< রোমীয় 9 >
1 খ্রীষ্টে আমি সত্যি কথাই বলছি—মিথ্যা বলছি না, পবিত্র আত্মায় আমার বিবেক তা সমর্থন করছে যে—
১আমি খ্রীষ্টে সত্যি কথা বলছি, আমি মিথ্যা কথা বলছি না, পবিত্র আত্মাতে আমার বিবেক এই সাক্ষ্য দিচ্ছে যে,
2 আমার গভীর দুঃখ আছে ও হৃদয়ে আমি নিরন্তর মর্মযন্ত্রণা অনুভব করছি।
২আমার হৃদয়ে আমি গভীর দুঃখ এবং অশেষ কষ্ট পাচ্ছি।
3 এমনকি, যারা আমার স্বজাতি, আমার সেই ভাইবোনেদের জন্য আমি নিজে খ্রীষ্ট থেকে বিছিন্ন হয়ে অভিশপ্ত হতেও রাজি হতাম!
৩আমার ভাইদের জন্য, যারা আমার জাতীর লোক তাদের জন্য, যদি সম্ভব হত আমি নিজেই দেহ অনুযায়ী খ্রীষ্টের কাছ থেকে দূর হয়ে যাবার অভিশাপ গ্রহণ করতাম।
4 তারা হল ইস্রায়েল জাতি। দত্তকপুত্রের অধিকার তাদেরই, স্বর্গীয় মহিমাও তাদের, বিভিন্ন নিয়ম, বিধানলাভ, মন্দির-কেন্দ্রিক উপাসনা ও সব প্রতিশ্রুতি তাদেরই;
৪কারণ যারা ইস্রায়েলীয়। তাঁরই সন্তান হওয়ার অধিকার, মহিমা, নানারকম নিয়ম, আইনের উপহার, ঈশ্বরের আরাধনা এবং অনেক প্রতিজ্ঞা করেছেন,
5 পিতৃপুরুষেরাও তাদের এবং খ্রীষ্টের মানবীয় বংশপরিচয় তাদের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায়, যিনি সর্বোপরি বিরাজমান ঈশ্বর, চির প্রশংসনীয়! আমেন। (aiōn )
৫পূর্বপুরুষরা যাঁদের কাছ থেকে খ্রীষ্ট এসেছেন দেহের সম্মানে যিনি সব কিছুর উপরে, ঈশ্বর, যুগে যুগে ধন্য, আমেন। (aiōn )
6 এরকম নয় যে, ঈশ্বরের বাক্য ব্যর্থ হয়েছে। কারণ ইস্রায়েল বংশজাত সকলেই ইস্রায়েলী নয়।
৬কিন্তু এটা এমন নয় যে ঈশ্বরের বাক্য বিফল হয়ে পড়েছে। কারণ যারা ইস্রায়েলের বংশধর তারা সকলে যে ইস্রায়েল থেকে তা নয়।
7 আবার অব্রাহামের বংশধর বলে তারা সকলেই যে তাঁর সন্তান, তাও নয়। কিন্তু বলা হয়েছিল, “ইস্হাকের মাধ্যমেই তোমার বংশ পরিচিত হবে।”
৭এটা ঠিক নয় সবাই অব্রাহামের বংশধর সত্যি তাঁর সন্তান কিন্তু, “ইসহাকের বংশকেই তোমার বংশ বলা হবে।”
8 অন্যভাবে বলা যায়, স্বাভাবিকভাবে জাত সন্তানেরা ঈশ্বরের সন্তান নয়, কিন্তু প্রতিশ্রুতির সন্তানেরাই অব্রাহামের বংশধর বলে বিবেচিত হয়।
৮এর অর্থ এই শারীরিকভাবে জন্মান সন্তান হলেই যে তারা ঈশ্বরের সন্তান, এমন নয়। কিন্তু প্রতিজ্ঞার সন্তানদের বংশধর বলে গোনা হবে।
9 কারণ এভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল: “পূর্ব-নির্ধারিত সময়েই আমি ফিরে আসব, তখন সারার এক পুত্র হবে।”
৯কারণ এটা প্রতিজ্ঞার কথা “এই দিন ই আমি আসব এবং সারার একটি ছেলে হবে,”।
