< শমূয়েলের প্রথম বই 3 >
1 ১ ছোট ছেলে শমূয়েল এলির সামনে থেকে সদাপ্রভুর সেবা কাজ করতেন। আর সেই দিনের সদাপ্রভুর বাক্য খুব কমই শোনা যেত, তাঁর দর্শনও যখন-তখন পাওয়া যেত না।
কিশোর শমূয়েল এলির অধীনে থেকে সদাপ্রভুর পরিচর্যা করে যাচ্ছিল। সেকালে সদাপ্রভুর বাক্য বিরল ছিল; দর্শনও খুব একটা দেখতে পাওয়া যেত না।
2 ২ আর সেই দিন দৃষ্টি শক্তি কম হওয়াতে এলি আর দেখতে পেতেন না।
এলির দৃষ্টিশক্তি এতই ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছিল যে তিনি প্রায় দেখতেই পেতেন না। এই অবস্থায় রাতের বেলায় একদিন তিনি সেখানে শুয়েছিলেন, যেখানে সচরাচর তিনি শুয়ে থাকতেন।
3 ৩ একদিন এলি তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে ছিলেন, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যে প্রদীপ জ্বালানো হয়েছিল তা তখনও নিভে যায় নি এবং ঈশ্বরের যে সিন্দুক যে জায়গায় ছিল, শমূয়েল সেই জায়গায় অর্থাৎ ঈশ্বরের মন্দিরের মধ্যে শুয়ে আছেন।
সদাপ্রভুর প্রদীপ তখনও নেভানো হয়নি, এবং শমূয়েল সদাপ্রভুর সেই গৃহে শুয়েছিলেন, যেখানে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুক রাখা থাকত।
4 ৪ এমন দিন সদাপ্রভু শমূয়েলকে ডাকলেন; আর তিনি উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”
তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে ডাক দিলেন। শমূয়েল উত্তর দিল, “আমি এখানে।”
5 ৫ পরে তিনি এলির কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি, আপনি তো আমাকে ডেকেছেন৷” তিনি বললেন, “আমি ডাকি নি, তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।” তখন তিনি গিয়ে শুয়ে পড়লেন।
আর সে দৌড়ে এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” কিন্তু এলি বললেন, “আমি তোমায় ডাকিনি; ফিরে গিয়ে তুমি শুয়ে পড়ো।” অতএব সে ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়ল।
6 ৬ পরে সদাপ্রভু আবার ডাকলেন, “শমূয়েল,” তাতে শমূয়েল উঠে এলির কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি; আপনি তো আমাকে ডেকেছেন৷” তিনি এর উত্তরে বললেন, “বাছা, আমি ডাকি নি, তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।”
সদাপ্রভু আবার ডাক দিলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েলও এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” “ওহে বাছা,” এলি বললেন, “আমি তোমায় ডাকিনি; ফিরে গিয়ে তুমি শুয়ে পড়ো।”
7 ৭ সেই দিনের শমূয়েল সদাপ্রভুর পরিচয় পাননি এবং তাঁর কাছে সদাপ্রভুর বাক্যও প্রকাশিত হয়নি।
তখনও পর্যন্ত শমূয়েল সদাপ্রভুর পরিচয় পায়নি: সদাপ্রভুর বাক্য তখনও তার কাছে প্রকাশিত হয়নি।
8 ৮ পরে সদাপ্রভু তৃতীয় বার শমূয়েলকে ডাকলেন; তাতে তিনি উঠে এলির কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি; আপনি তো আমাকে ডেকেছেন।” তখন এলি বুঝতে পারলেন, সদাপ্রভুই ছেলেটিকে ডাকছিলেন।
তৃতীয়বার সদাপ্রভু ডাক দিলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েলও উঠে এলির কাছে গিয়ে বলল, “আপনি আমায় ডাকছেন; আমি তো এখানে।” তখন এলি অনুভব করলেন যে সদাপ্রভুই ছেলেটিকে ডাকছিলেন।
9 ৯ সেইজন্য এলি শমূয়েলকে বললেন, “তুমি গিয়ে শুয়ে পড়; যদি তিনি আবার তোমাকে ডাকেন, তবে বলবে, ‘হে সদাপ্রভু, বলুন, আপনার দাস শুনছে’।” তখন শমূয়েল গিয়ে তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লেন।
অতএব এলি শমূয়েলকে বললেন, “তুমি ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়ো, আর যদি তিনি আবার তোমায় ডাকেন, তুমি বোলো, ‘সদাপ্রভু, বলুন, কারণ আপনার দাস শুনছে।’” অতএব শমূয়েল ফিরে গিয়ে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ল।
10 ১০ তারপর সদাপ্রভু এসে দাঁড়ালেন এবং অন্য বারের মত ডেকে বললেন, “শমূয়েল, শমূয়েল,” তখন শমূয়েল উত্তর দিলেন, “বলুন, আপনার দাস শুনছে।”
সদাপ্রভু এসে, সেখানে দাঁড়িয়ে অন্যান্যবারের মতো এবারও ডাক দিয়ে বললেন, “শমূয়েল! শমূয়েল!” তখন শমূয়েল বলল, “বলুন, কারণ আপনার দাস শুনছে।”
