< প্রথম রাজাবলি 6 >
1 ১ মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের বেরিয়ে আসার চারশো আশি বছর পর দিনের ইস্রায়েলীয়দের উপর শলোমনের রাজত্বের চতুর্থ বৎসরের সিব মাসে, অর্থাৎ দ্বিতীয় মাসে শলোমন সদাপ্রভুর ঘরটি তৈরী করতে শুরু করলেন।
2 ২ রাজা শলোমন সদাপ্রভুর জন্য যে ঘরটি তৈরী করেছিলেন তা লম্বায় ছিল ষাট হাত, চওড়ায় কুড়ি হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত।
3 ৩ উপাসনা ঘরের প্রধান কামরাটির সামনে যে বারান্দা ছিল সেটি ঘরের চওড়ার মাপ অনুসারে কুড়ি হাত লম্বা আর ঘরের সামনে থেকে তার চওড়া দিকটা ছিল দশ হাত।
4 ৪ ঘরটার দেয়ালের মধ্যে তিনি সরু জালি দেওয়া জানালা তৈরী করলেন।
5 ৫ আর তিনি ঘরের ভিতরের দেওয়ালের চারিদিকে, মন্দিরের ও ভিতরের ঘরের দেওয়ালের চারিদিকে থাক তৈরী করলেন এবং চারিদিকে কামরা তৈরী করলেন। তার মধ্যে অনেকগুলো কামরা ছিল।
6 ৬ নীচের তলার কামরাগুলো ছিল পাঁচ হাত চওড়া, দ্বিতীয় তলার কামরাগুলো ছিল ছয় হাত চওড়া এবং তৃতীয় তলার কামরাগুলো ছিল সাত হাত চওড়া, কারণ উপাসনা ঘরের দেয়ালের বাইরের দিকের গায়ে কয়েকটা তাক তৈরী করা হয়েছিল। তার ফলে ঐ তিন তলা ঘর তৈরী করবার জন্য উপাসনা ঘরের দেয়ালের গায়ে কোনো কড়িকাঠ লাগাবার দরকার হল না।
7 ৭ খাদের যে সব পাথর কেটে ঠিক মাপে তৈরী করা হয়েছিল কেবল সেগুলোই এনে উপাসনা ঘরটা তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হল। উপাসনা ঘরটি তৈরী করবার দিন সেখানে কোনো হাতুড়ি, কুড়াল কিম্বা অন্য কোনো লোহার যন্ত্রপাতির আওয়াজ শোনা গেল না।
8 ৮ নীচের তলায় ঢুকবার পথ ছিল উপাসনা ঘরের দক্ষিণ দিকে; সেখান থেকে একটা সিঁড়ি দোতলা এবং তার পরে তিন তলায় উঠে গেছে।
9 ৯ এই ভাবে তিনি উপাসনা ঘরটা তৈরী করেছিলেন এবং তা শেষও করেছিলেন। তিনি এরস কাঠের পাঠাতন ও কড়িকাঠ দিয়ে তার ছাদও বানিয়েছিলেন।
10 ১০ উপাসনা ঘরের চারিদিকে পাঁচ হাত করে উঁচু ঘরের তাক করলেন, তা এরস কাঠের মাধ্যমে ঘরের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
11 ১১ শলোমনের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য বলা হল,
12 ১২ “তুমি যদি আমার নির্দেশ মত চল, আমার সব নিয়ম পালন কর এবং আমার সমস্ত আদেশের বাধ্য হও তাহলে যে উপাসনা ঘরটি তুমি তৈরী করছ তার বিষয়ে আমি তোমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছি তা আমি তোমার মধ্য দিয়ে পূর্ণ করব।
13 ১৩ আমি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে বাস করব এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের আমি ত্যাগ করব না।”
14 ১৪ শলোমন উপাসনা ঘরটি তৈরী করে এই ভাবে শেষ করলেন।
15 ১৫ মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত এরস কাঠের পাঠাতন দিয়ে তিনি দেয়ালের ভিতরের দিকটা ঢেকে দিলেন এবং মেঝেটা ঢেকে দিলেন দেবদারু কাঠের পাঠাতন দিয়ে।
16 ১৬ উপাসনা ঘরের মধ্যে মহাপবিত্র স্থান নামে একটা ভিতরের কামরা তৈরী করবার জন্য তিনি উপাসনা ঘরের পিছনের অংশের কুড়ি হাত জায়গা মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত এরস কাঠের পাঠাতন দিয়ে আলাদা করে নিলেন।
17 ১৭ মহাপবিত্র স্থানের সামনে প্রধান বড় কামরাটি ছিল চল্লিশ হাত লম্বা।