10 শুধু তাই নয়, রেবেকার সন্তানদেরও একমাত্র ও একই পিতা ছিলেন, তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ ইস্হাক।
১০কিন্তু কেবল এই নয়, কিন্তু পরে রিবিকাও একজন লোক আমাদের পিতা ইসহাক দ্বারা গর্ভবতী হয়েছিলেন
11 তবুও, সেই দুজন যমজের জন্ম হওয়ার পূর্বে ও তাদের ভালোমন্দ কোনো কাজ করার পূর্বেই মনোনয়নের ব্যাপারে ঈশ্বরের অভিপ্রায় যেন স্থির থাকে,
১১যখন সন্তানেরা জন্মায়নি, ভাল এবং খারাপ কোন কিছুই করে নি, তখন সুতরাং ঈশ্বরের পরিকল্পনানুসারে কাজের জন্য তাদের মনোনীত করলেন এবং কাজের জন্য নয়, যিনি ডেকেছেন তাঁর ইচ্ছার জন্যই
12 কাজের ফলস্বরূপ নয়, কিন্তু যিনি আহ্বান করেন তাঁর ইচ্ছার দ্বারা—সারাকে বলা হয়েছিল, “বড়ো ছেলে ছোটো ছেলের সেবা করবে।”
১২এটা তাকে বলা হয়েছিল, “বড়জন ছোট জনের দাস হবে।”
13 যেমন লেখা আছে: “যাকোবকে আমি ভালোবেসেছি, কিন্তু এষৌকে আমি ঘৃণা করেছি।”
১৩ঠিক যেমন লেখা আছে: “আমি যাকোবকে ভালবেসেছি, কিন্তু এষৌকে ঘৃণা করেছি।”
14 তাহলে, এখন আমরা কী বলব? ঈশ্বর কি অবিচার করেছেন? তা কখনোই নয়!
১৪তবে আমরা কি বলব? সেখানে ঈশ্বর অধার্মিকতা করেছেন? এটা কখন না।
15 কারণ তিনি মোশিকে বলেছেন, “যার প্রতি আমি দয়া দেখাতে চাই, তার প্রতি আমি দয়া দেখাব, এবং যার প্রতি আমি করুণা করতে চাই, তার প্রতি আমি করুণা করব।”
১৫কারণ তিনি মোশিকে বললেন, “আমি যাকে দয়া করি, তাকে দয়া করব এবং যার উপর করুণা করি, তার উপর করুণা করব।”
16 সেই কারণে, তা মানুষের ইচ্ছা বা চেষ্টার উপরে নির্ভর করে না, কিন্তু ঈশ্বরের করুণার উপর তা নির্ভর করে।
১৬সুতরাং যে ইচ্ছা করে তার কারণে নয়, যে দৌড়ায় তার জন্য নয়, কিন্তু ঈশ্বর যিনি দয়া করেন।
17 কারণ শাস্ত্র ফরৌণকে বলে, “আমি এই বিশেষ উদ্দেশ্যেই তোমাকে উন্নত করেছি, যেন আমি তোমাকে আমার ক্ষমতা দেখাতে পারি ও সমগ্র পৃথিবীতে আমার নাম প্রচারিত হয়।”
১৭কারণ ঈশ্বর শাস্ত্রের মাধ্যমে ফরৌণকে বলেন, “আমি এই জন্যই তোমাকে উঠিয়েছি, যেন তোমার উপর আমার ক্ষমতা দেখাতে পারি এবং যেন সারা পৃথিবীতে আমার নাম প্রচার হয়।”
18 সেই কারণে, ঈশ্বর যার প্রতি দয়া করতে চান, তার প্রতি তিনি দয়া করেন, কিন্তু যাকে কঠিন করতে চান, তাকে কঠিন করেন।
১৮সুতরাং তিনি যাকে ইচ্ছা, তাকে দয়া করেন এবং যাকে ইচ্ছা, তাকে কঠিন করেন।
19 তোমাদের মধ্যে কেউ হয়তো আমাকে বলবে, “তাহলে কেন ঈশ্বর এসব সত্ত্বেও আমাদের প্রতি দোষারোপ করেন? কারণ, কে তাঁর ইচ্ছার প্রতিরোধ করতে পারে?”
