< শমূয়েলের প্রথম বই 26 >
1 ১ পরে সীফীয়েরা গিবিয়াতে শৌলের কাছে গিয়ে বলল, “দায়ূদ কি মরুপ্রান্তের সামনের হখীলা পাহাড়ে লুকিয়ে নেই?”
2 ২ তখন শৌল উঠলেন ও সীফ মরুপ্রান্তে দায়ূদের খোঁজে ইস্রায়েলের তিন হাজার মনোনীত লোককে সঙ্গে নিয়ে সীফ মরুপ্রান্তে নেমে গেলেন৷
3 ৩ আর শৌল মরুপ্রান্তের সামনের হখীলা পাহাড়ে পথের পাশে শিবির স্থাপন করলেন৷ কিন্তু দায়ূদ মরুপ্রান্তে ছিলেন; আর তিনি দেখতে পেলেন, শৌল তাঁর পরে মরুপ্রান্তে আসছেন৷
4 ৪ তখন দায়ূদ চর পাঠিয়ে শৌল সত্যিই এসেছেন, এটা জানলেন৷
5 ৫ পরে দায়ূদ উঠে শৌলের শিবিরের জায়গায় গেলেন এবং দায়ূদ শৌলের ও তাঁর সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনেরের শোয়ার-জায়গা দেখলেন; শৌল শকটমণ্ডলের মধ্যে শুয়েছিলেন এবং লোকেরা তাঁর চারিদিকে ছাউনি করে রেখেছিল৷
6 ৬ পরে দায়ূদ তখন হিত্তীয় অহীমেলক ও সরূয়ার ছেলে যোয়াবের ভাই অবীশয়কে বললেন, “ঐ শিবিরে শৌলের কাছে তোমরা কে আমার সঙ্গে যাবে?” অবীশয় বলল, “আমি যাব।”
7 ৭ পরে রাতের বেলা দায়ূদ ও অবীশয় শৌলের সৈন্যদের মধ্যে গেলেন। শৌল ছাউনিতে মালপত্রের মাঝখানে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁর বর্শাটা তাঁর মাথার কাছে মাটিতে পোঁতা ছিল। অব্নের ও সৈন্যেরা তাঁর চারপাশে শুয়ে ছিল।
8 ৮ তখন অবীশয় দায়ূদকে বলল, “আজ ঈশ্বর আপনার শত্রুকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। তাই অনুরোধ করি অনুমতি দিন, আমার বর্শার এক ঘায়ে ওঁকে মাটিতে গেঁথে ফেলি। আমাকে দুই বার আঘাত করতে হবে না।”
9 ৯ দায়ূদ অবীশয়কে বললেন, “না, ওঁকে মেরে ফেলো না। সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলে কে নির্দোষ থাকতে পারে?”
10 ১০ দায়ূদ আরো বললেন “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, সদাপ্রভু নিজেই ওকে শাস্তি দেবেন। হয় তিনি এমনিই মারা যাবেন, না হয় যুদ্ধে গিয়ে শেষ হয়ে যাবেন।
11 ১১ আমি যে সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলি, সদাপ্রভু এমন না করুক। কিন্তু তাঁর মাথার কাছ থেকে বর্শাটা এবং জলের পাত্রটা তুলে নিয়ে এস, পরে আমরা চলে যাব।”
12 ১২ দায়ূদ তারপর শৌলের মাথার কাছ থেকে তাঁর বর্শা ও জলের পাত্রটা নিয়ে চলে গেলেন। কেউ তা দেখল না, জানল না, কেউ জেগেও উঠল না। কারণ তারা সবাই ঘুমাচ্ছিল, কারণ সদাপ্রভু তাদের একটা গভীর ঘুমের মধ্যে ফেলে রেখেছিলেন।
13 ১৩ পরে দায়ূদ অন্য পারে গিয়ে দূরের একটা পাহাড়ের উপরে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁদের মধ্য অনেকটা দূরত্ব ছিল,
14 ১৪ তারপর দায়ূদ সৈন্যদের এবং নেরের ছেলে অব্নেরকে ডাক দিয়ে বললেন, “অব্নের, তুমি কি কিছু বলবে না?” উত্তরে অব্নের বলল, “কে তুমি, রাজাকে ডাকাডাকি করছ?”
