালি পর্যন্ত গিয়ে মনঃশি, ইফ্রয়িম ও শিমিয়োনের নগরগুলিতে, এবং সেগুলির আশেপাশে অবস্থিত ধ্বংসস্তূপে
7 তিনি সমস্ত বেদী ও আশেরা খুঁটি ভেঙে ফেললেন এবং খোদাই করা প্রতিমাগুলো ভেঙে গুঁড়ো করে ফেললেন আর ইস্রায়েলের সমস্ত জায়গায় তিনি সব ধূপদানী কেটে টুকরা টুকরা করলেন। তারপর তিনি যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
তিনি বেদিগুলি ও আশেরার খুঁটিগুলি ভেঙে দিলেন এবং প্রতিমার মূর্তিগুলিও ভেঙে গুঁড়ো করে দিলেন ও ইস্রায়েলের সর্বত্র সব ধূপবেদি কেটে টুকরো টুকরো করে দিলেন। পরে তিনি জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
8 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের দিনের তিনি দেশ ও উপাসনা ঘর শুচি করবার পর তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর সারাই করবার জন্য অৎসলিয়ের ছেলে শাফনকে, শহরের শাসনকর্ত্তা মাসেয়কে ও যোয়াহসের ছেলে যোয়াহকে যিনি ইতিহাস লেখক এদেরকে পাঠিয়ে দিলেন।
যোশিয়ের রাজত্বকালের অষ্টাদশতম বছরে, দেশ ও মন্দির পরিষ্কার করার লক্ষ্যে অৎসলিয়ের ছেলে শাফনকে ও নগরের শাসনকর্তা মাসেয়কে, এবং সাথে সাথে যোয়াহসের ছেলে লিপিকার যোয়াহকে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর মন্দির মেরামত করার জন্য তিনি পাঠালেন।
9 তাঁরা মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে গেলেন এবং ঈশ্বরের ঘরে যে সব রূপা আনা হয়েছিল, অর্থাৎ যে সব রূপা রক্ষী লেবীয়েরা, মনঃশি ও ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকদের এবং ইস্রায়েলের বাকি সমস্ত লোকদের কাছ থেকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর সমস্ত লোকদের ও যিরূশালেমের বাসিন্দাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল তা মহাযাজকের কাছে রেখে দিলেন।
তারা মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে গেলেন এবং তাঁর হাতে সেই অর্থ তুলে দিলেন, যা ঈশ্বরের মন্দিরে আনা হল, এবং সেই অর্থ দ্বাররক্ষী লেবীয়েরা মনঃশির, ইফ্রয়িমের ও ইস্রায়েলের অবশিষ্ট সব লোকজনের, তথা যিহূদা ও বিন্যামীনের সব লোকজনের ও জেরুশালেমের অধিবাসীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করল।
10 ১০ তারপর সেই টাকা সদাপ্রভুর ঘরের কাজের দেখাশুনা করবার জন্য যে লোকদের নিযুক্ত করা হয়েছিল তাদের হাতে দেওয়া হয়েছিল। তদারককারীরা উপাসনা ঘরটি সারাই ও আবার ঠিকঠাক করবার জন্য মিস্ত্রিদের সেই টাকা দিল,
পরে তারা সেই অর্থ সদাপ্রভুর মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত লোকজনের হাতে তুলে দিলেন। সেই লোকেরা সেইসব কর্মীকে বেতন দিয়েছিল, যারা মন্দির মেরামত ও পুনঃসংস্কার করছিল।
11 ১১ অর্থাৎ যিহূদার রাজারা যেসব ঘরগুলো ধ্বংস করেছিলেন সেগুলোর জন্য তারা ছুতার মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রিদের টাকা দিল যাতে তারা সুন্দর করে কাটা পাথর এবং ঘর সারাই করার জন্য ও কড়িকাঠের জন্য কাঠ কিনতে পারে।
যিহূদার রাজারা যে ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে দিলেন, সেখানকার আড়া ও কড়িকাঠ ঠিক করার জন্য মাপ করে কাটা পাথর ও কাঠ কেনার পয়সাও তারা ছুতোর ও রাজমিস্ত্রিদের দিয়েছিল।
12 ১২ সেই মিস্ত্রিরা বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিল। তাদের তদারক করবার জন্য তাদের উপরে ছিল যহৎ ও ওবদিয় নামে মরারি বংশের দুইজন লেবীয় এবং কহাৎ বংশের সখরিয় ও মশুল্লম আর যে লেবীয়েরা ভাল বাজনা বাজাতে পারত তারা সকলে মিস্ত্রিদের পরিচালনা করেছিল।
