< রোমীয় 11 >
1 আমি তাই জিজ্ঞাসা করি: ঈশ্বর কি তাঁর প্রজাদের অগ্রাহ্য করেছেন? কোনোভাবেই নয়! আমি স্বয়ং একজন ইস্রায়েলী, বিন্যামীন গোষ্ঠীভুক্ত, অব্রাহামের এক বংশধর।
2 ঈশ্বর যাদের পূর্ব থেকেই জানতেন, তাঁর সেই প্রজাদের তিনি অগ্রাহ্য করেননি। এলিয়ের ইতিহাসে শাস্ত্র কী বলে, তা কি তোমরা জানো না যে কীভাবে তিনি ইস্রায়েল জাতির বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন:
3 “প্রভু, তারা তোমার ভাববাদীদের হত্যা করেছে ও তোমার যজ্ঞবেদি চূর্ণবিচূর্ণ করেছে, কেবলমাত্র আমি একা বেঁচে আছি, আর তারা আমাকেও হত্যা করতে চেষ্টা করছে?”
4 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে কী উত্তর দিয়েছিলেন? “বায়াল-দেবতার সামনে যারা নতজানু হয়নি, এমন 7,000 লোককে আমি আমার জন্য সংরক্ষিত রেখেছি।”
5 একইভাবে, বর্তমান সময়েও অনুগ্রহের দ্বারা মনোনীত অবশিষ্টাংশ একদল আছে।
6 তারা যদি অনুগ্রহে মনোনীত হয়, তাহলে তা কাজের পরিণামে নয়; যদি তা হত, তাহলে অনুগ্রহ আর অনুগ্রহ থাকত না।
7 তাহলে বিষয়টা কী দাঁড়াল? ইস্রায়েল যা এত আগ্রহভরে অন্বেষণ করল, তা তারা পেল না, কিন্তু যারা মনোনীত তারা পেল। অন্য সকলের মন কঠোর হয়েছিল,
8 যেমন লেখা আছে: “ঈশ্বর তাদের এক অচেতন আত্মা দিয়েছেন, চোখ দিয়েছেন, যেন তারা দেখতে না পায় ও কান, যেন তারা শুনতে না পায়, আজও পর্যন্ত।”
9 আর দাউদ বলেন, “তাদের টেবিলের খাবার হোক জাল ও ফাঁদস্বরূপ, তাদের পক্ষে এক প্রতিবন্ধক ও প্রতিফলস্বরূপ।
10 তাদের চোখ অন্ধকারে পূর্ণ হোক যেন তারা দেখতে না পায়, এবং তাদের পিঠ চিরকাল বেঁকে থাকুক।”
11 আমি আবার জিজ্ঞাসা করি, তারা কি এজন্যই হোঁচট খেয়েছে, যেন পতিত হয় ও আর কখনও উঠে দাঁড়াতে না পারে? আদৌ তা নয়! বরং, তাদের অপরাধের কারণেই অইহুদিরা পরিত্রাণ লাভ করেছে, যেন ইস্রায়েলীরা ঈর্ষাকাতর হয়ে ওঠে।
12 কিন্তু যদি তাদের অপরাধের ফলে জগতের শ্রীবৃদ্ধি হয় এবং তাদের ক্ষতি যদি অইহুদিদের সমৃদ্ধির কারণ হয়, তাহলে তাদের পূর্ণতা আরও কত না মহত্তর সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে!
13 হে অইহুদি লোকেরা, আমি তোমাদের বলছি, আমি অইহুদিদের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য প্রেরিতশিষ্য। তাই ঈশ্বর ও অন্যদের প্রতি আমি যে কাজ করি তাতে আমি গর্ববোধ করছি।
14 আশা করি আমি যে কোনো উপায়ে যেন আমার স্বজাতীয়দের মধ্যে ঈর্ষা উৎপন্ন করতে পারি ও তাদের কয়েকজনের পরিত্রাণ সাধন করতে পারি।
15 কারণ তাদের প্রত্যাখ্যানের ফলে যদি জগতের পুনর্মিলন হয়, তাহলে তাদের গ্রহণ করার ফলে কী হবে? তার ফলে কি মৃত্যু থেকে জীবন লাভ হবে না?
