< যিশাইয় ভাববাদীর বই 47 >
1 “ওহে ব্যাবিলনের কুমারী-কন্যা, তুমি নিচে নেমে ধুলোয় বসো; ওহে কলদীয়দের কন্যা, সিংহাসন ছাড়াই তুমি মাটিতে বসো। আর তোমাকে বলা হবে না কোমল ও সুখভোগী।
১“নীচে নেমে এস এবং ধূলোয় বস, ব্যাবিলনের কুমারী মেয়ে; সিংহাসন ছেড়ে মাটিতে বস ব্যাবিলনের মেয়ে। তোমাকে আর সুশৃঙ্খল এবং বিলাসী বলা হবে না।
2 তুমি জাঁতা নিয়ে শস্য পেষণ করো, তোমার ঘোমটা খুলে ফেলো। তোমার পরনের কাপড় তুলে নাও, তোমার দুই পা অনাবৃত করো, আর নদনদীর মধ্য দিয়ে হেঁটে পার হয়ে যাও।
২যাঁতা নাও এবং গম পেষো; তোমার ঘোমটা খোলো। তোমার পোশাক খোলো, পায়ের ঢাকা খোলো নদী পার হও।
3 তোমার নগ্নতা প্রকাশিত হবে, তোমার লজ্জা আবৃত থাকবে না। আমি প্রতিশোধ গ্রহণ করব, কাউকে রেহাই দেব না।”
৩তোমার নগ্নতা আঢাকা থাকবে, হ্যাঁ, তোমার লজ্জা দেখা যাবে। আমি প্রতিশোধ নেব এবং কাউকে বাদ দেবো না।”
4 আমাদের মুক্তিদাতা—সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু তাঁর নাম— তিনিই ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম জন।
৪আমাদের মুক্তিদাতা, তাঁর নাম বাহিনীদের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের সেই পবিত্র ব্যক্তি।
5 “ওহে ব্যাবিলনীয়দের কন্যা, তুমি নীরব হয়ে বসো, অন্ধকারে যাও; আর তোমাকে বলা যাবে না রাজ্যসমূহের রানি।
৫চুপ করে বস এবং অন্ধকারের মধ্যে যাও। ব্যাবিলনের মেয়ে; তোমাকে আর রাজ্যগুলোর রাণী বলে ডাকা হবে না।
6 আমি আমার প্রজাদের প্রতি ক্রুদ্ধ ছিলাম, আমার অধিকারকে অপবিত্র করেছিলাম; আমি তোমার হাতে তাদের সমর্পণ করেছিলাম, কিন্তু তুমি তাদের প্রতি কোনো করুণা প্রদর্শন করোনি। এমনকি, বয়স্ক মানুষদের উপরেও তুমি অত্যন্ত ভারী জোয়াল চাপিয়েছ।
৬আমার লোকদের ওপর আমার রাগ হয়েছিল; আমার ঐতিহ্যকে কলুষিত করেছিলাম এবং তাদের আমি তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম কিন্তু তুমি তাদের প্রতি করুণা করনি; বুড়ো লোকদের উপরেও তুমি ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলে।
7 তুমি বলেছ, ‘আমি চিরন্তন রানি, চিরকালের জন্য আমি তাই থাকব!’ কিন্তু এসব বিষয় তুমি বিবেচনা করোনি, কিংবা যা ঘটতে চলেছে তার প্রতি মনোযোগ দাওনি।
৭তুমি বললে, “আমি চিরকাল শাসন করবো খুব ভালো রাণীর মতো।” কিন্তু তুমি এই সব বিষয় হৃদয় দিয়ে কর নি, কিম্বা ভেবে দেখ নি এর ফল কি হবে।
8 “তাহলে এখন, ওহে বিলাসিনী শোনো, তোমার নিশ্চিন্ত আসনে বসে তুমি মনে মনে ভাবছ, ‘একা আমি, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি কখনও বিধবা হব না, কিংবা আমার ছেলেমেয়েরা মারা যাবে না।’
৮তাই এখন এটা শোনো, তুমি একজন ভোগবিলাসিনী, যে নিরাপদে বসে আছে, তুমি যে হৃদয়ে বল, “আমি ছাড়া আর এখানে কেউ নেই আমার মতো। আমি কখনও বসবো না বিধবার মতো কিম্বা সন্তান হারাবার অভিজ্ঞতা হবে না।”
9 এক মুহূর্তে, একদিনের মধ্যে, এই উভয়ই তোমার প্রতি ঘটবে: সন্তান হারানো ও বিধবা হওয়া। সেগুলি পূর্ণমাত্রায় তোমার উপরে নেমে আসবে, তা যতই তুমি জাদু কিংবা মন্ত্রতন্ত্র ব্যবহার করে থাকো না কেন।