15 ১৫ দায়ূদ অব্নেরকে বললেন, “তুমি কি একজন পুরুষ না? ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে তোমার সমান আর কে আছে? তবে তুমি কেন শত্রুর বিপক্ষে তোমার প্রভু মহারাজকে পাহারা দিয়ে কেন রাখনি? তোমার প্রভু মহারাজকে মেরে ফেলবার জন্য একজন লোক গিয়েছিল।
16 ১৬ তুমি যা করেছ তা মোটেই ঠিক হয়নি। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, তুমি ও তোমার লোকদের মরা উচিত, কারণ আপনাদের মনিব, যিনি সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোক, তাঁকে তোমরা শত্রুদের থেকে পাহারা দিয়ে রাখনি। তুমি একবার দেখ রাজার মাথার কাছে তাঁর যে বর্শা ও জলের পাত্র ছিল সেগুলো কোথায়?”
17 ১৭ শৌল দায়ূদের গলার স্বর চিনে বললেন, “হে আমার ছেলে দায়ূদ, এ কি সত্যিই তোমার গলার স্বর?” দায়ূদ বললেন, “হ্যাঁ প্রভু মহারাজ, এ আমারই গলার স্বর।”
18 ১৮ তারপর তিনি আরও বললেন, “কেন আমার মনিব তাঁর দাসের পিছনে তাড়া করে বেড়াচ্ছেন? আমি কি করেছি? কি অন্যায় করেছি?
19 ১৯ আমার মহারাজ, আমার প্রভু, এখন দয়া করে আপনার দাসের কথা শুনুন। যদি সদাপ্রভুই আপনাকে আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে থাকেন তবে আমার করা উৎসর্গ তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য হোক। কিন্তু যদি মানুষ তা করে থাকে তবে তাদের উপর যেন সদাপ্রভুর অভিশাপ নেমে আসে, কারণ তারা আজ সদাপ্রভুর দেওয়া সম্পত্তিতে আমার যে ভাগ আছে তা থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করছে। তারা বলছে, ‘চলে যাও, দেব-দেবতার পূজা কর গিয়ে।’
20 ২০ কিন্তু আপনার কাছে আমার এই মিনতি যে, সদাপ্রভু নেই এমন দূরের কোন জায়গায় যেন আমার রক্তপাত না হয়। লোকে পাহাড়ে যেমন করে তিতির পাখী ধরতে যায় ইস্রায়েলীয়দের রাজা তেমনি করে একটা পোকার খোঁজে বের হয়ে এসেছেন।”
21 ২১ তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি। বত্স দায়ূদ, তুমি ফিরে এস। কারণ আজ প্রাণ তোমার দৃষ্টিতে মূল্যবান ছিল; দেখ আমি বোকার মত কাজ করেছি।”
22 ২২ উত্তরে দায়ূদ বললেন, “মহারাজ, এই যে সেই বর্শা, আপনার কোন লোক এসে ওটা নিয়ে যাক।
23 ২৩ সদাপ্রভু প্রত্যেক লোককে তার বিশ্বস্ততা ও সততার পুরষ্কার দেন। সদাপ্রভু আজ আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলতে চাই নি।
24 ২৪ আজ আমার কাছে আপনার জীবন যেমন মহামূল্যবান হল তেমনি সদাপ্রভুর কাছেও যেন আমার জীবন মহামূল্যবান হয়। তিনি যেন সমস্ত বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।”
25 ২৫ তখন শৌল দায়ূদকে বললেন, “বত্স দায়ূদ, তুমি ধন্য! তুমি অবশ্যই অনেক বড় বড় কাজ করবে আর জয়ী হবে।” এর পর দায়ূদ তাঁর পথে চলে গেলেন আর শৌলও তাঁর নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।