11 ১১ তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “দেখ, আমি ইস্রায়েলের মধ্যে একটি কাজ করব, তা যে শুনবে, তার দুই কান শিউরে উঠবে।
সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন: “দেখো, ইস্রায়েলের মধ্যে আমি এমন কিছু করতে যাচ্ছি যা শুনে প্রত্যেকের কান ভোঁ ভোঁ করবে।
12 ১২ আমি এলির বংশের বিষয়ে যা যা বলেছি, সেই সমস্ত সেই দিন তার বিরুদ্ধে তা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ করব।
আমি এলির পরিবারের সম্বন্ধে যা যা বলেছি, সেই সময় আমি এলির প্রতি—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক তাই ঘটাব।
13 ১৩ আমি তাকে বলেছি, সে যে অপরাধ জানে, সেই অপরাধের (পুত্রগণ নিজেদের অভিশপ্ত করলো ঈশ্বর নিন্দার জন্য) জন্য আমি যুগে যুগে তার বংশকে শাস্তি দেব; কারণ তার ছেলেরা নিজেদেরকে শাপগ্রস্ত করছে, তবুও সে তাদেরকে সংশোধন করে নি।
কারণ আমি তাকে বলেছি যে তার জানা পাপের কারণে আমি চিরতরে তার পরিবারের বিচার করতে চলেছি; তার ছেলেরা ঈশ্বরনিন্দা করেছে, আর সে তাদের শাসন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
14 ১৪ সেইজন্য এলির বংশের বিষয় আমি এই শপথ করেছি যে, এলির বংশের অপরাধ বলিদান বা নৈবেদ্যর মাধ্যমে কখনই পরিষ্কার করা যাবে না।”
তাই আমি এলির বংশের উদ্দেশে শপথ করে বলেছি, ‘এলির বংশের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত, বলি বা নৈবেদ্য দ্বারা হবে না।’”
15 ১৫ শমূয়েল সকাল পর্যন্ত শুয়ে থাকলেন, পরে সদাপ্রভুর ঘরের দরজা খুললেন, কিন্তু শমূয়েল এলিকে ঐ দর্শনের বিষয়ে বলতে ভয় পেলেন।
শমূয়েল সকাল পর্যন্ত শুয়ে থাকল ও পরে সদাপ্রভুর গৃহের দরজাগুলি খুলে দিল। এলিকে দর্শনটির কথা বলতে তার ভয় হচ্ছিল,
16 ১৬ পরে এলি শমূয়েলকে ডাকলেন, বললেন “হে আমার বাছা শমূয়েল!” তিনি উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”
কিন্তু এলি তাকে ডেকে বললেন, “বাছা শমূয়েল।” শমূয়েল উত্তর দিল, “আমি এখানে।”
17 ১৭ এলি জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি তোমাকে কি কথা বলেছেন? অনুরোধ করি, আমার কাছ থেকে তা গোপন কর না; ঈশ্বর যে সব কথা তোমাকে বলেছেন, তার কোনো কথা যদি আমার কাছ থেকে গোপন কর, তবে তিনি তোমাকে সেই রকম ও তার থেকেও বেশি শাস্তি দিন।”
“তিনি তোমাকে কী বলেছেন?” এলি প্রশ্ন করলেন। “আমার কাছে তা লুকিয়ে রেখো না। তিনি তোমাকে যা বলেছেন তার কোনো কিছু যদি তুমি আমার কাছে লুকিয়ে রাখো, তবে যেন ঈশ্বর তোমাকে কড়া শাস্তি দেন।”
18 ১৮ তখন শমূয়েল তাঁকে সেই সব কথা বললেন, কিছুই গোপন করলেন না। তখন এলি বললেন, “তিনি সদাপ্রভু; তাঁর দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয়, তাই করুন।”
তখন শমূয়েল তাঁকে সবকিছু বলে দিল, তাঁর কাছে কিছুই লুকিয়ে রাখল না। পরে এলি বললেন, “তিনি সদাপ্রভু; তাঁর দৃষ্টিতে যা ভালো বলে মনে হয়, তিনি তাই করুন।”
19 ১৯ পরে শমূয়েল বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন, (সদাপ্রভু) তাঁর কোন কথাই বিফল হতে দিতেন না।
শমূয়েল যখন বেড়ে উঠেছিলেন সদাপ্রভু তখন তাঁর সহবর্তী ছিলেন, আর তিনি শমূয়েলের কোনও কথা ব্যর্থ হতে দিতেন না।
20 ২০ তাতে দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েল জানতে পারল যে, শমূয়েল সদাপ্রভুর ভাববাদী হওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য হয়েছেন।
আর দান থেকে শুরু করে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলীরা সবাই স্বীকার করে নিল যে শমূয়েল সদাপ্রভুর এক ভাববাদীরূপে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
21 ২১ আর সদাপ্রভু শীলোতে আবার দর্শন দিলেন, কারণ সদাপ্রভু শীলোতে শমূয়েলের কাছে সদাপ্রভুর বাক্যের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতেন। আর সমস্ত ইস্রায়েলের কাছে শমূয়েলের বাক্য উপস্থিত হত।
সদাপ্রভু শীলোতে দর্শন দিতে থাকলেন, এবং সেখানে তিনি তাঁর বাক্যের মাধ্যমে নিজেকে শমূয়েলের কাছে প্রকাশিত করলেন।