১৯তারপর তুমি আমাকে বলবে, “তিনি আবার দোষ ধরেন কেন? কারণ তাঁর ইচ্ছার প্রতিরোধ কে করবে?”
20 কিন্তু ওহে মানুষ, তুমি কে যে ঈশ্বরের প্রতিবাদ করো? “সৃষ্টবস্তু কি তার নির্মাতাকে একথা বলতে পারে, ‘তুমি কেন আমাকে এরকম গঠন করেছ?’”
২০হে মানুষ, বরং, তুমি কে যে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে উত্তর দিচ্ছ? তৈরী করা জিনিস কি যিনি তৈরী করছেন তাকে কি বলতে পারে, “আমাকে কেন তুমি এই রকম করলে?”
21 একই মাটির তাল থেকে অভিজাত উদ্দেশে ব্যবহারের জন্য কিছু পাত্র এবং সাধারণ ব্যবহারের জন্য কিছু পাত্র নির্মাণ করার অধিকার কি কুমোরের নেই?
২১কাদার ওপরে কুম্ভকারের কি এমন অধিকার নেই যে, একই মাটির তাল থেকে একটা পাত্র বিশেষভাবে ব্যবহারের জন্য এবং অন্য পাত্রটা রোজ ব্যবহারের জন্য বানাতে পারে?
22 কী হবে, যদি ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ ও ক্ষমতা প্রকাশ করার জন্য ধ্বংসের উদ্দেশে নির্দিষ্ট তাঁর ক্রোধের পাত্রদের অসীম ধৈর্য সহকারে সহ্য করেন?
২২যদি ঈশ্বর, নিজের রাগ দেখাবার এবং নিজের ক্ষমতা জানাবার ইচ্ছা করেন, বিনাশের জন্য পরিপক্ক রাগের পাত্রগুলির ওপর ধৈর্য্য ধরে থাকেন,
23 আর এতেই বা কী, তিনি যদি তাঁর করুণার পাত্রদের, যাদের মহিমাপ্রাপ্তির জন্য তিনি পূর্ব থেকেই প্রস্তুত করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য প্রকাশ করেন—
২৩এই জন্য তিনি করে থাকেন, যেন সেই দয়ার পাত্রদের ওপরে নিজের প্রতাপ-ধন জানাতে পারেন, যা তিনি মহিমার জন্য আগে থেকে তৈরী করেছিলেন
24 এমনকি, আমাদের কাছেও, যাদের তিনি কেবলমাত্র ইহুদি জাতির মধ্য থেকে নয়, কিন্তু অইহুদিদের মধ্য থেকেও আহ্বান করেছেন?