18 ১৮ উপাসনা ঘরের মধ্যেকার এরস কাঠের উপরে লতানো গাছের ফল ও ফোঁটা ফুল খোদাই করা হল। সব কিছু এরস কাঠের ছিল, কোনো পাথর দেখা যাচ্ছিল না।
19 ১৯ উপাসনা ঘরের মধ্যে সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি বসাবার জন্য শলোমন এই ভাবে মহাপবিত্র স্থানটা তৈরী করলেন।
20 ২০ সেই স্থানটা ছিল কুড়ি হাত লম্বা, কুড়ি হাত চওড়া ও কুড়ি হাত উঁচু। খাঁটি সোনা দিয়ে তিনি তার ভিতরটা মুড়িয়ে দিলেন এবং বেদীটাও তিনি এরস কাঠ দিয়ে ঢেকে দিলেন।
21 ২১ উপাসনা ঘরের প্রধান কামরার দেয়াল তিনি খাঁটি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন এবং মহাপবিত্র স্থানের সামনে সোনার শিকল লাগিয়ে দিলেন। সেই মহাপবিত্র স্থানের দেয়ালও তিনি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন।
22 ২২ উপাসনা ঘরের ভিতরের সমস্ত জায়গাটা তিনি এই ভাবে সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন, যে পর্যন্ত না সমস্ত ঘর শেষ হলো। মহাপবিত্র স্থানের বেদীও তিনি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
23 ২৩ তিনি মহাপবিত্র জায়গার মধ্যে জিতকাঠের দুটি করূব তৈরী করলেন, যার উচ্চতা দশ হাত।
24 ২৪ এক করূবের একটি ডানা পাঁচ হাত ও অন্য ডানা পাঁচ হাত ছিল; একটি ডানার শেষভাগ থেকে অন্য ডানার শেষ ভাগ পর্যন্ত দশ হাত হল।
25 ২৫ আর দ্বিতীয় করূবও দশ হাত ছিল; দুটি করূবের পরিমাণ ও আকার সমান ছিল।
26 ২৬ প্রথম ও দ্বিতীয় দুটি করূবই দশ হাত উঁচু ছিল।
27 ২৭ মহাপবিত্র স্থানে তিনি সেই করূব দুটি ডানা মেলে দেওয়া অবস্থায় রাখলেন। একটি করূবের ডানা এক দেয়াল ও অন্য করূবটির ডানা অন্য দেয়াল ছুঁয়ে থাকল আর ঘরের মাঝখানে তাদের অন্য ডানা দুটি একটি অন্যটির আগা ছুঁয়ে থাকল।
28 ২৮ তিনি করূব দুটিকে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন।
29 ২৯ উপাসনা ঘরের দুইটি কামরার সমস্ত দেয়ালে করূব, খেজুর গাছ এবং ফোঁটা ফুল খোদাই করা ছিল।
30 ৩০ কামরা দুটির মেঝেও তিনি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন।
31 ৩১ মহাপবিত্র স্থানের দরজাটা তিনি জিতকাঠ দিয়ে তৈরী করলেন। সেই দরজার কাঠামোর পাঁচটা কোণা ছিল।
32 ৩২ দরজার দুই পাল্লাতে তিনি করূব, খেজুর গাছ ও ফোঁটা ফুল খোদাই করে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন এবং সেই করূব ও খেজুর গাছের উপরকার সোনা পিটিয়ে সেগুলোর আকার দিলেন।
33 ৩৩ প্রধান কামরার দরজার জন্য তিনি জিতকাঠ দিয়ে একটা চারকোণা কাঠামো তৈরী করলেন
34 ৩৪ এবং দেবদারু কাঠ দিয়ে দরজার দুটি পাল্লা তৈরী করলেন; প্রত্যেকটি পাল্লা কব্জা লাগানো তৈরী করা হল। তাতে পাল্লাগুলো ভাঁজ করা যেত।
35 ৩৫ সেই পাল্লাগুলোর উপর তিনি করূব, খেজুর গাছ ও ফোঁটা ফুল খোদাই করে সোনার পাত দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন।
36 ৩৬ সুন্দর করে কাটা তিন সারি পাথর ও এরস গাছের এক সারি মোটা কাঠ দিয়ে তিনি ভিতরের উঠানের চারপাশের দেয়াল তৈরী করলেন।
37 ৩৭ চতুর্থ বছরের সিব মাসে সদাপ্রভুর ঘরের ভিত্তি গাঁথা হয়েছিল।
38 ৩৮ পরিকল্পনা অনুসারে উপাসনা ঘরটির সমস্ত কাজ এগারো বছরের বূল মাসে, অর্থাৎ অষ্টম মাসে শেষ হয়েছিল। এই উপাসনা ঘরটি তৈরী করতে শলোমন সাত বছর নিয়েছিল।