কর্মীরা নিষ্ঠাসহকারে কাজ করল। তাদের নির্দেশ দেওয়ার জন্য মরারি বংশের যহৎ ও ওবদিয়, এবং কহাৎ বংশের সখরিয় ও মশুল্লম—এই কয়েকজন লেবীয়কে নিযুক্ত করা হল। যেসব লেবীয় বাজনা বাজাতে পারদর্শী ছিল,
13 ১৩ এরা বাড়ি তৈরির জিনিসপত্র বইবার লোকদের উপর নিযুক্ত ছিল এবং বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত কাজের লোকদের সকলের দেখাশুনা করত। লেবীয়দের মধ্যে কেউ কেউ ছিল লেখক, কর্মকর্তা ও রক্ষী।
তাদের দায়িত্ব দেওয়া হল, যেন তারা শ্রমিকদের দেখাশোনা করে ও বিভিন্ন কাজে লিপ্ত কর্মীদেরও তদারকি করে। এই লেবীয়দের মধ্যে কয়েকজন আবার সচিব, শাস্ত্রবিদ ও দ্বাররক্ষীও ছিল।
14 ১৪ তাঁরা যখন সদাপ্রভুর ঘরে আনা টাকা বের করে আনছিলেন তখন যাজক হিল্কিয় মোশির দ্বারা দেওয়া সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বইটি পেলেন।
সদাপ্রভুর মন্দিরে যে অর্থ সংগ্রহ করা হল, সেগুলি যখন তারা বের করে আনছিল, তখন যাজক হিল্কিয় সদাপ্রভুর সেই বিধানগ্রন্থটি খুঁজে পেয়েছিলেন, যেটি মোশির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল।
15 ১৫ হিল্কিয় তখন রাজার লেখক শাফনকে বললেন, “সদাপ্রভুর ঘরে আমি এই ব্যবস্থার বইটি পেয়েছি।” এই বলে তিনি শাফনকে সেই বইটি দিলেন।
হিল্কিয় সচিব শাফনকে বললেন, “সদাপ্রভুর মন্দিরে আমি বিধানগ্রন্থটি খুঁজে পেয়েছি।” এই বলে তিনি সেটি শাফনকে দিলেন।
16 ১৬ শাফন সেই বইটি রাজার কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আপনার কর্মচারীদের উপর যে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁরা তা সবই করছেন।
পরে শাফন পুস্তকটি রাজার কাছে নিয়ে গেলেন এবং তাঁকে এই খবর দিলেন: “আপনার কর্মকর্তাদের যা যা করতে বলা হল, তারা তা করছেন।
17 ১৭ সদাপ্রভুর ঘরে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তাঁরা তা বের করে তদারককারী ও কাজের লোকদের দিয়েছেন।”
সদাপ্রভুর মন্দিরে যে অর্থ রাখা ছিল, তা তারা বের করে এনে তত্ত্বাবধায়ক ও কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।”
18 ১৮ তখন লেখক শাফন রাজাকে জানালেন, “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটি বই দিয়েছেন।” এই বলে শাফন তা রাজাকে পড়ে শোনালেন।
পরে সচিব শাফন রাজাকে খবর দিলেন, “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটি পুস্তক দিয়েছেন।” এই বলে শাফন রাজার সামনে সেটি পড়ে শুনিয়েছিলেন।
19 ১৯ রাজা ব্যবস্থার কথাগুলো যখন শুনলেন, তখন তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন।
বিধানের কথাগুলি শুনে রাজা নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছিলেন।
20 ২০ তিনি হিল্কিয়, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অব্দোন, শাফন ও রাজার সাহায্যকারী অসায়কে এই আদেশ দিলেন এবং বললেন,
হিল্কিয়কে, শাফনের ছেলে অহীকামকে, মীখার ছেলে অব্দোনকে, সচিব শাফনকে ও রাজার পরিচারক অসায়কে তিনি এই আদেশ দিলেন:
21 ২১ আপনারা যান, “যে বইটি পাওয়া গেছে তার মধ্যে কি লেখা রয়েছে তা আপনারা গিয়ে আমার এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার বাকি লোকদের জন্য সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের পূর্বপুরুষেরা সদাপ্রভুর বাক্য পালন করেন নি এবং এই বইয়ে যা লেখা আছে সেই অনুসারে কাজ করেন নি বলে সদাপ্রভুর ভীষণ ক্রোধ আমাদের উপরে পড়েছে।”