৯কিন্তু এ দুটো জিনিসই তোমার কাছে আসবে মুহূর্তের মধ্যে একদিন; সন্তান হারানো এবং বৈধব্যপূর্ণ শক্তিতে তারা তোমার ওপর আসবে তোমার জাদুমন্ত্র এবং অনেক মন্ত্রতন্ত্র সত্বেও এবং মাদুলি সত্বেও তোমার উপর ঘটবে।
10 তুমি তোমার দুষ্টতার উপরে নির্ভর করেছ, তুমি বলেছ, ‘কেউ আমাকে দেখতে পায় না।’ তোমার জ্ঞান ও বুদ্ধি তোমাকে বিপথগামী করেছে যখন তুমি নিজেই নিজেকে বলেছ, ‘একা আমি, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।’
১০তুমি তোমার দুষ্টতার উপর তুমি নির্ভর করেছ; তুমি বলেছ, কেউ আমাকে দেখে না; তোমার জ্ঞান এবং বুদ্ধি তোমাকে বিপথে নিয়ে গেছে, কিন্তু তুমি মনে মনে বল, আমি ছাড়া আর এখানে কেউ নেই আমার মতো।
11 বিপর্যয় তোমার উপরে নেমে আসবে, মন্ত্রবলে তা তুমি দূর করতে পারবে না। এক দুর্যোগ তোমার উপরে পতিত হবে, মুক্তিপণ দিয়ে তা তুমি ঝেড়ে ফেলতে পারবে না। এক সর্বনাশ তোমার উপরে হঠাৎ এসে উপস্থিত হবে, যা তুমি আগাম জানতেও পারবে না।
১১বিপর্যয় তোমার ওপর আসবে, তোমার পক্ষে তা দূর করা সম্ভব হবে না। বিপদ তোমাকে হঠাৎ আঘাত করবে তুমি জানার আগে।
12 “তাহলে তুমি তোমার মন্ত্রতন্ত্র ও বহু জাদুবিদ্যা চালিয়ে যাও, যা বাল্যকাল থেকে তুমি পরিশ্রম করে অভ্যাস করেছ। হয়তো তুমি সফল হবে, হয়তো তুমি আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবে।
১২“যে যাদুবিদ্যা এবং মন্ত্রতন্ত্র জন্য তুমি ছোটবেলা থেকে বিশ্বাসের সঙ্গে পাঠ করছ সে সব তুমি করে যাও। হয়তো তুমি সফল হবে, হয়তো তোমার বিপর্যয়ের ভয় দূর হবে।
13 তোমার পাওয়া যত পরামর্শ তোমাকে কেবলই বিধ্বস্ত করেছে! তোমার জ্যোতিষীরা সব এগিয়ে আসুক, ওইসব জ্যোতিষী, যারা মাসের পর মাস ধরে পূর্বঘোষণা করে যায়, তোমার প্রতি যা ঘটতে চলেছে, তা থেকে তারা তোমাকে রক্ষা করুক।
১৩তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছ অনেক পরামর্শে; সে লোক গুলোকে দাঁড়াতে দাও এবং তোমাকে বাঁচাক যারা আকাশমণ্ডলের নকশা তৈরী করে এবং তারার দিকে তাকায় যারা নতুন চাঁদের কথাবলে তোমার উপর যা ঘটবে তা থেকে তোমাকে তারা বাঁচাক।
14 তারা প্রকৃতই খড়কুটোর মতো, আগুন তাদের পুড়িয়ে ফেলবে। আগুনের শিখার ক্ষমতা থেকে তারা তো নিজেদেরও রক্ষা করতে পারে না। কাউকে উত্তপ্ত করার মতো এখানে কোনো অঙ্গার নেই; পাশে বসার মতো এখানে কোনো আগুন নেই।
১৪দেখ, তারা নাড়ার মত হবে; আগুন তাদের পুড়িয়ে ফেলবে। তারা আগুনের শিখার হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারে না; এখানে কোন কয়লা নেই তাদের গরম করার জন্য বা উপযুক্ত আগুন নেই যার সামনে বসে।
15 তারা তো সব থেকে বেশি এইমাত্র তোমার প্রতি করতে পারে, এগুলির জন্য তুমি পরিশ্রম করেছ, বাল্যকাল থেকে তুমি লেনদেন করেছ। তাদের প্রত্যেকেই নিজের নিজের ভ্রান্তপথে চলছে; এমন কেউ নেই, যে তোমাকে রক্ষা করতে পারে।
১৫তারা তোমার কাছে খাটুনি ছাড়া আর কিছুই নয় যাদের সঙ্গে তুমি ছেলেবেলা থেকে ব্যবসা করেছ তারা ঐ রকমই হবে। তারা প্রত্যেকে নিজের পথে ঘুরে বেড়ায়; তাদের মধ্যে কেও নেই যে তোমাকে বাঁচাতে পারে।”