২৪যাদের তিনি ডেকেছিলেন, কেবল ইহূদিদের মধ্য থেকে নয়, কিন্তু আরও অযিহুদিদের মধ্য থেকেও আমাদেরকেও।
25 হোশেয়ের গ্রন্থে যেমন তিনি বলেছেন: “যারা আমার প্রজা নয়, তাদের আমি ‘আমার প্রজা’ বলব; আর যে আমার প্রেমের পাত্রী নয়, তাকে আমি ‘আমার প্রিয়তমা’ বলে ডাকব।”
২৫যেমন তিনি হোশেয় গ্রন্থে বলেন: “যারা আমার লোক নয়, তাদেরকেও আমি নিজের লোক বলব এবং যে প্রিয়তমা ছিল না, তাকে প্রিয়তমা বলব।
26 আবার, “এরকম ঘটবে, যে স্থানে তাদের বলা হত, ‘তোমরা আমার প্রজা নও,’ তাদের বলা হবে, ‘জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।’”
২৬এবং যে জায়গায় তাদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা আমার লোক নও,’ সেই জায়গায় তাদের বলা হবে ‘জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র’।”
27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্পর্কে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করেন, “ইস্রায়েলীদের জনসংখ্যা যদি সমুদ্রতীরের বালির মতোও হয়, কেবলমাত্র অবশিষ্টাংশই পরিত্রাণ পাবে।
২৭যিশাইয় ইস্রায়েলের বিষয়ে খুব জোরে চিত্কার করে বলেন, “ইস্রায়েল সন্তানদের সংখ্যা যদি সমুদ্রের বালির মতও হয়, এটার বাকি অংশই রক্ষা পাবে।
28 কারণ প্রভু দ্রুতগতিতে ও চরমভাবে পৃথিবীতে তাঁর শাস্তি কার্যকর করবেন।”
২৮প্রভু এই ভূমিতে নিজ বাক্য পালন করবেন, খুব তাড়াতাড়ি এবং সম্পূর্ণভাবে।”
29 যিশাইয় যেমন পূর্বেই একথা বলেছিলেন: “সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য কয়েকজন বংশধর অবশিষ্ট না রাখতেন, আমাদের অবস্থা হত সদোমের মতো, আমরা হতাম ঘমোরার মতো।”
২৯এবং যিশাইয় এটা আগেই বলেছিলেন, বাহিনীগণের প্রভু যদি আমাদের জন্য একটিও বংশধর না রাখতেন, তবে আমরা সদোমের মত হতাম এবং ঘমোরার মত হতাম। ইস্রায়েলের পতনের ফল কি?
30 তাহলে আমরা কী বলব? অইহুদিরা, যারা ধার্মিকতা লাভের জন্য চেষ্টা করেনি কিন্তু তা পেয়েছে, তা এমন ধার্মিকতা, যা বিশ্বাসের দ্বারা পাওয়া যায়।
৩০তারপর আমরা কি বলব? অযিহূদীয়রা, যারা ধার্মিকতার অনুশীলন করত না, তারা ধার্ম্মিকতা পেয়েছে, বিশ্বাস সমন্ধ ধার্ম্মিকতা পেয়েছে;
31 কিন্তু ইস্রায়েল, যারা ধার্মিকতার বিধান অনুসরণ করেছে, তা তারা অর্জন করতে পারেনি।
৩১কিন্তু ইস্রায়েল, ধার্মিকতার আইনের অনুশীলন করেও, সেই ব্যবস্থা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে নি।
32 কেন পারেনি? কারণ তারা বিশ্বাসের দ্বারা তার অনুসরণ না করে বিভিন্ন কাজের দ্বারা তা করেছে। তারা সেই “প্রতিবন্ধকতার পাথরে” হোঁচট খেয়েছে।
৩২কারণ কি? কারণ বিশ্বাস দিয়ে নয়, কিন্তু কাজ দিয়ে।
33 যেমন লেখা আছে, “দেখো, আমি সিয়োনে এক পাথর রেখেছি, যাতে মানুষ হোঁচট খাবে, আর একটি শিলা স্থাপন করেছি, যার কারণে তাদের পতন হবে, আর যে কেউ তাঁর উপরে বিশ্বাস করবে, সে কখনও লজ্জিত হবে না।”
৩৩তারা সেই পাথরে বাধা পেয়েছিল যে পাথরে হোঁচট পায়, যেমন লেখা আছে, “দেখ, আমি সিয়োনে একটা বাধার পাথর রাখছি এবং একটি বাধার পাথর স্থাপন করেছি; যে তাঁর উপরে বিশ্বাস করে সে লজ্জিত হবে না।”