“যে পুস্তকটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, তাতে যা যা লেখা আছে, সেই বিষয়ে তোমরা সদাপ্রভুর কাছে গিয়ে আমার এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার অবশিষ্ট লোকজনের হয়ে তাঁর কাছে খোঁজ নাও। সদাপ্রভুর মহাক্রোধ আমাদের উপর নেমে এসেছে, কারণ আমাদের পূর্বসূরিরা সদাপ্রভুর বাক্য পালন করেননি; এই পুস্তকে যা যা লেখা আছে, সেই অনুসারে তারা কাজ করেননি।”
22 ২২ তখন হিল্কিয় এবং রাজা যাদের হিল্কিয়ের সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা এই বিষয়ে কথা বলবার জন্য মহিলা ভাববাদীনী হুল্‌দার কাছে গেলেন। হুল্‌দা ছিলেন কাপড় চোপড় রক্ষাকারী শল্লুমের স্ত্রী। শল্লুম ছিলেন হস্রহের নাতি, অর্থাৎ তোখতের ছেলে। তিনি যিরূশালেমের দ্বিতীয় অংশে বাস করতেন।
হিল্কিয়ের সাথে রাজা আরও যাদের পাঠালেন, তাদের সাথে নিয়ে তিনি মহিলা ভাববাদী হুলদার সাথে কথা বলতে গেলেন। এই হুলদা জামাকাপড় রক্ষণাবেক্ষণকারী হস্রহের নাতি, ও তোখতের ছেলে শল্লুমের স্ত্রী ছিলেন। জেরুশালেমে নতুন পাড়ায় হুলদা বসবাস করতেন।
23 ২৩ হুল্‌দা তাঁদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে বলতে বললেন যে, আমার কাছে যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন তাঁকে গিয়ে বলুন,
তিনি তাদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমার কাছে যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, তাঁকে গিয়ে বলো,
24 ২৪ ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলেছেন: দেখো, যিহূদার রাজার সামনে সেই বইয়ে লেখা যে সব অভিশাপের কথা পড়া হয়েছে সেই সব বিপদ আমি এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের উপরে আনব।
‘সদাপ্রভু একথাই বলেন: আমি এই স্থানটির উপর ও এখানকার লোকজনের উপর সর্বনাশ ডেকে আনতে চলেছি—তা সেইসব অভিশাপ, যা যিহূদার রাজার সামনে পঠিত সেই পুস্তকে লেখা আছে।
25 ২৫ কারণ তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেব দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালিয়েছে এবং তাদের হাতের তৈরী সমস্ত প্রতিমার দ্বারা আমাকে অসন্তুষ্ট করেছে। সেইজন্য এই জায়গার উপর আমার ক্রোধ আমি ঢেলে দেব এবং ক্রোধের সেই আগুন নিভানো যাবে না’।”
কারণ তারা আমাকে পরিত্যাগ করেছে ও অন্যান্য দেবতাদের কাছে ধূপ পুড়িয়েছে এবং তাদের হাতে গড়া সব প্রতিমার মাধ্যমে আমার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছে, আমার ক্রোধ এই স্থানটির উপর আমি ঢেলে দেব ও তা প্রশমিত হবে না।’
26 ২৬ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন সেই যিহূদার রাজাকে বলবেন যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই বলছেন, যে বাক্য সম্পর্কে আপনারা শুনেছেন:
সদাপ্রভুর কাছে খোঁজ নেওয়ার জন্য যিনি তোমাদের পাঠিয়েছেন, যিহূদার সেই রাজাকে গিয়ে বলো, ‘তোমরা যা যা শুনলে, সেই বিষয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু একথাই বলেন:
27 ২৭ কারণ এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমি যা বলেছি তা শুনে তোমার হৃদয় তাতে উত্তর দিয়েছে এবং আমার সামনে তুমি নিজেকে নত করেছ ও তোমার পোশাক ছিঁড়ে আমার কাছে কান্নাকাটি করেছ। তুমি এই সব করেছ বলে আমি সদাপ্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছি। এই হল সদাপ্রভুর ঘোষণা।
যেহেতু তোমার অন্তর সংবেদনশীল ও ঈশ্বর যখন এই স্থানটির ও এখানকার লোকজনের বিরুদ্ধে কথা বললেন, তখন সেকথা শুনে তুমি ঈশ্বরের সামনে নিজেকে নত করলে, এবং যেহেতু তুমি আমার সামনে নিজেকে নত করলে ও তোমার পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছিলে ও আমার সামনে কেঁদেছিলে, তাই আমি তোমার কথা শুনেছি, সদাপ্রভু একথাই ঘোষণা করে দিয়েছেন।