16 ময়দার তালের প্রথম অংশ, যা নৈবেদ্যরূপে উৎসর্গ করা হয়, তা যদি পবিত্র হয়, তাহলে সমস্ত তাল-ই পবিত্র; যদি গাছের মূল পবিত্র হয়, তাহলে তার শাখাগুলিও পবিত্র।
17 কিন্তু ইস্রায়েলীদের মধ্য থেকে কতগুলি শাখাপ্রশাখা ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর অইহুদি তোমরা বন্য জলপাই গাছের শাখা না হলেও তাদের মধ্যে তোমাদের কলমরূপে লাগানো হয়েছে; তাই এখন তোমরা জলপাই গাছের মূলের পুষ্টিকর রসের অংশীদার হয়েছ।
18 সুতরাং, কেটে ফেলা শাখাপ্রশাখার বিরুদ্ধে গর্ব কোরো না। যদি তুমি করো, এ বিষয়ে বিবেচনা কোরো: তুমি মূলকে ধরে রাখোনি, বরং মূল-ই তোমাকে ধরে রেখেছে।
19 তুমি হয়তো বলবে, “সেইসব শাখাপ্রশাখাকে ভেঙে ফেলা হয়েছিল, যেন আমাকে কলমরূপে লাগানো হয়।”
20 ভালোই বলেছ! তুমি বিশ্বাসের উপরে দাঁড়িয়ে আছ, কিন্তু অবিশ্বাসের কারণে তাদের ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তাই, উদ্ধত হোয়ো না, বরং ভীত হও।
21 কারণ ঈশ্বর যদি প্রকৃত শাখাপ্রশাখাকে রেহাই না দিয়ে থাকেন, তিনি তোমাকেও রেহাই দেবেন না!
22 সেই কারণে, ঈশ্বরের সদয়তা ও কঠোরতা, উভয়ই বিবেচনা করো: যারা পতিত হয়, তাদের প্রতি তিনি কঠোর, কিন্তু তোমার প্রতি সদয়, যদি তুমি তাঁর সদয়তার শরণাপন্ন থাকো। নতুবা, তোমাকেও কেটে ফেলা হবে।
23 আবার, তারা যদি অবিশ্বাস ত্যাগ করে বিশ্বাসী হয় তাহলে তাদেরও কলমরূপে লাগানো হবে, কারণ ঈশ্বর পুনরায় তাদের কলমরূপে জুড়ে দিতে সমর্থ।
24 সর্বোপরি, তোমাকে যদি কোনো বন্য জলপাই গাছ থেকে কেটে অস্বাভাবিকভাবে আসল গাছের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আরও কত না অনায়াসে গাছের আসল শাখাগুলিকে তাদের নিজস্ব জলপাই গাছের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যাবে!
25 ভাইবোনেরা, আমি চাই না যে এই গুপ্তরহস্য সম্পর্কে তোমরা অজ্ঞাত থাকো, যেন তোমরা আত্মঅহংকারী না হও: যতক্ষণ না অইহুদিরা পূর্ণ সংখ্যায় মণ্ডলীতে প্রবেশলাভ করে ততক্ষণ ইস্রায়েল জাতি আংশিক কঠোর হয়েছে।
26 আর এভাবেই সমস্ত ইস্রায়েল পরিত্রাণ লাভ করবে, যেমন লেখা আছে, “সিয়োন থেকে মুক্তিদাতা আসবেন; তিনি যাকোব কুল থেকে ভক্তিহীনতা দূর করবেন।
27 আর এই হবে তাদের সঙ্গে আমার নিয়ম, যখন তাদের পাপসকল আমি হরণ করি।”
28 ইস্রায়েলের অনেকে এখন সুসমাচারের শত্রু, আর এর ফলে তোমরা অইহুদিরা লাভবান হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বর তাদের এখনও প্রেম করেন কারণ তিনি তাদের পিতৃপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন।
29 কারণ ঈশ্বরের অনুগ্রহ-দানসকল ও তাঁর আহ্বান তিনি কখনও প্রত্যাহার করেন না।
30 যেমন তোমরা এক সময় ঈশ্বরের অবাধ্য ছিলে, কিন্তু এখন তাদের অবাধ্যতার কারণে করুণা লাভ করেছ,
31 তেমনই তারাও এখন অবাধ্য হয়েছে, যেন তোমরা ঈশ্বরের করুণা লাভ করেছে বলে তারাও একদিন করুণা লাভ করবে।
32 কারণ ঈশ্বর সব মানুষকে অবাধ্যতার কাছে রুদ্ধ করেছেন, যেন তিনি তাদের সকলেরই প্রতি করুণা করতে পারেন। (eleēsē )
33 আহা, ঈশ্বরের প্রজ্ঞার ঐশ্বর্য ও জ্ঞান কত গভীর! তাঁর বিচারসকল কেমন অন্বেষণের অতীত, তাঁর পথসকল অনুসন্ধান করা যায় না!
34 “প্রভুর মন কে জানতে পেরেছে? কিংবা কে তাঁর উপদেষ্টা হয়েছে?”
35 “কে কখন ঈশ্বরকে কিছু দিয়েছে, যে ঈশ্বর তা পরিশোধ করবেন?”
36 কারণ সকল বস্তুর উদ্ভব তাঁর থেকে, তাঁর মাধ্যমে ও তাঁরই জন্য, তাঁরই মহিমা হোক চিরকাল! আমেন। (aiōn )