28 ২৮ দেখো, আমি শীঘ্রই তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাব এবং তুমি শান্তিতে কবর পাবে। এই জায়গার উপরে এবং যারা এখানে বাস করে তাদের উপরে আমি যে সব বিপদ নিয়ে আসব তোমার চোখ তা দেখবে না। তাঁরা হুল্‌দার এর উত্তর নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
এখন আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে পাঠিয়ে দেব, এবং শান্তিতেই তোমার কবর হবে। এই স্থানটির ও এখানকার লোকজনের উপর আমি যে সর্বনাশ ডেকে আনতে চলেছি, তা তোমাকে স্বচক্ষে দেখতে হবে না।’” অতএব তারা হুলদার এই উত্তর নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
29 ২৯ তখন রাজা বার্তাবাহক পাঠিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত প্রাচীনদের ডেকে একত্র করলেন।
তখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সব প্রাচীনকে রাজা এক স্থানে ডেকে পাঠালেন।
30 ৩০ তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের, যাজক ও লেবীয়দের এবং সাধারণ ও গণ্যমান্য সমস্ত লোকদের নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে গেলেন। সদাপ্রভুর ঘরে ব্যবস্থার যে বইটি পাওয়া গিয়েছিল তার সমস্ত কথা তিনি তাদের কাছে পড়ে শোনালেন।
যিহূদার প্রজাদের, জেরুশালেমের অধিবাসীদের, যাজক ও লেবীয়দের—ছোটো থেকে বড়ো, সব লোকজনকে সাথে নিয়ে তিনি সদাপ্রভুর মন্দিরে উঠে গেলেন। সদাপ্রভুর মন্দিরে যে নিয়ম-পুস্তকটি খুঁজে পাওয়া গেল, তার সব কথা তিনি লোকদের পড়ে শুনিয়েছিলেন।
31 ৩১ রাজা তাঁর নিজের জায়গায় দাঁড়ালেন এবং সদাপ্রভুর পথে চলবার জন্য এবং সমস্ত মন ও প্রাণ দিয়ে তাঁর সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার জন্য, অর্থাৎ এই বইয়ের মধ্যে লেখা ব্যবস্থার সমস্ত কথা পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে প্রতিজ্ঞা করলেন।
রাজা নিজের স্তম্ভের পাশে দাঁড়িয়ে, সদাপ্রভুর সামনে নিয়মের এই নিয়ম নতুন করে নিয়েছিলেন—তিনি সদাপ্রভুর পথে চলবেন, এবং তাঁর আদেশ, আইনকানুন ও বিধিনিয়ম মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে পালন করবেন, এবং এই পুস্তকে লেখা নিয়মের কথাগুলির বাধ্য হয়েও চলবেন।
32 ৩২ তারপর তিনি যিরূশালেম ও বিন্যামীনের উপস্থিত সমস্ত লোককে সেই একই প্রতিজ্ঞা করালেন। যিরূশালেমের লোকেরা ঈশ্বরের, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে শুরু করল।
পরে জেরুশালেম ও বিন্যামীনের প্রত্যেকটি লোককে দিয়েও তিনি তা পালন করার শপথ করিয়ে নিয়েছিলেন; জেরুশালেমের লোকজন ঈশ্বরের, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তা করল।
33 ৩৩ যোশিয় ইস্রায়েলীয় লোকদের অধিকারে থাকা সমস্ত দেশ থেকে সব জঘন্য প্রতিমা দূর করে দিলেন এবং ইস্রায়েলে উপস্থিত সকলকে দিয়ে তিনি তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করালেন। যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ততদিন লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলেছিল।
ইস্রায়েলীদের অধিকারভুক্ত সব এলাকা থেকে যোশিয় সব ঘৃণ্য প্রতিমার মূর্তি দূর করলেন, এবং ইস্রায়েলে উপস্থিত সবাইকে তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করতে বাধ্য করলেন। তিনি যতদিন বেঁচেছিলেন, ততদিন তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলতে ব্যর্থ হয়নি।

< বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড 34 >